<p>ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধ করতে দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যাচ্ছে পশ্চািমা দেশগুলো। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ না হলেও নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়ানো হচ্ছে। গত শুক্রবার রাশিয়ার জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বৃহৎ রুশ জ্বালানি তেল কম্পানি গাজপ্রম নেফটও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ৩ শতাংশের ওপরে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম।</p> <p>মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে এই ঘোষণা দিল। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বলেছে, জ্বালানি খাত থেকে রাশিয়ার আয় কমানোর জি-৭ দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দেশটির ১৮০টির বেশি জাহাজের পাশাপাশি জ্বালানি তেল কম্পানি গাজপ্রম নেফট ও সারগাটনেফত গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।</p> <p>একই সময় যুক্তরাজ্য সরকার দুটি রুশ কম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে বলেছে, এগুলোর মুনাফা ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অর্থের জোগান দিচ্ছে এবং যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করছে। এ বিষয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘রুশ জ্বালানি তেল কম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নেওয়া এই পদক্ষেপ যুদ্ধে রাশিয়ার অর্থের জোগান খালি করবে। পুতিনের হাত থেকে আমাদের কেড়ে নেওয়া প্রতিটি রুবল ইউক্রেনীয়দের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবে।’</p> <p>এ ছাড়া হোয়াইট হাউসে গত শুক্রবার বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুতিন এ মুহূর্তে কঠিন অবস্থায় আছেন। আর আমি মনে করি, এটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ যে তিনি যেসব ভয়াবহ কাজ করে চলেছেন, তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর যেন নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা না থাকে।’ রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজপ্রম নেফট নিষেধাজ্ঞাকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে।</p> <p>বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকসের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত ডব্লিটিআই তেলের ৩.৫৯ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারল হয় ৭৬.৫৭ ডলার। এর পাশাপাশি লন্ডনের অপরিশোধিত ব্রেন্ট তেলের দাম ৩.৬৯ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারল হয় ৭৯.৭৬ ডলার। এক মাসের হিসাবে দেখা যায় উভয় তেলের দাম ৮ শতাংশের বেশি বেড়েছে।</p> <p>পেট্রলের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে বাইডেন বলেন, প্রতি গ্যালনে তিন থেকে চার সেন্ট পর্যন্ত ব্যয় বাড়তে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এ নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপর আরো গভীর প্রভাব ফেলবে।’</p> <p>আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসার আগেই এ নিয়ে গুজব ছড়ায়। তখন যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানান ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাইডেন প্রশাসন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ‘যতটা সম্ভব কঠিন উত্তরাধিকার’ রেখে যাচ্ছেন।</p> <p>মার্কিন অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সব মিলিয়ে রাশিয়ার ৪০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮৩টি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ, রুশ জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী ও তেলক্ষেত্র পরিষেবাদাতা, রাশিয়ার দুটি বৃহৎ জ্বালানি তেল কম্পানি এবং এদের অধীন দুই ডজনের বেশি প্রতিষ্ঠান।</p> <p> </p>