আরও শক্তিশালী হচ্ছে সেনাবাহিনী, যোগ হবে নয়া ৯৭টি ইউনিট

কালের কণ্ঠ অনলাইন
কালের কণ্ঠ অনলাইন
শেয়ার
আরও শক্তিশালী হচ্ছে সেনাবাহিনী, যোগ হবে নয়া ৯৭টি ইউনিট
ফাইল ছবি

সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বর্তমান বাহিনীর সঙ্গে আগামী ৪ বছরে আরও ৯৭টি ইউনিট যোগ করবে। তিনটি ক্যান্টনমেন্টের অধীনে এই ইউনিটগুলোর পত্তন করা হবে। এরই সমান্তরালে সংগঠিত করা হবে একটি পদাতিক ব্রিগেড। এছাড়া ৬৬টি পদাতিক ব্যাটালিয়নকে সজ্জিত করা হবে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র আর গোলাবারুদে।

সম্প্রতি জাতীয় সংসদের সর্বশেষ অধিবেশনে এসব তথ্য জানান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক। 
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রহিম উল্লাহর (ফেনী-৩) প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এবং একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত এই মন্ত্রী আরও বলেন, সরকার সিলেট সেনানিবাসের অধীনে ১৯টি, রামু সেনানিবাসের অধীনে ২২টি ও লেবুখালীতে শেখ হাসিনা সেনানিবাসের জন্য ৫৬টি ইউনিট গড়ে তুলবে।

একইসঙ্গে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে প্রস্তাবিত একটি ক্যান্টনমেন্টের অধীনে একটি রিভারাইন (নদী তীরবর্তী) ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নও গড়ে তোলা হবে।

\"\"

দুঃসাহসী স্কাই ডাইভিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন কমান্ডো

এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষ ৫৩টি ইউনিট হেডকোয়ার্টার্স গঠন করেছে যার মধ্যে আছে ২টি আর্টিলারি (গোলন্দাজ) ব্রিগেড, চারটি ইনফ্যান্ট্রি (পদাতিক) ব্রিগেড ও একটি কম্পোজিট (মিশ্র বা যৌগিক) ব্রিগেড।

সেনাবাহিনীর কর্মযজ্ঞের বিস্তার ও উন্নতি ঘটাতে সম্প্রতি সিলেট ও কক্সবাজারে আরও দুটি পদাতিক ডিভিশন গঠন করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে সেনা কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে যেসব অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছে তার মধ্যে আছে আর্মার্ড পারসোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি), আর্মার্ড রিকভারি ভেহিকল (এআরভি), এপিসি অ্যাম্বুলেন্স, হেলিকপ্টার, হুইল লোডার, আর্মার্ড ভেহিকল, ট্যাঙ্ক, ট্যাঙ্ক ট্রান্সপোর্টার, উইপন লোকেটিং রাডার (শত্রুর অস্ত্রের অবস্থান চিহ্নিতকারী রাডার), মেশিনগান জিপ, সেল্ফ প্রপেলড গান (এসপি গান), অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড উইপন (ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী দূরনিয়ন্ত্রণযোগ্য অস্ত্র বা এটিজিডব্লিউ), ট্যাঙ্ক ডেস্ট্রয়ার আর্মস, সাউন্ড রেঞ্জিং ইকুইপমেন্টস (শব্দ বিন্যাসকারী বা বিশ্লেষক যন্ত্রপাতি), মাল্টি লঞ্চ রকেট, ডফিন (DAUPHIN) হেলিকপ্টার, ফোর্থ জেনারেশন ট্যাঙ্ক এমবিটি-২০০০, এমআই ১৭১ মিলিটারি হেলিকপ্টার, এফএম-৯০ স্যাম (এসএএম বা ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য মিসাইল) সিস্টেম, আর্মার্ড স্পিডবোট ও হাল্কা উড়োজাহাজ। এসব সামরিক সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়েছে গত ২০০৯ সাল থেকে নিয়ে এখন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে। অর্থাৎ ওই সময়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরবর্তী সময়ে থেকে এখন পর্যন্ত একই সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ পর্যন্ত এসব অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করা হয়।

