জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আশিকুর রহমান হৃদয়ের পরিবারে পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। আজ শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সদর ইউনিয়নের যৌতা গ্রামে শহীদ হৃদয়ের পরিবারে খাদ্য সহায়তা নিয়ে ছুটে গেছেন ওই উপজেলার বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা।
এ সময় তারা হৃদয়ের কবর জিয়ারত করেন। কবর জিয়ারতে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন শুভসংঘের সদস্য হাফেজ মো. মুদাচ্ছির।
এরপর শুভসংঘের সদস্যরা হৃদয়ের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান এবং হৃদয়ের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের উপদেষ্টা ও বাউফল ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওহিদুজ্জামান সুপন, উপদেষ্টা ও বাউফল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান ফিরোজ, উপদেষ্টা ও বাউফল সরকারি কলেজের প্রভাষক এনামুল হক সায়েম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের সভাপতি মো. মারনুচ তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদ আরিফ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের আবু জাফর, হুমায়ুন কবির রুবেল, ইফাত হোসেন জিসান, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. রিফাত গাজী, জারিন তাসমিন জিনিয়া, মো. জাকির হোসেন, লাবনী আক্তার রেখা, রাকিবুল হাসান, রমেন চন্দ্র দাস, মো. জামাল হোসেন, মো. মামুন, মো. অপু খান ও মাসকসুদুর রহমান বাচ্চু।
স্বাক্ষাৎ শেষে হৃদয়ের বাবা মো. আনসার হাওলাদারের হাতে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আলু, তেল, লবণসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেন।
জানা গেছে, অভাবের সংসারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পার হাওয়ার পর হৃদয়ের আর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই সংসারের অভাব মেটাতে হৃদয় কিশোর বয়সেই ঢাকায় যায়। ঢাকাতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে বাড়িতে টাকা পাঠাত।
কিন্তু জুলাই বিপ্লবে হৃদয় আন্দোলনে শুরু থেকেই অংশ নেয়। গত ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ী এলাকায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা হটাও বিপ্লবে যোগ দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তার মাথায় তিনটি গুলি লাগে। প্রথমে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের ভয়ে হৃদয় আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসা নেয়। পরে ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর হৃদয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
চিকিৎসকরা তার মাথা থেকে দুইটি গুলি বের করলেও একটি গুলি বের করতে পারেনি। এরপর থেকে প্রায় জ্বর ও মাথা ব্যথা হত। তাই তেমন একটা কাজও করতে পারত না। আহত হৃদয় জুলাই ফাউন্ডেশনের তালিকাভুক্তও ছিল না।
বিল্পব পরর্বতী এভাবেই চলছিল হৃদয়ের দিনকাল। কয়েকদিন আগে হৃদয় বাড়িতে যান। অভাবের সংসারে পরিবারের চাহিদা মেটাতে এলাকায় মাটি কাটার কাজ করতে গিয়ে হৃদয় অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত বুধবার অসুস্থ অবস্থায় হৃদয়কে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। তবে আর্থিক অভাবের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে হৃদয়ের মৃত্যু হয়।