<p>লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোট জাপানের সাধারণ নির্বাচনে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। গতকাল রবিবার নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল তাই বলছে। এর আগে, জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে বলে বুথফেরত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল। একের পর এক কেলেঙ্কারিতে দেশটির ক্ষমতাসীন দলের টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল আগাম নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। </p> <p>গত এক যুগের মধ্যে এই জোটের জন্য নির্বাচনে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল হলো এবারই। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে অর্ধেকেরও বেশি আসন পেয়েছে বিরোধী দলগুলো। নির্বাচনের এই ফলাফলের কারণে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে সরকার গঠন হবে কীভাবে তা নিয়ে বেশ অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।</p> <p>পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সময় প্রধান বিরোধী দলের প্রতি ৬.৬ শতাংশ মানুষের সমর্থন ছিল। তবে এবার তারা আগের তুলনায় বেশি আসন পেতে পারে। সংবাদমাধ্যম এনএইচকে বুথফেরত জরিপে জানিয়েছিল, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ১৫৩ থেকে ২১৯ আসন পেতে পারে এলডিপি। অন্যদিকে সিডিপি পেতে পারে ১২৮ থেকে ১৯১টি আসন।</p> <p> আজ সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে দেখা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন এলডিপি এবং তাদের মিত্র দল কোমেইতো মোট ২০৮টি আসন পেয়েছে, যেখানে বিরোধী দলগুলো পেয়েছে ২৩৫টি আসন। এলডিপি একা পেয়েছে ১৯১টি আসন। দেশটিতে ক্ষমতায় যেতে একটি দল বা জোটের জন্য কমপক্ষে ২৩৩টি আসন প্রয়োজন হয়। এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বড় বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (সিডিপি) পেয়েছে ১৪৩টি আসন। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বা ডায়েটের ২২টি আসনের ফলাফল এখনও ঘোষণা করা হয়নি। </p> <p>শিগেরু ইশিবা এলডিপির নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার তিনদিন পরে এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই এই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে এক প্রতিক্রিয়ায় ইশিবা এনএইচকে-কে বলেন, ‘ভোটাররা কঠোর রায় দিয়েছে এবং আমাদের খুব বিনয়ের সঙ্গে এই রায় মেনে নিতে হবে।’</p> <p>তার পরেও এলডিপি বিরোধী দলগুলোর জন্য শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে। বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে, তেমনই শাসনের প্রশ্নে তারা যে ক্ষমতাসীনদের বিকল্প, সেটাও ভোটারদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে।</p> <p>গত কয়েকটি বছর টালমাটাল অবস্থায় কেটেছে এলডিপির সময়।  এ সময়টি ছিল কেলেঙ্কারীতে ঠাসা, ভোটারদের উদাসীনতা আর সমর্থনের রেকর্ড নিম্নমুখী প্রবণতা। এ বছরের শুরুতে ভোটারদের সমর্থনের পাল্লা রেকর্ড ২০ শতাংশে নেমে আসে। মূলত দলের তহবিল কেলেঙ্কারীর খবর ফাঁস হওয়ার পরপরই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।</p> <p>জাপানে নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ পেতে হলে যেকোনো দলকে অন্তত ২৩৩ আসনে জয় পেতে হবে। সর্বোচ্চসংখ্যক আসন পাওয়ার পরেও এলডিপিকে অন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠনের প্রয়োজন হবে। এর আগে তারা কোমেইতো পার্টির সঙ্গে জোট গঠন করেছিল।<br /> নিম্নকক্ষের ৪৬৫টি আসনের মধ্যে এলডিপির ছিল ২৪৭টি আসন এবং জোটের শরিক কোমেইতোর দখলে ছিল ৩২টি আসন।  অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল সর্বশেষ সংসদে ৯৮টি আসন পেয়েছিল। </p> <p>সূত্র : বিবিসি, এএফপি</p>