<article> <p style="text-align: justify;">গরুর দুধও পুষ্টিগুণে ভরপুর। কিন্তু শিশুর প্রথম বছরে গরুর দুধ না খাওয়ানোই ভালো। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন অধ্যাপক ডা<b>. প্রণব কুমার চৌধুরী</b></p> <p style="text-align: justify;">সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ</p> <p style="text-align: justify;">চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।</p> <p style="text-align: justify;">গরুর দুধ সব মানুষের জন্য পুষ্টি জোগানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এটি এমন এক খাবার, যাতে আছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন। ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মতো খনিজ পদার্থও এতে ভরপুর রয়েছে। তবু বৈজ্ঞানিক বিবেচনায় শিশুর প্রথম বছরে গাভির খাঁটি দুধ না খাওয়ানোই শ্রেয়।</p> <p style="text-align: justify;"><b>পুষ্টিগুণের পার্থক্য</b></p> <p style="text-align: justify;">খাদ্যশক্তি বিচারে গরুর দুধ ও মায়ের দুধে সমতা থাকলেও পুষ্টিগুণ বিচারে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">* গরুর দুধে শ্বেতসার বা ল্যাকটোজের মান প্রতি ডেসিলিটার ৪.৭ গ্রাম, মায়ের দুধে যা ৭.১ গ্রাম। মায়ের দুধের এ ল্যাকটোজ অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করে নবজাত ও অল্পবয়সী শিশুর দেহ-অস্থি মজবুত করতে সহায়তা করে; সাহায্য করে গ্যালাকটোলিপিড তৈরির মাধ্যমে মস্তিষ্ককোষের বৃদ্ধি ও বিকাশ সাধনে। শিশু হয় বুদ্ধিমান ও স্বাস্থ্যবান।</p> <p style="text-align: justify;">* গরুর দুধে আমিষ বা প্রোটিনের পরিমাণ খুব বেশি, যা প্রতি ডেসিলিটারে ৩.১ গ্রাম।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এতে আছে ক্যাসিনের আধিক্য। আছে বিটা ল্যাকটোগ্লোবিনের উপস্থিতি। ফলে গরুর দুধ পানরত শিশু অ্যাকজিমা, পেটের প্রদাহ ও মলে রক্তক্ষরণের সমস্যায় ভোগে। মায়ের দুধে প্রোটিন প্রতি ডেসিলিটারে ১.০৬ গ্রাম, শিশুর প্রয়োজন মতোই স্বাভাবিক।</p> <p style="text-align: justify;">* গরুর দুধে চর্বি আছে প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৮ গ্রাম, পরিমাণে তা মায়ের দুধের চেয়ে কম।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">আর নেই অতি জরুরি ফ্যাটি এসিড, যা শিশুর মস্তিষ্কের বৃদ্ধি বিকাশের জন্য একান্ত জরুরি।</p> <p style="text-align: justify;">* গরুর দুধে সোডিয়ামের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ০.৭৭ গ্রাম, যা মায়ের দুধের চার গুণেরও বেশি। ক্যালসিয়াম ০.৪ গুণ, পটাশিয়াম তিন গুণ ও ফসফরাস প্রায় সাড়ে ছয় গুণেরও বেশি। শুধু প্রয়োজনীয় জিংক ছাড়া অন্যান্য খনিজ পদার্থ, যেমন—ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি আছে বেশি মাত্রায়। এক বছরের কম বয়সী শিশুকে গরুর দুধ খাওয়ানো হলে এই অতিরিক্ত মাত্রার আমিষ ও খনিজ পদার্থ নিষ্কাশনে কিডনি বাধার সম্মুখীন হয়। এ ছাড়া এই বয়সে গরুর দুধ পান করা শিশু রক্তস্বল্পতার শিকার হয়।</p> <p style="text-align: justify;">* গরুর দুধে কমবয়সী শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ‘এ’ ও ‘সি’ ভিটামিন আছে কম মাত্রায়, আর কম মাত্রায় আছে ভিটামিন ‘ই’। শিশুকে মায়ের দুধ না দিলে গরুর দুধে নির্ভরশীল শিশুর ভিটামিনের স্বল্পতাজনিত অসুখ, যেমন—রাতকানা, স্কার্ভি প্রভৃতি হতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">* মায়ের দুধে শিশুর জন্য রোগপ্রতিরোধক যে শক্তিকাঠামো মজুদ আছে, যেমন ইমিউনোগ্লোবিউলিন ও লিউকোসাইট, ম্যাংগানেজ, নিউট্রোফিল, যা নেই গরুর দুধে। তাই গরুর দুধ পানে নির্ভরশীল শিশু সহজে রোগে আক্রান্ত হয়।</p> </article>