প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি

আল মাহমুদের কবিতা

  • আল মাহমুদ সেই কবি, যিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যেক কবিতায় নিয়ে এসেছেন। আদি সাম্যবাদী চেতনা ও নারীর মাহাত্ম্য দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে তিনি পরিপূর্ণ ও মহৎ কবি হয়ে উঠেছেন। প্রকৃতি, প্রেম, স্বদেশ ও লোক ঐতিহ্যের বিষয় সমাহারে তাঁর কবিতা রচনায় যে ধরনের মেধা, শ্রম ও প্রকরণের নতুনত্ব দিয়ে নিজেকে কবি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন
সৌভিক চৌধুরী
সৌভিক চৌধুরী
শেয়ার
আল মাহমুদের কবিতা
জন্ম : ১১ জুলাই ১৯৩৬। মৃত্যু : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ প্রতিকৃতি : তানভীর মালেক

কবিতায় আল মাহমুদ কিংবা আল মাহমুদের কবিতাদুটি বিষয়ই এই সময়ে পাঠকসমাজে ভাবনা জোগায়। তাঁর কবিতার অবস্থান সাহিত্যে অতীত বা বর্তমানদুই সময়েই সুদৃঢ় ও পাকাপোক্ত। পশ্চিমবঙ্গের কবি সুবোধ সরকার বলেছিলেন, আমার চোখে আল মাহমুদ একজন বড় কবি এবং বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠতম কবি। শামসুর রাহমানকে মাথায় রেখেই বলছি, আল মাহমুদের মতো বড় কবি বাংলাদেশে আর জন্মায়নি।

শামসুর রাহমান হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের বিবেক, জাতীয় কবি, জনপ্রিয়তম কবি, তাঁর উচ্চকোটি স্ট্যাটাসে কোনো দিন পৌঁছতে পারেননি আল মাহমুদ। তাঁর নামটি শামসুর রাহমানের পাশে থেকে গেছে আর তিনি দেশের একজন শ্রেষ্ঠতম কবি। সুবোধ সরকারের কথার সূত্র ধরেই বলতে হয়, আল মাহমুদ (১৯৩৬-২০১৯) কবিতার ক্ষেত্রকে লোকজ অনুভূতিতে ব্যাপ্ত করেছেন, সেই সঙ্গে নদী ও নারীকে তিনি কবিতায় এনেছেন। কবিতার যাত্রাপথে নিপুণ হাতে চিত্রকল্প আর উপমায় কবিতাকে নিয়ে গেছেন স্বমহিমায়।
কবিতার পরিপোষণ, আলংকারিক কৃতকৌশল, লোকজ ও লোকায়ত জীবনাচার সংস্থাপনায় আল মাহমুদ অন্যতম।

আল মাহমুদের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মোড়াইল মহল্লায়, ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই। ১৯৫২ সালে দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ঢাকায় ভাষা আন্দোলনের আঁচ তাঁর শহরেও লেগেছিল এবং সেই সময় তিনি এই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এরপর পুলিশের ভয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করেন।

১৯৫৪ সালে কৈশোরে প্রথম আসেন ঢাকা শহরে। তাঁর কবিতার পথ মসৃণ ছিল না। পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন কবিতার জগতে খুব সহজে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়নি। ১৯৬০-এর মাঝামাঝি তিনি স্বতন্ত্র মেজাজ আর উচ্চারণে তাঁর অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ১৯৫৪-৫৫ সালের দিকে তাঁর লেখালেখির শুরু।
কলকাতার সত্যযুগ পত্রিকায় প্রথম গল্প প্রকাশের মাধ্যমে লেখার সূত্রপাত। ১৯৫৪ সালের শেষ দিকে ঢাকায় এসে কবিতা লেখায় মনোনিবেশ করেন।

