ঢাকা, মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬
মায়ানমারে ভূমিকম্প

৬ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা, আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
৬ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা, আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন
জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। ছবি : এএফপি

শুক্রবার এক শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মায়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা আন্তর্জাতিক মানবিক সাহায্যের জন্য বিরল অনুরোধ করেছে এবং ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এএফপির সাংবাদিকরা জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংকে নাইপিদোর একটি হাসপাতালে আসতে দেখেছেন, যেখানে মধ্য মায়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন হাসপাতালে এএফপিকে বলেন, ‘আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মানবিক সাহায্য প্রদান করুক।’ হতাহতের সংখ্যা এখনো প্রকাশ পায়নি, তবে বিচ্ছিন্ন সামরিক সরকার সাহায্যের জন্য আবেদন করছে।

যেটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে খুব কমই করে থাকে দেশটি। এ ঘটনা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তারা বৃহৎ পরিসরে সাহায্যের জন্য আবেদন করছে।

ক

জান্তা এক বিবৃতিতে বলেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি এলাকায় জরুরি অবস্থা কার্যকর রয়েছে। সেগুলো হলো— সাগাইং, মান্দালয়, ম্যাগওয়ে, উত্তর-পূর্ব শান রাজ্য, নেপিডো এবং বাগো।

জাও মিন তুন বলেছেন, মান্দালয়, নেপিডো এবং সাগাইংয়ের রোগীদের জন্য রক্তদানের প্রয়োজন।

এদিকে এ ঘটনায় দেশটির রাজধানী নেপিডোর বিভিন্ন সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এএফপির সাংবাদিকদের বর্ণনা দিয়েছেন, মায়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে ভূমিকম্পের সময় বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে অংশবিশেষ খসে পড়েছে।

নেপিডো শহরে ২০ লেন পর্যন্ত প্রশস্ত রাস্তা আছে। 

এএফপির সাংবাদিকেরা বলেছেন, ভূমিকম্পের কারণে শহরের বিভিন্ন সড়কে ফাটল তৈরি হয়েছে।

ু

ভূমিকম্পের সময় এএফপির সাংবাদিকদের একটি দল নেপিডোর জাতীয় জাদুঘরে অবস্থান করছিল। তারা বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় ভবনের ছাদ থেকে অংশবিশেষ ভেঙে পড়ে এ। ভবনে অবস্থানকারী কর্মীরা দৌড়ে বের হয়ে যান।

তাদের কেউ কেউ কাঁপছিলেন এবং কারো কারো চোখে ছিল পানি। কেউ কেউ প্রিয়জনদের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। প্রায় আধা মিনিট ধরে কম্পন চলেছে। ভূমিকম্পের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

মায়ানমার ফায়ার সার্ভিসেস বিভাগের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা হতাহত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করার জন্য ইয়াঙ্গুনে অনুসন্ধান শুরু করেছি এবং ঘুরে দেখছি। এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’ মায়ানমারের প্রাচীন রাজকীয় রাজধানী মান্দালয় থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে ধসে পড়া ভবন এবং শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে পোস্টগুলো যাচাই করতে পারেনি।

া

শহরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। আমি আমার চোখের সামনে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়তে দেখেছি। শহরের সবাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে এবং কেউ ভবনের ভেতরে ফিরে যেতে সাহস পাচ্ছে না।’

শহরের আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী থেত নাইং ওও রয়টার্সকে বলেছেন, ‘একটি চায়ের দোকান ধসে পড়েছে এবং ভেতরে বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছে। আমরা ভেতরে যেতে পারিনি, পরিস্থিতি খুবই খারাপ।’ তৃতীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, শহরের একটি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চীনের সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, মায়ানমারের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনান প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

[

ইয়াঙ্গুনে যোগাযোগ করা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দেশের বৃহত্তম শহরের ভবনগুলো থেকে অনেক লোক দৌড়ে বেরিয়ে এসেছিল। থাইল্যান্ডের তুলনায় মায়ানমারে ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

