<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় ধান ও চালের ব্যবসায় সংকট চলছে। স্থানীয় চালকল ও চাতাল ব্যবসায়ীরা ব্যাংকঋণের চড়া সুদ, বাজারের অস্থিতিশীল অবস্থা এবং বড় ব্যবসায়ীদের আধিপত্যের কারণে এক কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন। এই সংকটের ফলে শতাধিক চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে এবং হাজারো মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের তথ্য অনুযায়ী, কালাই উপজেলায় মোট ২৪৪টি চাতালের মধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে মাত্র ১৩৫টি। বাকি ১০৯টি চাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় চার হাজার শ্রমিক তাদের কাজ হারিয়েছেন। আশির দশকে ধান-চালের এই ব্যবসা উপজেলায় অত্যন্ত লাভজনক ছিল। তখন আড়াই শতাধিক চাতাল প্রতিষ্ঠা পায়, যা সাত হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান করত। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি বদলে গেছে। ব্যাংকঋণের চড়া সুদ এবং ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাতাল মালিকরা আর ব্যবসায় টিকতে পারছেন না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কৃষি ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে ঋণের সুদহার ৭ থেকে ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও চাতালশিল্পে এই হার প্রায়ই ৯ শতাংশ থেকে ১৭ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। মৌসুমি ব্যবসার সঙ্গে ব্যাংকঋণের সম্পর্ক থাকায় চাতাল মালিকদের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা কম থাকে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদশক আগেও এই উপজেলায় চাতালগুলো বছরে নিয়মিত আমন ও বোরো মৌসুমে সরকারি বরাদ্দ নিয়ে স্থানীয় খাদ্যগুদামে চাল দিত। এরই মধ্যে ব্যাংক সুদ ও চালের বাজারে অস্থিতিশীলতার কারণে পুঁজির সংকটে পড়েন ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে যায় তাদের চাতাল ব্যবসা। ঋণের দায়ে কালাই পূর্বপাড়ার জহুরুল ইসলামসহ অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে বোড়াই গ্রামের বাবলু মিয়া, কালাই কাজীপাড়া মহল্লার বেলাল প্রামাণিক, মুন্সিপাড়া মহল্লার আবু সাঈদ ফকির, পুনটের শাহিনসহ শতাধিক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়েছেন। ব্যবসা ছেড়ে তারা ভিন্ন কর্মে যুক্ত হয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাতাল ব্যবসায় পুঁজি হারিয়ে দেউলিয়া হন উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের ঝামুটপুর গ্রামের এনামুল হক মোল্লা। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাড়ে ১২ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। ধানের দাম, উৎপাদন খরচ ও ব্যাংক সুদ মিলে বর্তমান বাজারে চাল বিক্রি করে কোনো লাভ টিকে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরেক ব্যবসায়ী কালাই মুন্সিপাড়া মহল্লার আবু সাঈদ ফকির বলেন, ঋণের সুদে একবার পড়লে সেখান থেকে বের হওয়া খুব কঠিন। সময়মতো ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে সুদের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। ঋণ পরিশোধের জন্য এখন চাতালের জায়গা খণ্ড খণ্ড করে বিক্রি করছি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অগ্রণী ব্যাংক কালাই শাখার ব্যবস্থাপক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা সাধারণত চাতাল মালিকদের ৯ থেকে ১২ শতাংশ সুদে ঋণ দিই। কিন্তু এই ব্যবসার ঝুঁকির কারণে কখনো কখনো সুদের হার ১৭ শতাংশ পর্যন্ত চলে যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>