ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

মাইগ্রেনের ব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, ভুল করছেন না তো?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মাইগ্রেনের ব্যথা হলেই প্যারাসিটামল, ভুল করছেন না তো?
সংগৃহীত ছবি

মাঝে মাঝে মাইগ্রেনের তীব্রতা এতটা বেশি হতে পারে যে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন পড়ে যায়। মাত্রাতিরিক্ত যন্ত্রণায় রোগী জ্ঞানও হারাতে পারেন। তাই মাথা ব্যথাকে উপেক্ষা না করে যখন-তখন নিজের মতো ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। আর তাই এই রোগের ধরন সম্পর্কে বিশদ জানা প্রয়োজন।

মাইগ্রেনের ধাপ, কারণ ও উপশম সম্পর্কে জানিয়েছেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা।

মাইগ্রেন কী

মাইগ্রেনের ব্যথার কোনো কারণ এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে কিছু গবেষণার ওপর ভিত্তি করে এটুকু বোঝা গেছে, এই রোগের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে জিনের। মা অথবা বাবা, কিংবা মা-বাবা দুজনেরই এই রোগ ছিল।

তাদের থেকেই সন্তানের মাইগ্রেন।

মাইগ্রেনের সময় শরীর থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। আর তার ফলেই অত্যধিক ব্যথা হতে থাকে। ধমনী দিয়ে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।

সেই কারণেই মাইগ্রেনের ব্যথায় মাথা দপদপ করতে থাকে। শরীরে রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়া থেকেই মাইগ্রেনের সূত্রপাত।

আরো পড়ুন
ঈদ আতিথেয়তা জমবে ভিন্ন স্বাদের কাবাবে

ঈদ আতিথেয়তা জমবে ভিন্ন স্বাদের কাবাবে

 

রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট হয় কেন

যাদের জিনগত কারণে মাইগ্রেন রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে জীবনযাপন ও শারীরবৃত্তীয় কিছু বিষয়ের বড় অবদান রয়েছে, যা এই ব্যথাকে অসহনীয় করে তোলে।

হরমোনের তারতম্য : চিকিৎসকদের মতে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেশি। আর তার কারণ, হরমোনের তারতম্য।

সাধারণত ৫ জন নারীর মধ্যে ১ জনের এই রোগ থাকবেই। পুরুষদের ক্ষেত্রে ১০ জনের মধ্যে ১ জন এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ১৫ জনের মধ্যে ১ জনের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে। প্রসঙ্গত, শিশুদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথা মাথায় হয় না, পেটে হয়।

ঘুমের সময়কাল : ঘুমের সময় যদি বারবার বদল হয়, অথবা পর্যাপ্ত ঘুম যদি না হয়, মাইগ্রেনের দাপট বেড়ে যেতে পারে।

আরো পড়ুন
ঈদ যেন স্বজনদের মিলনমেলা

ঈদ যেন স্বজনদের মিলনমেলা

 

আবহাওয়া : মেঘলা দিনে মাইগ্রেনের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পায়। আবহাওয়ার তারতম্য ঘটলে শরীরে পানির অভাব ঘটে। আর সেই সময়েও এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত শরীরচর্চা : ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই প্রয়োজনের থেকে বেশি শরীরচর্চা করেন। কারো আবার পেশার কারণে বিশ্রামের অভাব হয়। অতি সক্রিয়তাও মাইগ্রেনের জন্য খারাপ।

খাওয়ার সময়ের অভাব : কাজের চাপে অনেকেই নির্দিষ্ট কোনো মিল বাদ দিয়ে ফেলেন। নাশতা বা দুপুরের খাবার, অথবা সন্ধ্যা বা রাত, নিয়ম করে পরিমাণ মতো পেটের রসদ না জোগালে ক্ষতি হতে পারে।

এ ছাড়া মানসিক চাপ, ক্যাফিন সেবন, ধূমপান, ইত্যাদি অনেক বিষয় মাইগ্রেনকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। কয়েকটি খাবার যেমন, পুরনো চিজ, ডার্ক চকোলেট, রেড ওয়াইন, নুডলস (মোনোসোডিয়াম গ্লুটামেট যুক্ত খাবার), কৃত্রিম সুইটনার, আচার, ইত্যাদির থেকেও দূরে থাকার পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক।

আরো পড়ুন
শহর ও গ্রামের ঈদ : সংস্কৃতির পার্থক্য

শহর ও গ্রামের ঈদ : সংস্কৃতির পার্থক্য

 

