<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইসলাম ধর্মে পৌরোহিত্যের কোনো স্থান নেই। ইসলামে ধর্মীয় জ্ঞানের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। নারী-পুরুষ যেকোনো ব্যক্তি চাইলে ইসলামের সর্বোচ্চ জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে ইসলাম মানুষকে পূর্বসূরিদের পদাঙ্ক অনুসরণ এবং ইসলামী জ্ঞানের মূল উৎস থেকে জ্ঞান আহরণে উৎসাহিত করে। এ জন্য জ্ঞানান্বেষীর আরবি ভাষা সম্পর্কে অবগত হওয়া প্রয়োজন। সুতরাং যে ব্যক্তি আরবি ভাষা জানে এবং যার আরবি ভাষা সম্পর্কে জানার সুযোগ আছে সে আরবিতেই ধর্মীয় জ্ঞান চর্চা করবে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরবি ভাষার গুরুত্ব</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পণ্ডিত আলেমরা বলেন, ধর্মীয় জ্ঞানচর্চায় আরবি ভাষার গুরুত্বের দুটি দিক রয়েছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১. আরবি ভাষা আল্লাহর মনোনীত : আরবি ভাষা দ্বিনের শিআর বা প্রতীক। মহান আল্লাহ আরবি ভাষাকে দ্বিন ইসলামের বাহক হিসেবে মনোনীত করেছেন। তাই দ্বিনচর্চায় আরবি ভাষার পরিবর্তে অন্য কোনো ভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া পূর্বসূরি আলেমদের রীতিপরিপন্থী। ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রত্যেক মুসলমান সাধ্যানুযায়ী আরবি ভাষা শিখবে, যেন সে আরবি ভাষায় কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ ও কোরআন তিলাওয়াত করতে পারে, যেসব জিকির ও অজিফা আরবি ভাষায় পাঠ করা ফরজ তা যেন আরবিতে পড়তে পারে। একইভাবে তাসবিহ, তাশাহহুদ ইত্যাদি পড়তে পারে। এরপর যদি কোনো মানুষ শেষ নবী (সা.) ও কোরআনের ভাষায় আরো দক্ষতা অর্জন করে, তা উত্তম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(আর রিসালাহ, পৃষ্ঠা-৪৮-৪৯)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২. অর্থ ও মর্মের গভীরতা : আরবি ভাষার শব্দ-বাক্যের অর্থ-মর্ম অত্যন্ত গভীর। অন্য যেকোনো ভাষার তুলনায় আরবি ভাষার শব্দ-বাক্য বিশেষ তাৎপর্যের অধিকারী। এ জন্য নবীজি (সা.) কোরআন-হাদিসচর্চায় এর শব্দ-বাক্যে পরিবর্তন আনতে নিরুৎসাহ করেছেন। বারা ইবনে আজিব (রা.) অজুর দোয়ায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাবিয়্যুকা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শব্দের স্থানে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুলিকা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শব্দ পাঠ করেন। তখন নবীজি (সা.) বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরং তুমি নাবিয়্যুকাই বোলো।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৪৭)</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাষান্তরে ভুলের আশঙ্কা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেহেতু আরবি ভাষা গভীর অর্থ-মর্মের ধারক, বিশেষ করে কোরআন ও হাদিসে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংক্ষিপ্ত বাক্যে অধিক মর্ম ব্যক্ত করা হয়েছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, তাই অনুবাদ বা ভাষান্তরের ওপর নির্ভর করলে ব্যক্তির ভুল হওয়ার এবং ভুল করার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ ছাড়া কোরআন-হাদিসের বহু বিষয় এমন, যা একাধিক অর্থ ও ব্যাখ্যার সম্ভাবনা রাখে। এখন যদি কেউ মূল আরবির ওপর নির্ভর না করে ভাষান্তরের ওপর নির্ভর করে, তাহলে অর্থের সীমাবদ্ধতা তৈরি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরবির প্রতি মুসলমানের ভালোবাসা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরবি ভাষার প্রতি মুসলমানের ভালোবাসা অকৃত্রিম। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল্লাহ তাআলা নিজের দ্বিনের জন্য আরবি ভাষাকে মনোনীত করেছেন। এ জন্য তিনি আরবি ভাষায় কোরআন অবতীর্ণ করেছেন এবং শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ভাষাকে আরবি করেছেন। যে ব্যক্তির আরবি ভাষা শেখার সুযোগ ও যোগ্যতা আছে সে যেন তা শেখে। কেননা আরবি এমন ভাষা, যার প্রতি অন্তরের ভালোবাসা ও আগ্রহ সবচেয়ে প্রবল হওয়া উচিত। তবে এর অর্থ এই নয় যে অনারব ভাষা চর্চা করা এবং বলা হারাম। এ জন্যই ইমাম শাফেয়ি (রহ.) বলেছেন, কোনো আরবি জানা লোকের জন্য অনারব ভাষায় নাম রাখা মাকরুহ। তিনি আরবি ভাষায় অনারব শব্দ যুক্ত করাকে অপছন্দনীয় বলেছেন। ফিকহের ইমামদের এই অবস্থান সাহাবি ও তাবেঈদের থেকেই গৃহীত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(ইকতিজাউস সিরাতিল মুস্তাকিম : ১/৫২১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুতরাং মুসলমানের উচিত ধর্মীয় জ্ঞানচর্চায় অন্য কোনো ভাষার ওপর নির্ভর না করে সরাসরি আরবির ওপর নির্ভর করা। আল্লাহ সবাইকে সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমিন।</span></span></span></span></p>