ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

শুল্কযুদ্ধ : নাকালে নারাজ চীন

  • মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শুল্কযুদ্ধ : নাকালে নারাজ চীন
ছবি : এএফপি

চীনসহ বিশ্বের শতাধিক দেশের ওপর নানা হারে ‘রিসিপ্রক্যাল ট্যারিফ’ আরোপ করেছিল মার্কিন প্রশাসন। যদিও চীন বাদে অন্য দেশগুলোর ওপর সেই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৫ শতাংশে। শুল্কযুদ্ধে থেমে নেই চীনও।

মার্কিন পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে এশিয়ার দেশটি। চীনের অর্থমন্ত্রী আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির এ ঘোষণা দিয়েছেন।

ফলে বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে থাকা শুল্কযুদ্ধ নতুন মোড় নিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কযুদ্ধে পিছু হটছে না বেইজিং।

কারণ বিকল্প থাকায় হোয়াইট হাউসের সিদ্ধান্ত তাদের ওপর সামান্যই প্রভাব ফেলবে।

তারা বলছেন, পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বেড়েছে। চীন আগেই ট্রাম্পের শুল্ক তীরের কাছে মাথা নত না করে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছিল। এরপর থেকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ কেবলই তীব্র হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা আগেই বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পাল্টায় অন্য দেশগুলোও নতুন করে ব্যবস্থা নেবে। এতে নতুন করে একটি বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি করবে। বিশ্ব অর্থনীতির নাজুক দশার মধ্যে নতুন চাপ তৈরি করবে ট্রাম্পের শুল্ক।

প্রশ্ন হলো কেন বেইজিং ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে পিছু হটছে না? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, কারণ চীনের তেমন দরকারই নেই।

চীনের নেতাদের ভাষ্য, তারা কোনো জুলুমবাজের কাছে মাথা নত করতে আগ্রহী নন।

ট্রাম্প প্রশাসনকে বারবার তারা ‘জুলুমবাজ’ আখ্যা দিয়েছেন। বাণিজ্য যুদ্ধে চীনের অবস্থান শক্তিশালী; যা অন্য দেশগুলোর নেই।

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, শুল্কযুদ্ধ শুরুর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি অনেক বেশি ছিল, তবে বাস্তবে এটি চীনের মোট জিডিপির মাত্র ২%।

তবে এটাও সত্য যে, কমিউনিস্ট পার্টি এখনই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চাইবে না। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন চীন নিজেই একটি গুরুতর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা করছে। বহু বছরের রিয়েল এস্টেট সংকট, অতিরঞ্জিত আঞ্চলিক ঋণ এবং তরুণদের বেকারত্বের মতো সমস্যাও রয়েছে।

তবু, সরকার জনগণকে বলেছে যে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।

চীন এটাও জানে যে, তাদের আরোপিত শুল্কগুলো মার্কিন রপ্তানিকারকদের ওপরও আঘাত হানবে।

ট্রাম্প তার সমর্থকদের বলছেন, চীনকে সহজেই শুল্ক দিয়ে নত করা যাবে, কিন্তু বাস্তবে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বেইজিং আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে না।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজকে বলেছেন, ‘চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা জুলুমবাজ আচরণের বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত।’

জবাবে সানচেজ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য উত্তেজনা ইউরোপের সঙ্গে চীনের সহযোগিতায় কোনো বাধা হওয়া উচিত নয়।’

তাদের বৈঠকটি হয় বেইজিংয়ে, ঠিক সেই সময় যখন চীন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয়—যদিও তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির জবাবে তারা আর প্রতিক্রিয়া দেখাবে না।

আগামী সপ্তাহে শি জিনপিং মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সফর করবেন—যেসব দেশ ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাঁর মন্ত্রীরা ইতিমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, সৌদি আরব ও ভারতের নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে বৈঠক করেছেন।

এ ছাড়া চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনার খবর পাওয়া গেছে—যেখানে ইউরোপে চীনা গাড়ির ওপর শুল্ক তুলে দিয়ে তার পরিবর্তে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের চিন্তা করা হচ্ছে, যাতে নতুন করে পণ্যের দাম কমিয়ে ‘ডাম্পিং’ বন্ধ করা যায়।

