ইতালিতে অনিয়মিত অভিবাসীর আগমন কমেছে ৬২ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইতালিতে অনিয়মিত অভিবাসীর আগমন কমেছে ৬২ শতাংশ
২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে ইতালি উপকূলে অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমন ৬২.৩ শতাংশ কমেছে। ফাইল ছবি : এএফপি

২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে ইতালি উপকূলে অনিয়মিত অভিবাসীদের আগমন ৬২.৩ শতাংশ কমেছে। এর বিপরীতে স্পেন ও গ্রিসে আগমনের সংখ্যায় রেকর্ড হয়েছে। ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এসংক্রান্ত এক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, মধ্য ভূমধ্যসাগরে ৬৪ শতাংশ এবং বলকান রুট বরাবর ৭৫ শতাংশ অভিবাসন কমেছে।

তবে পশ্চিম ও পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় রুট ধরে আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে স্পেনে অনিয়মিত অভিবাসীর আগমন বেড়েছে ১৫৩ শতাংশ এবং গ্রিসে বেড়েছে ৫৭ শতাংশ।

ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, বছরের প্রথম সাত মাসে অভিবাসী ফেরত পাঠানোর হার ১৯.৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৩ সালের দুই হাজার ৫৭২ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৭৯ জনে।

এ ছাড়া তিউনিশিয়া থেকে ইতালিতে অভিবাসী আগমনের হার গত বছরের মতো একই রয়েছে। কিন্তু লিবিয়া থেকে আসা আগমনের হার বেড়েছে বলে জানিয়েছে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা প্রতিবেদনে স্লোভেনিয়া-ইতালি সীমান্ত নিয়েও একটি বিশেষ অংশ রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর এই সীমান্তে তল্লাশি ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের সিদ্ধান্ত এই বছরের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, এখন পর্যন্ত এই সীমান্তে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৭১৮ জনকে তল্লাশি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১০৮ সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে অবৈধ অভিবাসনে সহায়তা করার সন্দেহে তালিকাবদ্ধ করা হয়েছে। 

অনিয়মিতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করার সময় তিন হাজার ৮৪৬ জন অভিবাসীকে আটক করার তথ্যও জানিয়েছে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সিঙ্গাপুরে ৩ মে সাধারণ নির্বাচন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সিঙ্গাপুরে ৩ মে সাধারণ নির্বাচন
সংগৃহীত ছবি

সিঙ্গাপুরে আগামী ৩ মে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওংয়ের জন্য এই নির্বাচন প্রথম পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ কয়েক দশক লি পরিবার সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা রেখে আসছে। গত বছর লরেন্স ওং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

লি কুয়ান ইউয়ের ছেলে লি হিসিয়েন লুংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন লরেন্স ওং। আগামী নির্বাচন ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) জন্য প্রথম নির্বাচনী লড়াই এটি।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৩ এপ্রিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এরপর শুরু হবে নির্বাচনী প্রচারণা।

ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৫৯ সালে স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসছে ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টি (পিএপি)। ভোটাররা এবারও ক্ষমতায় ফিরিয়ে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

২০২০ সালে সিঙ্গাপুরে সর্বশেষ নির্বাচনে দেখা গেছে, বিরোধী দল ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’ ১০টি আসনে জয় পেয়ে ইতিহাস গড়ে। ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার পর এটিই ছিল বিরোধীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

এবারের নির্বাচনে ৯৭টি আসনের জন্য লড়াই হবে। এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল পিএপি ৯৩ আসনের ভেতর ৮৩টি আসনে জয় পেলেও সেই ফলকে আংশিক ধাক্কা হিসেবেই বিবেচনা করে দলটি। ফলে এবারের নির্বাচনে আরো শক্তিশালী জয়ের লক্ষ্যে তারা মাঠে নামবে এতে সন্দেহ নেই।

আগামী ৩ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের আগে ইউগভ পরিচালিত এক জরিপে ৪৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তারা কাকে ভোট দেবেন ঠিক করে ফেলেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ শতাংশই ভোট দেবেন পিএপিকে, আর ১৫ শতাংশ ভোট দেবেন প্রধান বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টিকে।