আল মাহমুদ নিজেই বলেছেন, আমার কবিতার প্রধান বিষয় হলো নারী ও প্রকৃতি। আমি একসময় ভাবতাম, একজন পুরুষের কাছে নারীর চেয়ে সুন্দর আর কী-ই বা আছে? না, কিছু নেই। দয়িতার দেহের উপমা দিতে কবিরা পৃথিবী নামক এই গ্রহকে চষে ফেলেছেন। এর প্রকৃতির কথা বলতে গেলে বলতে হয়, আমি নিসর্গরাজি অর্থাৎ প্রকৃতির মাঝে এমন একটা সংগুপ্ত প্রেমের মঙ্গলময় ষড়যন্ত্র দেখতে পাই, যা আমাকে জগৎ রহস্যের কার্যকারণের কথা ভাবায়। একঝাঁক পাখি যখন গাছে গাছে লাফিয়ে বেড়ায়, মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে পতঙ্গ ও পিঁপড়ের সারি আর মৌমাছিরা ফুল থেকে ফুলে মধু শুষে ফিরতে থাকে, আমি তখন শুধু এই আয়োজনকে সুন্দরই বলি না; বরং অন্তরালবর্তী এক গভীর প্রেমময় রমণ ও প্রজননক্রিয়ার নিঃশব্দ উত্তেজনা দেখে পুলকে শিহরিত হই।

আগেই বলেছি, আল মাহমুদের আবির্ভাব মধ্য পঞ্চাশে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে ত্রিশোত্তর আধুনিক কবিতায় আল মাহমুদই সবচেয়ে উজ্জ্বল আধুনিক কবি। সাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদ উল্লেখ করেছেন, তিরিশ দশকীয় প্রবণতার মধ্যেই ভাটিবাংলার জনজীবন, গ্রামীণ দৃশ্যপট, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের কর্মমুখর জীবনচাঞ্চল্য ও নর-নারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহ, বিশ্বমানবতা ও আধ্যাত্মিকতাকে কবিরা অবলম্বন করেছেন। বাংলাদেশের কবিদের মধ্যে আল মাহমুদ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল এবং আন্তর্জাতিক কাতারে দাঁড়াতে সক্ষম। কবি হিসেবে আল মাহমুদ তাঁর নিজের আসন পাকা করে নিয়েছেন মূলত শব্দচয়ন এবং উপমার ব্যঞ্জনায়। তাঁর কবিতা তাঁকে মহৎ এবং অন্যতম করে তুলেছে। বিরামপুরের যাত্রী কবিতায় আল মাহমুদ বলেছেন, আমার নাম কবি ছাড়া আর কিছু নয়। আমি বিরামপুরের যাত্রী, পার হয়ে এসেছি কত গ্রাম, এই রামনগর অবধি কত নদী, কত গৃহস্থালি। জেনেছি নারীকে আগে, এইবার মাটির স্বাদ চাই। এই মাটি ঘামে ভেজা রক্ত সিক্ত কর্দম মাত্র নয়। এই মাটি পুরুষের বুক। এই মাটিকে কে বলে মৃত্তিকা? কত দরবেশ ঘোরাতে ঘোরাতে তারার তসবীহ দানা পাড় হয়ে চলে চলে গেছে পাথরের লৌহ কপাট। তারা ছিলেন বিরামপুরের যাত্রী, এখন আমিও। তিনি কঠিন সময়ের একজন পরিশ্রমী কবি তা বোঝাই যায়। তাঁর অন্তরে মাটিকে কাছে টেনে নেওয়ার আকুল বাসনা।