১৯৩০ সাল থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে দেশটিতে সাত মাত্রার ছয়টি ভূমিকম্প আঘাত হানে যার সবগুলোই ছিল সাগাইং ফল্টের কাছে। ভূপৃষ্ঠের নিচের ওই ফাটল দেশটির মাঝ বরাবর চলে গেছে। থাইল্যান্ড মূলত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল নয়। কিন্তু সেখানে অনুভূত হওয়া প্রায় সব ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হয় প্রতিবেশী মিয়ানমার। ব্যাংককের ভবনগুলোর শক্তিশালী ভূমিকম্প সহ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন নয়, এ কারণে সেখানে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অকাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা, হিজবুল্লাহ কর্মকর্তাসহ নিহত ৪

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা, হিজবুল্লাহ কর্মকর্তাসহ নিহত ৪
১ এপ্রিল বৈরুতে একটি ভবনে ইসরায়েলি হামলাস্থলে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। ছবি : এএফপি

লেবাননের দক্ষিণ বৈরুতে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাতে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর একটি সূত্র। চার মাস ধরে চলা একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যে এটি দ্বিতীয় হামলা।

লেবাননের নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। ঈদুল ফিতর চলাকালীন আনুমানিক মধ্যরাত সাড়ে ৩টায় কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই এ হামলা চালানো হয়।

এর আগে শুক্রবার ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছিল। তখন বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন। এএফপির একজন সাংবাদিক জানিয়েছেন, বহুতল ভবনের ওপরের দুটি তলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

বিপরীত দিকের একটি ভবনের বাসিন্দা ইসমাইল নূরেদ্দিন এএফপিকে বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই চিৎকার করছিল। এত বড় বিস্ফোরণ হয়েছিল যে আমরা ধুলার মধ্যে একে অপরকে দেখতে পাচ্ছিলাম না।’

আরো পড়ুন
গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

 

হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, হামলায় নিহতদের একজন হলেন হাসান বুদাইর, যিনি হিজবুল্লাহর ‘ফিলিস্তিনবিষয়ক উপপ্রধান’। হামলার সময় তিনি তার পরিবারের সঙ্গে বাড়িতেই ছিলেন।

অন্যদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ও দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা বুদাইরকে হত্যা করেছে।  

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সম্প্রতি তিনি হামাসের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছিলেন, হামাসের যোদ্ধাদের পরিচালনা করছিলেন এবং ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আসন্ন সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা করছিলেন। তবে বিবৃতিতে এর বেশি বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।  

‘পরিষ্কার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন’
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তার দেশের মিত্রদের প্রতি ‘আমাদের পূর্ণ সার্বভৌমত্বের অধিকারের’ পক্ষে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বলেছেন, এই হামলা ‘পরিষ্কারভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন’ এবং এটি গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টাকে ব্যাহত করছে।

 

হিজবুল্লাহর সংসদ সদস্য ইব্রাহিম মুসাভি লেবানিজ কর্তৃপক্ষকে ‘লেবাননের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উচ্চপর্যায়ের পদক্ষেপ নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।  

এই হামলা এমন সময় ঘটল যখন কয়েক দিন আগে ইসরায়েল বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। ওই হামলার আগে লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া রকেট হামলার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছিল ইসরায়েল, যদিও ওই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেছিলেন, তার দেশের সামরিক বাহিনী ‘লেবাননের যেকোনো জায়গায় যেকোনো হুমকির’ বিরুদ্ধে হামলা চালাবে।

আরো পড়ুন
দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

 

‘যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে হবে’
লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক জিনিন হেনিস-প্লাসশায়ের্ট বলেছেন, ‘আরো সংঘাত কেউই চায় না।’ তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘একমাত্র কার্যকর পথ হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ১৭০১ বাস্তবায়ন করা’, যা ২০০৬ সালে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল এবং চলমান যুদ্ধবিরতির ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।

হিজবুল্লাহর নেতা নাইম কাসেম শনিবার বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা এটি চালিয়ে যেতে দিতে পারি না।’

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, ‘লেবাননের সরকার সরাসরি দায়ী’ এবং যদি তারা যুদ্ধবিরতি কার্যকর না রাখে, ‘আমরাই তা প্রয়োগ করব।’

