<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন মার্ক্সবাদী নেতা অনুরা কুমারা দিশানায়েকে। গণবিক্ষোভের মুখে গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর দুই বছরের বেশি সময় পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের এই প্রার্থী। নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় বিজয়ী নির্ধারণে দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনা করা হয়। ভোট গণনা শেষে গতকাল রবিবার দেশটির নির্বাচন কমিশন দিশানায়েকেকে বিজয়ী ঘোষণা করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে নির্বাচনে জিতে দেশবাসীর প্রতি দেশের ইতিহাস নতুন করে লেখার আহবান জানিয়েছেন পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের এই নেতা। ৫৫ বছর বয়সী দিশানায়েকে আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শতবর্ষ ধরে আমরা যে স্বপ্ন লালন করেছি তা অবশেষে সত্যি হচ্ছে। এই বিজয় আমাদের সবার। আশা এবং প্রত্যাশায় ভরা লাখো চোখ আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। একসঙ্গে আমরা শ্রীলঙ্কার ইতিহাস নতুন করে লিখতে প্রস্তুত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রীলঙ্কার নির্বাচনব্যবস্থায় ব্যালট পেপারে ভোটারদের জন্য তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থী প্রথম ভোট গণনায় ৫১ শতাংশ ভোট না পেলে দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনা করা হয়। এই দফার ভোট গণনায় নির্বাচন কমিশন ভোটারদের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পছন্দের ভোট গণনা শেষে এর ভিত্তিতেই বিজয়ী নির্ধারণ করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথম দফার ভোট গণনায় জনগণের প্রথম পছন্দের প্রার্থীর ভোট গণনা করা হয়েছিল। এর মধ্যে এগিয়ে ছিলেন বামপন্থী রাজনীতিবিদ দিশানায়েকে। তিনি পেয়েছিলেন ৪২.৩১ শতাংশ ভোট। তাঁর প্রতিপক্ষ বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমদাসা ৩২.৭৬ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। আর নির্বাচনে মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন দেশকে ভঙ্গুর অর্থনীতির অবস্থার মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়া বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই বছর আগে রাজস্ব আয় বাড়ায় না এমন অনুৎপাদনশীল প্রকল্পগুলোতে অত্যধিক ঋণ গ্রহণের ফলে শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়। এ ছাড়া কভিড মহামারির প্রভাব এবং স্থানীয় মুদ্রাকে চাঙ্গা করতে বৈদেশিক রিজার্ভ ব্যবহার করার জন্য সরকারের জেদ অর্থনীতির দ্রুত পতনে ভূমিকা রেখেছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ওষুধ, খাদ্য, রান্নার গ্যাস এবং জ্বালানির মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয় দেশটিতে। সে সময় লঙ্কানদের নিত্যপণ্যের জন্য দিনের পর দিন লাইনে অপেক্ষাও করতে হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক পর্যায়ে দেশটিতে জনবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে ২০২২ সালের ৩১ জুলাই পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন, তাঁর কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো দখল করে নেয়। এর ফলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। গোতাবায়া ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হওয়ার এক সপ্তাহ পর দেশটির পার্লামেন্ট ৭৫ বছর বয়সী রাজনীতিক রনিল বিক্রমাসিংহেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিক্রমাসিংহের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংকটপূর্ণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কঠোর শর্ত মানতেও রাজি হয়। ২৯০ কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধের জন্য দ্বিগুণ কর বৃদ্ধি, বিদ্যুতে ভর্তুকি বাতিলসহ নানা রকম কৃচ্ছ্র কর্মসূচি গ্রহণ করেন তিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপে অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। বিক্রমাসিংহে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনার পাশাপাশি স্থানীয় মুদ্রাকে শক্তিশালী করতেও সফল হন। তবে এত কিছুর পরও এখন পর্যন্ত পুরোপুরি সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে উত্তরণের আশায় দিশানায়েকেকে বেছে নিয়েছে শ্রীলঙ্কার মানুষ। নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট থেকে দেশকে টেনে তোলাই হবে সদ্য বিজয়ী এই প্রেসিডেন্টের প্রধান কাজ। অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরানো তাই তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দিশানায়েকে নগদ অর্থসহ নানা সংকটে ধুঁকতে থাকা দেশটির মানুষকে কতটা দিশা দেখাতে পারেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূত্র : এএফপি, বিবিসি</span></span></span></span></p>