মাইগ্রেনের ৪টি ধাপ রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে—

প্রোড্রোম : প্রথম পর্যায়টি মাথা ব্যথা শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে শুরু হয়। মেজাজে বার বার পরিবর্তন, ঘুম না আসা, ক্লান্তি, ঘন ঘন পানির পিপাসা, বার বার প্রস্রাবের বেগ আসা ইত্যাদি এর লক্ষণ।

অরা : দ্বিতীয় পর্যায়কে মাইগ্রেনের ব্যথার একটি সতর্কতা চিহ্ন হিসেবে ধরা হয়। পর্যায়টি ৬০ মিনিট বা ৫ মিনিটেরও কম সময় স্থায়ী হতে পারে। মাথা ব্যথার ঠিক আগে পেশি দুর্বল হয়ে আসে, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে যায়, কানে ‘চিঁ’ আওয়াজ শোনা যায়, শরীর অবশ হয়ে আসে, মনোযোগের অভাব দেখা দেয়, কথাবার্তায় জড়তা চলে আসে।

মাথা ব্যথা : মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা ৪ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়। মাথার এক পাশ থেকে শুরু হয়। তার পর অন্য পাশেও যেতে পারে। দপদপ করতে থাকে। আলো, শব্দ, কয়েক রকমের গন্ধ কিছুতেই সহ্য করতে পারেন না রোগী। চিকিৎসকের পরামর্শ, ৭২ ঘণ্টার বেশি যদি ব্যথা, বমি ভাব, ইত্যাদির লক্ষণ থেকে যায়, তা হলে রোগীকে আর বাড়িতে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

পোস্টড্রোম: ঝড় বয়ে যাওয়ার পরের অবস্থার সঙ্গে তুলনা করা হয় এই পর্যায়কে। সাধারণত ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। একে ‘মাইগ্রেন হ্যাংওভার’ও বলা হয়। শরীর অতি দুর্বল হয়ে যায়, ঘাড়ের কাছে ব্যথা হতে পারে, আলো-শব্দ নিয়ে অস্বস্তি তখনো থাকতে পারে। অনেক সময় বমি হয়ে যাওয়ার পর আরাম পান অনেকে।

আরো পড়ুন
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ ফোলা থাকে কেন

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ ফোলা থাকে কেন

 

মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়

চিকিৎসকদের মতে, মাইগ্রেনকে রোধ করা আর মাইগ্রেন হওয়ার পর সেটির তীব্রতা কমানো, দুটি আলাদা। চিকিৎসকেরা রোগীর অবস্থা পরীক্ষা করে বিভিন্ন ওষুধ দেন। কিন্তু তা ছাড়া ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই রোগের উপশম সম্ভব।

জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে মাইগ্রেন থেকে দূরে থাকা সম্ভব। যে যে খাবার থেকে মাইগ্রেন বাড়তে পারে, সেগুলো এড়িয়ে চলা থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো, ফোন বা ল্যাপটপের সামনে খুব বেশি সময় না কাটানো, ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার বা ওষুধ খাওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের যোগ অভ্যাস করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া ইত্যাদি।

আরো পড়ুন
কাজুবাদামেরও রুটি হয় নাকি

কাজুবাদামেরও রুটি হয় নাকি

 

মাইগ্রেন হওয়ার পর একটি অন্ধকার, শান্ত ঘরে চুপচাপ বসে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ঠাণ্ডা অথবা গরম কাপড় দিয়ে ঘাড় ও কপালে সেঁক দিতে হবে। তা ছাড়া নিজেই নিজের মাথার তালু এবং কপালের দুই পাশে মালিশ করতে পারলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। সঙ্গে শ্বাস সংক্রান্ত যোগ অভ্যাস করলে মাইগ্রেনের তীব্রতা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

অনেকেই মাইগ্রেনের ব্যথা হলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে প্যারাসিটামল খেয়ে নেন যখন-তখন। এই অভ্যাস খুবই ক্ষতিকারক। কারণ, মাইগ্রেন ভেবে আরো বড় কোনো রোগকে উপেক্ষা করে ফেলেন অনেকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যথা কমে গেলে রোগ শনাক্তকরণে দেরি হয়ে যায়। তাই মাইগ্রেন ধরা পড়ুক আর না পড়ুক, নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে।

