ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫
২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫
২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৬

এক মানুষের তিন বয়স যে দেশে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এক মানুষের তিন বয়স যে দেশে

‘আপনার বয়স কত’—এটি মোটের ওপর একটি সোজাসাপ্টা প্রশ্ন। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষের জন্য এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তত সহজ নয়!

দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথাগতভাবে জন্ম নেওয়ার পরপরই একটি শিশুকে এক বছর বয়সী হিসেবে ধরা হয়। পরের নববর্ষের দিন তার বয়সে যোগ হয় আরো একটি বছর। এর অর্থ হলো, ডিসেম্বরে জন্ম নেওয়া একটি শিশু মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দুই বছর বয়সী বলে বিবেচিত হবে!

বয়স নির্ধারণে কোরিয়ার এই প্রথাগত পদ্ধতি শিগগিরই পরিবর্তিত হতে পারে।

কারণ দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল এই শতাব্দীপ্রাচীন গণনাপদ্ধতি বাতিল করার উদ্যোগ নিচ্ছেন।

প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন প্রস্তুতি কমিটির প্রধান লি ইয়াং-হো বলেছেন, আসন্ন নতুন প্রশাসন দক্ষিণ কোরিয়াকে বিশ্বের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার জন্য বয়স গণনা করার পদ্ধতিকে প্রমিত করতে চাইছে। তিনি বলেন, বয়স গণনার বিভিন্ন পদ্ধতির কারণে ‘স্থায়ী বিভ্রান্তি’ আর ‘অপ্রয়োজনীয় সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে’।

নতুন প্রস্তাবটি কেউ কেউ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে বলে মনে হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সত্যিই কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় মানুষের বয়স গণনা করার উপায় তিনটি। আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটি ১৯৬২ সাল থেকে বেশির ভাগ আইনি সংজ্ঞা এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির জন্মতারিখ ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক গণনাপদ্ধতি ব্যবহার করে। বয়স গণনা করার আরেকটি সরকারি উপায় রয়েছে, যেখানে শিশুরা ‘শূন্য’ বছর বয়সে জন্ম নিয়ে প্রতিবছর ১ জানুয়ারিতে তাদের বয়সের সঙ্গে এক বছর যোগ হয়।

এর আওতায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে জন্ম নেওয়া একটি শিশুর বয়স ২০২২ সালের মধ্যেই দুই বছর হবে। যদিও সেই বছরের ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দুই বছর বয়সী হবে না। তারপর আছে ‘কোরীয় বয়স’ পদ্ধতি, যেটি সাধারণত সমাজের সবাই ব্যবহার করে। এতে প্রত্যেকে জন্মের সময়ই স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক বছর বয়সী হয়। আর জন্মতারিখ যা-ই হোক, নববর্ষের দিনেই বয়স এক বছর বেড়ে যায়।

কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরীয় ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক শিন জি ইয়ং বিবিসিকে বলেন, ‘দক্ষিণ কোরীয়দের কাছে সামাজিক প্রেক্ষাপটে কারো নাম জানার চেয়ে সে নিজের চেয়ে বড় কি না, তা জানা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেই ব্যক্তিকে কিভাবে সম্বোধন করতে হবে এবং সম্মানজনক কিছু বলা প্রয়োজন কি না, তা জানতে হয়। ’

সূত্র : বিবিসি।

 

মন্তব্য

‘বাংলা মাস মনে রাখে শুধু কৃষক’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘বাংলা মাস মনে রাখে শুধু কৃষক’
সংগৃহীত ছবি

নববর্ষের প্রথম সপ্তাহ হয়তো মনে রাখে বাঙালি। বাংলার বাকি মাস, দিন থাকে ভুলে। তবে একেবারে আলাদা বাঙালি কৃষক। বৈশাখের সকাল থেকে চৈত্রের সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলা সন হিসেবে রাখে কৃষক তার সব কাজকর্মে।

 

