<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে প্রবেশে বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করে নতুন করে আবেদনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। বলা হয়েছে, বিদ্যমান কার্ডে আপাতত কেউ সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না। পেশাগত কাজে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে হলে বা যেকোনো ইভেন্ট কাভার করার জন্য সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মিত অস্থায়ী অ্যাক্সেস কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। সাংবাদিকদের সাময়িক এই অসুবিধার জন্য সরকার আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে সাংবাদিকদের কী সংযোগ, তা-ই মাথায় আসছে না। অ্যাক্রেডিটেশনপ্রাপ্ত প্রেসকার্ডধারীদের সচিবালয়ে নিষেধাজ্ঞা জারিতে সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক যে, এই অগ্নিকাণ্ডে সাংবাদিকরাও জড়িত। তা-ও আবার করা হলো ঢালাওভাবে, যা অনৈতিক ও স্বৈরাচারী পদক্ষেপ। কারণ, কোন বিধি অনুযায়ী কিংবা কী কারণে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়নি। আমার কাছে মনে হয়েছে, বিষয়টি মাথা ব্যথা নিরাময়ে মুণ্ডুপাতের মতো পদক্ষেপ।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শাক দিয়ে যেমন মাছ ঢাকা যায় না, তেমনি সাংবাদিকদের আড়ালে রেখেও কোনো গোপনীয়তা কখনো রক্ষা করা যায় না। যা পারেনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারও। বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক নিষিদ্ধের ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাদের অনেকে সেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচক ছিলেন। দুর্ভাগ্য আমাদের, তাঁদের সরকারের হাত ধরেই আজ ওই নিষেধাজ্ঞার চেয়ে শত গুণ বড় নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ এলো। সাংবাদিক সমাজকে এ ঘটনার সুযোগ নিয়ে কলঙ্কিত করার এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি শাহীন হাসনাত কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেশাদার সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড এভাবে বাতিল করা সমীচীন হয়নি। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরির পেছনে যাঁরা জড়িত তাঁদের মধ্যে শুভচিন্তার ঘাটতি রয়েছে। সচিবালয়ের মতো কেপিআইভুক্ত এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে প্রশাসনের দায়িত্বশীলতার দায় এড়াতে এবং দৃষ্টি অন্যত্র সরাতেই সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। আমরা দ্রুততম সময়ে পেশাদার সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পুনর্বহালের দাবি করছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা বিকাশকে শুধু বাধাগ্রস্তই করবে না, সংবাদমাধ্যমের অবাধ তথ্যপ্রবাহ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকেও হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদমাধ্যমের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ভুল বোঝাবোঝির সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে সেটা দূর হয়েছে। আমি তাদের সেই বক্তব্যের সঙ্গে একমত। সুতরাং এ নিয়ে আমার আলাদা কোনো বক্তব্য নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বার্তায় জানানো হয়, সচিবালয়ে প্রবেশে বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করে নতুন করে আবেদনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়া হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এতে আরো বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তথা কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন (কেপিআই) সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিবেচনায় অন্য সব বেসরকারি পাসের পাশাপাশি বর্তমান অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশও সীমিত করা হয়েছে। সরকার শিগগিরই বিদ্যমান প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডগুলো পর্যালোচনা করবে এবং নতুন অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু করার জন্য তথ্য অধিদপ্তরের (পিআইডি) মাধ্যমে সব স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে নতুন অ্যাক্রেডিটেশনের আবেদন আহবান করবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে গত শুক্রবার সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ইস্যু করা স্থায়ী প্রবেশ পাস এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ইস্যু করা অস্থায়ী প্রবেশ পাস ছাড়া সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য সব ধরনের অস্থায়ী (বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য) পাস বাতিল করে সরকার। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সচিবালয়ে সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার লিখেছেন, কিছু লোক সরকারকে কঠোর হতে বলে আবার সামান্যতম কঠোর হলে গেল গেল রব তোলে। এই দ্বিচারিতা বন্ধ হওয়া জরুরি। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা নিয়ে যথারীতি এই দ্বিচারিতা আবার শুরু হয়েছে। প্রবেশাধিকার সীমিত করার এই সিদ্ধান্তটি খুবই সাময়িক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি লেখেন, একটা বিষয় এখানে পরিষ্কার করা দরকার, কোনো সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বাতিল করা হয়নি। কেবল সচিবালয়ের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। তা-ও খুবই অল্প সময়ের জন্য। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অস্থায়ী পাস ইস্যু করা হবে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিগগিরই বিদ্যমান সব প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডই পর্যালোচনা করা হবে এবং নতুন অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু করার জন্য সব স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কাছে আবেদন চাওয়া হবে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সচিবালয়ে প্রবেশ পাসের বিশেষ সেল  </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সচিবালয়ে প্রবেশ পাসের জন্য বিশেষ সেল গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এই সেল গঠনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসংক্রান্ত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য অস্থায়ী প্রবেশ পাসের আবেদন গ্রহণ করার জন্য ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারে অস্থায়ী প্রবেশ পাসসংক্রান্ত বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেই সেলে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশক্রমে সংযুক্ত করা হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষ এই সেলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিনিয়র সহকারী সচিব এফ এম তৌহিদুল আলম এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মৃত্যুঞ্জয় বাড়ৈকে।</span></span></span></span></p>