বিয়ে না করলে কর্মীদের বরখাস্তের হুমকি কম্পানির

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিয়ে না করলে কর্মীদের বরখাস্তের হুমকি কম্পানির
প্রতীকী ছবি : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

চীনের শানডং প্রদেশের একটি কম্পানি তাদের অবিবাহিত ও তালাকপ্রাপ্ত কর্মীদের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ বিয়ে না করলে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুমকি দেওয়ার পর সরকারের নজরে এসেছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শানডং শুনটিয়ান কেমিক্যাল গ্রুপ কম্পানি লিমিটেড তাদের প্রায় এক হাজার ২০০ কর্মীকে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে, যেখানে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, তারা যেন ভালোভাবে কাজের পাশাপাশি পরিবারও গঠন করে।

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, ২৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সী অবিবাহিত কর্মী ও তালাকপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ বিয়ে করে সংসার গড়তে হবে। যারা মার্চের মধ্যে বিয়ে করতে ব্যর্থ হবে, তাদের আত্মসমালোচনামূলক চিঠি লিখতে হবে।

জুনের মধ্যে বিয়ে না করলে তাদের ওপর একটি ‘মূল্যায়ন’ পরিচালনা করা হবে। আর যদি সেপ্টেম্বরের শেষেও তারা অবিবাহিত থাকে, তাহলে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।

আরো পড়ুন
পুলিশ একাডেমিতে পুরুষ ক্যাডেটদের জন্য মেকআপ কোর্স

পুলিশ একাডেমিতে পুরুষ ক্যাডেটদের জন্য মেকআপ কোর্স

 

কম্পানিটির দাবি, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল ‘পরিশ্রম, দয়া, আনুগত্য, পিতৃভক্তি ও ন্যায়পরায়ণতা’র মতো মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়া।

এদিকে সংবাদটি ভাইরাল হওয়ার পর চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

অনেকে বলছেন, এই নীতি একাধিক আইন লঙ্ঘন করেছে। একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘কম্পানির নিয়ম আইনের ঊর্ধ্বে হতে পারে না বা সামাজিক নীতিবোধের বিরোধিতা করতে পারে না।’ অন্যরা উল্লেখ করেছেন, চীনের বিবাহ আইন বিয়ের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।

আরেকজন লিখেছেন, ‘এই উন্মাদ কম্পানির উচিত নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা এবং কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে দূরে থাকা।

নোটিশ বাতিল
পরে বিতর্ক বাড়তে থাকলে স্থানীয় মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যুরো ওই কম্পানিকে সংশোধন করার নির্দেশ দেয় এবং নোটিশটি বাতিল করে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নোটিশটি শ্রম আইনের প্রাসঙ্গিক ধারা লঙ্ঘন করেছে।

কম্পানিও নিশ্চিত করেছে, নোটিশটি বাতিল করা হয়েছে এবং নিয়মগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা এ-ও জানিয়েছে, কম্পানির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা আরো শক্তিশালী করা হবে, প্রাসঙ্গিক আইন ও বিধিমালা ভালোভাবে বোঝা হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো হবে।

কম্পানিটির একজন প্রতিনিধি জানান, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘বয়স্ক অবিবাহিত কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ জীবনের সিদ্ধান্তগুলোর প্রতি মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করা এবং তাদের বিয়ে করে সংসার গড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করা।

’ তবে এই পদ্ধতি ছিল অত্যন্ত সরলীকৃত এবং কম্পানি ভুলভাবে এটিকে একটি কঠোর নীতিতে পরিণত করেছিল।

সূত্র : এনডিটিভি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মায়ানমারে ভূমিকম্প

৬ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা, আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৬ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা, আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন
জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং। ছবি : এএফপি

শুক্রবার এক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্যের জন্য বিরল অনুরোধ করেছে এবং ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এএফপির সাংবাদিকরা জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংকে নাইপিদোর একটি হাসপাতালে আসতে দেখেছেন, যেখানে মধ্য মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন হাসপাতালে এএফপিকে বলেন, ‘আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানবিক সাহায্য প্রদান করুক।’ হতাহতের সংখ্যা এখনও প্রকাশ পায়নি তবে বিচ্ছিন্ন সামরিক সরকার সাহায্যের জন্য আবেদন করছে।

যেটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে খুব কমই করে থাকে দেশটি। এ ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তারা বৃহৎ পরিসরে সাহায্যের জন্য আবেদন করছে।

