<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসি/মোদের বাড়ি এসো,</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাট নাই পালং নাই/খোকার চোখে বসো।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাটা ভরে পান দেব/গাল ভরে খেয়ো,</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোকার চোখে ঘুম নাই/ঘুম দিয়ে যেয়ো।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রচলিত এই ছড়া শুনলেই বোঝা যায় আমাদের দেশে পান-সুপারির গুরুত্ব কতটা বেশি। বাঙালি ভোজনরসিক। এই ভোজনের সঙ্গে পান-সুপারি প্রীতি তো আছেই। ভূরিভোজনের পর একটি খিলিপান বা মিষ্টি সুপারি পানের কদর এখানে আলাদা। প্রাচীন আমলে বাংলার বণিকদের বড় কারবার ছিল সুপারি, পান ও নারিকেল নিয়ে। সুপারিগাছের বিস্তার তখন থেকেই। গ্রামবাংলার আঙিনা কিংবা হাওরপারে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা সুপারিগাছ শুধু দৃষ্টিনন্দন নয়; এটি আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। </span></span></span></span><span style="font-family:SolaimanLipi; font-size:14pt">চিরসবুজ এই গাছটি চিকন কিন্তু বেশ লম্বাটে গড়নের হয়ে থাকে।</span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, পাকিস্তান, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, চীন ইত্যাদি দেশে সুপারি চাষ করা হয়। সুপারিগাছের বৈজ্ঞানিক নাম </span></span><em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Areca catechu</span></span></em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। এটি খেজুরজাতীয় বৃক্ষ, যা ১০ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর কাণ্ড সরু ও ওপরের অংশে ঘন পাতার ছড়ি দেখা যায়। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল অঞ্চলে সুপারিগাছ বেশি দেখা যায়। গাছটি সাধারণত লবণাক্ত মাটি ও উষ্ণ আবহাওয়ায় ভালো জন্মায়। এরা বছরে ফল দেয় দুবার। জীবনকাল প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুপারি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও সুপারি রপ্তানি করা হয়। সুপারি চাষিদের জন্য এটি বেশ লাভজনক পেশা। পানের সঙ্গে সুপারি ব্যবহারের ঐতিহ্য সুদীর্ঘকাল ধরে গ্রামীণ জীবনে এক বিশেষ স্থান ধরে রেখেছে। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সামাজিক অনেক আচার-অনুষ্ঠানে সুপারির উপস্থিতি দেখা যায়। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পান-সুপারি মুখের তিক্ত স্বাদ দূর করে সতেজতা এনে দেয়। কৃমিনাশক হিসেবেও ফলটির ব্যবহার আছে। রক্ত আমাশয় ও পেটের অজীর্ণ কাটাতে ও মাড়ির রক্তপাত থামাতে সুপারির রস কাজে দেয়। সুপারিগাছের কাঠ ব্যবহার করা হয় ঘরবাড়ি তৈরিতে ও এর শুকনা পাতা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফলের নির্যাস আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তবে উচ্চমাত্রায় সুপারি ব্যবহারের ফলে মুখে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুপারিগাছ মাটির ক্ষয় রোধ করে এবং পরিবেশকে ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করে। বর্তমানে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার সুপারি চাষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল সানি</span></span></span></span></p>