১৯৬৩ সালে লোক লোকান্তর কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আল মাহমুদের কাব্য পরিক্রমার শুরু এবং এই কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পর থেকেই তিনি নন্দিত হয়ে ওঠেন। প্রবেশলগ্নে তিনি কিছুটা আত্মজৈবনিকতায় চর্চিত হয়ে নিজের ভেতর আমির অস্তিত্ব অনুভব করেন। তাঁর বিষয়ী দর্পণে আমি কবিতাটিতে নিজের ভেতরে শিশু আর পশুর বিরোধ নিয়ে ভাবনা ছিল, সেটিতে তিনি অনেকটা দোলায়িত হয়েছেন। পারিপার্শ্বিক অবস্থায় কবি নিজেকে পশুত্বের ভাবে আবিষ্কার করলেও পরিশেষে তিনি তা অনেকটা কাটিয়ে উঠে ক্রোধ জয় করে শিশু আর পশুর বিরোধ দেখতে পান। তিনি বলেন, কখনো অসৎ থাকা অকস্মাৎ উত্তোলিত হলে/দেখি সেই বিম্বিত পশুর/দর্পিত হিংস্র চোখ আমাকেই লক্ষ্য করে জ্বলে/চিবুক লেহন করে। সে অলীক মুহূর্তের ক্রোধ জয় করে দেখি আমি/কেবলই আমার মধ্যে যেন এক শিশু আর পশুর বিরোধ।

কাব্যচর্চা মূলত একটি নান্দনিক ও সৃজনশীল বিষয়। তাই সাহিত্যের অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে এটি শিল্পময় ও কঠিন। এ বিষয়ে কবি আল মাহমুদ বলেছেন, কাব্য সহজ শিল্প নয়। কারণ কাব্য হলো ভাষারই অমরতার সোপানে আরোহণের বর্ণনা মাত্র। সবাই পারে না। কেউ কেউ পারে। আমরা তাদেরই একবাক্যে বলে উঠি, এই তো কবি। তিনি বলছেন, কবিতা আমার জীবন, কারণ আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ কবি। আমি তো অন্য কিছু হতে আসিনি। আমি আমার কবিসত্তার ব্যাপারে অচেতন ছিলাম। কখনোই এই সত্তাকে বিক্রি হতে দিইনি। বহুবার বলেছি, আমি কবি ছাড়া আর কিছু নই। সব কথার শেষ কথা, আমি কবি এবং শুধুই কবি।

আমরা আল মাহমুদকে জানি সোনালী কাবিন-এর কবি হিসেবে। ১৯৭৩ সালে এই কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। চট্টগ্রামে বসে লেখা এই কবিতাগুলো লেখার সময় কবি প্রচণ্ড এক ঘোরের মধ্যে ছিলেন। তিনি নিজেই বলেছেন, আমার সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিতা হলো সোনালী কাবিন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের সনেট ১৪ মাত্রার। এর অনেক পরে আমি লিখলাম সোনালী কাবিন। লেখার পর মনে হয়েছিল, সনেটগুলো বাংলা সাহিত্যে আমাকে অমরতা এনে দেবে। আজ দেখি, আমার ধারণা বেঠিক নয়, আশ্চর্যজনকভাবে সফল হয়েছে সনেটগুলো। সোনালী কাবিন-এ তখন আমি খুব সাহসের সঙ্গে কাবিন শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমার আগে বাংলা কাব্যে এ শব্দ ব্যবহার হয়নি। এই সনেটগুচ্ছ ইন্দ্রিয় ঘনিষ্ঠতায় আবদ্ধ, নারী, নদী, দেশ, প্রকৃতি, ঐতিহ্য ও প্রেমের ভেতর দিয়ে চিরন্তন নারীর শারীরিক স্পর্শে হেঁটে যেতে যেতে শরীরহীনতায় পৌঁছে যাবার এক প্রয়াস। সোনালী কাবিন কাব্যগ্রন্থে আল মাহমুদের প্রেমচেতনা, ঐতিহ্য ও  ইতিহাসচেতনা ঐক্যের সমতলে মিলিত হয়েছে।

সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিণী

যদি নাও, দিতে পারি কাবিন বিহীন হাত দুটি

 

ভালোবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন

ছলনা জানিনা বলে আর কোন ব্যবসা শিখিনি

দেহ দিলে দেহ পাবে, দেহের অধিক মূলধন

আমার তো নেই সখি, যেই পণ্যে অলংকার কিনি।

নারীকে নিজ আকাঙ্ক্ষায় রেখে তার চাওয়া আর প্রকাশের মাত্রায় ভিন্নতা এসেছে। সোনাদানা, ধন-সম্পদ, অর্থবিত্ত এখানে নিরর্থক। যৌনতা ও যৌনকাতরতা একটি সহজাত প্রবৃত্তি। এর জন্য কোনো বৈষয়িক চেতনাকে প্রাধান্য দেওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন কবি। লোকায়ত দার্শনিক চেতনা এই কাব্যে প্রতিনিয়ত ক্রিয়াশীল, কবিতাগুলোর মধ্যে ফ্রয়েডীয় ও অস্তিত্ববাদী চেতনা প্রকাশিত। শব্দ ব্যবহারে নিপুণ, শিল্প ও কাব্যসত্তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রতিটি কবিতায়। এ কথাও সত্য যে সোনালী কাবিন-এর কবিতার অনুষঙ্গ গ্রামীণ পরিবেশ, প্রাকৃতিক সুষমা। কবির কাছে গ্রামের লোকজ প্রকৃতির মধ্যে ঘর্মাক্ত রমণীসম্ভার এবং সুবর্ণ শস্য একই চেতনার দুই সমান্তরাল রেখা।

কবিতার প্রধান অলংকার উপমা। কবিতায় এর ব্যবহার কবিতাকে করে তোলে ঐশ্বর্যমণ্ডিত। কোনো কোনো নন্দনতাত্ত্বিকের মতে উপমাই কবিত্ব। একই বাক্যে ভিন্ন জাতীয় অথচ সমান গুণবিশিষ্ট অথবা সদৃশ দুটি বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্যের উল্লেখ দ্বারা যে সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয় তাকেই উপমা বলে। আল মাহমুদ উপমা ব্যবহারে যথেষ্ট মেধার পরিচয় দিয়েছেন। কবিতা এমন কবিতায় তিনি কবিতাকে অনন্য পরিচয়ে পরিচিত করেছেন। কবিতা তো কৈশোরের স্মৃতি/সে তো ভেসে ওঠা ম্লান আমার মায়ের মুখ/নিম ডালে বসে থাকা হলুদ পাখিটি, পাতার আগুন ঘিরে রাতজাগা ছোট ভাই বোন/আব্বার ফিরে আসা, সাইকেলের ঘণ্টাধ্বনিরাবেয়া রাবেয়া/আমার মায়ের নামে খুলে যাওয়া দক্ষিণের ভেজানো কপাট। এতে তিনি চৈতন্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে কবিতাকে পাঠকের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। কবিতা যে স্বয়ম্ভু, সত্তার গভীর টানে ভেতরে আসীন। অন্তরে কবিতা যেন ছেচল্লিশে বেড়ে ওঠা অসুখী কিশোর। সেখানে তিনি আরো বলছেন, পিঠার পেটের ভাগে ফুলে ওঠা তিলের সৌরভ। কিংবা কবিতা চরের পাখি, কুড়ানো হাঁসের ডিম, গন্ধভরা ঘাস, ম্লান মুখ বউটির দড়ি ছেঁড়া হারানো বাছুর। কবিতাকে সহজ করে তোলার প্রয়াসে স্বাধীনতা কিংবা মানুষের আন্দোলনের প্রতিবাদী অবস্থার প্রতিফলন কবি দেখিয়েছেন। কিংবা জিয়ল মাছের ভরা বিশাল ভাণ্ডের মতো নড়ে ওঠে বুক। অথবা গাঙের ঢেউয়ের মতো বলো কন্যা কবুল কবুল। জীবনানন্দের মতো আল মাহমুদের উপমা ব্যবহারে চিত্রধর্মিতা পাঠকের হৃদয়ের গভীর গহ্বরে পৌঁছে যায়। আল মাহমুদের হাতে নির্মিত উপমা-উেপ্রক্ষার বহুমাত্রিকতা ও চিত্রময়তা তাঁর কবিতায় আধুনিকতার এই শিল্প উপাদান প্রতীকী চিত্রকল্পের অভাব অনেকটা পূরণ করে দিয়েছে। তাঁর কবিতায় চিত্রকল্পের চেয়ে চিত্রের পরিমাণই বেশি।