 

\"\"

প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক আরও জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বর্তমান জনবল এক লাখ ৬২ হাজার জন।
সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ।

‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তিনটি ইনডিপেন্ডেন্ট কর্পসের অধীনে তার কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এই তিনটি কর্পস হচ্ছে সেন্ট্রাল কর্পস, ইস্টার্ন কর্পস এবং ওয়েস্টার্ন কর্পস।

একজন করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদমর্যাদার সিনিয়র কর্মকর্তা হবেন প্রতিটি কর্পসের প্রধান (কমান্ডার)।

এসব কর্পসের কমান্ডাররা প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন- গুরুত্বপূর্ণ বা প্রধান বিষয়গুলো বাদে।

\"\"

বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত হচ্ছে ৯টি এরিয়া কমান্ড এবং ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনসমূহের মাধ্যমে। এগুলো হচ্ছে- সাভার এরিয়া কমান্ড এবং ৯ম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, কক্সবাজার এরিয়া কমান্ড এবং রামুর দশম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, বগুড়া এরিয়া কমান্ড এবং ১১তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, সিলেট এরিয়া কমান্ড এবং ১৭তম ইনফ্যান্ট্রি ভিভিশন, ঘাটাইল এরিয়া কমান্ড এবং ১৯তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ড এবং ২৪তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, কুমিল্লা এরিয়া কমান্ড এবং ৩৩তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, যশোর এরিয়া কমান্ড এবং ৫৫তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন, রংপুর এরিয়া কমান্ড এবং ৬৬তম ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশন ও ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রিন কমান্ড (আর্টডক বা এআরটিডিওসি)। এছাড়াও সেনাসদরের সরাসরি কমান্ডে আছে স্বতন্ত্র ইউনিটসমূহ।

দেশজুড়ে বর্তমানে ২৮টি ক্যান্টনমেন্ট আছে যেখানে সেনাসদস্যরা কর্মরত আছেন, প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ও বসবাস করছেন। এগুলো হচ্ছে- কক্সবাজারে আলীকদম সেনানিবাস, বান্দরবান সেনানিবাস, চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ), চট্টগ্রাম সেনানিবাস, কুমিল্লা সেনানিবাস, ঢাকা সেনানিবাস, রাঙামাটির দীঘিনালা সেনানিবাস, চট্টগ্রাম সেনানিবাস, খুলনার জাহানাবাদ সেনানিবাস, বগুড়ার জাহাঙ্গিরাবাদ সেনানিবাস, সিলেটের জালালাবাদ সেনানিবাস, যশোর সেনানিবাস, রাঙামাটির কাপ্তাই সেনানিবাস, খাগড়াছড়ি সেনানিবাস, দিনাজপুরের খোলাহাটি সেনানিবাস, বগুড়ার মাঝিরা সেনানিবাস, ঢাকার মিরপুর সেনানিবাস, ময়মনসিংহ সেনানিবাস, ঢাকার পোস্তগোলা সেনানিবাস, নাটোর সেনানিবাস, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাস, রাজশাহী সেনানিবাস, কক্সবাজারের রামু সেনানিবাস, রাঙামাটি সেনানিবাস, রংপুর সেনানিবাস, নীলফামারীতে সৈয়দপুর সেনানিবাস, ঢাকার সাভার সেনানিবাস ও ঘাটাইলের শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস।

\"\"

বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ধরনের পদক

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখার মধ্যে সেনাবাহিনী হচ্ছে বৃহত্তম। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ডের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কৌশলে প্রয়োজনীয় শক্তি ও সক্ষমতার যোগান দেওয়া এবং একইসঙ্গে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের অঞ্চলগত সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