আরো পড়ুন
পুরনো বন্ধুত্ব ভাঙা কখন ইতিবাচক? কখন আবার বন্ধুত্বে ফিরবেন

পুরনো বন্ধুত্ব ভাঙা কখন ইতিবাচক? কখন আবার বন্ধুত্বে ফিরবেন

 

সূত্র : আনন্দবাজার

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু
ফাইল ছবি

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরো ২২ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩ জন রয়েছে।

মৃত দুজন বরিশাল বিভাগের। এ সময় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী।

চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে মোট ২ হাজার ৭৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬২ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ শতাংশ নারী।

হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ১ হাজার ৯৫৬ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১৬ জন।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছে ৫৭৫ জন।

মন্তব্য

কিডনিতে পাথর হয়েছে বুঝবেন লক্ষণে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কিডনিতে পাথর হয়েছে বুঝবেন লক্ষণে
সংগৃহীত ছবি

প্রাকৃতিক খনিজ উপাদান নিয়ে প্রকৃতিতে যেমন পাথর তৈরি হচ্ছে, তেমনই মানবদেহের উপাদান ও খনিজ দিয়ে আমাদের শরীরের কয়েকটি অঙ্গে পাথর তৈরি হতে পারে। সাম্প্রতিক ধারণা হলো, প্রস্রাবে দ্রব অত্যধিক ঘন হলে পাথরের কণা বা ক্রিস্টাল তৈরি হয়। এ অবস্থা সৃষ্টি হয় যদি শরীর থেকে প্রতিনিয়ত পানি কমে যায়। কিভাবে বুঝবেন যে আপনার কিডনিতে পাথর হয়েছে—তা জানাতেই আজকের প্রতিবেদন।

চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

কিডনিতে পাথরের লক্ষণ 

কিডনির পাথরগুলো মূত্রনালীতে প্রবেশের আগে বোঝা যায় না। যে নালীগুলো আপনার কিডনি ও মূত্রাশয়কে সংযুক্ত করে সেগুলোতে যদি পাথরগুলো আটকে যায়, তখন সেটি প্রস্রাবের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এর ফলে কিডনি বড় হতে পারে এবং মূত্রনালীতে খিঁচুনি হতে পারে, উভয়ই যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।

সেই মুহূর্তে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে—

আরো পড়ুন
ঘন ঘন ওয়েট টিস্যু ব্যবহারে কী ক্ষতি

ঘন ঘন ওয়েট টিস্যু ব্যবহারে কী ক্ষতি

 
  • পাঁজরের খাঁচার ঠিক পিছনে, পাশে ও পিছনে তীক্ষ্ণ অস্বস্তি
  • তলপেটে ও কুঁচকিতে বিকিরণকারী ব্যথা
  • গোলাপি, লাল বা বাদামি প্রস্রাব
  • মেঘলা প্রস্রাব 
  • বমি ও বমি বমি ভাব

কিডনি পাথর মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় যে ব্যথা অনুভূত হয় তা পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ভিন্ন স্থানে স্থানান্তরিত হওয়া বা তীব্রতা বেড়ে যাওয়া।

কিডনিতে পাথরের চিকিৎসা

কিডনিতে পাথরের চিকিৎসা পাথরের ধরন ও কারণের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। 

আরো পড়ুন
আম তো খাবেনই, এর পাতারও রয়েছে নানা উপকারিতা

আম তো খাবেনই, এর পাতারও রয়েছে নানা উপকারিতা

 

ন্যূনতম উপসর্গসহ ছোট পাথর

তরল গ্রহণ বাড়ান : প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে সাড়ে ৩ লিটার পানি পান করুন।

এর ফলে আপনার প্রস্রাব পাতলা থাকবে এবং পাথর গঠন রোধ করবে। ডাক্তারের পরামর্শ না পাওয়া পর্যন্ত পরিষ্কার বা প্রায় পরিষ্কার প্রস্রাবের জন্য পর্যাপ্ত তরল, বিশেষত পানি খাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখুন।

ব্যথা উপশম ব্যবহার করুন : মূত্রনালী দিয়ে ছোট পাথর পাস হওয়া অস্বস্তিকর হতে পারে। হালকা ব্যথা উপশম করার জন্য চিকিৎসক আইবুপ্রোফেন (অ্যাডভিল, মট্রিন আইবি) বা নেপ্রোক্সেন সোডিয়ামের (আলেভ) মতো ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথা উপশমকারীর পরামর্শ দিতে পারেন।

চিকিৎসা থেরাপি : চিকিৎসক আপনার কিডনি পাথরের উত্তরণ সহজতর করার জন্য ওষুধ লিখে দিতে পারেন।

