রসুন আমাদের রান্নাঘরের খুবই পরিচিত একটি উপাদান। এটি শুধু খাবারে স্বাদ যোগ করে না বরং স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। রসুনে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা শরীরের বিভিন্ন অসুখ থেকে রক্ষা করে। চলুন, জেনে নিই, রসুনের এমন কিছু উপকারিতা, যা আপনাকে এটি প্রতিদিন খাওয়ার জন্য উদবুদ্ধ করবে।
রসুনের এই উপকার জানলে আপনি অবাক হবেন!
জীবনযাপন ডেস্ক

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : রসুনে থাকা অ্যালিসিন নামক একটি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি শরীরের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। রসুন নিয়মিত খেলে ফ্লু ও ঠাণ্ডার মতো সাধারণ রোগগুলো থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী : রসুনে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা শরীরের রক্তনালিকে শিথিল রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
বিপাকক্রিয়া উন্নত করে : রসুন খেলে হজমে সহায়তা করে এবং পরিপাকতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করে। এটি পাচক রস নিঃসরণে সহায়তা করে, যা খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে এবং গ্যাস, বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করে।
ওজন কমাতে সহায়ক : রসুনে থার্মোজেনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলাতে সাহায্য করে। এটি বিপাক ক্রিয়া বাড়ায়, ফলে শরীরে জমে থাকা মেদ সহজে কমে। নিয়মিত রসুন খেলে ওজন কমানো সম্ভব, বিশেষ করে যখন এটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়।
ত্বক ও চুলের যত্নে : রসুনে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, যা ত্বককে সতেজ ও উজ্জ্বল রাখে। এটি ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়ক এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে কার্যকরী।
ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক : গবেষণায় দেখা গেছে, রসুনের নিয়মিত সেবন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। বিশেষ করে কোলন, স্তন এবং পেটের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রসুন অত্যন্ত কার্যকর। এতে থাকা অ্যালিসিন শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে : উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য রসুনকে প্রাকৃতিক ওষুধ বলা হয়। রসুনের সক্রিয় উপাদানগুলো শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড উৎপন্ন করে, যা রক্তনালিকে প্রসারিত করে রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী।
ডিটক্সিফিকেশন ও শরীরের পরিশুদ্ধি : রসুন শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সহায়ক। এটি লিভার ও কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রসুনে থাকা সালফার যৌগসমূহ বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে কার্যকরী। এটি শরীরের ভেতরকার অপ্রয়োজনীয় উপাদানগুলিকে বাইরে বের করে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
রসুন খাওয়ার সঠিক উপায় : ১-২ কোয়া কাঁচা রসুন সকালে খালি পেটে খেলে এর স্বাস্থ্যগুণ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। তবে কাঁচা রসুন খেতে সমস্যা হলে এটি রান্নার সময়ও ব্যবহার করা যায়।
সতর্কতা : অতিরিক্ত রসুন খেলে কখনো কখনো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। যারা রক্তের ওষুধ সেবন করেন, তাদের ক্ষেত্রে রসুনের পরিমাণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। রসুন সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রসুন যুক্ত করলে আপনি পাবেন অসাধারণ স্বাস্থ্যগুণ। তাই আজ থেকেই রসুন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং উপভোগ করুন সুস্থ জীবন।
সম্পর্কিত খবর

স্বাস্থ্যচিত্র
নিজেই বানান ফার্স্টএইড কিট
অনলাইন ডেস্ক

ব্যান্ডেজ
ছোট বা মাঝারি কাটা-ছেঁড়ার চিকিৎসায় ব্যান্ডেজ অত্যন্ত কার্যকর। ব্যান্ড এইডের পাশাপাশি সঙ্গে রাখুন মেডিক্যাল গজ ও টেপ।
ইনস্ট্যান্ট আইস প্যাক
দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে, ব্যথা প্রশমনে আইস প্যাকের জুড়ি নেই।
প্রয়োজনীয় ওষুধ
নিজের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধের পাশাপাশি সঙ্গে রাখুন ব্যথানাশক, বমি নিরোধক, মাথা ব্যথা ও পেটের অসুখের ওষুধ।
তুলা ও অ্যালকোহল প্যাড
আঘাতের স্থান পরিষ্কার করা ও গজের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যান্ডেজ করার জন্য মেডিক্যাল গ্রেড তুলা রাখুন। চামড়া দ্রুত জীবাণুমুক্ত করার জন্য অ্যালকোহল প্যাড খুবই কাজের।
অ্যান্টিসেপটিক ও পোড়ার ওষুধ
অ্যান্টিসেপটিক সলিউশনের ছোট বোতল সঙ্গে রাখুন।