জরিপে অংশ নিয়েছিল ১,৮৪৫ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক।

গত বছর দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের জায়গায় দায়িত্ব নেওয়া লরেন্স ওংয়ের জন্য এটি হবে প্রথম বড় নির্বাচনী পরীক্ষা।

ফেব্রুয়ারিতে নিজের প্রথম বাজেট পেশ করে তিনি যেসব করছাড়, নগদ সহায়তা এবং খাতভিত্তিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন, অনেকেই তা দেখছেন নির্বাচনের আগে ভোটারদের খুশি রাখতে ‘ফিল-গুড বাজেট’ হিসেবে।

রয়টার্স জানিয়েছে, সিঙ্গাপুর স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে। তাদের সবাই পিএপির। প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লি কুয়ান ইউ, যাকে আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার বলা হয়। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন দীর্ঘ ২৫ বছর। ২০১৫ সালে প্রয়াত লি কুয়ান ইউয়ের ছেলে লি সিয়েন লুং ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর দায়িত্ব ছাড়েন।

সিঙ্গাপুরে ২৭ লাখ ৫০ হাজার যোগ্য ভোটারের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক। দেশটিতে যুক্তরাজ্যের মত ‘ফার্স্ট-পাস-দ্য-পোস্ট’-এর মতো ভোটদানের নিয়ম থাকলেও সেখানে বিরোধীদের জন্য কিছু বাড়তি চ্যালেঞ্জ আছে।

মন্তব্য

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ‘পর্যালোচনা’ করছে হামাস

    ১০ জিম্মির বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি মুক্তির শর্ত ‘৪৫ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছতে হবে’
সিএনএন
সিএনএন
শেয়ার
ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ‘পর্যালোচনা’ করছে হামাস
১৫ এপ্রিল গাজা সিটিতে ধসে পড়া একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ধাতব জিনিসপত্র খুঁজে বের করছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি : এএফপি

হামাস ‘গাজায় যুদ্ধবিরতির’ একটি ইসরায়েলি প্রস্তাব ‘পর্যালোচনা’ করছে বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির এক কর্মকর্তা। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে বন্দি ও আটক শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। হামাস এই প্রস্তাবটি পেয়েছে সোমবার। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এতে একটি ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক কাঠামো উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাবে।

এই প্রস্তাবে গাজা উপত্যকা নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা অতীতে হামাসের জন্য একটি কঠোর সীমারেখা ছিল। তবে প্রস্তাবে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের কোনো নিশ্চয়তা নেই, যা হামাস একটি সমন্বিত চুক্তির অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে।

হামাস কর্মকর্তা আরো জানান, তাদের গোষ্ঠী এমন কোনো ইসরায়েলি প্রস্তাব মেনে নেবে না, যাতে নিরস্ত্রীকরণ বা প্রাথমিক সেনা প্রত্যাহারের পর ইসরায়েলি বাহিনীর গাজায় প্রত্যাবর্তনের শর্ত থাকে। ফলে এটি গোষ্ঠীটির পক্ষে গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা কম।

মার্চে যুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার পর গাজা থেকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইসরায়েলের প্রথম প্রস্তাব এটি। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জিম্মিদের পরিবারের পাশাপাশি দিন দিন অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠা রিজার্ভ সেনাদের চাপের মুখে রয়েছেন একটি চুক্তিতে পৌঁছতে। সিএনএন ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়েছে।

হামাস কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাব অনুযায়ী জিম্মিদের মুক্তি পর্যায়ক্রমে হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিক ইদান আলেকজান্ডারকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাস্বরূপ’ মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর আরো ৯ ইসরায়েলি জিম্মিকে দুটি ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে কোনো অভিযোগ ছাড়া আটক এক হাজার ১০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবে বলে জানান তিনি।

ইসরায়েলি প্রস্তাবে হামাসের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন জীবিত বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের সম্পর্কে তথ্য দেয়। এর বিনিময়ে ফিলিস্তিনি আটকদের সম্পর্কেও তথ্য দেওয়া হবে।

এ ছাড়া মৃত ১৬ জন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলের হেফাজতে থাকা ১৬০ জন মৃত ফিলিস্তিনির মরদেহ মুক্তি দেওয়া হবে।