উল্লেখ করা যেতে পারে যে বাংলাদেশকে তিনদিক থেকে ঘিরে থাকা প্রতিবেশী ভারতের সেনাবাহিনী রেজিমেন্টাল পদ্ধতিতে বিন্যস্ত, কিন্তু পরিচালনগত ও ভৌগলিকভাবে সাতটি কমান্ডের অধীনে বিভক্ত যার মৌলিক ফিল্ড ফর্মেশন হচ্ছে ডিভিশনভিত্তিক।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঐকমত্যে না পৌঁছানোর উপায় নেই : রিজওয়ানা হাসান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঐকমত্যে না পৌঁছানোর উপায় নেই : রিজওয়ানা হাসান
সংগৃহীত ছবি

জনগণকে আস্থায় যদি আনতে হয়, তাহলে যে সংস্কারগুলো জনগণের ক্ষেত্রে আসে, সেগুলোর ক্ষেত্রে ঐকমত্যে না পৌঁছানোর কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বুধবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘গতানুগতিক কিছু চ্যালেঞ্জ তো থাকেই। তবে এখন একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বিভিন্ন সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য গড়ার।

এটাকে চ্যালেঞ্জ বলেন আর না বলেন, এটা একটা প্রক্রিয়া তো বটেই। আরেকটা হচ্ছে নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে করে দেওয়া, জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা।’

আরো পড়ুন

বরিশালে 'ফরচুন সুজ'-এর গুদামে আগুন

বরিশালে ‘ফরচুন সুজ’-এর গুদামে আগুন

 

তিনি বলেন, ‘আরেকটা বড় বিষয় হচ্ছে, সব সময় আমরা বলি, এই যে জুলাই-আগস্টে যে হত্যাকাণ্ডটা হলো, যে বর্বরতাটা হলো, এটার একটা সুষ্ঠু বিচার। এখন আমাদের সীমিত সময়ে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব, মানুষকে এই বিচারের কিছু কিছু রায় যদি সামনে দিতে পারি, তাদের মধ্যে যেন ওই আস্থাটা আসে, সত্যিই এই বর্বরতার একটা বিচার হচ্ছে।

আরো পড়ুন

চব্বিশের অভ্যুত্থান একাত্তরের স্বাধীনতা রক্ষা করেছে : আসিফ মাহমুদ

চব্বিশের অভ্যুত্থান একাত্তরের স্বাধীনতা রক্ষা করেছে : আসিফ মাহমুদ

 

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘প্রত্যাশা হলো, জাতীয় স্বার্থে ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা ঐকমত্য করব। কিন্তু একেকজন মানুষ একেকটা বিষয় একেকভাবে দেখে। দৃষ্টিভঙ্গি একেকভাবে আনে। সেই দৃষ্টিভঙ্গির যে তফাতগুলো আছে, সেগুলো কমিয়ে একটা জায়গায় নিয়ে আসা, সেটা একটু সময় লাগবে।

মন্তব্য
কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল হক (অব.)

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী না থাকলে এই দেশটাই স্বাধীন হতো না

শেয়ার
মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী না থাকলে এই দেশটাই স্বাধীন হতো না

রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) চেয়ারম্যান কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল হক (অব.) বলেছেন, জাতির সমৃদ্ধি চাইলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করে ভালো মানুষকে নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী না থাকলে এই দেশটাই স্বাধীন হতো না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল হক (অব.) একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে বলেন, কোনো ব্যক্তির আঙুলের ইশারায় এই দেশ স্বাধীন হয়নি।