এই ওষুধগুলো আপনার মূত্রনালীতে পেশীগুলোকে শিথিল করে। এ ছাড়া পাথরটি আরো দ্রুত ও কম ব্যথার সঙ্গে বের করতে সহায়তা করে।

আরো পড়ুন
ব্রিদিং এক্সারসাইজে কী উপকার

ব্রিদিং এক্সারসাইজে কী উপকার

 

বড় পাথর ও বেশি উপসর্গ

এক্সট্রাকর্পোরিয়াল শক ওয়েভ লিথোট্রিপসি (ESWL)

এই চিকিৎসা কিডনি পাথর ভেঙ্গে শব্দ তরঙ্গ তৈরি করে। আকার ও অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট ধরনের পাথরের জন্য এটি সুপারিশ করা হয়। ESWL শক ওয়েভ তৈরি করে, যা পাথরকে ছোট ছোট টুকরো করে দেয় এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়।

পদ্ধতিটি ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট স্থায়ী হয়। এতে অবসাদ বা হালকা অ্যানেশেসিয়া থাকতে পারে। সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবে রক্ত, ক্ষত ও পাথরের টুকরো মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে যাওয়ার কারণে অস্বস্তি। এ ছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে।

আরো পড়ুন
হজমশক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে ওজনও কমাবে পুদিনা পাতা

হজমশক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে ওজনও কমাবে পুদিনা পাতা

 

কিডনিতে পাথর নির্ণয়

চিকিৎসক যদি মনে করেন যে আপনার কিডনিতে পাথর আছে, তাহলে আপনাকে নিম্নলিখিত ডায়াগনস্টিক পরীক্ষাগুলো করতে বলতে পারেন—

রক্ত পরীক্ষা : রক্ত ​​পরীক্ষার ফলে আপনার রক্তে ক্যালশিয়াম বা ইউরিক এসিডের অতিরিক্ত পরিমাণ রয়েছে কি না বোঝা যাবে। রক্ত পরীক্ষার ফলাফল কিডনির স্বাস্থ্য নিরীক্ষণ করতে সাহায্য করে এবং অন্য চিকিৎসার প্রয়োজন থাকলে তাও জানা যেতে পারে।

প্রস্রাব পরীক্ষা : ২৪-ঘণ্টার প্রস্রাব সংগ্রহের পরীক্ষাটি প্রকাশ করতে পারে যে আপনি হয় অনেক বেশি পাথর-গঠনকারী খনিজ নিঃসরণ করছেন বা পর্যাপ্ত পাথর প্রতিরোধকারী রাসায়নিক নেই। এই পরীক্ষার জন্য পরপর দুই দিনে দুটি প্রস্রাবের নমুনা সংগ্রহ করার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসক।

ইমেজিং : মূত্রনালীর ইমেজিং পরীক্ষা কিডনিতে পাথর প্রকাশ করতে পারে। এমনকি ছোট পাথর উচ্চ-গতি বা দ্বৈত-শক্তি কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি (সিটি) ব্যবহার করে সনাক্ত করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন
গাজর রান্না করে খাওয়া ভালো, নাকি কাঁচা

গাজর রান্না করে খাওয়া ভালো, নাকি কাঁচা

 

কিডনিতে পাথর বা কিডনিতে কোনো সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পাশাপাশি একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শও নিতে পারেন। যিনি আপনাকে একটি খাদ্য পরিকল্পনা তৈরি করতে সহায়তা করতে পারেন। যার ফলে আপনার কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে।

সূত্র : কেয়ার হসপিটাল

মন্তব্য

কোন বয়সে কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অবশ্যই প্রয়োজন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কোন বয়সে কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অবশ্যই প্রয়োজন
ছবি : পেক্সেলস

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা শারীরিক সমস্যা বাড়তে থাকে। আজ পেটে ব্যথা, তো কাল হাঁটুতে ব্যথা। কী থেকে সমস্যা হচ্ছে, তা জানা বা বোঝার চেষ্টা খুব কম মানুষই করেন। বেশিরভাগেরই অভ্যাস হলো অসুস্থ হলেই নিজে থেকে দেখেশুনে ওষুধ খেয়ে ফেলা।

অথবা চিকিৎসক আগে যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, সেগুলোই আবার কিনে খাওয়া। এতে শরীর তো ভালো হয়ই না, বরং সমস্যাগুলো আরো বাড়তে থাকে দিনে দিনে।