আল মাহমুদ কবিতায় ছন্দ প্রকরণের ব্যাপারে অত্যন্ত যত্নশীল ছিলেন। কিছু নবীন কবির প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, যে কবি ছন্দ জানে না, সে কিছুই জানে না। যদিও শেষ বয়সে প্রচুর গদ্য কবিতা লিখেছেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ লোক লোকান্তর-এর কবিতার কথা বলা যায়। সেখানে তিমির তীর্থ কবিতা অক্ষরবৃত্তের আদি রূপ নিয়ে বিন্যস্ত। মুক্তক মাত্রাবৃত্ত রচিত একটি কবিতা রয়েছে স্বীকারোক্তি, যেখানে কবি বলছেন, দার্শনিকের ছাত্রের মতো আমি তো তখন/নালন্দার সে প্রকোষ্ঠে বসে মৃত দর্শন/হাতরে মরেছি, মেধাবী মনের ঢেলে ঢেলে রস/উচ্চাকাঙ্ক্ষা হৃদয়ে পুষেছি বিত্ত ও যশ। নিজেকে মূল্যায়নের কী অভিনব স্বীকারোক্তি!

আল মাহমুদের প্রতিটি কাব্যগ্রন্থই কাব্যবিচারের নিরিখে সফলতার দাবিদার। তাঁর সনেট, ছন্দ, উপমা, চিত্রকল্পকবিতার প্রতিটি অনুষঙ্গের প্রয়োগে বিশিষ্টতার দাবি রাখে। তিনি সেই কবি, যিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যেক কবিতায় নিয়ে এসেছেন। আদি সাম্যবাদী চেতনা ও নারীর মাহাত্ম্য দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে তিনি পরিপূর্ণ ও মহৎ কবি হয়ে উঠেছেন। প্রকৃতি, প্রেম, স্বদেশ ও লোক ঐতিহ্যের বিষয় সমাহারে তাঁর কবিতা রচনায় যে ধরনের মেধা, শ্রম ও প্রকরণের নতুনত্ব দিয়ে নিজেকে কবি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, তাতে তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাঠকের প্রিয় বই

আফ্রিকার সাহিত্যে ভাষার রাজনীতি

    সাগর মল্লিক, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার
আফ্রিকার সাহিত্যে ভাষার রাজনীতি
সাগর মল্লিক

সাম্রাজ্যবাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো সাংস্কৃতিক বোমা। ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থায় সাহিত্য এবং সংস্কৃতিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যার সাহায্যে একটা জাতিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা সম্ভব। কেনিয়ায় জন্ম নেওয়া নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গা তার ‘Decolonising the Mind’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন ভাষা এবং সাহিত্য কিভাবে মানুষের মনে প্রভাব পড়ে। ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা কিভাবে সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে ধ্বংসের মাধ্যমে মাতৃভাষাও বিলুপ্ত করে দেয়।

আর যে নাগরিকের নিজস্ব মাতৃভাষা থাকে না তারা পরিণত হয় দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে। ইতিহাস এবং তত্ত্বীয় আলাপের কারণে মনোজগতের বিউপনিবেশায়ন গ্রন্থটি ভাষা ও ভাষার রাজনীতি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিতাব।