জাফরান কেন এত দামি?
জীবনযাপন ডেস্ক

জাফরান, যার আরেকটি নাম লাল সোনা। বিশ্বের সবচেয়ে দামি মসলাগুলোর মধ্যে একটি হলো জাফরান। কথিত আছে, প্রাচীন গ্রিসের মিনোয়ানরা প্রায় ১৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রথমবার জাফরান ব্যবহার করেছিল। রান্না, পোশাকের রং ও সৌন্দর্যচর্চায় এটি ব্যবহৃত হতো।
কেন এত ব্যয়বহুল জাফরান?
জাফরান এত দামি হওয়ার কারণ এর উৎপাদন প্রক্রিয়া অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ও কঠিন। এক কেজি জাফরান তৈরি করতে প্রায় ১৫০,০০০টি ক্রোকাস ফুলের প্রয়োজন। এই ফুলের তিনটি অংশ : লাল স্টিগমা, পুংকেশর ও পাপড়ি।
কোথায় চাষ করা হয় জাফরান?
বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাফরান উৎপাদক দেশ হলো ইরান। যা বিশ্বের প্রায় ৯০% জাফরান উৎপাদন করে। ইরানের খোরাসান অঞ্চল উচ্চমানের জাফরানের জন্য পরিচিত। এ ছাড়া ভারতের কাশ্মীর ও আফগানিস্তানে জাফরান চাষ হয়।
ভালো মানের জাফরান কিভাবে চিনবেন?
উচ্চ মানের জাফরান উজ্জ্বল লাল ও কিছুটা কমলা রঙের হয়।
জাফরানের স্বাস্থ্য উপকারিতা
শুধু রান্নায় নয়, স্বাস্থ্যেও জাফরানের উপকারিতা রয়েছে। এটি মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থ সেরোটোনিন ও ডোপামিনের মাত্রা প্রভাবিত করে। এ ছাড়া এটি হৃদরোগের জন্য ভালো। রক্তচাপ কমাতে ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে জাফরান কাজ করে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

নিয়মিত চোখে কাজল ব্যবহার করছেন? জেনে নিন কী হতে পারে
জীবনযাপন ডেস্ক

মেয়েদের মেকআপে ন্যূনতম কিছু পরিবর্তন মানেই চোখে কাজল ও হালকা লিপস্টিক। কাজল ছাড়া অনেকের সাজের ভাব পূর্ণ হয় না। বিশেষ করে বাঙালি মেয়েরা মনে করেন, কাজল চোখে থাকলে সৌন্দর্য আরো বাড়ে। কিন্তু আপনি কি জানেন, প্রতিদিন কাজল ব্যবহার করার ফলে আপনার চোখের কি ক্ষতি হতে পারে? চলুন, জেনে নিই।
আগে বাড়িতে তৈরি কাজল ব্যবহার করা হলেও এখন বাজারে প্রচুর দামি ব্র্যান্ডের কাজল পাওয়া যায়। তবে সেগুলোর মধ্যে রাসায়নিক উপাদান থাকতে পারে, যা চোখের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। এখানে কিছু ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হল, যা অতিরিক্ত কাজল ব্যবহারের ফলে হতে পারে।
১) বেশিরভাগ ব্র্যান্ডের কাজলে রাসায়নিক উপাদান থাকে।
২) প্রতিদিন কাজল ব্যবহার করলে চোখ শুকিয়ে যেতে পারে। ফলে শুষ্ক চোখের সমস্যা হতে পারে।
৩) অনেক কাজলে পারদ, সিসা ও প্যারাবেনের মতো উপাদান থাকে, যা কনজাংটিভাইটিসের কারণ হতে পারে এবং চোখ লাল হয়ে যেতে পারে।
৪) দীর্ঘদিন কাজল ব্যবহারে কর্নিয়ার আলসার বা চোখে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।
৫) অতিরিক্ত কাজল ব্যবহারে চোখ ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে সমস্যায় পরিণত হতে পারে।
যদি আপনি প্রতিদিন কাজল ব্যবহার করেন, তাহলে বাড়িতে তৈরি কাজল ব্যবহার করাই ভালো। কারণ তা চোখের জন্য নিরাপদ এবং দীর্ঘদিন ব্যবহারের পরেও কোনো ক্ষতি হয় না।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

কতটা দূরত্বে বসে টিভি দেখলে চোখের ক্ষতি হয় না?
জীবনযাপন ডেস্ক

টিভি দেখতে গিয়ে আমরা কখনোই দূরত্বের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিই না। দিনের শেষে সোফায় বসে আরাম করে টিভি দেখার মজাই আলাদা, কিন্তু খুব কাছে থেকে টিভি দেখা চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এলসিডি বা প্লাজমা টিভির পর্দা থেকে নির্গত আলো চোখের ক্ষতি করতে পারে। যার ফলে চোখে ব্যথা, শুষ্কতা বা পানি পড়ার সমস্যা হতে পারে।
চলুন, জেনে নিই ঠিক কতটা দূরত্বে বসে টিভি দেখা উচিত।
১। ২৮ ইঞ্চির টিভি হলে ৩ ফুট দূরত্বে বসা সবচেয়ে ভালো।
২।
৩। ৪৩ ইঞ্চির পর্দা হলে ৪ থেকে ৬ ফুট দূরত্বে বসতে হবে।
৪।
৫। ৬৫ থেকে ৭৫ ইঞ্চির পর্দা হলে ৬ থেকে ১০ ফুট দূরত্বে বসলে ভালো।
৬। ৭৫ ইঞ্চির বড় টিভি থাকলে, ঘরের সাইজ অনুযায়ী দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নাও হতে পারে।
এভাবে সঠিক দূরত্বে বসে টিভি দেখলে চোখের সমস্যা কম হবে।
সূত্র : টিভি নাইন বাংলা