জান্তা এক বিবৃতিতে বলেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি এলাকায় জরুরি অবস্থা কার্যকর রয়েছে। সেগুলো হলো, সাগাইং, মান্দালয়, ম্যাগওয়ে, উত্তর-পূর্ব শান রাজ্য, নেপিদো এবং বাগো।

জাও মিন তুন বলেছেন, মান্দালয়, নেপিদো এবং সাগাইং-এর রোগীদের জন্য রক্তদানের প্রয়োজন।

এদিকে এ ঘটনায় দেশটির রাজধানী নেপিডোর বিভিন্ন সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এএফপির সাংবাদিকদের বর্ণনা দিয়েছেন, মায়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে ভূমিকম্পের সময় বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে অংশবিশেষ খসে পড়েছে।

নেপিডো শহরে ২০ লেন পর্যন্ত প্রশস্ত রাস্তা আছে। 

এএফপির সাংবাদিকেরা বলেছেন, ভূমিকম্পের কারণে শহরের বিভিন্ন সড়কে ফাটল তৈরি হয়েছে।

ভূমিকম্পের সময় এএফপির সাংবাদিকদের একটি দল নেপিডোর জাতীয় জাদুঘরে অবস্থান করছিল। তারা বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় ভবনের ছাদ থেকে অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে এ। ভবনে অবস্থানকারী কর্মীরা দৌড়ে বের হয়ে যান।

তাদের কেউ কেউ কাঁপছিলেন এবং কারো কারো চোখে ছিল পানি। কেউ কেউ প্রিয়জনদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। প্রায় আধা মিনিট ধরে কম্পন চলেছে। ভূমিকম্পের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

মায়ানমার ফায়ার সার্ভিসেস বিভাগের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করার জন্য ইয়াঙ্গুনে অনুসন্ধান শুরু করেছি এবং ঘুরে দেখছি। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’ মায়ানমারের প্রাচীন রাজকীয় রাজধানী মান্দালয় থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে ধসে পড়া ভবন এবং শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে পোস্টগুলো যাচাই করতে পারেনি।

শহরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। আমি আমার চোখের সামনে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। শহরের সবাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে এবং কেউ ভবনের ভেতরে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছে না।’

শহরের আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী থেত নাইং ওও রয়টার্সকে বলেছেন, ‘একটি চায়ের দোকান ধসে পড়েছে এবং ভেতরে বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছে। আমরা ভেতরে যেতে পারিনি, পরিস্থিতি খুবই খারাপ।’ তৃতীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, শহরের একটি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চীনের সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মায়ানমারের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ইয়াঙ্গুনে যোগাযোগ করা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দেশের বৃহত্তম শহরের ভবনগুলো থেকে অনেক লোক দৌড়ে বেরিয়ে এসেছিল। থাইল্যান্ডের তুলনায় মায়ানমারে ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

১৯৩০ সাল থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে দেশটিতে সাত মাত্রার ছয়টি ভূমিকম্প আঘাত হানে যার সবগুলোই ছিল সাগাইং ফল্টের কাছে। ভূপৃষ্ঠের নিচের ওই ফাটল দেশটির মাঝ বরাবর চলে গেছে। থাইল্যান্ড মূলত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল নয়। কিন্তু সেখানে অনুভূত হওয়া প্রায় সব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হয় প্রতিবেশী মিয়ানমার। ব্যাংককের ভবনগুলোর শক্তিশালী ভূমিকম্প সহ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন নয়, এ কারণে সেখানে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অকাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ভূমিকম্পে ব্যাংককে ৩০ তলা ভবন ধসে আটকা ৪৩ জন, জরুরি অবস্থা জারি

    মায়ানমার এবং প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভূমিকম্পে ব্যাংককে ৩০ তলা ভবন ধসে আটকা ৪৩ জন, জরুরি অবস্থা জারি
ছবিসূত্র : এএফপি

আজ শুক্রবার মায়ানমার এবং প্রতিবেশী থাইল্যান্ডে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে মায়ানমারের সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কয়েক মিনিট পরেই একই এলাকায় আবার ৬.৪ মাত্রার একটি আফটারশক আঘাত হেনেছে।

মায়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে।

 মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ভূঅভ্যন্তরের ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল) গভীরে। তবে মায়ানমারের প্রতিবেশি দেশ থাইল্যান্ডে এই কম্পন তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে।

