বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি ছবি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। হাসনাত আবদুল্লাহ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্য এমন দাবি করে ছড়িয়ে দেওয়া ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে— হাতে একটি বই নিয়ে পাঞ্জাবি টুপি পরে একজন বসে আছে। তার পায়ের কাছে দাঁড় করানো রয়েছে একটি অস্ত্র। পেছনে বাংলাদেশের পতাকা ও সামনে মদের খালি বোতলভর্তি একটি ঝুড়ি।
অস্ত্রসহ হাসনাত আবদুল্লাহর এই ছবিটি কি আসল?
অনলাইন ডেস্ক

তবে ছবিটি আসল নয় বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার। এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে, ছবিটি বাস্তব নয়। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ভিন্ন ব্যক্তির ছবিতে হাসনাত আবদুল্লাহর মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিটি তৈরি করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার বলছে, প্রকৃত ছবিটি ২০১৯ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে বিনোদনমূলক পোস্ট হতে দেখা যায়।
সম্পর্কিত খবর

দুধ দিয়ে গোসল করলে কি কলঙ্ক মোছে?
অনলাইন ডেস্ক

দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার হিড়িক পড়েছে দেশে। এই নেতা দুধ দিয়ে গোসল করে আওয়ামী লীগ ছাড়ছেন, তো আরেক নেতা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ছাড়ছেন। সকালে যুবলীগ ছাড়ছেন আরেকজন। কিন্তু দুধ দিয়ে গোসল কেন? বিশেষ দুধ দিয়ে গোসল করে আলোচনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী।
দুধ দিয়ে গোসল করলে কী হয়?
বিগত কয়েক বছরে এমন অনেক নেতা দুধ দিয়ে গোসল করে হয় রাজনীতি ছেড়েছেন, নয়তো দল পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু এই খবরগুলোর আকর্ষণের জায়গা ছিলো দুধ দিয়ে গোসল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, রাজনীতির কলঙ্ক মুছতেই তারা গোসলে দুধের ব্যবহার করে পাক-পবিত্র হওয়ার চেষ্টা করেছেন।
আসলেই কি দুধ কলঙ্ক মোছে?
ভারতীয় উপমহাদেশে দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হওয়ার ধারণা প্রাচীনকাল থেকে চলে এলেও আধুনিক বিজ্ঞানে যা ভিত্তিহীন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে দুধ দিয়ে গোসলে কয়েকটি উপকারিতা পাওয়া যায়। তন্মধ্যে শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা আনা, একজিমা দূর করা, চুলকানি দূর হওয়াসহ নানা উপকারের উল্লেখ রয়েছে।

মেডুসা, গ্রিক পুরাণের এক অভিশপ্ত রূপসী

গ্রিক পুরাণের এক রহস্যময় চরিত্র মেডুসা। তার সৌন্দর্য একসময় দেবতাদের পর্যন্ত মুগ্ধ করেছিল। কিন্তু এক ভয়ংকর অভিশাপের কারণে তিনি পরিণত হন এক দানবীতে। যার চোখে তাকালেই মানুষ পাথরে পরিণত হয়।
মেডুসা মূলত একজন অসাধারণ সুন্দরী মানবী ছিলেন। তার সৌন্দর্যে বিমোহিত হন সমুদ্রের দেবতা পসেইডন। কিছু কাহিনিতে বলা হয়, পসেইডন তাকে এথেনার মন্দিরে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে দেবী এথেনা এতে রুষ্ট হয়ে মেডুসাকে শাস্তি দেন।
গ্রিক পুরাণে মেডুসার ভূমিকা
মেডুসার গল্প শুধু অভিশাপের নয়, প্রতিশোধ ও ক্ষমতারও। বহু বীর মেডুসাকে পরাজিত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পারসিয়াস মেডুসার মাথা কেটে ফেলে এবং সেটি একটি থলেতে করে নিয়ে যান। এই মাথা পরবর্তীতে বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, কারণ এটি তখনো পাথরে পরিণত করার ক্ষমতা ধরে রেখেছিল।
মেডুসার প্রতীকী গুরুত্ব
আজকের সমাজে মেডুসার গল্প নারীদের শক্তি, অবমাননার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতীকি প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একসময় তাকে শুধু ভয়ংকর দানবী হিসেবে দেখা হলেও এখন অনেকেই মেডুসাকে এক নির্যাতিত নারীর প্রতিচ্ছবি হিসেবে দেখেন।
সংস্কৃতিতে মেডুসা
শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে মেডুসার মুখ দেখা যায়, বিশেষ করে রেনেসাঁ যুগের চিত্রকলায়। ফ্যাশন ডিজাইনাররা মেডুসার প্রতীক ব্যবহার করেছেন। বিখ্যাত ব্র্যান্ড ভার্সাচির লোগোতে মেডুসার মাথা রয়েছে। অনেক সাহিত্য, সিনেমা ও ভিডিও গেমে মেডুসা চরিত্রটি এসেছে, যেখানে তাকে ভয়ংকর দানবী বা শক্তিশালী নারীর প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
সূত্র : ব্রিটানিকা

