হঠাৎ স্বামী নিরুদ্দেশ। পাঁচ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালানো নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়ল শেফালী রানী শীলের (৫০)। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ শুরু করলেন। এর পরও পরিবারের প্রয়োজনীয় খাবার জোগানো সম্ভব হচ্ছিল না।
১৫ বছর ধরে নরসুন্দর পেশায় শেফালী রানী
কে এম সবুজ, ঝালকাঠি ও ফারুক হোসেন খান, কাঁঠালিয়া

প্রতিদিন সকালে শেফালী যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির হন দোগনা বাজারে। সেখানে এক প্রবাসীর ঘরের বারান্দায় তিনি নরসুন্দরের কাজ করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শেফালী রানী শীলের বিয়ে হয়। স্বামী বিশ্বনাথ শীলের দোগনা বাজারে সেলুন ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, নারী হয়েও শেফালীর পুরুষের চুল-দাড়ি কাটার কাজ অনেকে মেনে নিতে পারেনি। ওই সময় খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন তিনি। গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তির হস্তক্ষেপে সেই বাধা দূর হয় তাঁর। ১৫ বছর ধরে জীবিকার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন শেফালী রানী। এরই মধ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে তাঁকে জয়ীতা সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। তবে শেফালী রানী এখন পর্যন্ত সরকারি কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছোট একটি টিনশেড ঘরের বারান্দায় শেফালী রানীর সেলুন। ঘরের মালিক সৌদিপ্রবাসী দেলোয়ার হোসেন। তাঁর স্ত্রী বিনা মূল্যে শেফালীকে সেলুন করার জন্য বারান্দাটি দিয়েছেন। সেখানে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একটানা চুল ও দাড়ি কাটার কাজ করেন শেফালী। দুপুরে বাড়ি গিয়ে খাবার খেয়ে আসেন বিকেল ৪টায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে চুল-দাড়ি কাটার কাজ। শিশু থেকে বয়স্করা ভিড় করেন শেফালীর সেলুনে। চুল-দাড়ি কেটে যে যা দিচ্ছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট শেফালী। কাউকেই তিনি ফিরিয়ে দেন না।
শেফালীর সেলুনে চুল কাটতে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান বলেন, ‘শেফালী না থাকলে আমাদের ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় গিয়ে চুল ও দাড়ি কাটাতে হতো। আমরা গ্রামে বসেই এ কাজ করাতে পারছি। শেফালী চুল-দাড়ি কেটে ৫০ টাকা নেয়। শুধু শেভ করলে ২০ টাকায় হয়ে যায়।’
দোগনা গ্রামের যুবক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শেফালী দিদি মেসি, নেইমার, রোনাদলো, রক স্টাইলে চুলের কাট দিতে পারেন। এ ছাড়া অন্য কোনো চুল কাটের ছবি দেখালেও তিনি সেই ধরনের কাট দিতে পারেন। অল্প টাকায় শেফালী দিদি আমাদের চুল কেটে দেন। আমরা তাঁর কাছেই চুল কাটি।’
শেফালী রানী শীল বলেন, ‘আমি বর্তমানে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা রোজগার করি। মাঝেমধ্যে খালিহাতেও ফিরতে হয়। তখন দোকানে দোকানে পানি টেনে কিছু টাকা পাই। এখান থেকে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে পাঁচ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ চালাচ্ছি। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এক মেয়ে বিএ পড়ে, অন্যরা স্কুলে পড়ালেখা করছে। একার আয়ে সংসার চলছে না। অন্যের জমিতে কোনো রকমে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছি। আমাকে একটি সেলুন ও বসতঘর তৈরি করে দিলে অন্তত বাকি জীবনটা ভালোভাবে চালিয়ে নিতে পারতাম।’
ঝালকাঠির সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সহসভাপতি হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, শেফালী রানীর মতো সাহসী নারীদের এগিয়ে নিতে প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। সমাজের সব কাজেই এখন পুরুষের সঙ্গে নারী সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে, শেফালী রানী এর একটি বড় দৃষ্টান্ত
সম্পর্কিত খবর

আপনার পাসপোর্ট কতটা শক্তিশালী?
অনলাইন ডেস্ক
প্রথমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টধারী দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে উত্তর ইউরোপের দ্বীপরাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড। কর ও অভিবাসনবিষয়ক আন্তর্জাতিক পরামর্শক সংস্থা নোমাড ক্যাপিটালিস্টের হালনাগাদ সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শক্তিশালী পাসপোর্টের এ সূচকে বিশ্বের ১৯৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান কত?
বিস্তারিত ভিডিওতে...
।

স্বরণ
শামসুন নাহার মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
অনলাইন ডেস্ক