সংক্ষেপে, চারদিকে তাকালেই বোঝা যায়—চীনের হাতে অনেক বিকল্প রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পারস্পরিক শুল্ক আরোপ এখন প্রায় অর্থহীন হয়ে পড়েছে, কারণ দুই দেশের মধ্যকার অনেক বাণিজ্য ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। তাই দুই পক্ষের এই পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ এখন মূলত প্রতীকী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং গত দুই দিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে চেয়ারম্যান মাওয়ের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে কোরিয়ান যুদ্ধ চলাকালীন একটি ভিডিও, যেখানে মাও যুক্তরাষ্ট্রকে বলছেন, ‘এই যুদ্ধ যতদিনই চলুক না কেন, আমরা কখনোই আত্মসমর্পণ করব না।’

এই ভিডিওর ওপর তিনি নিজেই মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা চীনা। আমরা উসকানিতে ভয় পাই না। আমরা পিছু হটব না।’

যখন চীনের সরকার চেয়ারম্যান মাওয়ের ভাবমূর্তি সামনে আনে, তখন বোঝা যায়—তারা সত্যিই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শিগগিরই ডোর টু ডোর কুরিয়ার সেবা চালু করবে এমিরেটস

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শিগগিরই ডোর টু ডোর কুরিয়ার সেবা চালু করবে এমিরেটস
সংগৃহীত ছবি

আগামী বছর থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে কুরিয়ার সেবা চালু করতে চায় এমিরেটস। এমিরেটস স্কাইকার্গোর পণ্য ও উদ্ভাবন বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেনিস লিস্টার মঙ্গলবার খালিজ টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।

লিস্টার বলেন, ‘ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক বিধিনিষেধ থাকে, তাই বিষয়টা কিছুটা জটিল। আমরা এখনই শুরু করছি না, তবে আশা করছি আগামী বছর চালু করতে পারব।

তিনি বলেন, নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু পরিচিত প্রেরণকারীদের দিয়ে সেবা চালু করা হচ্ছে, যাতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চালানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া ও নীতিমালা তৈরি করছি। আমরা সম্ভবত প্রথমে সেবাটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু করব।’

এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস

এ মাসের শুরুতে দুবাই ক্যারিয়ার ‘এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস’ চালু করেছে, যা ব্যক্তি পর্যায়ে পণ্য সরবরাহের নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে।

এই পরিষেবাটি এমিরেটসের ২৫০টিরও বেশি ওয়াইড-বডি পেসেঞ্জার ও কার্গো বিমানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী চালান পাঠাতে পারবে।

‘এই সেবার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি যেকোনো গন্তব্য বিমানবন্দরে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারে। ফলে গ্রাহকের কাছাকাছি পৌঁছানো, গন্তব্যে ইনভেন্টরি খরচ কমানো এবং দ্রুত সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব,’ বলে জানিয়েছে লিস্টার।

লিস্টার বলেন, ‘শুরুর আগ্রহ ছিল অবিশ্বাস্য।

গ্রাহকদের কাছ থেকে আমরা প্রচুর অনুরোধ পাচ্ছি। আমরা বিশ্বের দ্রুততম ডোর-টু-ডোর ক্রস-বর্ডার পার্সেল সল্যুশন বাজারে এনেছি। বড় ব্যবসা হোক বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ, সবাই নতুন সমাধানের জন্য প্রস্তুত।’

তিনি আরো জানান, এটি গ্রাহকদের প্রিমিয়াম সেবা দেবে। তাই যারা দ্রুত ডেলিভারি চান তাদের জন্যই এটি উপযুক্ত।

‘মানুষ দ্রুত পণ্য ডেলিভারি চায়। যখন তারা অনলাইনে কিছু অর্ডার করেন, তখন তারা জানতে চান যে আপনি কত দ্রুত তাদের পণ্য ডেলিভারি করতে পারবেন। তাই আমরা খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করব এবং তাদের মাধ্যমেই ডোর-টু-ডোর সমাধান সরবরাহ করব। যার ফলে গ্রাহকের কাছে কম সময়ে পণ্য পৌঁছে যাবে। এ ছাড়া আমাদের অনেক ফ্লাইট রয়েছে, ফলে দ্রুত ডেলিভারি সম্ভব হবে।’

ভারত, চীন ও অস্ট্রেলিয়াকে যুক্ত করার পরিকল্পনা

লিস্টার জানান, এমিরেটস বর্তমানে শুধু যুক্তরাজ্য থেকেই প্রতি সপ্তাহে ১৩৮টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু পেসেঞ্জার ফ্লাইট ব্যবহার করছি, তাই দ্রুত ও দক্ষভাবে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট সংযোগ করতে পারছি। কারণ এটি ১৪৮টিরও বেশি গন্তব্যে উড়ে যায়।’

তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা চালু করা হয়নি, কারণ এটি অংশীদারি মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।

লিস্টার বলেন, ‘প্রতিটি দেশে আমরা স্থানীয় পার্টনারদের ব্যবহার করব যারা সংগ্রহ, পিকআপ, ডেলিভারি, ক্লিয়ারেন্সসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’

বর্তমানে এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস ৭টি দেশে সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব এবং ওমান।

লিস্টার বলেন, ‘আমরা প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো থেকে শুরু করছি। ধাপে ধাপে বিস্তৃত করব। পরবর্তী বড় বাজার হবে ভারত। এরপর চীন এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্র।’

ভবিষ্যতে কী কী সরবরাহ করবে

এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস ভবিষ্যতে শুধু ই-কমার্স পণ্যই নয়, বরং প্রযুক্তি পণ্য, ওষুধ, রক্ত, টিকা ও অন্যান্য নমুনাও সরবরাহ করবে।

লিস্টার বলেন, ‘নানা ধরনের খাত ও পণ্যে আমরা কাজ করব। এটা হবে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ, প্রিমিয়াম কুরিয়ার সল্যুশন ‘

কিছু কিছু বাজারে এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস একই দিনে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। কারণ তাদের বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে।

মন্তব্য

জলবায়ু সংকটে সমুদ্রের তাপপ্রবাহ তিন গুণ বেড়েছে : গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জলবায়ু সংকটে সমুদ্রের তাপপ্রবাহ তিন গুণ বেড়েছে : গবেষণা
ছবি : দ্য গার্ডিয়ান

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু সংকটে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা তিন গুণ বেড়েছে। এতে তীব্র ঝড়ের সৃষ্টি হয় ফলে কেল্প বন এবং প্রবাল প্রাচীরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে। 

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০০ সাল থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপপ্রবাহের অর্ধেকই বৈশ্বিক তাপপ্রবাহ ছাড়া হত না, যা জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে ঘটে। তাপপ্রবাহ দিন দিন আরো তীব্র হয়ে উঠছে।

গড়ে সামুদ্রিক তাপপ্রবাহ ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়ে উঠছে, কিছু জায়গায় অনেক বেশি উষ্ণ হচ্ছে।

এ গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী স্পেনের ম্যালোর্কার মেডিটেরেনিয়ান ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের ড. মার্টা মার্কোস বলেন, ভূমধ্যসাগরে কিছু স্থানে সামুদ্রিক তাপপ্রবাহ রয়েছে যা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেশি। সাতার কাঁটতে গেলে মনে হয় পানি নয় যেন স্যুপ।

আরো পড়ুন

‘ক্ষমা চাইলে হবে না, প্রথম আলোর লাইসেন্স বাতিল করতে হবে’

‘ক্ষমা চাইলে হবে না, প্রথম আলোর লাইসেন্স বাতিল করতে হবে’

 

মার্কোস বলেন, উষ্ণ সমুদ্রের পানি নিচের তৃণভূমির মতো বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করার পাশাপাশি, উপকূল এবং অভ্যন্তরীণ অঞ্চলের মানুষের উপর প্রভাব ফেলে।

এর একটি ভয়াবহ উদাহরণ হলো, ২০২৩ সালে লিবিয়ায় ভয়াবহ বন্যার ফলে তীব্র বৃষ্টিপাত হয়। এতে ১১ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। বৈশ্বিক উত্তাপের ফলে ভূমধ্যসাগরের তাপমাত্রা ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে এটি ৫০ গুণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এর ফলে জলীয় বাষ্প বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং বৃষ্টিপাতও বেশি হয়েছিল।

মার্কোস বলেন আরো বলেন, এর একমাত্র সমাধান হল জীবাশ্ম জ্বালানি কম পোড়ানো। অতিরিক্ত তাপের ৯০ শতাংশেরও বেশি সমুদ্রে সঞ্চিত থাকে। যদি বায়ুমণ্ডলকে উষ্ণ করা বন্ধ হয়, তাহলে সমুদ্রও উষ্ণ হওয়া বন্ধ হবে।

সাম্প্রতিক সমুদ্রের তাপপ্রবাহের মধ্যে ২০১৪-১৫ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা রয়েছে যার ফলে সামুদ্রিক প্রাণীর ব্যাপক মৃত্যু ঘটে। ২০১৫-১৬ সালে তাসমান সাগরে তীব্র তাপপ্রবাহ আঘাত হানে এবং ২০২৩ সালে যুক্তরাজ্য এবং ভূমধ্যসাগরে সমুদ্রের তাপমাত্রা রেকর্ড করে।

