মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ : বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা

বাসস
বাসস
শেয়ার
মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ : বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউএসএআইডির বিশাল কর্মীসংখ্যা ছাঁটাই এবং প্রায় সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম অবিলম্বে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। ফাইল ছবি : এএফপি

বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) বন্ধের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, প্রতিবছর বৈদেশিক সহায়তার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিতরণকারী সংস্থাটি বন্ধের সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন স্বাস্থ্য কর্মসূচি হুমকির মুখে পড়তে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউএসএআইডির বিশাল কর্মীসংখ্যা ছাঁটাই এবং প্রায় সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কার্যক্রম অবিলম্বে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, ৯০ দিনের জন্য সব বৈদেশিক সহায়তার অর্থায়ন বন্ধ থাকবে এবং এই সময়ের মধ্যে ‘পর্যালোচনা’ করা হবে যে এটি ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না।

ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে বৈদেশিক ব্যয়ের সমালোচনা করে আসছেন এবং তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে একে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার কথা বলেছেন।

প্রশাসন বিশেষ করে ইউএসএআইডিকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, সংস্থাটির ব্যয়কে ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে এবং কিছু প্রকল্পকে ‘করদাতাদের অর্থের অপচয়’ বলে চিহ্নিত করেছে।

সংক্রামক রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা
এদিকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে সংক্রামক রোগের বিস্তার, টিকা ও নতুন চিকিৎসার গবেষণায় বিলম্ব ঘটতে পারে।

আরো পড়ুন
মার্কিন সহায়তা হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি সংকটের আশঙ্কা

মার্কিন সহায়তা হ্রাসে দীর্ঘমেয়াদি সংকটের আশঙ্কা

 

যুক্তরাজ্যের লিভারপুল স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের টিবি ও সামাজিক চিকিৎসা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. টম উইংফিল্ড বলেন, ‘ইউএসএআইডি বন্ধের প্রভাব এতটা গভীর হবে যে তা কমিয়ে দেখার সুযোগ নেই।’ ইউএসএআইডির সহায়তার ব্যাপ্তি অনেকেই বুঝতে পারেন না।

এটি অপুষ্টি, স্বাস্থ্যবিধি, টয়লেটব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানির প্রবাহ নিশ্চিতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে ব্যয় হয়, যা টিবি ও ডায়রিয়ার মতো রোগের ওপর বিশাল প্রভাব ফেলে।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোগ কোনো সীমান্ত মানে না—বিশেষ করে যখন জলবায়ু পরিবর্তন ও গণমানুষের স্থানান্তর বাড়ছে। সংক্রামক রোগ আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।’

প্রতিবছর এক কোটি মানুষ টিবি রোগে আক্রান্ত হয় এবং ১৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

কিন্তু ৪০ শতাংশ রোগী কোনো চিকিৎসা পায় না। ফলে তারা রোগটি ছড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। ড. উইংফিল্ড বলেন, ‘যদি কোনো গবেষণা প্রকল্প বা ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যায়, তবে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। এই সহায়তা বন্ধ হলে মানুষ সরাসরি মারা যাবে।’

এইচআইভি চিকিৎসায় বিপর্যয়ের আশঙ্কা
শুধু টিবি নয়, এইচআইভি রোগীদের সেবাদানকারী ক্লিনিকগুলোর ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

অনেক এনজিও ইউএসএআইডির সহায়তায় কাজ করে, যারা গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ সরবরাহ করে, যা রক্তে এইচআইভি ভাইরাসের পরিমাণ কমিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

ড. উইংফিল্ড বলেন, ‘যদি চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হয়, তবে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসাধীন কোনো রোগী যদি ওষুধ নিতে না পারে, তবে তার রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে।’

‘বিপর্যয়কর প্রভাব’
‘ফ্রন্টলাইন এইডস’ নামের যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক একটি সংস্থা জানায়, তাদের ৬০টি অংশীদারি সংস্থার মধ্যে ২০টির বেশি ‘ইউএসএআইডি’ সহায়তা বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক জন প্লাস্টো বলেন, ‘এই তহবিল স্থগিত হওয়ায় অনেক অংশীদারি সংস্থা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে, কর্মীদের বরখাস্ত করতে হয়েছে। এটি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী ও সংগঠনগুলোর জন্য বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।’

তিনি জানান, উগান্ডার একটি সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত এইচআইভি পরীক্ষা, টিবি ওষুধ ও কনডম সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হবে। কারণ আগামী এক মাসের মধ্যেই তাদের মজুদ ফুরিয়ে যাবে।

দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক এইচআইভি সেবাকেন্দ্র ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কেন্দ্র ধর্ষণের শিকার নারী ও কিশোরীদের জন্য জরুরি সেবা ও গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা সরবরাহ করত।

‘ভয়াবহ আস্থাহীনতা’
সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক পিটার টেইলর বলেন, ‘এই তহবিল বন্ধের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হওয়া।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো কিছু হঠাৎ বন্ধ করে দিলে মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হয়। মানুষ বিভ্রান্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। এই আস্থাহীনতা আরো বহু ক্ষেত্রে গভীর ক্ষতি করবে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্যও ক্ষতিকর।’

গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ গবেষণার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
ইউএসএআইডি বৈশ্বিক ক্লিনিক্যাল ওষুধ পরীক্ষার জন্যও অর্থায়ন করে থাকে, যা এখন হুমকির মুখে পড়তে পারে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআরসি বায়োস্ট্যাটিস্টিকস ইউনিটের গবেষক অধ্যাপক থমাস জাকি বলেন, ‘এই তহবিল স্থগিত হওয়ায় অসংখ্য ওষুধ গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিলম্বিত হবে বা বাতিল হতে পারে। বিশেষ করে ম্যালেরিয়া ও এইচআইভির মতো রোগের ক্ষেত্রে এর প্রভাব হবে মারাত্মক। কারণ এই গবেষণাগুলোর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত।’

ভবিষ্যতে মহামারির ঝুঁকি
ইন্টারন্যাশনাল ল ও গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপক রোজা ফ্রিডম্যান বলেন, ইউএসএআইডি বিশ্বব্যাপী মোট উন্নয়ন সহায়তার প্রায় ৪০ শতাংশ প্রদান করে, যা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ব্যয় হয়।

তিনি বলেন, ‘এই সহায়তা দীর্ঘদিনের জন্য বন্ধ থাকলে প্রতিষেধক সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে যেসব রোগ নিয়ন্ত্রণে ছিল, যেমন কলেরা ও ম্যালেরিয়া, সেগুলো নতুন করে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও গ্লোবালাইজেশনের কারণে এই রোগগুলো দ্রুত ও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা

মার্কিন সহায়তা কাটছাঁটে কোটি প্রাণ ঝুঁকিতে

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
মার্কিন সহায়তা কাটছাঁটে কোটি প্রাণ ঝুঁকিতে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। ফাইল ছবি : এএফপি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান সোমবার ওয়াশিংটনকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সহায়তায় তাদের কঠোর কাটছাঁট পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এই সহায়তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লাখো মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে।  

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সহায়তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।’ পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেন, শুধু বৈশ্বিক এইচআইভি কর্মসূচিতেই এই বিঘ্ন ‘২০ বছরের অগ্রগতি নষ্ট করতে পারে, যার ফলে এক কোটি অতিরিক্ত এইচআইভি সংক্রমণ ও ৩০ লাখ এইচআইভি সংশ্লিষ্ট মৃত্যু ঘটতে পারে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায় সব বিদেশি সহায়তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার মধ্যে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে বড় আকারের সহায়তাও অন্তর্ভুক্ত। বিশ্বের সবচেয়ে বড় দাতা দেশ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের এমন আকস্মিক নীতি পরিবর্তন মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।  

বড় ধরনের প্রভাব
গেব্রিয়েসাস সতর্ক করে আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে সরাসরি যে অর্থ সহায়তা দেওয়া হতো, তা কেটে দেওয়ার ফলে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, ‘এইচআইভি, হামের মতো সংক্রামক রোগ থেকে শুরু করে পোলিওর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে চলা লড়াই ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ‘সংক্রমণ শনাক্তকরণ, ওষুধ সরবরাহ ও কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, যা মজুদ ফুরিয়ে যাওয়া, সরবরাহ বিলম্বিত হওয়া বা অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র ম্যালেরিয়া মোকাবেলায় সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় দাতা দেশ হিসেবে কাজ করেছে, যার ফলে আনুমানিক ২২০ কোটি সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং এক কোটি ২৭ লাখ মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হয়েছে।’ কিন্তু এই সহায়তা বন্ধ থাকলে ‘শুধু এই বছরেই এক কোটি ৫০ লাখ নতুন ম্যালেরিয়া সংক্রমণ এবং এক লাখ সাত হাজার মৃত্যু ঘটতে পারে, যা ১৫ বছরের অগ্রগতি পিছিয়ে দেবে।’