শামসুন নাহার মাহমুদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ছিলেন এদেশের নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও লেখক। ১৯০৮ সালের ফেনী (বৃহত্তর নোয়াখালী) জেলার গুথুমা গ্রামে তার জন্ম। তার পিতা মুহম্মদ নুরুল্লাহ ছিলেন মুন্সেফ।
শিক্ষাজীবনের শুরুতে তিনি চট্টগ্রামের খাস্তগীর গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু সামাজিক অনুশাসনের কারণে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে নিজ চেষ্টায় তিনি প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে ম্যাট্রিক (১৯২৬) পাশ করেন। পরে ডাক্তার ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদের সঙ্গে বিয়ে হওয়ায় (১৯২৭) তিনি উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান।
তিনি ১৯৪২ সালে এমএ পাশ করেন। বিএ পাশ করার পর বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরে তিনি বেগম রোকেয়ার নারীশিক্ষা ও নারীমুক্তি আন্দোলনে যুক্ত হন।
শামসুন্নাহার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৫২ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। তিনি কলম্বোয় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইমেন দলের নেতৃত্ব দেন এবং সমগ্র এশিয়ার জন্য এই আন্তর্জাতিক মৈত্রী সংঘের আঞ্চলিক পরিচালক পদে নিয়োজিত হন।
তার প্রথম লেখা কবিতা প্রকাশিত হয় কিশোরদের ‘আঙ্গুর’ নামক মাসিক পত্রিকায়। আইএ পড়ার সময় তিনি ‘নওরোজ ও আত্মশক্তি’ পত্রিকার মহিলা বিভাগ সম্পাদনা করতেন। কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘বুলবুল’ (১৯৩৩) পত্রিকা হবীবুল্লাহ্ বাহার ও শামসুন্নাহার যুগ্মভাবে সম্পাদনা করেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ-পুণ্যময়ী (১৯২৫), ফুলবাগিচা (১৯৩৫), বেগম মহল (১৯৩৬), রোকেয়া জীবনী (১৯৩৭), শিশুর শিক্ষা (১৯৩৯), আমার দেখা তুরস্ক (১৯৫৫), নজরুলকে যেমন দেখেছি (১৯৫৮) ইত্যাদি।
১৯৬৪ সালের ১০ এপ্রিল (আজকের দিনে) ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

সব সময় আমরা চাঁদের এক দিকই দেখি কেন?
অনলাইন ডেস্ক

আমরা পৃথিবী থেকে চাঁদকে যেভাবে দেখি, তাতে সব সময় চাঁদের একই দিক চোখে পড়ে। চাঁদের রূপ পূর্ণিমা বা অমাবস্যায় বদলালেও, তার গায়ে থাকা গর্ত বা দাগগুলো সব সময় একই রকম দেখা যায়।
চাঁদ নিজে ঘোরে, আর একই সঙ্গে পৃথিবীর চারপাশেও ঘোরে। চাঁদ নিজের অক্ষের চারপাশে একবার ঘুরতে সময় নেয় ২৭.৩ দিন।
তবে পুরোপুরি একপাশই যে দেখা যায়, সেটাও ঠিক না। চাঁদের হালকা দুলুনি (যার নাম লুনার লাইব্রেশন) থাকার কারণে আমরা একটু বেশি অংশ দেখতে পাই, মোটামুটি ৫৯% পর্যন্ত চাঁদের মুখ দেখা যায়।
চাঁদ যেভাবে টাইডালি লকড হলো
প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে যখন চাঁদ নতুন তৈরি হচ্ছিল, তখন সেটি অনেক দ্রুত ঘুরছিল।
তাহলে চাঁদের আলো কম-বেশি লাগে কেন?
যদিও আমরা সবসময় চাঁদের একদিক দেখি, সেই অংশের সবটাই কিন্তু একসঙ্গে সূর্যের আলো পায় না।
কখনো অর্ধেক চাঁদ দেখা যায়, কখনো একটু বেশি মাত্রায়, কখনো আবার পুরোটা (পূর্ণিমা) আবার কখনো একেবারেই দেখা যায় না (অমাবস্যা)। মনে রাখা জরুরি যে চাঁদের অর্ধেক অংশ সব সময় সূর্যের আলোয় ভাসে। কিন্তু আমরা সব সময় সেই অংশটুকুই দেখতে পাই না।
অনেকে চাঁদের যেদিক আমরা দেখতে পাই না, তাকে ডার্ক সাইড বলেন। কিন্তু সেটি সব সময় অন্ধকার থাকে না। তাই জ্যোতির্বিদরা সেটাকে ফার সাইড অব দ্য মুন বা চাঁদের দূরের দিক বলেন।
সূত্র : বিবিসি

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
অনলাইন ডেস্ক

গত ৭ ও ৮ এপ্রিল কালের কণ্ঠের পত্রিকার প্রিন্ট এবং অনলাইন ভার্সনে ‘ক্লিনিকের জমি দখলে বাধা দেওয়ায় ইউপি সদস্যসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম’ ও ‘পাঁচজনকে কুপিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের জমি দখল’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন দুটিতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মো. আল আমিন ভূঁইয়া।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, প্রকাশিত প্রতিবেদনটি মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে এবং শব্দের ভুল চয়ন ও ব্যবহারের কারণে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে এবং আমার নাম ও অবস্থান ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ ভুয়া, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আমাকে সামাজিক ও দাপ্তরিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য স্থানীয় নূর মোহাম্মদ মেম্বার ষড়যন্ত্র করছেন।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বোড়ারচর কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথেই আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা বিদ্যমান রয়েছে।
প্রতিবাদে আরো বলা হয়, প্রকৃতভাবে নূর মোহাম্মদ মেম্বার হাসপাতাল সংলগ্ন সরকারি প্রাইমারি স্কুলের রাস্তার (হালটে) উপরে অবৈধভাবে ৭/৮টি দোকান নির্মাণ করে দীর্ঘ অনেক বছর যাবত ভোগ দখল করে আসছে যার প্রতিবাদ করলে রবিবার মো. কামাল ভূঁইয়া কে নূর মোহাম্মদ মেম্বারসহ তার দলবল আক্রমণ করে আমার ভাইকে মাথায় গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। সংবাদে আমাকে আসামি দেখালেও আমার নামে কোন মামলা নেই এবং মারামারির সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতাই ছিল না।