এরপর বিজ্ঞানীরা ২০১৯ সালে সতর্ক করেছিলেন যে সমুদ্রের তাপপ্রবাহ তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বন্যপ্রাণীর বিশাল এলাকা পুড়িয়ে ফেলার মতো সামুদ্রিক প্রাণীর প্রাণহানি ঘটাচ্ছে।

আরো পড়ুন

সিঙ্গাপুরে ৩ মে সাধারণ নির্বাচন

সিঙ্গাপুরে ৩ মে সাধারণ নির্বাচন

 

যুক্তরাজ্যের জাতীয় সমুদ্রবিজ্ঞান কেন্দ্রের ড. জো জ্যাকবস বলেন, ‘সমুদ্রের তাপপ্রবাহ দেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। এছাড়া মাছ, জলজ প্রাণী এবং পর্যটন শিল্পের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যার কারণে লাখ লাখ ডলার ক্ষতি হয়। 

প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে প্রকাশিত এই গবেষণাটি ১৯৪০ সাল থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার মডেল তৈরি করছে যা জলবায়ু সংকটের ফলে সৃষ্ট উত্তাপ দূর করছে। এরপর তারা সমুদ্রের প্রকৃত পরিমাপের সাথে তুলনা করে ওই মডেলে দেখায়, কীভাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯৪০ এর দশকে সমুদ্রপৃষ্ঠে বছরে প্রায় ১৫ দিন বেশি তাপ ছিল। কিন্তু এই সংখ্যা বিশ্বব্যাপী গড়ে বছরে প্রায় ৫০ দিনে পৌঁছেছে। ভারত মহাসাগর, গ্রীষ্মমন্ডলীয় আটলান্টিক এবং পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরসহ কিছু অঞ্চলে বছরে ৮০ দিনের মতোও তাপপ্রবাহ থাকে।

গবেষণা দলের আরেকজন রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জিয়াংবো ফেং বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে সামুদ্রিক তাপপ্রবাহ তীব্র হয়ে উঠবে। মানুষের কর্মকাণ্ড আমাদের মহাসাগরগুলোকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করছে। সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষার জন্য জরুরি জলবায়ু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’

মন্তব্য

সিঙ্গাপুরে ৩ মে সাধারণ নির্বাচন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সিঙ্গাপুরে ৩ মে সাধারণ নির্বাচন
সংগৃহীত ছবি

সিঙ্গাপুরে আগামী ৩ মে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওংয়ের জন্য এই নির্বাচন প্রথম পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ কয়েক দশক লি পরিবার সিঙ্গাপুরের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ভূমিকা রেখে আসছে। গত বছর লরেন্স ওং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

লি কুয়ান ইউয়ের ছেলে লি হিসিয়েন লুংয়ের স্থলাভিষিক্ত হন লরেন্স ওং। আগামী নির্বাচন ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) জন্য প্রথম নির্বাচনী লড়াই এটি।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৩ এপ্রিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এরপর শুরু হবে নির্বাচনী প্রচারণা।

ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৫৯ সালে স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার পর থেকে প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসছে ক্ষমতাসীন পিপলস অ্যাকশন পার্টি (পিএপি)। ভোটাররা এবারও ক্ষমতায় ফিরিয়ে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

২০২০ সালে সিঙ্গাপুরে সর্বশেষ নির্বাচনে দেখা গেছে, বিরোধী দল ‘ওয়ার্কার্স পার্টি’ ১০টি আসনে জয় পেয়ে ইতিহাস গড়ে। ১৯৬৫ সালে সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার পর এটিই ছিল বিরোধীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

এবারের নির্বাচনে ৯৭টি আসনের জন্য লড়াই হবে। এর আগে ২০২০ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল পিএপি ৯৩ আসনের ভেতর ৮৩টি আসনে জয় পেলেও সেই ফলকে আংশিক ধাক্কা হিসেবেই বিবেচনা করে দলটি। ফলে এবারের নির্বাচনে আরো শক্তিশালী জয়ের লক্ষ্যে তারা মাঠে নামবে এতে সন্দেহ নেই।

আগামী ৩ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনের আগে ইউগভ পরিচালিত এক জরিপে ৪৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তারা কাকে ভোট দেবেন ঠিক করে ফেলেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ শতাংশই ভোট দেবেন পিএপিকে, আর ১৫ শতাংশ ভোট দেবেন প্রধান বিরোধী দল ওয়ার্কার্স পার্টিকে।