এক সময় নববর্ষ পালিত হতো ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। কৃষিকাজ ঋতুনির্ভর হওয়ায় এ উৎসবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষকের। তাই কৃষক সমাজের সঙ্গে বাংলা সাল এবং নববর্ষের একটি গভীর আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে ঐতিহাসিকভাবে। কেননা বাংলা সনের উৎপত্তি হয় কৃষিকে উপলক্ষ করেই।

১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনাও হয় আকবরের সময়। বাংলা বর্ষপঞ্জিটি প্রথমে তারিখ-ই-এলাহি বা ফসলি সাল নামে পরিচিত ছিল। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১০ অথবা ১১ মার্চ এটি বঙ্গাব্দ নামে প্রচলিত হয়।

আকবরের রাজত্বের উনিশতম বর্ষ, অর্থাৎ ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলা সাল প্রবর্তিত হলেও তা গণনা করা হয় ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৫ নভেম্বর থেকে। কারণ এদিন আকবর দ্বিতীয় পানিপথের যুদ্ধে হিমুকে পরাজিত করে সিংহাসনে আরোহণ করেন।

আকবরের বিজয়কে মহিমান্বিত করে রাখার লক্ষ্যে সিংহাসনে আরোহণের দিন থেকে বাংলা সাল গণনা শুরু হলেও কৃষি কাজের সুবিধার্থে এবং কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত উপায়ে অধিকতর সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যেই মূলত সম্রাট আকবর বাংলা সাল প্রবর্তন করেন। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌরসনকে ভিত্তি করে বাংলা সাল প্রবর্তিত হয়।

বাংলা সাল প্রবর্তনের আগে মুগল সম্রাটগণ রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে হিজরি বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করতেন।

কৃষকদের জন্যে হিজরি বর্ষপঞ্জির ব্যবহার ছিল খুবই ঝামেলাপূর্ণ। কারণ, চান্দ্র ও সৌরবর্ষের মধ্যে ১১-১২ দিনের ব্যবধান থাকায় ৩০ সৌরবর্ষে হতো ৩১ চান্দ্র বর্ষ। সে সময় রাজস্ব আদায় হতো চান্দ্রবর্ষ অনুযায়ী, কিন্তু ফসল সংগ্রহ হতো সৌরবর্ষ অনুযায়ী। তাই আকবর তার রাজত্বের শুরু থেকেই দিন-তারিখ গণনার একটি বিজ্ঞানভিত্তিক, কর্মোপযোগী ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি চালুর জন্য বর্ষপঞ্জি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।

এ উদ্দেশে তিনি বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমির ফতুল্লাহ শিবাজীকে প্রচলিত বর্ষপঞ্জিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের দায়িত্ব প্রদান করেন। তার প্রচেষ্টায় ৯৬৩ হিজরির মহররম মাসের শুরু থেকে বাংলা বর্ষের ৯৬৩ অব্দের সূত্রপাত হয়। যেহেতু ৯৬৩ হিজরির মহররম মাস বাংলা বৈশাখ মাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, সেহেতু চৈত্র মাসের পরিবর্তে বৈশাখ মাসকেই বাংলা বর্ষের প্রথম মাস করা হয়। চৈত্র ছিল বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস, যা সে সময় ব্যবহৃত হতো।

বাংলা সন প্রচলিত হওয়ার পর হতে মুগলরা জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত পহেলা বৈশাখ পালন করতেন। কৃষকরাও নববর্ষ পালন করতেন যথেষ্ট আড়ম্বরে। সে সময়ে বাংলার কৃষকরা চৈত্র মাসের শেষ দিন পর্যন্ত জমিদার, তালুকদারদের খাজনা পরিশোধ করতেন। তারা পরদিন খাজনা পরিশোধকারীদের মিষ্টিমুখ করাতেন বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে। এ উপলক্ষে সে সময় মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। ক্রমান্বয়ে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আনন্দময় ও উৎসবমুখী হয়ে ওঠে পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পালিত হতে থাকে শুভদিন হিসেবে।