হামাস কর্মকর্তা বলেন, ‘৪৫ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির’ আওতায় সামরিক অভিযান বন্ধ থাকবে এবং গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করবে। একই সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে, এই সহায়তা যেন শুধু বেসামরিক লোকদের কাছে পৌঁছয়। পাশাপাশি এই প্রস্তাবে গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রবেশের ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহান্তে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল কায়রোতে মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে ইসরায়েল আলোচনায় দল পাঠিয়েছে কি না, তা প্রকাশ করেনি।

এদিকে মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে, যার মধ্যে খাদ্য সরবরাহও রয়েছে। সহায়তা সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, এই পদক্ষেপ গাজার ২০ লাখ বাসিন্দার জন্য পরিস্থিতিকে চরমভাবে খারাপ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চলমান আক্রমণ পরিস্থিতি আরো জটিল করেছে।

ইসরায়েল বলেছে, হামাসকে জিম্মি মুক্তির জন্য চাপ দিতে এবং বিদ্যমান যুদ্ধবিরতির শর্ত পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে তারা গাজায় সহায়তা প্রবেশ বন্ধ ও সামরিক অভিযান চালিয়েছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

হামাস কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সাত দিনের জন্য গাজার কিছু অংশ, যেমন দক্ষিণাঞ্চলের রাফা, উত্তরের কিছু এলাকা ও গাজা সিটির পূর্ব দিক থেকে সরে যাবে।

সিএনএনকে ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ইসরায়েলি প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, ‘গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ’ ও ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা’ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন থেকে। তিনি বলেন, ‘৪৫ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছতে হবে।’ এরপর হামাসের হাতে থাকা বাকি জীবিত ও মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের ফেরত দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘যদি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তি হয়, তবে নির্ধারিত শর্ত ও সময় অনুযায়ী তা বাড়ানো যাবে…আর যদি এই সময়ের মধ্যে কোনো চুক্তি না হয়, তবে নতুন জিম্মি-বন্দিমুক্তির বিনিময়ে মেয়াদ বাড়ানো হবে।’

হামাস কর্মকর্তার যে বিবরণ, তার কিছু অংশ ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায় বলে জানিয়েছে সিএনএন।

‘চুক্তির পথে অগ্রগতি হচ্ছে’
এর আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবে গাজা থেকে ১০ জন জিম্মি মুক্তির দাবি রয়েছে। সেই সঙ্গে আলেকজান্ডারকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুক্তির পরিকল্পনাও রয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রস্তাব অনুযায়ী বিভিন্ন ধাপে হামাসকে অন্য জিম্মিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর রবিবার জানায়, গাজায় জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি বিষয়ক নতুন চুক্তির পথে ‘পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে’, যা জানানো হয় জিম্মি আইতান মোরের পরিবারের সঙ্গে আলাপের সময়। জিম্মি পরিবারের সংগঠন টিকভা ফোরাম এই কথোপকথন নিশ্চিত করে জানায়, নেতানিয়াহু মোর পরিবারকে ‘১০ জন জীবিত অপহৃত ব্যক্তির মুক্তিসংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতি’ সম্পর্কে জানিয়েছেন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতেও বলা হয়েছে, আলোচনাটি ১০ জন জিম্মি মুক্তির বিষয়ে। তবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।

সিএনএন হামাস কর্মকর্তার দেওয়া প্রস্তাবের আরো কিছু বিবরণ যাচাইয়ের চেষ্টা করছে।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মাহমুদ মারদাবি রবিবার টেলিগ্রামে বলেন, হামাস যেকোনো প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে, যদি তা ‘আক্রমণ বন্ধ ও দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহারের ভিত্তিতে’ হয়। তবে তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘খাদ্যের বিনিময়ে জিম্মি মুক্তি’র মতো খণ্ডিত প্রক্রিয়া হামাস মেনে নেবে না।

সিএনএন গত সপ্তাহে জানায়, মধ্যস্থতাকারীরা হতাশ, কারণ নেতানিয়াহু আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা রন ডারমারকে নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত আলোচনার গতি মন্থর করেছে এবং আগের যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করছে।