চুক্তি অনুযায়ী, ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লেবানন থেকে ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল, কিন্তু তারা পাঁচটি ‘কৌশলগত স্থান’ ধরে রেখেছে বলে জানিয়েছে। যুদ্ধবিরতি শর্ত অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর উচিত ছিল তাদের বাহিনীকে লিটানি নদীর উত্তরে সরিয়ে নেওয়া এবং দক্ষিণে তাদের অবশিষ্ট সামরিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া। ইসরায়েলি সেনারা পিছু হটতে শুরু করার পর লেবাননের সেনাবাহিনী দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন হয়েছে।

মন্তব্য

গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
গাজায় সব পক্ষকে যুদ্ধবিষয়ক আইন মানতে হবে : যুক্তরাষ্ট্র
৩১ মার্চ ইসরায়েলের উচ্ছেদ আদেশের পর খান রাফা থেকে পালিয়ে যাওয়া লোকজন ইউনিস শহরে পৌঁছয়। ছবি : এএফপি

গাজার সার্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িত ‘সব পক্ষ’ যুদ্ধবিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে বলে আশা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৫ জনের বিষয়ে দেশটি কোনো মূল্যায়ন করেছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। নিহতদের মাঝে কেউ ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, কেউ আবার বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী ও একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তা।

এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘এ মুহূর্তে গাজায় যা কিছু ঘটছে, সেই সব কিছুর জন্যই হামাস দায়ী।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা জানিয়েছে, গত ২৩ মার্চ পাঁচটি অ্যাম্বুল্যান্স, একটি অগ্নিনির্বাপক ট্রাক ও একটি জাতিসংঘের গাড়ি একের পর এক হামলার শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় ১৫ জন নিহত হন এবং তাদের সবাইকে একত্র করে গণকবরে দাফন করা হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের সেনারা এমন কিছু যানবাহনের ওপর গুলি চালিয়েছে, যেগুলো ‘সন্দেহজনকভাবে’ অগ্রসর হচ্ছিল। কারণ ওই যানবাহনগুলো তাদের হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখেনি বা যানবাহনগুলোতে কোনো জরুরি সংকেতও চালু ছিল না।

তাদের দাবি, নিহতদের মধ্যে একজন হামাস সদস্যও ছিলেন। পাশাপাশি সেখানে অন্যান্য যোদ্ধাও ছিলেন। তবে মরদেহগুলোকে একসঙ্গে বালিতে কবর দেওয়া নিয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

আরো পড়ুন
দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

দক্ষিণ গাজায় ‘অত্যন্ত কঠোর যুদ্ধে’ ফিরছে ইসরায়েলি সেনারা

 

এদিকে যুদ্ধ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক আইনে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।

একই সঙ্গে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের ব্যাপারেও এই আইনে বিশেষ সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও তার নিজের আইনের কাছে বাধা। আইন অনুযায়ী, যুদ্ধবিষয়ক আইন লঙ্ঘন করে বিদেশি সামরিক বাহিনী এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে না।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান জনাথন হুইটল জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটু অ্যাম্বুল্যান্সের জরুরি আলোর সাহায্যে গণকবরটি চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্সে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘এখানে যা হয়েছে, তা পুরোপুরিভাবে একটি ভয়াবহ ঘটনা।

স্বাস্থ্যকর্মীরা কখনোই লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।’

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির আলোচনা স্থগিত হওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল ফের গাজায় আকাশ ও স্থল অভিযান চালানো শুরু করে। সেই থেকে গাজায় এক হাজার জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে নতুন করে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকার বেশ কিছু স্থান খালি করার নির্দেশনা দিয়েছে তেল আবিব। নোটিশে বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী’দের নিরস্ত্র করার জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বড় ধরনের অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে, ফলে রাফা ও পার্শ্ববর্তী খান ইউনিসের স্থানীয় বাসিন্দারা যেন দ্রুত আল-মাওয়াসি অঞ্চলে সরে যান। এরপর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সাম্প্রতিক দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির সময় রাফায় নিজেদের বাড়িতে ফেরত আসা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্দেশে গাজার এক পঞ্চমাংশ এলাকা এখন খালি করে ফেলা হয়েছে।