‘মেহেন্দি বাই মিমির’ আয়োজনে হতে যাচ্ছে ঈদ মেহেদী ফেস্ট
অনলাইন ডেস্ক

ঈদুল ফিতরের আনন্দে সবাইকে রাঙাতে রাজধানী ঢাকায় আয়োজন হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় মেহেদী উৎসব ‘ঈদ মেহেদী ফেস্ট ২০২৫’। ‘মেহেন্দি বাই মিমি’ আয়োজনে এই উৎসবে থাকছে তাদের সকল পণ্য কেনা, লাইভ মেহেদি পরিয়ে নেওয়ার সুযোগ। এই মেহেদী ডিজাইনগুলো একেবারেই নতুন এবং ভিন্ন মাত্রার।
আয়োজকরা জানান, এই আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দু হলো অভিজ্ঞ কারিগরদের তৈরি অর্গানিক মেহেদি দিয়ে নকশা করা কারুকাজ নিজের হাতে নেওয়া।
‘ঈদ মেহেদী ফেস্ট ২০২৫’ মেহেদী প্রেমীদের জন্য একটি অসাধারণ সুযোগ, যেখানে তারা উপভোগ করতে পারবেন আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী মেহেদী ডিজাইনের এক চমকপ্রদ সমন্বয়। ফেস্টে অংশগ্রহণকারীরা পাবেন বিশেষ ঈদ স্পেশাল মেহেদী ডিজাইন, যা আপনাদের ঈদ উৎসবকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে।
উৎসবটি আগামী ২৯ ও ৩০ মার্চ সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট ইসিবি চত্ত্বরের ব্লুমুন টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হবে। যোগাযোগ করতে পারেন- ফোন: 09647000112, ইমেইল: mehendibymimi@gmail.com এবং ওয়েবসাইট: www.mehendibymimi.com।

স্বরণ
স্থপতি ফজলুর রহমান খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
অনলাইন ডেস্ক