জরিপে অংশ নিয়েছিল ১,৮৪৫ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক।

গত বছর দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুংয়ের জায়গায় দায়িত্ব নেওয়া লরেন্স ওংয়ের জন্য এটি হবে প্রথম বড় নির্বাচনী পরীক্ষা।

ফেব্রুয়ারিতে নিজের প্রথম বাজেট পেশ করে তিনি যেসব করছাড়, নগদ সহায়তা এবং খাতভিত্তিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন, অনেকেই তা দেখছেন নির্বাচনের আগে ভোটারদের খুশি রাখতে ‘ফিল-গুড বাজেট’ হিসেবে।

রয়টার্স জানিয়েছে, সিঙ্গাপুর স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র চারজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে। তাদের সবাই পিএপির। প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন লি কুয়ান ইউ, যাকে আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার বলা হয়। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন দীর্ঘ ২৫ বছর। ২০১৫ সালে প্রয়াত লি কুয়ান ইউয়ের ছেলে লি সিয়েন লুং ২০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর দায়িত্ব ছাড়েন।

সিঙ্গাপুরে ২৭ লাখ ৫০ হাজার যোগ্য ভোটারের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক। দেশটিতে যুক্তরাজ্যের মত ‘ফার্স্ট-পাস-দ্য-পোস্ট’-এর মতো ভোটদানের নিয়ম থাকলেও সেখানে বিরোধীদের জন্য কিছু বাড়তি চ্যালেঞ্জ আছে।

মন্তব্য

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ‘পর্যালোচনা’ করছে হামাস

    ১০ জিম্মির বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি মুক্তির শর্ত ‘৪৫ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছতে হবে’
সিএনএন
সিএনএন
শেয়ার
ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ‘পর্যালোচনা’ করছে হামাস
১৫ এপ্রিল গাজা সিটিতে ধসে পড়া একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ধাতব জিনিসপত্র খুঁজে বের করছে ফিলিস্তিনিরা। ছবি : এএফপি

হামাস ‘গাজায় যুদ্ধবিরতির’ একটি ইসরায়েলি প্রস্তাব ‘পর্যালোচনা’ করছে বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির এক কর্মকর্তা। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে বন্দি ও আটক শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। হামাস এই প্রস্তাবটি পেয়েছে সোমবার। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এতে একটি ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক কাঠামো উল্লেখ রয়েছে, যার মধ্য দিয়ে উভয় পক্ষ একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাবে।

এই প্রস্তাবে গাজা উপত্যকা নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা অতীতে হামাসের জন্য একটি কঠোর সীমারেখা ছিল। তবে প্রস্তাবে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধের কোনো নিশ্চয়তা নেই, যা হামাস একটি সমন্বিত চুক্তির অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে।

হামাস কর্মকর্তা আরো জানান, তাদের গোষ্ঠী এমন কোনো ইসরায়েলি প্রস্তাব মেনে নেবে না, যাতে নিরস্ত্রীকরণ বা প্রাথমিক সেনা প্রত্যাহারের পর ইসরায়েলি বাহিনীর গাজায় প্রত্যাবর্তনের শর্ত থাকে। ফলে এটি গোষ্ঠীটির পক্ষে গ্রহণযোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা কম।

মার্চে যুদ্ধ ফের শুরু হওয়ার পর গাজা থেকে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইসরায়েলের প্রথম প্রস্তাব এটি। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জিম্মিদের পরিবারের পাশাপাশি দিন দিন অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠা রিজার্ভ সেনাদের চাপের মুখে রয়েছেন একটি চুক্তিতে পৌঁছতে। সিএনএন ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চেয়েছে।

হামাস কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাব অনুযায়ী জিম্মিদের মুক্তি পর্যায়ক্রমে হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন মার্কিন-ইসরায়েলি নাগরিক ইদান আলেকজান্ডারকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধাস্বরূপ’ মুক্তি দেওয়া হবে। এরপর আরো ৯ ইসরায়েলি জিম্মিকে দুটি ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। এর বিনিময়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে কোনো অভিযোগ ছাড়া আটক এক হাজার ১০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবে বলে জানান তিনি।

ইসরায়েলি প্রস্তাবে হামাসের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন জীবিত বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের সম্পর্কে তথ্য দেয়। এর বিনিময়ে ফিলিস্তিনি আটকদের সম্পর্কেও তথ্য দেওয়া হবে।

এ ছাড়া মৃত ১৬ জন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ইসরায়েলের হেফাজতে থাকা ১৬০ জন মৃত ফিলিস্তিনির মরদেহ মুক্তি দেওয়া হবে।