এই দেশটাই স্বাধীন হতো না যদি আমাদের সেনাবাহিনী নেতৃত্বে না থাকত। এই দেশ স্বাধীন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে এ দেশের আপামর জনসাধারণ। সেই সময় যদি সেনাবাহিনী না থাকত, জেনারেল ওসমানী, মেজর জিয়া, মেজর মোশাররফ, শফিউল্লাহ না থাকতেন, সেই ৩০/৪০ জন অফিসার, সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৫টা ব্যাটালিয়ন না থাকত তাহলে এই দেশ কিয়ামত পর্যন্ত স্বাধীন হতো না। শুধু এক হাত থেকে আরেক হাত বদল হতো।
পাকিস্তান থেকে ভারতের হাতে চলে যেত। কিন্তু আল্লাহর বিশেষ রহমত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটা বিপুলসংখ্যক বাঙালি অফিসার সেই সময় এ দেশেই অবস্থান করছিলেন। সেটা ভারতের চিন্তার মধ্যেও ছিল না যে এই দেশে এমন সশস্ত্র বিদ্রোহ হতে পারে। এই দেশের স্বাধীনতার সূচনা করেছিলেন সেনাবাহিনী।
যুদ্ধের কমান্ডার ইন চিফ ছিলেন জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী।  তাঁর নেতৃত্বে ১১টা সেক্টরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যুদ্ধ হয়েছে। এটা কারও দয়ার দান নয়। সেনাবাহিনী বাংলাদেশের একটি অন্যতম স্টেকহোল্ডার। একটা দেশের সামরিক বাহিনী শক্তিশালী না থাকলে যে কেউ সেই দেশ দখল করে নিতে পারে।
দেশের শত্রুরাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হওয়াটাই স্বাভাবিক। যারা ষড়যন্ত্র করছে তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে।

অবসরপ্রাপ্ত ১১ হাজারের বেশি সদস্যের সংগঠন রাওয়ার চেয়ারম্যান বলেন, সেই সময় সেনা সদস্যরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। অথচ তারা শপথ নিয়েছিলেন পাকিস্তান রক্ষা করার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। পাকিস্তান যদি সফল হতো তাহলে তাদের সবার ফাঁসি হতো। ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদন্ড হতে পারত। সামরিক বাহিনীর সদস্যরা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করার শপথ নেন। অন্য কেউ জীবন উৎসর্গ করার শপথ নেন না। দেশের প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, সেক্রেটারি, পুলিশপ্রধান কেউ জীবন উৎসর্গের শপথ নেন না। সামরিক বাহিনী তাদের জীবন- যৌবন দিয়ে দেশের জন্য কাজ করে থাকে। একাত্তর সালে সেনাবাহিনী না থাকলে দেশটা স্বাধীন হতো না। আবার পঁচাত্তর সালে আর্মি না থাকলে দেশটা ইন্ডিয়ার হাতে চলে যেত। দেশের ঐক্যের প্রতীক হিসাবে সেই সময় বিদ্রোহ করেছিল সেনাবাহিনী। ’৭৭ সালেও আবার চেষ্টা হয়েছিল। গত বছর ৫ আগস্ট আর্মি যদি ঘুরে না দাঁড়াত, শেখ হাসিনার পদলেহন করত, তাহলে কী অবস্থা হতো? সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যদি সব দলকে নিয়ে বৈঠক করে জাতির উদ্দেশে ভাষণ না দিতেন। একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে সহায়তা না করতেন তাহলে আমাদের কী অবস্থা হতো?

তিনি বলেন, আর্মি সবসময় দেশের জন্য, দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য কাজ করে থাকে। ভারত বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারছে না। বাংলাদেশকে তারা গ্রহণ করতে পারছে না। তারা এই দেশকে অস্থিতিশীল রাখতে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে দালাল তৈরি করেছে। এই দেশকে তারা দালালদের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে একটা গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।

সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল হক (অব.) বলেন, রাজনীতি করা প্রতিটি মানুষের অধিকার। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে যে কেউ রাজনীতি করতে পারেন। সেনাবাহিনীর ভালো, দেশপ্রেমিক মানুষরা রাজনীতিতে এলে দেশের উন্নয়ন হবে। তারা পার্লামেন্টে গেলে চুরি করবে না। দেশের জন্য কাজ করবেন। যারা ভালো দেশপ্রেমিক তারা যেন রাজনীতিতে আসে।