এই বিষয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের মত, স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। যেকোনো বয়সে একাধিক কারণে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে।

যেমন, কোনো অসুখ প্রতিরোধ করতে আগাম সাবধানতার জন্য স্বাস্থ্যপরীক্ষা দরকার, যাকে প্রিভেনটিভ মেজার বলা হয়।

আপনি যদি মনে করেন একেবারে ৪০ বছর বা ৫০ বছরে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন, তাহলে কিন্তু ভুল হবে। তত দিনে নানা জটিল অসুখ ডালপালা মেলতে পারে শরীরে। বছরে এক বার রক্তে শর্করা, হিমোগ্লোবিন, টিএসএইচ, ভিটামিন-ডি, ক্যালশিয়াম, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট, উচ্চ রক্তচাপ, ইসিজি, দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি পরীক্ষা করাতেই হবে।

আরো পড়ুন
পুরনো বন্ধুত্ব ভাঙা কখন ইতিবাচক? কখন আবার বন্ধুত্বে ফিরবেন

পুরনো বন্ধুত্ব ভাঙা কখন ইতিবাচক? কখন আবার বন্ধুত্বে ফিরবেন

 

কোন বয়সে কী পরীক্ষা করাবেন

২০ বছর বয়সের পর

  • রক্তচাপ ও কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) : রক্তাল্পতা, সংক্রমণ, হাইপারটেনশনের ঝুঁকি আছে কি না ধরা পড়বে।
  • ব্লাড সুগার টেস্ট : প্রি-ডায়াবেটিক কি না জানতে প্রয়োজন।
  • লিপিড প্রোফাইল : রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ও হার্টের স্বাস্থ্য জানতে জরুরি।
  • থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট : টি৩, টি৪, টিএসএইচ পরীক্ষা করা হয়, থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে কি না তা ধরার জন্য।
  • ভিটামিন-ডি ও বি১২ টেস্ট : খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
এখনকার ছেলেমেয়েরা অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ায় অভ্যস্ত, তাই ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে কি না, তা জানা জরুরি।
  • এসটিআই: বিভিন্ন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন (এসটিআই) নিয়ে আসা রোগীদের মধ্যে বৃহত্তর অংশই এখন অল্পবয়সি। কম বয়সে যৌনভাবে সক্রিয় হওয়া, একাধিক সঙ্গী থাকা, সুরক্ষা ছাড়াই যৌনমিলন এবং সুরক্ষিত মিলন সম্পর্কে সচেতনতার অভাবেই রোগ বাড়ছে। তাই এই পরীক্ষা করানো খুব জরুরি।
  • আরো পড়ুন
    হজমশক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে ওজনও কমাবে পুদিনা পাতা

    হজমশক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে ওজনও কমাবে পুদিনা পাতা

     

    ৩০ বছরের পরে

    • ব্লাড সুগার ও কোলেস্টেরল টেস্ট : ত্রিশের পর থেকে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরো বাড়ে। তাই এই দুটি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।
    • ব্লাড প্রেশার : রক্তচাপ ওঠানামা করছে কি না, তা জানা জরুরি।
    • লিভার ও কিডনি ফাংশন টেস্ট : ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হচ্ছে কি না, জানতে লিভার ফাংশন টেস্ট জরুরি। তা ছাড়া আলট্রাসাউন্ড করা যেতে পারে। কিডনির জন্য কিডনি ফাংশন টেস্ট বা রেনাল ফাংশন টেস্ট করানো জরুরি। এ ছাড়া ইউরিনারি অ্যালবুমিন-ক্রিয়েটিনিন রেশিয়ো (ইউএসিআর) টেস্টও করাতে হবে।
    আরো পড়ুন
    কালো রঙের প্লাস্টিক দেহের জন্য ক্ষতিকর কেন

    কালো রঙের প্লাস্টিক দেহের জন্য ক্ষতিকর কেন

     