স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অন্যতম পথিকৃৎ বিশ্ব বিখ্যাত পুরকৌশলী ফজলুর রহমান খানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮২ সালের ২৭ মার্চ (আজকের দিনে) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি পৃথিবীর অন্যতম উচ্চ ভবন শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার (বর্তমানে উইলিস টাওয়ার)-এর নকশা প্রণয়ন করেন। তাকে বিংশ শতকের শ্রেষ্ঠ প্রকৌশলীদের মধ্যে অন্যতম বলা হয়।
ফজলুর রহমান খান ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩ এপ্রিল তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ঢাকায় একটি বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা খান বাহাদুর আবদুর রহমান খাঁ ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। তার দাদার নাম আসলত রহমান খাঁন এবং তাদের আদিবাড়ি ছিল মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ভাণ্ডারিকান্দি গ্রামে।
তার মা খাদিজা খাতুন ছিলেন পাবনা জেলার দুলাই ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জমিদার আব্দুল বাসিত চৌধুরীর মেয়ে এবং তাদের পূর্বপুরুষ শরফুদ্দীন সরকার তুর্কেস্তানের সমরখন্দ শহর থেকে বাংলায় এসে দুলাই গাঁওয়ে বসতি স্থাপন করেছিলেন।
ফজলুর রহমান ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার আরমানিটোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক বা মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতার শিবপুর বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (বর্তমানে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, শিবপুর) ভর্তি হন।
চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালে পঞ্চাশের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে তিনি ঢাকায় ফিরে এলে তৎকালীন আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে বাকি পরীক্ষা সমাপ্ত করেন। কলকাতার শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার এবং আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরীক্ষার উভয় ফলের ভিত্তিতে তাকে বিশেষ বিবেচনায় ব্যাচেলর অব ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্থাৎ প্রকৌশলে স্নাতক উপাধি প্রদান করা হয়।
ফজলুর রহমান খান ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে যুগপৎ সরকারি বৃত্তি ও ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইউনিভার্সিটি অব ইলিনয় অ্যাট আর্বানা-শ্যাম্পেইন থেকে অবকাঠামো প্রকৌশল (স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং) ক্ষেত্রে সনদ এবং ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তত্ত্বীয় ও ফলিত বলবিজ্ঞান ক্ষেত্রে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর (মাস্টার অব সায়েন্স) উপাধি লাভ করেন।
স্নাতক উপাধি অর্জনের পরপরই ফজলুর রহমান খান আহসানউলাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপকের পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শিকাগো শহরের স্কিডমোর, ওউইং ও মেরিল নামের প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান দেন।
পরবর্তীতে আমেরিকার স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান স্কিড মোর-এর আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে এ কম্পানির শিকাগো অফিসের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। পাশাপাশি তিনি আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি-এর স্থাপত্য বিভাগে অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত হন। সেখানে পরে তিনি প্রফেসর এমিরিটাস হয়েছিলেন।
তিনি ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকার ‘নিউজ উইক’ ম্যাগাজিন শিল্প ও স্থাপত্যের ওপর প্রচ্ছদ কাহিনিতে তাকে মার্কিন স্থাপত্যের শীর্ষে অবস্থানকারী ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করে। স্থপতি ড. এফ.আর.খান আন্তর্জাতিক গগনচুম্বী ও নগরায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে শিকাগোর জন হ্যানকক সেন্টার, বাদশাহ আব্দুলআজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হজ্ব টার্মিনাল এবং বাদশাহ আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য মডেল অঙ্কন।
এফ.আর.খান মুসলিম স্থাপত্য বিষয়ের ওপর নানা ধরনের গবেষণা করেছেন। তিনি Tube in Tube নামে স্থাপত্য শিল্পের এক নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিলেন যার মাধ্যমে অতি উচ্চ (কমপক্ষে একশত তলা) ভবন স্বল্প খরচে নির্মাণ সম্ভব। গগনচুম্বী ভবনের ওপর সাত খণ্ডে প্রকাশিত একটি পুস্তকের তিনি সম্পাদনা করেন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রবাসে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। তার নেতৃত্বে প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত হয় দুটি সংগঠন: ‘বাংলাদেশ ইমার্জেন্সি ওয়েলফেয়ার আপিল’, যার উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিবাহিনীর সমর্থনে প্রচার-প্রচারণা এবং রিলিফ সংগ্রহ এবং ‘বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ’, এই সংগঠনটি কূটনৈতিকভাবে মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিল। মূলত এই সংগঠনের তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানে সৈন্য পাঠাতে অপারগতা প্রকাশ করে।
বিশ্ব বিখ্যাত এই স্থপতি ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মার্চ জেদ্দায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তার দেহ আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাকে শিকাগোতে সমাহিত করা হয়।