এ ছাড়া জরুরি ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাজার হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে ওষুধ স্বল্পতা। যুদ্ধবিরতি ভেঙে লাগাতার ১৫ দিনের মতো চলছে ইসরায়েলি আগ্রাসন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সীমান্ত পার করে ইসরায়েলের ওপর হামাসের এক নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরায়েল গাজায় এই অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করা হয়। এর পর থেকে চলমান যুদ্ধে ৫০ হাজার ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মন্তব্য

মালয়েশিয়ায় গ্যাস পাইপ ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মালয়েশিয়ায় গ্যাস পাইপ ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
ছবিসূত্র : এএফপি

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বাইরে একটি শহরে গ্যাস পাইপলাইন ফেটে যাওয়ার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার এ ঘটনার পরে আশেপাশের বাড়িঘর থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেলাঙ্গর রাজ্যের মধ্যাঞ্চলের পুত্রা হাইটসে একটি গ্যাস স্টেশনের কাছে এ ঘটনা ঘটে। 

সেলাঙ্গরের মুখ্যমন্ত্রীর বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বার্নামা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১২ জন আহত হয়েছেন এবং ৮২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বিশাল আগুন কয়েক কিলোমিটার (মাইল) দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল। জাতীয় তেল কম্পানি পেট্রোনাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে তাদের একটি গ্যাস পাইপলাইনে আগুন লেগেছে।

একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইনটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের স্থানের কাছাকাছি তিনটি গ্যাস স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

পেট্রোনাস জানিয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে।

আরো পড়ুন
গত ১০ দিনে ৩২২ শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

গত ১০ দিনে ৩২২ শিশুকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

 

সেলাঙ্গর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইউনিট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগুন কাছাকাছি একটি গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এতে আরো বলা হয়েছে, বেশ কয়েকজন পুড়ে গেছেন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। তবে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

 

আরো বলা হয়েছে, পাইপলাইনের ভালভ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আগুন নেভানো সম্ভব হবে। সেলাঙ্গরের কয়েক ডজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। 

সেলাঙ্গরের মুখ্যমন্ত্রী আমিরুদ্দিন শারি বলেছেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত আশেপাশের বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত তাদের অস্থায়ীভাবে নিকটবর্তী একটি মসজিদে রাখা হবে।

আগুনের বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে আগুনের বিস্ফোরণের কারণেই এটি ঘটেছে।

সূত্র : আরঅ্যারাবিয়া
 

মন্তব্য

তাইওয়ান ঘিরে চারপাশে চীনের সামরিক মহড়া শুরু

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
তাইওয়ান ঘিরে চারপাশে চীনের সামরিক মহড়া শুরু
সংগৃহীত ছবি

তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। মঙ্গলবার চীনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাইওয়ানের চারপাশে তাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং রকেট বাহিনীর যৌথ মহড়া শুরু করেছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রধান পিট হেগসেথ এশিয়ায় তার প্রথম সফরে ‘চীনের আগ্রাসন’ মোকাবেলা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কয়েক দিন পর এই মহড়া শুরু করল চীন। খবর সিএনএনের।

গত মাসে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বেইজিংকে বিদেশি শত্রুশক্তি বলে অভিহিত করার পর গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত এই দ্বীপটির চারপাশে মহড়া শুরু করল চীনা সামরিক বাহিনী। 

মূলত তাইওয়ানকে চীন তার নিজস্ব অঞ্চল হিসেবে দেখে থাকে এবং দ্বীপটিকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য চীন কখনোই শক্তি প্রয়োগের বিকল্পটি ত্যাগ করেনি।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, চীনের শানডং বিমানবাহী রণতরী গ্রুপ সোমবার দ্বীপের প্রতিক্রিয়াশীল এলাকায় প্রবেশ করেছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, এর প্রতিক্রিয়ায় তারা সামরিক বিমান এবং জাহাজ পাঠিয়েছে এবং স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা সক্রিয় করেছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ান এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি করে চলেছে... এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন
ঈদের রাতে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ

ঈদের রাতে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ

 

উল্লেখ্য, তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালির পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রেসিডেন্ট চিনপিং বলেছেন, মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে।

এ জন্য সামরিক পথে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টিও খোলা রেখেছে বেইজিং।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