এইচআইভি পরিস্থিতি ভয়াবহ বলেও জানান ডব্লিউএইচওর প্রধান।

যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক এইচআইভি প্রতিরোধ কর্মসূচির প্রায় সব অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৫০টিরও বেশি দেশে এইচআইভি চিকিৎসা, পরীক্ষা ও প্রতিরোধমূলক সেবায় তাৎক্ষণিকভাবে বিঘ্ন ঘটেছে।  তিনি বলেন, ‘আটটি দেশে এইচআইভি চিকিৎসার গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং কয়েক মাসের মধ্যে এই ওষুধ শেষ হয়ে যাবে।’ এর ফলে ‘বিশ্বজুড়ে ২০ বছরের অগ্রগতি নষ্ট হয়ে এক কোটি অতিরিক্ত এইচআইভি সংক্রমণ এবং ৩০ লাখ মৃত্যু ঘটতে পারে।’

এ ছাড়া যক্ষ্মার বিরুদ্ধে লড়াইও হুমকির মুখে জানিয়ে গেব্রিয়েসাস বলেন, ‘গত দুই দশকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় যক্ষ্মা (টিবি) চিকিৎসায় প্রায় আট কোটি মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।’ কিন্তু এখন ‘এই অর্জনও ঝুঁকিতে পড়েছে’।

তিনি আরো সতর্ক করেন, ৭০০টিরও বেশি ল্যাবরেটরি নিয়ে গঠিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল মিজলস অ্যান্ড রুবেলা নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে, যা পুরোপুরি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে চলে। তিনি বলেন, ‘এটি সবচেয়ে খারাপ সময়ে ঘটছে, যখন হামের প্রকোপ আবার বাড়ছে।’

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘গত ৫০ বছরে হামপ্রতিরোধী টিকার মাধ্যমে প্রায় ৯ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই অর্জনও হুমকির মুখে।’

মন্তব্য
ডার্ক অক্সিজেন

গভীর সমুদ্রে এক আবিষ্কারে বিভক্ত বিজ্ঞানীরা

বাসস
বাসস
শেয়ার
গভীর সমুদ্রে এক আবিষ্কারে বিভক্ত বিজ্ঞানীরা
প্রতীকী ছবি : এএফপি

সূর্যের আলো ছাড়াই সমুদ্রের গভীর অন্ধকারতম স্থানে অবস্থিত ধাতব শিলা কি অক্সিজেন তৈরি করতে পারে? কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন, সমুদ্রের আলোহীন অতল গহ্বরে ধাতব বস্তুগুলো অক্সিজেন তৈরি করতে পারে, যাকে ‘ডার্ক অক্সিজেন’ বলা হয়। তবে অন্য বিজ্ঞানীরা তথাকথিত এই ‘ডার্ক অক্সিজেন’ উৎপন্ন হওয়ার দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে গত জুলাইয়ে বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত এই আবিষ্কার পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং তীব্র বৈজ্ঞানিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

পলিমেটালিক নোডুলের মধ্যে থাকা মূল্যবান ধাতু বের করতে আগ্রহী খনি কম্পানিগুলোর জন্যও এই গবেষণার ফলাফল ফলপ্রসূ ছিল।

এই গবেষণা দীর্ঘদিনের ধারণার ওপর সন্দেহ তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে ধারণা ছিল, অক্সিজেন শুধু সূর্যের আলোতে উদ্ভিদ বা শৈবালসহ সালোকসংশ্লেণকারী প্রাণীরাই তৈরি করতে পারে, যাকে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বলা হয়। অন্যদিকে নতুন এই আবিষ্কারকরা বিশ্বাস করেন, জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এই অক্সিজেন অন্ধকারে ধাতব পিণ্ড দ্বারাও তৈরি হতে পারে।

স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেরিন সায়েন্সের বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু সুইটম্যান ও তার দল এ ডার্ক অক্সিজেন আবিষ্কার করেন। মেক্সিকো ও হাওয়াইয়ের মধ্যবর্তী প্রশান্ত মহাসাগরের বিশাল জলরাশি অঞ্চল ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোনে এই অক্সিজেন আবিষ্কার করা হয়েছে। এটা নিয়ে খনি কম্পানিগুলোর মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।

সমুদ্রতলে চার কিলোমিটার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা পলিমেটালিক নোডুলগুলোতে ম্যাঙ্গানিজ, নিকেল কোবাল্ট, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি ও অন্যান্য নিম্ন-কার্বন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত ধাতু রয়েছে।

