রাকুিবল হাসান রকি ও ফারদিয়া আক্তার ভাই-বোন। কাছাকাছি সময়েই হকি খেলা শুরু করেছেন দুজন। কিন্তু ভাইকে দেখে ঈর্ষাই হয় ফারদিয়ার! রাকিবুল লিগ খেলছেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলেছেন, যোগ দিয়েছেন বিমানবাহিনীতে, জাতীয় দলের ব্যস্ততা তো আছেই। আর কোথায় ফারদিয়া! তিন বছর পর ঢাকায় এসেছেন আবার টুর্নামেন্ট খেলতে।
মেয়েদের ডেভেলপমেন্ট কাপ হকির সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছেন কিশোরগঞ্জের ফারদিয়া। বিকেএসপির খেলোয়াড়দের আধিপত্যের মধ্যে সেটা মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু ফারদিয়া কম যান না। ২০১৬ সালে তিনি যখন হকি খেলা শুরু করেন, বিকেএসপিতে তখনো মেয়েদের দল গড়া হয়নি।
রাকিবুল ভর্তি হয়ে গেলেও ফারদিয়া তখন পেছনে পড়ে যান। তবে বিকেএসপিতে মেয়েদের নেওয়ার জন্য প্রথম যে ক্যাম্পটা হয়েছিল, সেই ক্যাম্পে তিনি ছিলেন। অনেক কিছু শেখা তাঁর সেখানেই। যদিও তত দিনে তিনি কলেজে ভর্তি হয়ে গেছেন বলে বিকেএসপির পাঠ আর নেওয়া হয়নি।
ফারদিয়া কিশোরগঞ্জেই থেকে যান। আরজত আতরজান স্কুল মাঠ তাঁর হকি তীর্থ। ২০১৬ সালে এই স্কুলের হয়েই আন্ত স্কুল টুর্নামেন্ট জিতেছিলেন। কোচ রিপেল হাসানের অধীনে স্কুল মাঠে তাঁরা একঝাঁক মেয়ে অনুশীলন করেন। ‘এখন আমাদের একটা হকি একাডেমিও হয়েছে।
মাঝে মাঝেই আমরা টুর্নামেন্ট করি। নিজেরাই মাঠটাঠ ঠিক করে কয়েকটা দল হয়ে খেলি’, সেই কিশোরগঞ্জের মাঠ থেকেই ঢাকার টার্ফে এসে টুর্নামেন্টসেরা হয়ে বলছিলেন ফারদিয়া। তবে সেরা হওয়ার আনন্দ নিমেষেই মলিন হয় তাঁর নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে বলতে গিয়ে, ‘আসলে ফুটবল, ক্রিকেটের মেয়েরা যতটা এগিয়ে গেছে, সেই সামর্থ্য আছে আমাদেরও। কিন্তু আমাদের সেভাবে খেলা নেই, প্রশিক্ষণ নেই।’ ২০১৯ সালে মেয়েরা প্রথম যে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে যায়, সিঙ্গাপুরে সেই জুনিয়র এএইচএফ কাপে ছিলেন ফারদিয়াও। কিন্তু এরপর চার বছর আবার খেলা নেই। ২০২৩-এ আবার খেলেন ফাইভ এ সাইড এশিয়া কাপ।
আবার কবে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে উঠবে জানেন না ফারদিয়া। গত বছর দুটি জুনিয়র আসরে বাংলাদেশ খেললেও সিনিয়রদের খেলা নেই। এবারও জুনিয়র এএইচএফ কাপেই খেলবে বাংলাদেশ। ২০১৬ সাল থেকে খেলা ফারদিয়া সিনিয়র হয়েই পড়েছেন বিপাকে।