<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তখন কৈশোর পেরোয়নি কামরুল মিয়ার। পরিবারের হাল ধরতে ২০১৬ সালে বাড়ি ছাড়েন। ঢাকায় দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক থেকে শুরু করে ভ্যান চালনার কাজব-সবই করতেন। স্বপ্ন ছিল জমানো টাকায় প্রবাসে পাড়ি জমাবেন। পরিবারের সুখের আশায় তাঁর এ স্বপ্ন। তবে পুলিশের গুলি সেই স্বপ্ন ছারখার করে দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকায় গুলিতে শহীদ হন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার গৌরনগর গ্রামের কামরুল মিয়া (২৪)। ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বরের গোলচত্বরে আন্দোলনে ছিলেন কামরুল। আগের দিন ছররা গুলিতে বিদ্ধ হলেও ভ্যানচালক কামরুল পিছপা হননি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কামরুলের পরিবার এখন অনিশ্চয়তার মুখে। বৃদ্ধ বাবা নান্নু মিয়া বাড়িতেই দিন কাটান। বড় ভাই সেলিম বেকার। আরেক ভাই বয়সে খুব ছোট। দুই বোনের বিয়ে দেওয়া বাকি রয়েছে। এখন সংসার চলে স্বজনদের সহায়তায়। কামরুলের এক ভাই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ওই ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমি বিক্রি করতে হয়। এখন সম্বল গ্রামের বসতভিটা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শহীদ কামরুল হত্যার বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয়ে পরিবার। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে, কামরুল হত্যায় ঢাকার মিরপুর থানায় মামলা হয়েছে। তবে বাদীকে কামরুলের পরিবার চিনে না। যে কারণে বিচার নিয়েও তাদের শঙ্কা। নিজেরা একটি মামলা করবেন কি না কিংবা মিরপুর থানার ওই মামলায় বাদী পরিবর্তন করে তাঁদের কেউ হবেন কি না এ নিয়েও এখন বোঝাপড়া চলছে পরিবারে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় পাঁচ মাসেও সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সহায়তা পায়নি কামরুলের পরিবার।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাক্সভর্তি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কী একটা প্রশাসন থেকে দিয়েছে, এমনটা জানিয়ে কামরুলের বড় ভাই সেলিম মিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা গ্রামের মানুষ। এটা কী দিছে বুঝি না। তবে শুনছি শহীদদের এগুলো দিতেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠানোর পর দেখা যায়, কামরুলের ছবিসহ একটি ক্রেস্ট নবীনগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মো. সেলিম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা চার ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই মারা গেছেন। আমিও কিছু করি না। আরেকজন ছোট। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বোনজামাইসহ স্বজনদের সহায়তায় চলতে হচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাইয়ের লাশ আনতে গিয়ে দুর্ভোগের কথা জানান সেলিম মিয়া। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কামরুল ১৯ জুলাই বিকেলে মারা গেলেও ২০ তারিখ আমরা খবর পাই। এরপর বিভিন্ন মেডিক্যালে ঘোরাঘুরি করি। এক দিন পর ঢাকা মেডিক্যালে লাশ পাই। এর এক দিন পর আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>