বিডিআর হত্যাকান্ড প্রসঙ্গে তাঁর পর্যবেক্ষণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকান্ড সরাসরি ইন্ডিয়া করিয়েছে সেনাবাহিনীতে দুর্বল করার জন্য এবং শেখ হাসিনার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য। তবে এখানে ভুল আছে। ভুলটা হলো কমান্ড ফেইলিউর। এতবড় ঘটনা ঘটল বিডিআর প্রধান জানলেন না। এটা বড় ব্যর্থতা। জেনারেল শাকিল থেকে শুরু করে সিনিয়র কর্মকর্তারা জানলেন না-এটা বড় ব্যর্থতা। এত বড় একটা ঘটনা হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়নি। এটার বীজ অনেক আগে থেকেই বপন করা ছিল। দ্বিতীয়ত, যে অপকর্মগুলো তারা করছিল, হত্যাকান্ড ঘটিয়েয়েছিল, অফিসারদের মারছিল তখন যারা বাইরে আর্মি ছিল, সেনাপ্রধানের দায়িত্ব ছিল সঙ্গে সঙ্গে তার ফোর্স পাঠিয়ে এই হত্যাকান্ড বন্ধ করে দেওয়া। এটা মাত্র এক ঘণ্টার কাজ। আর্মির যে ফায়ার পাওয়ার আছে তা দিয়ে সহজেই দমন করা যেত। ৩টা গেট দিয়ে ৩টা এপিসি ঢুকিয়ে দিলে তারা কিছুই করতে পারত না। তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান মইন ইউ আহমেদের মতো অপদার্থ অযোগ্য মানুষের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে অফিসারদের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তিনি তার ভাইদের শঁপে দিয়েছেন শত্রুর হাতে। যারা মানুষ মারছে তাদের জন্য আবার প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করতে হবে কেন? আপনার ঘরে আগুন লাগছে আপনি আগুন না নিভিয়ে ফায়ার সার্ভিসে ফোন করতে থাকবেন। নিজে চেষ্টা করবেন না? আরেকটা ফেইলিউর হলো, সেই সরকারকে তখন সেনাবাহিনী উৎখাত করে নাই। যেই সরকার সেনাবাহিনীকে হত্যা করতে পারে, তাদের উৎখাত করা দরকার ছিল। জনগণের ফেইলিউর হলো, তারা কেন এই সরকারকে উৎখাত করতে রাস্তায় নেমে আসেনি। তাদের উচিত ছিল রাস্তায় নেমে আসা। কারণ, যেখানে সামরিক বাহিনীতে হত্যা করা হয় সেখানে এই দেশে কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। পুরো দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আসা উচিত ছিল। তাহলে দেশের এই নির্মম অবস্থার সৃষ্টি হতো না।   

সেনা কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে রাওয়া চেয়ারম্যান কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল হক (অব.) বলেন, তৎকালীন ডিজিএফআই ছিল সরাসরি ফ্যাসিস্ট হাসিনার আন্ডারে। আর্মির হেড কোয়ার্টারের আন্ডারে ছিল না। এনএসআই, র‌্যাব, এসএসএফ, ডিজিডিপি-এরা ছিল শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণে। তাদের নিয়ন্ত্রণ আর্মি হেড কোয়ার্টারের আন্ডারে ছিল না। সব প্রধানমন্ত্রীর পকেটের জিনিস। চুরি সব তারাই করেছে। আর্মি অফিসারদের মধ্যে যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার অবশ্যই হবে। দোষী হলে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তারিক সিদ্দিক হবেন। আসলে সবাই আর্মির কথা বলেন, আসল চুরি তো করেন আমলারা। দেশ বিক্রি করেন পলিটিশিয়ানরা। চুক্তি করেন আমলারা। ড্রাফট করেন আমলারা। বেগম পাড়ায় বাড়ি করেছেন কারা? সেখানে আর্মি অফিসারদের বাড়ি নেই। বাড়ি আছে পলিটিশিয়ানদের, আমলাদের। তাদের ধরতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের অবস্থান ও নীতির পরিবর্তন করতে হবে। তাদের দলে যেসব দুর্বৃত্ত, চোর, বাটপার, লুটেরা, হত্যাকারী আছে তাদের বের করে দিয়ে ভালো মানুষদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। যতদিন পর্যন্ত ভালো লোককে নির্বাচিত করতে না পারবে ততদিন আমাদের কোনো শান্তি আসবে না। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমরা মার্কাকে ভোট দেই। মানুষকে ভোট দেই না। চোর-ডাকাতকে ভোট দেই। মার্কা চিনি, ভালো মানুষ চিনি না। ৫০০ টাকায় ভোট বিক্রি করে দেই। আমাদের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে নারী, বৃদ্ধ ও শিশু বাদ দিলে প্রায় ১০ কোটি ইয়াং-এনার্জিটিক তরুণ রয়েছেন। এই ১০ কোটি মানুষকে জনসম্পদে পরিণত করে তাদের কাজে লাগানো গেলে বাংলাদেশের পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। এই ১০ কোটি জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তর করে সরকারিভাবে যদি বিদেশে পাঠাতে পারি, সুপারভাইজারের নিচে পাঠাব না- তাহলে আমাদের অগ্রগতি কেউ ঠেকাতে পারবে না। পৃথিবীতে মানুষের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছু হতে পারে না।