যে গবেষণাটি ‘ডার্ক অক্সিজেন’ আবিষ্কারের জন্ম দিয়েছে, তাতে কানাডীয় গভীর সমুদ্র খনির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘দ্য মেটালস কম্পানি’ আংশিকভাবে অর্থায়ন করেছে। তারা এই ধরনের অনুসন্ধানের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করতে চেয়েছিল। কম্পানিটি সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রবিদ অ্যান্ড্রু সুইটম্যান ও তার দলের গবেষণার তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, এটিতে ‘পদ্ধতিগত ত্রুটি’ রয়েছে।

নাজুক বাস্তুতন্ত্র
পরিবেশবিদরা বলেছেন, ডার্ক অক্সিজেনের উপস্থিতি দেখিয়েছে, সমুদ্রের একদম গভীরে প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কে কতটা কম জানা গেছে। এই আবিষ্কার গভীর সমুদ্র খননকাজকে অগ্রহণযোগ্য পরিবেশগত ঝুঁকি হিসেবে মনে করে।

গ্রিনপিস নামের একটি পরিবেশবাদী সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে সমুদ্র খনন বন্ধ করতে প্রচারণা চালিয়ে আসছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘এটি নাজুক কাজ, গভীর সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করতে পারে।’

‘ডার্ক অক্সিজেন’-এর আবিষ্কার গভীর সমুদ্র খনন বন্ধের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে বলেও জানায় গ্রিনপিস।

বৈজ্ঞানিক সন্দেহ
এদিকে সুইটম্যানের এই আবিষ্কার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের অনেকেই এই সিদ্ধান্তের প্রতি আপত্তি প্রকাশ করেছেন অথবা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

গত জুলাই থেকে সুইটম্যানের আবিষ্কারকে খণ্ডনকারী পাঁচটি একাডেমিক গবেষণাপত্র পর্যালোচনা ও প্রকাশনার জন্য জমা দেওয়া হয়েছে। জার্মানির কিয়েলে অবস্থিত জিওমার হেলমহোল্টজ সেন্টার ফর ওশান রিসার্চের জৈব-রসায়নবিদ ম্যাথিয়াস হেকেল বলেছেন, তিনি (সুইটম্যান) তার পর্যবেক্ষণ ও অনুমানের জন্য স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।

হেকেল বলেন, ‘গবেষণাটি প্রকাশের পরও অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে। তাই এখন বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের অনুরূপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ইত্যাদি পরিচালনা করে হয় এটি প্রমাণ অথবা খণ্ডন করা উচিত।’

ফরাসি জাতীয় মহাসাগর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট ইফ্রেমারের ভূ-রসায়ন গবেষক অলিভিয়ার রাউক্সেল এএফপিকে বলেছেন, ‘এই ফলাফলগুলোর ওপর একেবারেই কোনো ঐকমত্য নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘গভীর সমুদ্রের নমুনা সর্বদা একটি চ্যালেঞ্জ। এটা হতে পারে, অক্সিজেন পরিমাপ যন্ত্রগুলোতে বায়ু বুদবুদ আটকে ছিল।’

এএফপি সুইটম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুতির কথা জানান। তিনি বলেন, বৈজ্ঞানিক নিবন্ধগুলোতে এই ধরনের এদিক-সেদিক করা খুবই সাধারণ এবং এটি বিষয়বস্তুকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়।’

মন্তব্য
তুলসি গ্যাবার্ড

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র, ‘আলোচনাও চলছে’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র, ‘আলোচনাও চলছে’
তুলসি গ্যাবার্ড। ছবি : এএফপি

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের (ডিএনআই) প্রধান তুলসি গ্যাবার্ড। ভারত সফরে গিয়ে এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যমটি।

তুলসি গ্যাবার্ড বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বব্যাপী ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদ রুখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিপীড়ন, হত্যা এবং নির্যাতন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বলে জানান তুলসি গ্যাবার্ড।

তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আলোচনা মাত্রই শুরু হয়েছে। তবে সেখানকার পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগের।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইসলামী সন্ত্রাসীদের হুমকি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিশ্বব্যাপী যে প্রচেষ্টা তা একই আদর্শ এবং উদ্দেশ্যের দিকে পরিচালিত হয়; সেটি হলো ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা।

এটি অন্য যেকোনো ধর্মের লোকদের প্রভাবিত করে।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ধরনের মতাদর্শ ও উগ্র ইসলামপন্থাকে ঠেকাতে তৎপর। ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে পরিচালিত করে এমন আদর্শ চিহ্নিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি এই আদর্শ ও সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করতেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান।

