বিদায়ি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন। শুধু পরিকল্পনাই নয়, প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছেন। ‘ওয়াশিংটন টাইমস’ ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘অ্যাক্সিওস’ এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান ২০ জানুয়ারির আগে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, মূলত তা নিয়েই প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ আগে বৈঠক করেছেন।
এত দিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি সেই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে বলে ‘ওয়াশিংটন টাইমস’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে সিনহুয়া এই খবর জানিয়েছে।
এদিকে মার্কিন হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির হত্যার পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধান কাসেম সোলাইমানি এবং ইরাকি মিলিশিয়া নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিস। এই হামলাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ইরান।
তেহরানে আয়োজিত এক সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির তীব্র সমালোচনা করে তাদের শোষণমূলক আচরণের বিরোধিতা করেন পেজেশকিয়ান। এ ছাড়া তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের দুর্বল দেশগুলোকে নীরবে শোষণ করে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। তিনি মার্কিনিদের পরাজিত করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিচার বিভাগের প্রধান গোলাম হোসেইন মোহসেনি-ইজেই এবং পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
পেজেশকিয়ান বলেছেন, ‘সোলাইমানির হত্যা প্রমাণ করে বিশ্বে মানবাধিকারের অন্যতম দাবিদার যুক্তরাষ্ট্র কতটা অমানবিক। ইরান সব সময় সত্যের পক্ষে থাকবে এবং আমরা এই পথে তাদের পরাজিত করব।’
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারির মুখে এরই মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানালেও বৈঠকে এখনো পর্যন্ত ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে এরই মধ্যে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র বলে দাবি অ্যাক্সিওসের।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকানপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখে। দ্বিতীয় মেয়াদে তাঁর দায়িত্ব নিতে এখনো প্রায় এক মাস বাকি থাকলেও পুরো বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে ‘ট্রাম্প নীতির’ সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এখনই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। নিজ দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে সুরক্ষা দিতে তিনি যেসব নীতি নেবেন বলে এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন, তার প্রভাব ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশে পড়তে শুরু করছে। সূত্র : ওয়াশিংটন টাইমস, অ্যাক্সিওস, দ্য হিল