    ৪০ বছরের পর

    • প্যাপ স্মিয়ার ও এইচপিভি টেস্ট : জরায়ুমুখের ক্যান্সারের আশঙ্কা আছে কি না, তা ধরা পড়বে।
    • ম্যামোগ্রাম: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নারীদের ম্যামোগ্রাম পরীক্ষা এবং স্তনের এমআরআই স্ক্যান করিয়ে নেওয়া খুব জরুরি।
    • চোখ ও দাঁতের পরীক্ষা : মায়োপিয়া, হাইপারোপিয়া ও প্রেসবায়োপিয়া পরীক্ষা করানো উচিত। এই তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমেই আপনার দৃষ্টিশক্তির মান কেমন, তা যাচাই করা হয়।
    • হার্টের পরীক্ষা : ইসিজি, ট্রেডমিল টেস্ট, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম, কোলেস্টেরল টেস্ট করাতেই হবে। নিয়মিত রক্তের সিরাম, লিপিড পরীক্ষা করাতে হবে। যদি কম বয়সে বাইপাস সার্জারি হয়ে থাকে তাহলে আবার পরীক্ষা করানো দরকার। বাইপাস করালেও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকেই যায়।
    আরো পড়ুন
    পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মেইল সহজে খুঁজে বের করবে জিমেইল

    পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মেইল সহজে খুঁজে বের করবে জিমেইল

     
    • হরমোনাল টেস্ট : ত্রিশের পর থেকেই হরমোনের ওঠানামা শুরু হয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হরমোনের কিছু পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি।
    • বোন ডেনসিটি টেস্ট : হাড়ের স্বাস্থ্য কেমন আছে জানতে চল্লিশের পর বোন মিনারেল ডেনসিটি টেস্ট করাতেই হবে।

    সূত্র : আনন্দবাজার

    মন্তব্য

    ধূমপান ছাড়াও ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার ৫ কারণ

    অনলাইন প্রতিবেদক
    অনলাইন প্রতিবেদক
    শেয়ার
    ধূমপান ছাড়াও ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার ৫ কারণ
    সংগৃহীত ছবি

    বর্তমানে ফুসফুসের ক্যান্সার অন্যতম একটি প্রাণঘাতী রোগ। প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। যদিও ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ। তবুও আরো বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যা এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।

    রোগটি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিপদের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব।

    জীবনধারা ও পরিবেশগত কিছু কারণের ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ছয় ধরনের ব্যক্তির অবশ্যই নিয়মিত ফুসফুসের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং বা পরীক্ষা করানো উচিত।

    দীর্ঘমেয়াদি ধূমপায়ী
    যারা অনেক বছর ধরে ধূমপান করছেন, বিশেষ করে যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি, তাদের ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। এমনকি যারা ধূমপান ছেড়েছেন, তারাও এই ঝুঁকির বাইরে নন।

    তাই এ ধরনের ব্যক্তিদের নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো উচিত।

    কাঠের চুলায় রান্না করা
    যারা জ্বালানি কাঠ বা অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানে রান্না করেন, তাদের ফুসফুস ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকে। এ ধরনের জ্বালানি পোড়ালে রেডন, অ্যাসবেস্টসের মতো ক্ষতিকর পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। যা ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।

    দূষিত পরিবেশে বসবাস
    উচ্চ মাত্রার বায়ুদূষণযুক্ত এলাকায় বসবাস বা কাজ করলে ফুসফুস দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতির শিকার হয়। এর ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই এই পরিবেশে থাকা মানুষদেরও স্ক্রিনিং করানো গুরুত্বপূর্ণ।

    পরোক্ষ ধূমপায়ী
    যারা নিজেরা ধূমপান করেন না, কিন্তু ধূমপায়ীদের আশপাশে থাকেন, তারাও ধোঁয়ার মাধ্যমে ক্ষতির মুখে পড়েন। একে বলা হয় প্যাসিভ স্মোকিং বা পরোক্ষ ধূমপান।

    এটি ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার একটি বড় কারণ।

    পারিবারিক ইতিহাস
    পরিবারে যদি কারো ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে থাকে, তাহলে বংশগতভাবে সেই ঝুঁকি অন্য সদস্যদের মধ্যেও থাকতে পারে। বিশেষ করে যদি পরিবারে কেউ ধূমপায়ী থাকেন, তাহলে সতর্কতা আরো বেশি জরুরি।

    ঝুঁকিপূর্ণ পেশা
    যেসব পেশায় অ্যাসবেস্টস, আর্সেনিক, ডিজেল ধোঁয়া বা অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসা হয়— যেমন খনিশ্রমিক, নির্মাণকর্মী বা কলকারখানার শ্রমিক— তাদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারের সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই এসব পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত স্ক্রিনিং করানো উচিত।

    মনে রাখা জরুরি যে ফুসফুসের ক্যান্সারসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জানার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

    সূত্র : নিউজ ১৮ বাংলা

    মন্তব্য

    সর্বশেষ সংবাদ