বাংলা সালের জন্মলগ্ন থেকে নববর্ষের সকল উৎসব গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কে জড়িয়ে রয়েছে। ফলে গ্রামের সাধারণ মানুষ এবং কৃষকদের কাছে দিনটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ায় খাজনার দায় পরিশোধের বিষয়টি না থাকলেও সামর্থ্য মতো সারা বছরের ধারদেনা পরিশোধ করে নতুন বছরে নতুন জীবন শুরু করার অভিপ্রায় সব কৃষকের মনেই উৎফুল্লতা বয়ে আনে। এভাবেই দায়মুক্ত মানসিক প্রশান্তিতে কৃষকরা নববর্ষ পালন করে।

এদিকে কৃষক তার বাড়িঘর পরিষ্কার রাখে, কৃষি ও ব্যবহার্য সামগ্রী ধোয়া-মোছা করা, গবাদি পশুর জন্য পরিমাণমতো খাওয়া প্রস্তুত রাখা। সেদিন মাঠে পারতপক্ষে কাজ না করে এবং সকালে গোসল সেরে সেজেগুজে গ্রাম বা গঞ্জের বটতলায়, নদীর ঘাটে, হাটে বৈশাখী মেলায় উপস্থিত হয়। সেখানে আয়োজন থাকে গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রাচীন খেলাধুলা। নানা খাবারদাবারের এন্তেজাম। এদিনটিতে বিশেষ ভালো খাওয়া, ভালো থাকে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারাকে তারা ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক মনে করে। এদিন ঘরে ঘরে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীদের আগমন ঘটে। মিষ্টি, পিঠা, পুলি-পায়েসসহ নানা রকম লোকজ খাবার তৈরি ও খাওয়ানোর ধুম পড়ে যায়। একে অপরের সঙ্গে নববর্ষের শুদ্ধ শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

কৃষকদের বৈশাখ পালন একটু ভিন্ন আমেজ আর শুভ সুন্দরের বারতা নিয়ে হাজির হয় প্রতি বছর বৈশাখের প্রথম লগ্নে। আর এভাবে বাংলা মাস, দিন, বছর মনে রাখে বাঙালি কৃষক। 

সব কৃষকের জন্য নিরন্তর শুভ কামনা। শুভ নববর্ষ।

লেখক : কামরুজ্জামান হিমেল 
গণমাধ্যমকর্মী

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
স্বরণ

সাংবাদিক প্রফুল্লকুমার সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সাংবাদিক প্রফুল্লকুমার সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সংগৃহীত ছবি

বাংলার খ্যাতনামা সাংবাদিক প্রফুল্লকুমার সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ এপ্রিল (আজকের এই দিনে) তিনি কলকাতায় প্রয়াত হন। তিনি ছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে থেকে আজন্ম পত্রিকাটির সম্পাদকও হয়েছিলেন।

প্রফুল্লকুমার সরকারের জন্ম ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালিতে। পিতা প্রসন্নকুমার সরকার। তার পড়াশোনা শুরু হয় পাবনা জিলা স্কুলে। তারপর কলকাতার জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশনে তথা বর্তমানের স্কটিশ চার্চ কলেজে।

এই কলেজ থেকে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় প্রথম স্থান অধিকার করে বি.এ পাশ করেন এবং বঙ্কিম পদক পান। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে বি.এল পাশ করেন তিনি।

আরো পড়ুন
তারাপদ চক্রবর্তীর জন্মবার্ষিকী আজ

তারাপদ চক্রবর্তীর জন্মবার্ষিকী আজ

 

আইন পাশের পর তিনি কিছু দিন বর্তমানে বাংলাদেশের ফরিদপুরে ও বিহারের বর্তমান ঝাড়খণ্ডের ডালটনগঞ্জের মেদিনীনগরে ওকালতি করেন। পরে ওড়িশার ঢেঙ্কানল রাজপরিবারের গৃহশিক্ষক হন এবং ক্রমে দেওয়ানপদ লাভ করেন।

এরপর বন্ধু সুরেশচন্দ্র মজুমদারের আহ্বানে ও সহযোগিতায় জাতীয়তাবাদী পত্রিকা আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠা করেন। (প্রথম প্রকাশ ১৩ মার্চ ১৯২২, দোল পূর্ণিমার দিন)। 