আরো পড়ুন
শক্তিশালী ভূমিকম্প: মায়ানমার-থাইল্যান্ডে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে যা জানা গেল

শক্তিশালী ভূমিকম্প: মায়ানমার-থাইল্যান্ডে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে যা জানা গেল

 

ভূমিকম্পে ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন আকাশচুম্বী ভবন ধসে পড়েছে। সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

নির্মাণাধীন একটি ৩০ তলা ভবন ধসে ৪৩ জন শ্রমিক আটকা পড়েছে বলে পুলিশ এবং চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ফুটেজে দেখা গেছে, সরকারি অফিসের জন্য নির্মিত বিশাল ভবনটি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। 

বাং সু জেলার উপ-পুলিশ প্রধান ওরাপাত সুকথাই এএফপিকে বলেন, ‘আমি যখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তখন লোকজনকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুনতে পাই।

’ তিনি বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি শত শত মানুষ আহত হয়েছে, তবে এখনও হতাহতের সংখ্যা যাচাই করছি।’

ভূমিকম্পের ফলে ব্যাংককে কিছু মেট্রো এবং হালকা রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। সেখানে থাই প্রধানমন্ত্রী পায়েংটার্ন সিনাওয়াত্রা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। 

বেইজিংয়ের ভূমিকম্প সংস্থা অনুসারে, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশেও কম্পন অনুভূত হয়েছে, কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৯।

মায়ানমারে ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে সাধারণ।

১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে ৭.০ মাত্রার বা তার বেশি ছয়টি শক্তিশালী ভূমিকম্প সাগাইং ফল্টের কাছে আঘাত হেনেছে। যা দেশের কেন্দ্রস্থল দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত বলে ইউএসজিএস জানিয়েছে। ২০১৬ সালে মধ্য মায়ানমারের প্রাচীন রাজধানী বাগানে ৬.৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনজন নিহত হন, পর্যটন কেন্দ্রের চূড়া ভেঙে পড়ে এবং মন্দিরের দেয়াল ভেঙে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ানমারে উন্নয়নের ভয়াবহ গতি, ভেঙে পড়া অবকাঠামো এবং দুর্বল নগর পরিকল্পনার কারণে ভূমিকম্প এবং অন্যান্য দুর্যোগের ঝুঁকিতে পড়েছে শহরগুলো।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

শক্তিশালী ভূমিকম্প: মায়ানমার-থাইল্যান্ডে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে যা জানা গেল

    মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে ব্যাংককে সরকারি অফিসের নির্মাণাধীন একটি ৩০তলা বিশিষ্ট আকাশচুম্বী ভবনধসে পড়েছে
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শক্তিশালী ভূমিকম্প: মায়ানমার-থাইল্যান্ডে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে যা জানা গেল
ব্যাংককে একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়েছে। ছবি : এএফপি

মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। চীন, থাইল্যান্ড এবং বাংলাদেশেও এই কম্পন অনুভূত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনো সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়নি। প্রাথমিক ভূমিকম্পের মাত্র ১২ মিনিট পরেই মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে ৬.৪ মাত্রার  আরো একটি শক্তিশালী আফটারশক আঘাত হেনেছে।

 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মধ্য মায়ানমারে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে এবং দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি ৭.৭ মাত্রার এবং এর গভীরতা ছিল ভূঅভ্যন্তরের ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল) গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মায়ানমারের মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭.২ কিলোমিটার দূরে, যার জনসংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ। তবে মায়ানমারের প্রতিবেশি দেশ থাইল্যান্ডে এই কম্পন তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে।

প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার (৬২০ মাইল) দক্ষিণে থাই রাজধানী ব্যাংককের ভবনগুলো কেঁপে ওঠে এবং শত শত মানুষ আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে আসে। স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, ব্যাংককে মানুষ ভবনগুলো থেকে বের হয়ে রাস্তায় জড়ো হচ্ছে। একটি ভবনের ছাদে অবস্থিত সুইমিংপুল থেকে পানি উপচে নিচে রাস্তায় পড়তে দেখা যায়।

 উভয় দেশেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে।

একটি ক্লিপে ব্যাংককের চাতুচাক মার্কেটে একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার দৃশ্য দেখা গেছে। ব্যাংককে সরকারি অফিসের নির্মাণাধীন একটি ৩০তলা বিশিষ্ট আকাশচুম্বী ভবনধসে পড়ে। অন্যটিতে মিয়ানমারের আভা এবং সাগাইং অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগকারী আইকনিক আভা সেতুটি ভেঙে পড়ার দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে। 

