ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এই বিলের প্রতিবাদে আসাম রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠছে। এই প্রতিবাদে আসাম জুড়ে ডাকা বনধ্ ডাকা হয়েছে। এতে সর্বাত্মক সাড়াও মিলেছে।
নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদ
উত্তাল আসামে উলঙ্গ জনতার প্রতিবাদ!
কালের কণ্ঠ অনলাইন

আসামে পরিস্থিতি যেন ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ।
এদিকে, বিপাকে পড়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রীও। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সনোওয়াল। কিন্তু তাঁর কনভয়ের সামনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আশঙ্কায় তাঁর যাত্রাপথ বদলাতে হয়েছে। আসামের মানুষকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তবে বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় বনধ্ সফল, এমনটা বলা যাবে না।
কেবল আসাম নয়, ত্রিপুরা, মণিপুর ও অরুণাচলেও চলছে বিক্ষোভ। মিছিল বের করে দুটি ছাত্র সংগঠন। মিছিলে হাঁটেন বহু মানুষও। তবে পরিস্থিতি যে এমন হাতের বাইরে যেতে পারে, তার আশঙ্কা করেছিলেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সোমবারই সংসদে ওই বিল পেশের সময় তিনি বারবার সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছিলেন। সে সময় তিনি জানান, স্থানীয় মানুষেরই স্বার্থ দেখা হবে, তাই এই বিক্ষোভ দেখানোর কোনও প্রয়োজন নেই। অবিলম্বে বিক্ষোভের পথে ছেড়ে বেরিয়ে আসারও আবেদন করেন তিনি। কিন্তু শাহের কথা যে কেউ কানে তোলেননি, সেটা এদিনের বিক্ষোভ থেকেই স্পষ্ট।
সূত্র : এই সময়

‘ট্রাম্প শুল্ক’র বাইরে থাকছে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার
বিবিসি, এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সমহারে শুল্কারোপের আওতা থেকে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারকে বাদ দিয়েছে, যার মধ্যে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্কও অন্তর্ভুক্ত। এতে জনপ্রিয় প্রযুক্তিপণ্যের দাম নিয়ে মার্কিন ভোক্তাদের ওপর সম্ভাব্য চাপ কিছুটা কমবে।
শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও বর্ডার প্রটেকশন এক নোটিশ প্রকাশ করে জানায়, এসব পণ্যকে ট্রাম্পের অধিকাংশ দেশের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ বৈশ্বিক শুল্ক ও চীনের পণ্যের ওপর আরোপিত আরো উচ্চ হারে শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে যেসব ইলেকট্রনিক পণ্য চীন থেকে আমদানি হয় এবং বর্তমানে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্কের আওতায় রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলোই এবার ছাড় পাচ্ছে।
এ ছাড়া শুল্ক মওকুফ পাওয়া অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের মধ্যে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল ও মেমোরি কার্ড। এসব পণ্য বাদ পড়েছে বেশির ভাগ বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ ‘মূল শুল্ক’ ও চীনের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে।
এই ছাড়ের ফলে ট্রাম্পের চলতি মাসে ঘোষিত ১০ শতাংশ বিস্তৃত শুল্ক ও চীনা পণ্যের ওপর নতুনভাবে আরোপিত শাস্তিমূলক শুল্কের পরিধি কিছুটা সংকুচিত হলো। এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন মার্কিন প্রযুক্তি কম্পানিগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করছিল, শুল্কারোপের কারণে অনেক ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম হঠাৎই কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে।
সমহারে শুল্কারোপের মাধ্যমে ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন, যেটিকে ওয়াশিংটন ‘অন্যায্য বাণিজ্যচর্চা’ বলে মনে করে। সম্প্রতি চীনা পণ্যের ওপর নতুন ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে, যার লক্ষ্য বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। এই নতুন হারে যুক্ত হয়েছে আগের ২০ শতাংশ শুল্ক, যা চীনের ফেন্টানিল সরবরাহে ভূমিকার অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল।
কিছু অনুমান বলছে, শুল্কের বাড়তি খরচ ক্রেতাদের ওপর চাপিয়ে দিলে মার্কিন বাজারে আইফোনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম তিন গুণ বেড়ে যেত। যুক্তরাষ্ট্র অ্যাপলের একটি বড় বাজার। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের অর্ধেকের বেশি ছিল অ্যাপলের তৈরি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য নির্ধারিত অ্যাপলের আইফোনের প্রায় ৮০ শতাংশ চীনে ও বাকি ২০ শতাংশ ভারতে উৎপাদিত হয়।
চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের মতো অন্য স্মার্টফোন নির্মাতারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সরবরাহব্যবস্থা বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে ভারত ও ভিয়েতনাম এগিয়ে এসেছে। শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর অ্যাপল ভারতে তাদের ডিভাইসের উৎপাদন বাড়াতে আরো তৎপর হয় বলে জানা গেছে।
এই সপ্তাহে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে বুধবার হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন করে তিনি ঘোষণা দেন, চীন বাদে মার্কিন শুল্কের পাল্টা জবাব না দেওয়া অন্যান্য দেশের জন্য ৯০ দিনের বিরতি কার্যকর হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা মাত্র ১০ শতাংশ শুল্কের আওতায় থাকবে। এ সিদ্ধান্ত জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত অন্যান্য দেশের কাছ থেকে আরো ভালো বাণিজ্য চুক্তি আদায়ের একটি কৌশল। এ ছাড়া বাদ দেওয়া অনেক পণ্যের উৎপাদন সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে হয় না, যেমন হার্ড ড্রাইভ ও কম্পিউটার প্রসেসর। যদিও ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ফিরিয়ে আনা যাবে, কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে এখনো বহু বছর সময় লাগবে।