১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর তিনি বাঘা যতীনের জীবনী ও তার বিষয়ে সম্পাদকীয় মন্তব্য প্রকাশ করে কারারুদ্ধ হন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে হতে আমৃত্যু তিনি আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। নিয়মিত সাহিত্যচর্চা করতেন।

কথা ও প্রবন্ধ সাহিত্যে তার রচনা উল্লেখযোগ্য। 

রচিত গ্রন্থগুলি হলো: ভ্রষ্টলগ্ন, অনাগত, বালির বাঁধ, ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু, জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ, শ্রীগৌরাঙ্গ প্রভৃতি।

আরো পড়ুন
আজ চৈত্রসংক্রান্তি

আজ চৈত্রসংক্রান্তি

 

বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তার স্ত্রী নির্ঝরিণী দেবী (১৮৯৪ - ১৯৬৩) ছিলেন একজন লেখিকা ও কংগ্রেসকর্মী। তিনিও স্বদেশী আন্দোলনে অংশ নিয়ে কারারুদ্ধ হন ১৯৩০ এবং ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে। তাদের সুযোগ্য পুত্র অশোক কুমার সরকার (১৯১২-১৯৮৩) ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর প্রধান হন।

খ্যাতনামা বাঙালি সাংবাদিক-সম্পাদক প্রফুল্লকুমার সরকার ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের ১৩ এপ্রিল কলকাতায় প্রয়াত হন। তার মৃত্যুর পর কলকাতা মহানগরীতে আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর কার্যালয় সংলগ্ন রাজপথের নামকরণ হয় প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট।

মন্তব্য

তারাপদ চক্রবর্তীর জন্মবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
তারাপদ চক্রবর্তীর জন্মবার্ষিকী আজ
সংগৃহীত ছবি

সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯০৯ সালের ১৩ এপ্রিল (আজকের এই দিনে) ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায় এক সঙ্গীতশিল্পী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তিনি নিজেও ছিলেন কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীতাচার্য। তিনি কোটালি ঘরানার পথপ্রদর্শক যা কোনো রাগ উপস্থাপনের সময় আলাপের ধীর পরিবেশনের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।

সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার কোটালিপাড়ায় এক সঙ্গীতশিল্পী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন সঙ্গীতজ্ঞ পণ্ডিত কুলচন্দ্র চক্রবর্তী এবং মাতা দুর্গারানী দেবী। তার পিতা, পিতামহ এবং প্রপিতামহ সকলেই সংগীতে পারদর্শী ছিলেন। সেই সূত্রে তিনি পরিবার থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।

শুরুতে কলকাতা বেতারে তবলা বাদকের চাকরি নেন। ক্রমেই উচ্চাঙ্গের শিল্পী হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। বাংলা খেয়াল ও বাংলা ঠুমরী গানের প্রবর্তক তিনি। তারাপদ বিভিন্ন সময়ে ওস্তাদ এনায়েত খাঁ, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ হাফিজ আলী খাঁ প্রমুখ সঙ্গীত সম্রাটের সঙ্গে তবলা সঙ্গীত করেন।

সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী কয়েকটি নূতন রাগের সৃষ্টি করেন। “ছায়াহিন্দোল” তার মধ্যে অন্যতম।

সুরতীর্থ নামে তার একটি গ্রন্থ রয়েছে।

তিনি বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত হন। ভাটপাড়া পণ্ডিতসমাজ কতৃর্ক সঙ্গীতাচার্য, বিদ্বৎ সম্মিলনী থেকে সঙ্গীতরত্নাকর ও কুমিল্লা সংগীত পরিষদ থেকে ‘’সংগীতার্ণব’’ উপাধি লাভ করেন।

১৯৭২ সালে তিনি সংগীত-নাটক অ্যাকাডেমির সদস্য নির্বাচিত হন এবং রাজ্য সরকারের আকাদেমি পুরস্কার পান। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকার তাঁকে জীবনসায়াহ্নে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করলে তিনি ওই উপাধি গ্রহণে অসম্মতি জানান। তিনি বিশ্বভারতীর নির্বাচন-বোর্ডের সদস্য ছিলেন।

তিনি ১৯৭৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মারা যান।

মন্তব্য

৬০০ অতিথিকে খাওয়াতে পারবে না কনের পরিবার, বিয়ে ভেঙে দিলেন বর!