হামাস কর্মকর্তা বলেন, ‘৪৫ দিনের একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির’ আওতায় সামরিক অভিযান বন্ধ থাকবে এবং গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করবে। একই সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে, এই সহায়তা যেন শুধু বেসামরিক লোকদের কাছে পৌঁছয়। পাশাপাশি এই প্রস্তাবে গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম প্রবেশের ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহান্তে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল কায়রোতে মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে ইসরায়েল আলোচনায় দল পাঠিয়েছে কি না, তা প্রকাশ করেনি।

এদিকে মার্চের শুরু থেকে ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে, যার মধ্যে খাদ্য সরবরাহও রয়েছে। সহায়তা সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, এই পদক্ষেপ গাজার ২০ লাখ বাসিন্দার জন্য পরিস্থিতিকে চরমভাবে খারাপ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর চলমান আক্রমণ পরিস্থিতি আরো জটিল করেছে।

ইসরায়েল বলেছে, হামাসকে জিম্মি মুক্তির জন্য চাপ দিতে এবং বিদ্যমান যুদ্ধবিরতির শর্ত পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে তারা গাজায় সহায়তা প্রবেশ বন্ধ ও সামরিক অভিযান চালিয়েছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

হামাস কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সাত দিনের জন্য গাজার কিছু অংশ, যেমন দক্ষিণাঞ্চলের রাফা, উত্তরের কিছু এলাকা ও গাজা সিটির পূর্ব দিক থেকে সরে যাবে।

সিএনএনকে ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ইসরায়েলি প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে, ‘গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণ’ ও ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা’ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন থেকে। তিনি বলেন, ‘৪৫ দিনের মধ্যে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছতে হবে।’ এরপর হামাসের হাতে থাকা বাকি জীবিত ও মৃত ইসরায়েলি জিম্মিদের ফেরত দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘যদি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তি হয়, তবে নির্ধারিত শর্ত ও সময় অনুযায়ী তা বাড়ানো যাবে…আর যদি এই সময়ের মধ্যে কোনো চুক্তি না হয়, তবে নতুন জিম্মি-বন্দিমুক্তির বিনিময়ে মেয়াদ বাড়ানো হবে।’

হামাস কর্মকর্তার যে বিবরণ, তার কিছু অংশ ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায় বলে জানিয়েছে সিএনএন।

‘চুক্তির পথে অগ্রগতি হচ্ছে’
এর আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবে গাজা থেকে ১০ জন জিম্মি মুক্তির দাবি রয়েছে। সেই সঙ্গে আলেকজান্ডারকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুক্তির পরিকল্পনাও রয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রস্তাব অনুযায়ী বিভিন্ন ধাপে হামাসকে অন্য জিম্মিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর রবিবার জানায়, গাজায় জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি বিষয়ক নতুন চুক্তির পথে ‘পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে’, যা জানানো হয় জিম্মি আইতান মোরের পরিবারের সঙ্গে আলাপের সময়। জিম্মি পরিবারের সংগঠন টিকভা ফোরাম এই কথোপকথন নিশ্চিত করে জানায়, নেতানিয়াহু মোর পরিবারকে ‘১০ জন জীবিত অপহৃত ব্যক্তির মুক্তিসংক্রান্ত আলোচনার অগ্রগতি’ সম্পর্কে জানিয়েছেন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতেও বলা হয়েছে, আলোচনাটি ১০ জন জিম্মি মুক্তির বিষয়ে। তবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।

সিএনএন হামাস কর্মকর্তার দেওয়া প্রস্তাবের আরো কিছু বিবরণ যাচাইয়ের চেষ্টা করছে।

হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মাহমুদ মারদাবি রবিবার টেলিগ্রামে বলেন, হামাস যেকোনো প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে, যদি তা ‘আক্রমণ বন্ধ ও দখলদার বাহিনীর প্রত্যাহারের ভিত্তিতে’ হয়। তবে তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘খাদ্যের বিনিময়ে জিম্মি মুক্তি’র মতো খণ্ডিত প্রক্রিয়া হামাস মেনে নেবে না।

সিএনএন গত সপ্তাহে জানায়, মধ্যস্থতাকারীরা হতাশ, কারণ নেতানিয়াহু আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধিত্বকারী অভিজ্ঞ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা রন ডারমারকে নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত আলোচনার গতি মন্থর করেছে এবং আগের যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত করছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