সৌদি আরবজুড়ে, ঐতিহাসিক বাড়িগুলো উল্লেখযোগ্য রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এসব বাড়ি ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁয় রূপান্তরিত হচ্ছে। রেস্তোরাঁ মালিকরা ঐতিহাসিক বাড়িগুলোকে পুনর্ব্যবহারের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে কথা বলেছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা মরু রাষ্ট্রটির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দিতে চাইছেন।
বিশেষত মদিনায়, বেশ কয়েকটি পরিবার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান এই ধারণাটি গ্রহণ করেছে। তাগমেরা রেস্তোরাঁর ব্যাবসায়িক অংশীদার সালেহ শাহিনি এবং তাঁর মা আবির আল-মাসরি মনে করেন, তাঁদের ঐতিহাসিক সম্পত্তিকে ক্যাফেতে রূপান্তর করা ছিল কয়েক দশকের ঐতিহ্য সংরক্ষণের একটি উপায়।
‘বাড়িটি মূলত ৮০ বছর আগে আল-মাগাদাবি পরিবার দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। প্রথম তলাটি আগ্নেয়গিরির পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
কয়েক বছর পরে, কাঠ এবং কাদামাটি ব্যবহার করে অতিরিক্ত মেঝে যুক্ত করা হয়েছিল,’ শাহিনি ব্যাখ্যা করেন। তাগমেরা মূল কাঠামোর ঘনিষ্ঠতা ধরে রেখেছে, যাতে দর্শনার্থীরা বাড়ির অতীতের সঙ্গে সংযুক্ততা বোধ করতে পারেন। শাহিনি আরো বলেন, ‘সরু স্থান এবং নিচু সিলিং উষ্ণতা এবং শান্তির অনুভূতি তৈরি করে, অতিথিদের কথোপকথনে জড়িত হওয়া এবং তাঁদের আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা সহজ করে তোলে।’
উল্লেখ্য, ক্যাফেটি একটি পরিবার পরিচালিত প্রকল্প, যেখানে আল-মাসরি এবং তাঁর সাত সন্তান অতিথিদের স্বাগত জানান এবং কার্যক্রম পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকেন।
শাহিনির ভাষায়, ‘আমাদের মেন্যুতে থাকা সবকিছুই ঘরে তৈরি করা হয়, পুরনো গাঁজন কৌশল এবং খাঁটি উপাদান ব্যবহার করা হয়, ঠিক যেমন আমরা বাড়িতে খাবার তৈরি করি।’
মদিনার আল-মাঘিসলা জেলায় একটি ঐতিহ্যবাহী বাড়িকে রূপান্তর করা হয়েছে জাপানি রেস্তোরাঁ ‘ইন্টু সুশি’ হিসেবে, যা লিন কুর্দি এবং তাঁর পরিবার পরিচালনা করেন। লিন কুর্দি বলেন, ‘ঘরটিকে একটি রেস্তোরাঁয় রূপান্তরিত করার অভিজ্ঞতা ছিল চ্যালেঞ্জপূর্ণ, কারণ আমরা বাড়ির আত্মা এবং আগ্নেয়গিরির পাথরের কাঠামোর অখণ্ডতা রক্ষা করতে চেয়েছিলাম।’
কাবুনের মালিক আব্দুল রহমান আল-হেজাইলির কাছে একটি বাড়িতে পরিণত রেস্তোরাঁর ধারণাটি দীর্ঘদিন ধরেই আকর্ষণের বিষয় ছিল। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘আমরা এমন একটি রেস্তোরাঁ তৈরি করতে চেয়েছিলাম, যা বাড়ির মতো মনে হয়।
যেখানে অতিথিরা উষ্ণ পরিবেশে সহজ, আরামদায়ক খাবার উপভোগ করতে পারেন।’
মদিনার আল-হায় প্রকল্পের একজন দর্শনার্থী রেয়াম আল-আহমাদি বলেন, ‘কিছুদিন আগে, একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে কেউ এই রূপান্তরিত বাড়িগুলোতে তাঁদের বিস্ময় প্রকাশ করেছিল এবং আমি তাদের দোষ দিতে পারি না! আমি যখন আল-হায় পরিদর্শন করি, তখন আমারও একই বিস্ময় অনুভূত হয়েছিল।’ সূত্র : অ্যারাব নিউজ