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৬০০ অতিথিকে খাওয়াতে পারবে না কনের পরিবার, বিয়ে ভেঙে দিলেন বর!
সংগৃহীত ছবি

বরযাত্রী হিসেবে অতিথি থাকবে ৬০০ মানুষ। আর সবাইকে খাওয়াতে হবে কনের পরিবারকে। কিন্তু এতে অসম্মতি জানানোই বিয়ে ভেঙে দিলেন বর! এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করলেন কনের ভাই। আর তাতেই শোরগোল উঠেছে।

এ বিষয়ে আইনি প্রতিকার জানতে চেয়ে এই পোস্ট করেছেন তিনি। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের একটি ছোট শহরে।

কনের ভাই রেডিটে তার পোস্টের শিরোনামে লিখেছেন, ‘বিশেষ একটি যৌতুকের দাবিতে আমার বোনের বিয়ে ভেঙে দিয়েছে পাত্রপক্ষ।’ এই বিষয় নিয়ে জোর চর্চা চলতে থাকে ওই প্ল্যাটফরমে।

তিনি তার পোস্টে জানান, তার দিদির সঙ্গে এক ব্যক্তির বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে আত্মীয়সূত্রেই আলাপ হয়েছিল তাদের। কিন্তু সব কিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে শেষ মুহূর্তে খাবারের বন্দোবস্ত করা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়। আর এই কারণে বিয়েই বাতিল করে দেন সেই ব্যক্তি।

আরো পড়ুন
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ ফোলা থাকে কেন

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ ফোলা থাকে কেন

 

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি ভাবিওনি যে আজ আমায় এই দিনটা দেখতে হবে। আমার দিদি এই ব্যক্তির বাগদত্তা ছিলেন। আমাদের আত্মীয়দের মাধ্যমেই এই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়, পরিচয় হয়। আমরা খুবই ছোট শহরে থাকি, যেখানে পঞ্চায়েতরাজ এখনো তুঙ্গে। আমাদের এলাকায় দুই ভাবে মানুষের বিয়ে হয়।

এক গ্র্যান্ড মাটন বিরিয়ানি ওয়েডিং, যেখানে খরচ হয় ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা, আর একটি হলো সাধারণ টি-ওয়েডিং।’

তিনি উল্লেখ করেন, প্রথমে দুই পরিবারের মধ্যেই ঠিক হয়েছিল যে তারা তাদের অতিথিদের খাবার খরচ বহন করবেন। কিন্তু বরের পরিবার হঠাৎ করেই দাবি তোলে যে কনের পরিবারকে ৬০০ অতিথির সবার খাবারের খরচ বহন করতে হবে। আর এই হঠাৎ দাবিতে এত খরচ বহন করা তার পরিবারের পক্ষে বহন করা সম্ভব ছিল না।

আরো পড়ুন
নববর্ষের সঙ্গে পান্তা-ইলিশের কী সম্পর্ক

নববর্ষের সঙ্গে পান্তা-ইলিশের কী সম্পর্ক

 

তার পোস্টে আরো উল্লেখ করে লেখেন, বরের পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো ছিল না। ‘বিষয়টি হলো বর নিজেরাই খুব গরিব, আমি বুঝতে পারছি না যে তারা কিভাবে এত টাকা চাইতে পারে, যা তারা নিজেরাই মেটাতে পারবে না।’ তার মতে, বর ফোনে এই বিয়ে বাতিল করে দেন। আর এই কথোপকথন রেকর্ড করা হয়। বর বলেন, ‘যেহেতু আপনি সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের জন্য রাজি হয়ে গেছেন। এ ক্ষেত্রে আমাদের ৬০০ জন অতিথির খাবারের ব্যবস্থা করার কথা রয়েছে। তবে আমাদের কাছে এত টাকা নেই, তাই আমরা বিয়ে বাতিল করছি।’

