ঢাকা, বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

উজ্জ্বল মুখ

শেয়ার
উজ্জ্বল মুখ
মনোয়ার হোসেন

দুই ভাই মনোয়ার হোসেন নান্নু ও সামছুল আলম মনজু। দুজনই বাংলাদেশ ফুটবলের কিংবদন্তি। বাংলাদেশ ফুটবলের উন্মাতাল করা দিনগুলোয় নান্নু ছিলেন আবাহনীর অধিনায়ক আর মনজু নেতৃত্ব দিতেন মোহামেডানের! ম্যাচের আগে দেশসেরা দুই ক্লাবের ভক্তরা পারলে যেখানে যুদ্ধ করে, সেখানে সেই দুই ক্লাবের সেনাপতিরা থাকেন কি না এক ছাদের নিচে! মুখোমুখি তিনটি ম্যাচে অবশ্য হারেননি দুই ভাইয়ের কেউ। একটা ম্যাচ ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে, আরেকটা গোলশূন্য।

আর তৃতীয় ম্যাচটা ভেসে যায় বৃষ্টিতে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ জাতীয় দলের ঐতিহাসিক প্রথম ম্যাচটা খেলেছেন মনোয়ার হোসেন নান্নু। প্রথম বিভাগ ফুটবলে তাঁর অভিষেক ১৯৬৮ সালে। অবসর নেন ১৯৮২ সালে।

১৯৯৮ সালে শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধার পর সবাই পাশে দাঁড়ান নান্নুর। তিনিই হয়তো একমাত্র ফুটবলার যাঁর চিকিৎসার জন্য চ্যারিটি ম্যাচ হয়েছে বাংলাদেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডায়। ১৯৯৮ সালে পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। তবে অসুস্থতার জন্য নিজে নিতে পারেননি সেটা।

মুম্বাইয়ের লীলাবতি হাসপাতালে দুবার অস্ত্রোপচারের পরও বাঁচানো যায়নি নান্নুকে। তিনি পৃথিবীর ওপারের বাসিন্দা হন ২০০৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি।

শেরপুরের ফুটবলারদের ঢাকা লিগে খেলার অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছেন প্রয়াত ফুটবলার মোহাম্মদ আলী। তিনি সত্তরের দশকেই ঢাকা লীগের তখনকার জনপ্রিয় দল বিজি প্রেসে খেলতেন। নালিতাবাড়ীর অসীম দত্ত হাবুল, বিকেএসপির শোভন, সাকের ঢাকা লিগে খেলেছেন।

আদিবাসী ফুটবলার আশীষ বানোয়ারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে খেলেছেন। এয়ারটেলের রাইজিং স্টার বাছাইয়ে দেশসেরা ১৩ জনের একজন হয়ে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ঘুরে এসেছেন মাহমুদুল হক কিরণ। তিনি আছেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। এবারের সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলে এই জেলা থেকে খেলেছেন আতিকুর রহমান আতিক, রেজুয়ান হোসেন ও জিহান। আতিকুর রহমান আতিক খেলেছেন মোহামেডানের অনূর্ধ্ব-১৬ দলে। অনূর্ধ্ব-১৬ লিগে তিনি হয়েছেন সেরা ডিফেন্ডারও। প্রতিভাবান এই ফুটবলার এখন আছেন সিলেট ফুটবল একাডেমিতে। বেলাল হোসেনও খেলেছিলেন অনূর্ধ্ব-১৩ দলে। এ ছাড়া ফুটবলে আলোচিত নাম সাইফুল ইসলাম কালাম, আব্দুল ওয়াদুদ অদু, মিজবাউল আলম মিঠু, মুকদেছুর রহমান হিমু, জিন্নত আলী, গোলাম মোস্তফা, অসিম দত্ত হাবলু, মজিবর রহমান, বাচ্চু ও সাধন বসাক।

নিগার সুলতানা জ্যোতি ও স্মৃতি বিভাগীয় মহিলা ক্রিকেট দলে সুনামের সঙ্গেই খেলছেন। জ্যোতি এখন আছেন জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ক্যাম্পে। জেসমিন বিসিবির মহিলা ক্রিকেটের 'এ' দলে স্ট্যান্ডবাই ছিলেন। জেলার একঝাঁক নারী ক্রিকেটার ঢাকার শেখ জামাল ধানমিন্ড ক্লাব, গুলশান ইয়ুথ ক্লাব, ইন্দিরা রোড, রাইজিং ইয়াং গার্লস ক্রিকেট ক্লাবে খেলে চলেছেন।

শেরপুর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র সারোয়ার হোসেন লং জাম্পে জাতীয় পর্যায়ে সোনা জেতায় তাঁর সম্মানে একদিন কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। স্বাধীনতার আগে লং জাম্পে খরমপুর নতুন বাজার এলাকার হারুনুর রশিদ আন্তস্কুল অ্যাথলেটিকসে পূর্ব পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। ১৯৮৮ সালে চতুর্থ জাতীয় গেমসে ১০০ মিটারে ঢাকা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন জুলহাস। সাপমারীর মেয়ে শাহনাজ জুনিয়র লং জাম্পে জিতেছিলেন সোনা। ২০০৪ সালের জাতীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় দেশের দ্রুততম মানব হয়েছিলেন নকলার বানেশ্বরদী গ্রামের হাফিজুর রহমান সোহাগ। সেবার ১০০ মিটারে সোনা জেতা হাফিজুর ২০০৬ সালে সাফ গেমসে অংশ নিয়েছিলেন ১০০ মিটার ও রিলেতে। তিনি এখন বিমানবাহিনীতে নন-কমিশন অফিসার হিসেবে কর্মরত। এ ছাড়া অ্যাথলেটিকসে সুনাম ছিল আশরাফ আলী, সৈয়দা আজমেরী সুলতানা, নাজিমুল হক নাজিম, তপন সারোয়ারদের। আব্দুর রহিম দুদু ছিলেন সেনাবাহিনীতে। সেখানে আলো ছড়িয়েই সুযোগ করে নিয়েছিলেন জাতীয় বাস্কেটবল দলে।

ভারতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সাফ গেমসে শেরপুরের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন লাকী খেলেছেন হ্যান্ডবলের জাতীয় দলে। বিকেএসপি থেকে সরোয়ার জাহান পপলিন অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় সাঁতারে হয়েছিলেন তৃতীয়। ব্যাডমিন্টনে আব্দুর রহমান লিলু, মরহুম সুমন; পোলভল্টে দবির হোসেন, সাইফুল হক, দাবায় স্বপন, আবু তাহের, চঞ্চল মালাকার, বুলু, রুনু, ভলিবলে সেনা সদস্য গোলাম মোস্তফা, আজিজ, বাদল, আলিম, সিরাজ, সাধন বসাক, সোলায়মান, সেলিম; টেনিসে হাফিজুর রহমান, আব্দুর রহমান; কাবাডিতে আশরাফ হোসেন রতন, মন্টুরা ছিলেন জেলার উজ্জ্বল মুখ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