মায়ানমার কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

মায়ানমার ফায়ার সার্ভিসেস বিভাগের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করার জন্য ইয়াঙ্গুনে অনুসন্ধান শুরু করেছি এবং ঘুরে দেখছি। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’

মায়ানমারের প্রাচীন রাজকীয় রাজধানী মান্দালয় থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে ধসে পড়া ভবন এবং শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে পোস্টগুলো যাচাই করতে পারেনি।

শহরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। আমি আমার চোখের সামনে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। শহরের সবাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে এবং কেউ ভবনের ভেতরে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছে না।’

শহরের আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী থেত নাইং ওও রয়টার্সকে বলেছেন, ‘একটি চায়ের দোকান ধসে পড়েছে এবং ভেতরে বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছে। আমরা ভেতরে যেতে পারিনি, পরিস্থিতি খুবই খারাপ।’ তৃতীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, শহরের একটি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চীনের সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মায়ানমারের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ইয়াঙ্গুনে যোগাযোগ করা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দেশের বৃহত্তম শহরের ভবনগুলো থেকে অনেক লোক দৌড়ে বেরিয়ে এসেছিল। থাইল্যান্ডের তুলনায় মায়ানমারে ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

১৯৩০ সাল থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে দেশটিতে সাত মাত্রার ছয়টি ভূমিকম্প আঘাত হানে যার সবগুলোই ছিল সাগাইং ফল্টের কাছে। ভূপৃষ্ঠের নিচের ওই ফাটল দেশটির মাঝ বরাবর চলে গেছে। থাইল্যান্ড মূলত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল নয়। কিন্তু সেখানে অনুভূত হওয়া প্রায় সব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হয় প্রতিবেশী মিয়ানমার। ব্যাংককের ভবনগুলোর শক্তিশালী ভূমিকম্প সহ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন নয়, এ কারণে সেখানে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অকাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে।

সূত্র : রয়টার্স, এএফপি

 

 

 

মন্তব্য

মুসলিমদের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি : ইফতার অনুষ্ঠানে ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মুসলিমদের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি : ইফতার অনুষ্ঠানে ট্রাম্প
ছবি : এএফপি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমরা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছি। আমার প্রশাসন আব্রাহাম অ্যাকর্ড চুক্তির আওতায় মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস চেষ্টা করছে যা অনেকেই অসম্ভব বলেছিল। তবে এখন আমরা সেগুলো পূরণ করা শুরু করছি। 

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাফতরিক বাসভবন হোয়াইট হাউসে এক ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সেখানে তিনি এসব কথা বলেন। খবর আনাদোলু এজেন্সি ও টাইমস অব ইসরায়েলের।

ইফতার অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লাখ লাখ আমেরিকান মুসলিম সমর্থন করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, আমি লক্ষ লক্ষ মুসলিম আমেরিকানদের বিশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই; যারা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যায় আমাদের সমর্থন করেছিলেন।

এটা অবিশ্বাস্য ছিল। আমরা আপনাদের সঙ্গে একটু ধীরগতিতে শুরু করেছিলাম, কিন্তু আমরা এখন এগিয়ে এসেছি।

ট্রাম্প বলেন, নভেম্বরে মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের পাশে ছিল এবং আমি যতদিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকব, ততদিন আমি আপনাদের পাশে থাকব।

তিনি বলেন, মুসলিমরা রমজান মাসে প্রতিদিন পরিবারের সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং ইফতারের মাধ্যমে তাদের রোজা ভঙ্গ করে।

আজ আমরাও এই রীতি পালন করে ইফতার করবো।

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে সম্পাদিত একাধিক চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, ইসরায়েল এবং বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়েছে।

আরো পড়ুন
১০০ কোটির সরকারি ফান্ড থেকে ৯৬ কোটি টাকা খরচ : স্নিগ্ধ

১০০ কোটির সরকারি ফান্ড থেকে ৯৬ কোটি টাকা খরচ : স্নিগ্ধ

 

ইফতার অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর কূটনীতিকদের পাশাপাশি দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ল্যান্ডাউ এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ডেপুটি বিশেষ দূত মরগান অর্টাগাস ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