তিনি আরো উল্লেখ করেন, বিয়ে হওয়ার কথা ছিল মে মাসে। কয়েক দিন আগে বরপক্ষকে তারা অনুরোধ করেন। তা সত্ত্বেও পাত্রের পরিবার বিয়ের এক মাস আগে বাতিলের কথা জানিয়ে দেয়। বিয়েতে টাকা খরচ করতে না পারাই এর কারণ বলে জানিয়েছে পাত্রপক্ষ। পাত্র নিজে ফোন করে জানান যে তিনি ৬০০ জন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা করেছেন এবং যেহেতু কনের পরিবার তাদের খাবারের জন্য টাকা দিতে অস্বীকার করেছেন, তাই তারা এই বিয়ে বাতিল করছেন।

আরো পড়ুন
কাপ থেকে চা-কফির দাগ দূর করবেন যেভাবে

কাপ থেকে চা-কফির দাগ দূর করবেন যেভাবে

 

কনের ভাই পোস্টে লেখেন, ‘কেবল লাখ লাখ টাকা আমরা খরচ করে অতিথি সেবা করতে পারব না এবং ঋণের বোঝা মাথায় চাপাতে পারব না বলে আজ তারা এই তুচ্ছ কারণে বিয়ে বাতিল করে দিয়েছে। একটা ফোনেই এই বিয়ে বাতিল করেছেন বর।’

পোস্টে তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমার মা-দিদি সর্বক্ষণ কেঁদে চলেছেন। আইনি পথে গেলে কী প্রভাব পড়বে দিদির ওপরে তার সম্মানের ওপরে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত আমাদের পরিবারের সবাই। আমরা এখন কী করব? পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বিচার চাইব নাকি আইনের রাস্তায় হাঁটব?’

প্রমাণ হিসেবে, তিনি উল্লেখ করেছেন, বরের পরিবার বাগদান অনুষ্ঠানে কনেকে একটি আংটি ও শাড়ি দিয়েছিল। যেখানে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন প্রবীণ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া তাদের কাছে বরের বিয়ে বাতিল করার একটি ফোন রেকর্ডিং রয়েছে, যা তাদের মামলাকে আরো শক্তিশালী করে।

আরো পড়ুন
ফের প্রাক্তনের প্রেমে পড়ার আগে যে বিষয়গুলো ভাবতেই হবে

ফের প্রাক্তনের প্রেমে পড়ার আগে যে বিষয়গুলো ভাবতেই হবে

 

এই পোস্টের কমেন্টে অনেকেই বরের পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং কনের পক্ষকে সমর্থন জানিয়েছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, ‘সময় থাকতে এই অর্থের বদলে বিবাহের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, এজন্য় কৃতজ্ঞ থাকুন। ভবিষ্যতে যদি তারা আপনার বোনকে আরো টাকার জন্য চাপ দিত, তখন আপনি কী করতেন?’

একজন লিখেছেন, ‘বিবাহবিচ্ছেদের চেয়ে বিয়ের বাগদানের পর বিয়ে ভেঙে যাওয়া অনেক ভালো।’ আরেক জন বলেছেন, ‘এই ঝামেলা থেকে বেরিয়ে আসুন।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘বিবাহ বাতিলের ফলে কোনো আইন লঙ্ঘিত হয়নি। এতে কোনো অপরাধ নেই। বিবাহ অনুষ্ঠানের ধরন ও ব্যয় নিয়ে আপনার মতবিরোধ ছিল। যৌতুক প্রতিরোধ আইন অনুসারে এই খরচ যৌতুকের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না।’

আরো পড়ুন
বাচ্চাদের সবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করাবেন যেভাবে

বাচ্চাদের সবজি খাওয়ানোর অভ্যাস করাবেন যেভাবে

 

সূত্র : আনন্দবাজার, ওয়ানইন্ডিয়া।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