মন্তব্য

সিরিয়া-লেবানন সীমান্তে সংঘর্ষ, হিজবুল্লাহর দিকে আঙুল দামেস্কের

আলজাজিরা
আলজাজিরা
শেয়ার
সিরিয়া-লেবানন সীমান্তে সংঘর্ষ, হিজবুল্লাহর দিকে আঙুল দামেস্কের
ফাইল ছবি : আলজাজিরা

লেবানন ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার পর্যন্ত চলা এই সহিংসতা শুরু হয় সপ্তাহান্তের কয়েকটি সংঘর্ষের পর, যেখানে তিনজন সিরীয় সেনা নিহত হন। দামেস্ক এই সংঘর্ষের জন্য লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তারা যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সিরীয় সেনাবাহিনী সীমান্তবর্তী এলাকায় জড়ো হওয়া হিজবুল্লাহ সদস্যদের অবস্থান লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করেছে, যাদের গুলিতেই সিরীয় সেনারা নিহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে লেবাননের ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে দেশটির সেনাবাহিনী সোমবারের সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে’ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সংঘর্ষে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংশ্লিষ্টতার খবর পাওয়া গেছে, যদিও এটি স্বাধীনভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লেবাননের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে।

পাশাপাশি দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে এক সিরীয় সামরিক গাড়ির ওপর হামলার পর সেখানে স্বল্পমাত্রার লড়াই হয়। এ ছাড়া লেবাননের দিক থেকে ছোড়া এক কামানের গোলার আঘাতে সিরীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকা চার সাংবাদিক সামান্য আহত হন। তারা হিজবুল্লাহকে এই হামলার জন্য দায়ী করেছেন।

আরো পড়ুন
ইরাকে বিমান হামলায় শীর্ষস্থানীয় আইএস নেতা নিহত

ইরাকে বিমান হামলায় শীর্ষস্থানীয় আইএস নেতা নিহত

 

অভিযোগ
সংঘর্ষে ঠিক কোন লেবানিজ গোষ্ঠী জড়িত, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে শনিবার সিরিয়ায় প্রবেশ করে তিনজন সেনাকে অপহরণ ও পরে লেবাননের মাটিতে তাদের হত্যা করার অভিযোগ এনেছে।

সম্প্রতি সিরীয় সেনাবাহিনী ও দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্র লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে সিরিয়ার ভেতরে আসাদপন্থী সেনা ও আলাউইত সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতায় বহু প্রাণহানি ঘটে। ওই সংঘর্ষের সঙ্গেও লেবাননের কিছু গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা ছিল বলে লেবাননের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এদিকে লেবানন ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সীমান্তের উত্তেজনা কমাতে তারা পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রেখেছে।

লেবাননের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা নিহত তিন সিরীয় সেনার মরদেহ সিরিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছে।

সোমবার পর্যন্ত নতুন কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাতভর সংঘর্ষ ও গোলাবর্ষণের কারণে সীমান্ত এলাকার বেসামরিক লোকজন পালিয়ে সিরিয়ার হেরমেল অঞ্চলের দিকে আশ্রয় নিচ্ছে। লেবানন-সিরিয়া সীমান্ত ৩৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, যেখানে অনেক জায়গায় কোনো সুস্পষ্ট সীমারেখা নেই এবং ভূ-প্রকৃতি বেশ দুর্গম।

আরো পড়ুন
সিরিয়ায় সাংবিধানিক ঘোষণায় স্বাক্ষর আল-শারার, কী আছে এতে

সিরিয়ায় সাংবিধানিক ঘোষণায় স্বাক্ষর আল-শারার, কী আছে এতে

 

হিজবুল্লাহ সিরীয় সেনাদের অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। লেবাননের জ্যেষ্ঠ হিজবুল্লাহ আইন প্রণেতা হুসেইন হাজ হাসান দেশটির আল-জাদিদ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, সিরীয় দিক থেকে আসা যোদ্ধারা লেবাননের ভেতরে প্রবেশ করে সীমান্ত এলাকার গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়েছে।

এদিকে লেবানন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়ে আসছে, যাতে তার সামরিক বাহিনীকে আরো শক্তিশালী করে সিরিয়ার সঙ্গে উত্তরের ও পূর্বের সীমান্ত এবং দক্ষিণে ইসরায়েলের সঙ্গে সীমান্তে কার্যকরভাবে মোতায়েন করা যায়। অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সোমবার জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ লেবাননে বিমান হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহর দুই যোদ্ধাকে টার্গেট করেছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