মন্তব্য

লন্ডনের মায়া ছেড়ে কোটিপতিরা পাড়ি জমাচ্ছেন এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
লন্ডনের মায়া ছেড়ে কোটিপতিরা পাড়ি জমাচ্ছেন এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে
সংগৃহীত ছবি

একসময় ধনীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল টেমস নদীর তীরে গড়ে ওঠা লন্ডন শহর। এই শহরের মায়ায় জড়িয়ে এখানে শিকড় গেঁথেছিল বহু ধনী অভিজাত পরিবার। স্থাপত্যের দিক থেকে এই শহরের খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। বহু সংস্কৃতি ও ধারণার সঙ্গমস্থল।

৯০ লাখের বেশি মানুষের বাস এখানে।

প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো এই শহরের কদর বর্তমানে কমেছে। ইংল্যান্ডের রাজধানীর মুকুট থেকে খসে পড়েছে একটি পালক। বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ ধনী শহরের তকমা হারিয়েছে লন্ডন।

একসময় লন্ডন ছিল বিশ্বের ধনীদের আবাসস্থল। সেই লন্ডন ছেড়ে যাচ্ছেন তারা। এখন এই সংখ্যাটা কয়েক শতে সীমাবদ্ধ নেই।

millionaires are leaving London

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কোটিপতিকে হারানো শহর হিসেবে তালিকার শীর্ষে রয়েছে ব্রিটিশ রাজধানী।

গত এক দশকে লন্ডন তার ১২ শতাংশ ধনী বাসিন্দাকে হারিয়েছে।

লন্ডনে অবস্থিত ব্রিটিশ বিনিয়োগ অভিবাসন পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান ‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির একটি নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ১১ হাজারেরও বেশি বিত্তবান ব্রিটিশ রাজধানী ছেড়েছেন। ধনীদের লন্ডন ছাড়ার প্রবণতা কয়েক বছর ধরেই চলছে। তবে তা এখন উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে।

এই ধনপতিদের বেশির ভাগই এশিয়া এবং আমেরিকার বিভিন্ন শহরকে বসবাসের জন্য বেছে নিয়েছেন। ধনীদের দেশত্যাগের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বিষয়। তার মধ্যে রয়েছে ক্রমবর্ধমান কর, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং ব্রেক্সিট অর্থাৎ ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত।

যদিও এই অভিবাসন প্রবণতা লন্ডনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন নয়। তবে এই প্রবণতা গত বছর থেকেই উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।

millionaires are leaving London

এক বছরের মধ্যে লন্ডনে মোট বিত্তবানের সংখ্যা ২ লাখ ২৭ হাজার থেকে কমে ২ লাখ ১৫ হাজার ৭০০-এ দাঁড়িয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো শহরটি বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ ধনী শহরের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। 

‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’ ও ‘নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ’-এর যৌথভাবে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, লন্ডনের স্থান দখল করছে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেস।

সেই রিপোর্ট বলছে, গত ১০ বছরে বিত্তবানদের মধ্যে পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো এবং সিলিকন ভ্যালিসহ সমুদ্রের উপকূলের এলাকাগুলো।

millionaires are leaving London

কোটিপতির সংখ্যার নিরিখে শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে সাতটিই আমেরিকা ও এশিয়ার। তালিকার প্রথম পাঁচে রয়েছে নিউইয়র্ক সিটি, আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর উপকূলবর্তী অঞ্চল, টোকিয়ো, সিঙ্গাপুর, লস অ্যাঞ্জেলেস।

তালিকায় লন্ডনের ঠাঁই হয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। এ ছাড়া সেই তালিকায় রয়েছে প্যারিস, হংকং, সিডনি ও শিকাগো। এই শহরগুলোর মধ্যে সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়ায় কোটিপতি বাসিন্দার সংখ্যা ৯৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে এশিয়ার সিঙ্গাপুরে কোটিপতির সংখ্যা ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

millionaires are leaving London

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিত্তশালী লোকের বাস আমেরিকাতেই। অধিকাংশ প্রযুক্তি কম্পানির আঁতুড়ঘর আমেরিকা। অ্যামাজন, ফেসবুক, মাইক্রোসফট, গুগলসহ বহু সংস্থার মালিক রয়েছেন মার্কিন ধনকুবেরের তালিকায়। পৃথিবীর ২১৫৮ জন ধনকুবেরের মধ্যে ৫৮৫ জনই আমেরিকার বাসিন্দা।‌