ইউক্রেনীয় এফ-১৬ পাইলট নিহত
এএফপি

ইউক্রেন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি মূল্যবান এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিয়োজিত এক ইউক্রেনীয় পাইলট নিহত হয়েছেন। দেশটির সেনাবাহিনী শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানায়, ‘২০২৫ সালের ১২ এপ্রিল ২৬ বছর বয়সী পাভলো ইভানভ একটি এফ-১৬ যুদ্ধমিশনে অংশ নেওয়ার সময় নিহত হন। তিনি মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
তবে ইভানভের মৃত্যুর বিস্তারিত তথ্য সেনাবাহিনী প্রকাশ করেনি। একটি কমিশন ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার সব দিক’ তদন্ত করছে বলে জানানো হয়েছে।
সেনাবাহিনী বলেছে, ‘ইউক্রেনীয় পাইলটরা তাদের মানবিক ও প্রযুক্তিগত সামর্থ্যের সর্বোচ্চ সীমায় কাজ করেন, প্রতিটি যুদ্ধমিশনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নেন। পাভলো তাদেরই একজন ছিলেন!’
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি পাভলো ইভানভের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
দুই বছর ধরে অনুরোধ জানানোর পর ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে ইউক্রেন প্রথমবারের মতো এফ-১৬ পায়। গত মাসে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নতুন করে আরো কিছু এফ-১৬ পাওয়ার কথা জানান, তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেননি।
২০২৪ সালের আগস্টে ইউক্রেন জানায়, একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে একটি এফ-১৬ বিধ্বস্ত হয় ও পাইলট নিহত হন।

চীনে তীব্র ঝোড়ো হাওয়ায় সতর্কতা জারি, শত শত ফ্লাইট বাতিল
এএফপি

বেইজিং ও উত্তর চীনের বিভিন্ন অংশে শনিবার প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার কারণে বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। ঝড়ের কারণে শত শত ফ্লাইট বাতিল ও রেল চলাচল স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
চীন আবহাওয়া প্রশাসন (সিএমএ) জানায়, এই সম্ভাব্য রেকর্ড ভাঙা বাতাস মূলত একটি ‘ঠাণ্ডা ঘূর্ণিঝড় ব্যবস্থা’ থেকে সৃষ্টি হয়েছে, যা মঙ্গোলিয়ার ওপর গঠিত হয়ে শুক্রবার থেকে সপ্তাহান্তজুড়ে উত্তর চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের ‘অত্যাবশ্যক না হলে’ বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিএমএর বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘১২ এপ্রিল দিনের বেলা সবচেয়ে শক্তিশালী বাতাস বইতে পারে, কিছু পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের বাতাসের গতিবেগ ১৯৫১ সালের পর একই সময়কালের জন্য রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বেইজিং ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তরের কমলা সতর্কতা জারি করেছে এই ঝোড়ো বাতাসের কারণে। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর নাগাদ বেইজিংয়ের দুটি প্রধান বিমানবন্দরে ৬৯৯টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি। একাধিক উচ্চগতির রেললাইনসহ বিভিন্ন ট্রেন চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে।
বেইজিংয়ের সামার প্যালেস, টেম্পল অব হেভেন, বেইজিং চিড়িয়াখানা, ইউনিভার্সাল স্টুডিওস থিম পার্কসহ বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সিসিটিভি আরো জানায়, বেইজিংয়ে প্রায় ৩০০টি গাছ উপড়ে পড়েছে এবং ১৯টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রাজধানীতে এখন পর্যন্ত ঝোড়ো বাতাসের কারণে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
চীন বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী দেশ, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনাকে আরো ঘন ঘন ও তীব্র করে তোলে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন।

২৮ লাখ জার্মান কখনো ইন্টারনেটই ব্যবহার করেনি
ডয়চে ভেলে

অনেক মানুষের কাছেই ইন্টারনেট ব্যবহার এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবার মতো। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে দৈনন্দিন জীবনে ইটারনেট ব্যবহার না করে চলাফেরা করাও মুশকিল। প্রযুক্তির এই যুগে ঠিকানা খুঁজে পাওয়া, কারো বিষয়ে সন্ধান করা, কোনো বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া, বিমানের টিকিট কেনা কিংবা দৈনন্দিন কেনাকাটা, অর্থাৎ দিনের প্রয়োজনীয় সব কিছুতেই দরকার ইন্টারনেট। কিন্তু ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে ৪ শতাংশ মানুষ জীবনে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি—এমন তথ্য সামনে এলে ভ্রু কুঁচকাতে হয় বৈকি।
সর্বশেষ এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এই তথ্য। জার্মানির জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের ২০২৪ সালের হিসাবে দেখা গেছে, দেশটির ২৮ লাখ মানুষ জীবনে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি। এই সংখ্যা জার্মানির মোট জনসংখ্যার ৪ শতাংশ। সরকারের হিসাবে অনুযায়ী, জার্মানির জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট কোটি।
ইউরোপজুড়ে পরিচালিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার বিষয়ক গবেষণা থেকে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সরকারি দপ্তরের তথ্য মতে, ১৬ থেকে ৭৪ বছর বয়সীরা এই তালিকায় রয়েছে। যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না তাদের অফলাইনার বলে অভিহিত করেছে সরকার।
পরিসংখ্যান আরো বলছে, ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার না করার প্রবণতা বেশি।
ইউরোপের অন্যান্য দেশের পরিস্থিতি
এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপের ৫ শতাংশ লোক জীবনে কখনো ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি। নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশ দুটিতে অফলাইনারদের সংখ্যা ১ শতাংশের কম।
ইন্টারনেট ব্যবহরা না করার দিক থেকে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ক্রোয়েশিয়।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন বলছে, ২০২৪ সালে বিশজুড়ে ৩২ শতাংশ লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করেনি।