<p>ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত দুটি রাজ্য থুথু, প্রস্রাব এবং ময়লা দিয়ে খাবার দূষিত করার জন্য মোটা অঙ্কের জরিমানা এবং কারাদণ্ড আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখন্ড অপরাধীদের ১ লাখ রূপি (এক হাজার ১৯০ ডলার) পর্যন্ত জরিমানা করার কথা জানিয়েছে, অন্যদিকে প্রতিবেশী উত্তর প্রদেশ এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য কঠোর আইন প্রবর্তণের কথা জানিয়েছে।</p> <p>সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু অযাচাইকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্রেতারা স্থানীয় স্টল এবং রেস্তোঁরাগুলোতে খাবারে থুথু দিচ্ছেন। এ ছাড়া আরো একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক গৃহপরিচালিকা খাবার তৈরি করার সময় খাবারে প্রস্রাব মিশিয়ে দিচ্ছেন। এসব ঘটনার পরেই  সরকারি এই নির্দেশগুলো আসে। </p> <p>ভিডিওগুলো ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, অনেকেরই এই রাজ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিছু ভিডিও মুসলিমদের লক্ষ্য করে মিথ্যা প্রচারণার বিষয়ও হয়ে উঠেছে, যা পরে ফ্যাক্ট চেকারা ভুয়া বলে দাবি করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অভিযোগ করেছেন, যে নারী খাবারে প্রস্রাব মিশিয়েছেন তিনি মুসলিম, কিন্তু পুলিশ পরে তাকে হিন্দু হিসেবেই শনাক্ত করে।  </p> <p>কর্মকর্তারা বলেছেন, খাবারের আশেপাশে অস্বাস্থ্যকর অনুশীলনে লিপ্ত হওয়া থেকে লোকেদের নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে কঠোর আইন প্রয়োজন। তবে বিরোধী নেতারা এবং আইন বিশেষজ্ঞরা এই আইনগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং অভিযোগ করেছেন, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অপমান করার জন্য এসব আইনের অপব্যবহারও হতে পারে।</p> <p>খাদ্য নিরাপত্তা ভারতে একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি (এফএসএসএআই)-এর ধারণা, অনিরাপদ খাদ্য বছরে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন সংক্রমণ এবং ৪ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ।</p> <p>বিশেষজ্ঞরা খাদ্য নিরাপত্তা আইনের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ এবং সচেতনতার অভাবসহ ভারতে দুর্বল খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছেন। সঙ্কুচিত রান্নাঘর, নোংরা বাসনপত্র, দূষিত পানি, অনুপযুক্ত খাদ্য পরিবহন এবং সংরক্ষণের অনুশীলন খাদ্য নিরাপত্তাকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। </p> <p>যখন বিক্রেতাদের খাবারে থুথু ফেলার ভিডিও প্রকাশ হয়েছিল, তখন লোকেরা হতবাক এবং ক্ষুব্ধ হয়েছিল। এরপরেই উত্তরাখন্ড অপরাধীদের জন্য মোটা অঙ্কের জরিমানা ঘোষণা করেছে, হোটেলের কর্মীদের যাচাই করা এবং রান্নাঘরে সিসিটিভি স্থাপন করা পুলিশ  বাধ্যতামূলক করেছে।</p> <p>উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে পুলিশের উচিত প্রত্যেক কর্মীকে যাচাই করা। রাজ্য খাদ্য কেন্দ্রগুলো হোটেল মালিকদের নাম প্রদর্শন, বাবুর্চি ও ওয়েটারদের মুখোশ এবং গ্লাভস পরা, হোটেল ও রেস্তোঁরাগুলিতে সিসিটিভি লাগানো বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করেছে। প্রতিবেদনে অনুসারে, খাবারে থুথু দিলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে। </p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>