মন্তব্য

পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে রুশ গোয়েন্দাপ্রধানের হুমকি

আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে রুশ গোয়েন্দাপ্রধানের হুমকি
রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান সের্গেই নারিশকিন। ফাইল ছবি : এএফপি

রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হুমকি দিয়েছেন, সম্মিলিত প্রতিরক্ষা গোষ্ঠী উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংগঠন (ন্যাটো) ‘আগ্রাসন’ চালালে পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো প্রথমে হামলার শিকার হবে।

সের্গেই নারিশকিন মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া নোভস্তিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ন্যাটো যদি রাশিয়া বা বেলারুশের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তবে মস্কো পুরো সামরিক জোটটির ‘ক্ষতি’ করবে। তবে প্রথমে ভুক্তভোগী হবে পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের লক্ষ্য পূরণ হলে মস্কো যে ইউরোপের সাবেক পূর্ব ব্লকের সদস্যদের দিকে নজর ফেরাবে—রুশ কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন আশঙ্কাকে আরো জোরালো করবে।

নারিশকিন ন্যাটোর সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধিকে ইউরোপীয় মহাদেশে ‘বর্তমান বড়, অত্যন্ত বিপজ্জনক সংকটের’ জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো বিশেষভাবে আগ্রাসী, অন্তত কথার ক্ষেত্রে, তারা ক্রমাগত যুদ্ধের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তাদের এটা বোঝা উচিত, যদিও তারা এখনো তা না বোঝে যে উত্তর আটলান্টিক জোট যদি ইউনিয়ন স্টেটের (রাশিয়া ও বেলারুশের জোট) বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায়, তবে অবশ্যই পুরো ন্যাটো জোট ক্ষতির মুখে পড়বে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হবে সেই রাজনৈতিক মহলগুলোর সদস্যরা, যারা পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতে এ ধরনের ভাবনার ধারক।

এ ছাড়া পোল্যান্ড সম্প্রতি পরমাণু অস্ত্র সংগ্রহের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে নারিশকিন বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

গত মাসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ফ্রান্স ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য তার পারমাণবিক ছাতা সম্প্রসারিত করতে পারে। এর প্রতিক্রিয়ায় পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা বলেন, এই পদক্ষেপ ‘পোল্যান্ডের নিরাপত্তার জন্য লাভজনক’ হবে।

রুশ গোয়েন্দাপ্রধান আরো দাবি করেন, পোল্যান্ড বেলারুশ ও কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলের সীমান্ত বরাবর প্রায় ২০ লাখ ট্যাংকবিধ্বংসী মাইন বসানোর পরিকল্পনা করছে।

এদিকে গত মাসে পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো ঘোষণা দেয়, রাশিয়ার আক্রমণাত্মক অবস্থানের আশঙ্কায় তারা অটোয়া কনভেনশন থেকে সরে আসছে। আন্তর্জাতিক এই চুক্তি স্থল মাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এ ছাড়া নারিশকিন শান্তি আলোচনা নিয়ে রাশিয়ার কৌশলগত লক্ষ্য পুনরায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ক্রেমলিন চায় না ইউক্রেনের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকুক এবং তারা ‘নিরস্ত্রীকরণ ও নাৎসিবাদমুক্তকরণ’ চায়।

অন্যদিকে সমালোচকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে কোনো যুদ্ধবিরতির চুক্তি করাতে চায়, তবে মস্কো এতে ভূখণ্ড ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত ছাড় পেতে পারে।

তাদের মতে, এ ধরনের ছাড় রাশিয়ার সম্প্রসারণবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আরো উৎসাহিত করবে এবং তাদের নতুন করে সজ্জিত হয়ে ইউরোপের আরো গভীরে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ করে দেবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