যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কেন্দ্রীয় ঋণ, অনুদান ও আর্থিক সহায়তা বন্ধের পরিকল্পনার ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়েছেন দেশটির আদালত। স্থানীয় সময় গত সোমবার আদালত বলেন, সরকারি ব্যয়ের ওপর কংগ্রেসের সাংবিধানিক কর্তৃত্বের ওপর অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ হতে পারে এই পরিকল্পনা।
বিচারক লোরেন আলীখান বলেছেন, হোয়াইট হাউসের বাজেট অফিস গত সপ্তাহে অর্থায়ন স্থগিত সংক্রান্ত একটি স্মারক দিয়েছে। তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সরকারি অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল সংস্থাগুলো তাদের কাজ চালিয়ে নিতে এবং সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে দিয়ে বিপর্যকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।
একাধিক অধিকার গোষ্ঠীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিটি দুটি অস্থায়ী স্থগিতাদেশের আওতায় পড়েছে। এর আগে গত শুক্রবার রোড আইল্যান্ডের একজন কেন্দ্রীয় বিচারক একই ধরনের আদেশ দিয়েছেন। ২২টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার অনুরোধে এই আদেশ দেন ওই বিচারক।
অনুদান বন্ধের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন থেকে সাময়িকভাবে অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটকে (ওএমবি) বিরত রাখতে গত সপ্তাহে একটি সংক্ষিপ্ত প্রশাসনিক স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বিচারক লোরেন আলীখান। ওই সময় তিনি দীর্ঘস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেবেন কি না, তা বিবেচনা করেছিলেন। ওএমবি তাদের স্মারকে বলেছে, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈচিত্র্য ও অন্যান্য বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে তহবিল স্থগিত জরুরি ছিল।
প্রথমে তহবিল স্থগিতের বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টার পর ওএমবি গত বুধবার স্মারকটি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি ছিল, অধিকারগোষ্ঠীর করা মামলার বিষয়ে এই স্মারক প্রত্যাহারের প্রভাব থাকা উচিত ছিল। তবে জো বাইডেনের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই বিচারক বলেন, তহবিল সমস্যা থেকে যাওয়ায় এবং নীতি পুনরায় বাস্তবায়ন থেকে ওএমবিকে বাধা দেওয়ার মতো কেউ না থাকায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ জরুরি হয়ে পড়ে।
বিচারক বলেন, প্রেসিডেন্টের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে দিয়ে ওএমবিকে যা ইচ্ছ তা করতে দেওয়া যায় না। ওএমবির স্মারকে তিন ট্রিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তার বিষয় উল্লেখ ছিল, যা রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া যেতে পারে।
বিচারক আরো বলেন, নীতিটি স্বেচ্ছাচারী মনে হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়িত হলে মার্কিন সংবিধানের অধীনে সরকারি ব্যয়ের ওপর কংগ্রেসের কর্তৃত্ব লঙ্ঘিত হতে পারে।
আপাতত বিচারক আলীখানের স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। এর মধ্যে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন এই আদেশ স্থায়ী করার প্রয়োজন আছে কি না। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে লড়াই করা আইনজীবীরা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। সূত্র : রয়টার্স