তিনি বলেন, মানুষের চরিত্র নষ্ট করে দিয়েছে পলিটিক্যাল পার্টিগুলো। চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি এগুলোর সঙ্গে ম্যাক্সিমাম পলিটিক্যাল পার্টিগুলো জড়িত। সেই চরিত্র ঠিক করার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। ইসলামী আদর্শ যোগ করতে হবে। তাহলেই এই দেশ হবে বিশ্বের অন্যতম একটি শান্তিপূর্ণ দেশ।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন। 

মন্তব্য

বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি
মার্কো রুবিও

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ শুভেচ্ছা জানান তিনি।

বিবৃতিতে মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশের মানুষকে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। উদযাপনের এই মুহূর্ত এমন এক সময়ে এসেছে যখন অন্তর্বর্তী সরকার জাতিকে এমন একটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করছে যা বাংলাদেশের মানুষকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেবে।

 
তিনি বলেন, একটি উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের দিকে যাত্রায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার উন্নয়নে আমাদের অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বিশেষ এই উপলক্ষে আমি উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং উভয় জাতিকে নিরাপদ, শক্তিশালী এবং আরো সমৃদ্ধ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।

মন্তব্য

ঈদে ফিরতি ট্রেনযাত্রার ৫ এপ্রিলের টিকিট মিলছে আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদে ফিরতি ট্রেনযাত্রার ৫ এপ্রিলের টিকিট মিলছে আজ

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদ পরবর্তী ফিরতি ট্রেন যাত্রার ৫ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট মিলছে আজ বুধবার। আজ সকাল ৮টায় তৃতীয় দিনের মতো ফিরতি যাত্রার পশ্চিমাঞ্চলের অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। দুপুর ২টা থেকে পাওয়া যাবে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট।

আরো পড়ুন
সুযোগ বহুদলীয় গণতন্ত্র পথচলা নিশ্চিতের

সুযোগ বহুদলীয় গণতন্ত্র পথচলা নিশ্চিতের

 

এর আগে গত ৯ মার্চ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অগ্রিম টিকিট বিক্রির তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবারের মতো এবারও আন্তঃনগর ট্রেনের ৭ দিনের অগ্রিম টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি করা হচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি হওয়ায় কোনো টিকিট রিফান্ড করার সুযোগ থাকছে না।

আরো পড়ুন
সুদানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শত শত মানুষকে হত্যার অভিযোগ

সুদানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শত শত মানুষকে হত্যার অভিযোগ

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের পরের আন্তঃনগর ট্রেনের ৩ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৪ মার্চ, ৪ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হয়েছে ২৫ মার্চ।

এ ছাড়া ৬ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৭ মার্চ, ৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৮ মার্চ, ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ২৯ মার্চ এবং ৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে ৩০ মার্চ।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