বইয়ের শুরুতে আলোকপাত করা হয়েছে আফ্রিকার সাহিত্য ও সংস্কৃতিসমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে ঔপনিবেশিক শাসকরা যে প্রক্রিয়ায় হঠিয়ে দিয়েছিল। উপনিবেশ পরবর্তী কেনিয়ায় কী ঘটেছিল সেসব বিষয়েও বিস্তারিত আছে।

দেশটিতে ভাষা, সাহিত্য, রাজনীতির বিউপনিবেশায়ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে তার প্রতিক্রিয়ায় শাসকরা যেসব নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল, সেগুলোর বর্ণনা প্রবন্ধগুলোতে মিলবে। প্রবন্ধগুলো সাহিত্যতত্ত্বের গবেষকদের কাছে যেমন আকর্ষণীয়, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছেও তেমনই প্রাসঙ্গিক। অতীতে উপনিবেশ হিসেবে এবং আধুনিক যুগে নব্য-উপনিবেশ হিসেবেও আফ্রিকার দেশগুলো ইউরোপের ভাষার আলোকে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে এবং নিজেদের সংজ্ঞায়িত করছে। অর্থাৎ তারা পরিচিত হয়েছে আফ্রিকার ইংরেজিভাষী, ফরাসিভাষী অথবা পর্তুগিজভাষী রাষ্ট্র হিসেবে।
এই ঔপনিবেশিক মনোভাব আস্তে আস্তে গিলে খাচ্ছে আফ্রিকার সাহিত্য-সংস্কৃতির এমনকি নাগরিক জীবনও। তারা বিলীন হয়ে যাচ্ছে জাতি হিসেবে। এমনকি লেখকরাও লেখালেখি করছেন ভিন্ন ভাষায়।

সাংস্কৃতিক বোমা মানুষের নাম, জাতি, ভাষা, ঐতিহ্য, একতা, সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এবং সর্বশেষে নষ্ট করে নিজের প্রতি নিজের বিশ্বাস।

তখন নিজের দেশ, জাতি সব কিছু নিয়ে তৈরি হয় হতাশা। মানুষ অবচেতন মনে গ্রহণ করতে থাকে সাম্রাজ্যবাদী সংস্কৃতি, তৈরি হয় দাস মনোবৃত্তি। তখন নিজের সংস্কৃতি ছেড়ে গ্রহণ করতে ইচ্ছে হয় অন্য সংস্কৃতি, গ্রহণ করে ঋণ, পরিণত হয় দাসে। আগে ছিল সরাসরি শাসন, এখন পরোক্ষ কিন্তু আরো শক্ত শাসন। এ জন্য দরকার ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ। আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদের কালো থাবার ইতিহাস পাঠের পর সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি হিসেবে বলতেই হয় ভালোবাসি বাংলার মা, মাটি, মানুষ। ভালোবাসি বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি। একে রক্ষা করতেই হবে।

গ্রন্থনা : পিন্টু রঞ্জন অর্ক

মন্তব্য
প্রদর্শনী

চিত্রশালায় নারী শিল্পীদের কাজ

মোহাম্মদ আসাদ
মোহাম্মদ আসাদ
শেয়ার
চিত্রশালায় নারী শিল্পীদের কাজ

নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় দীপ্ত নয়ন শিরোনামে শুরু হয়েছে এ দেশের নারী শিল্পীদের কাজ নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী। দুটি গ্যালারিতে ৮৩ জন নারী শিল্পীর ১৩০টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। বর্তমানে নারী-পুরুষ শিল্পী হিসেবে কিছুটা সমতা এলেও বিগত শতাব্দীতে নারীর শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ ছিল কঠিন এক বিষয়। এর মধ্যেই কম হলেও নিজের দক্ষতায় কয়েকজন নারী শিল্পী নিজের অবস্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন।

একবিংশ শতাব্দীতে এসে শিল্পীদের মধ্যে নারী-পুরুষ দেয়ালটা ভেঙে দিয়েছেন। 

১৯৪৮ সালে ঢাকায় কলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন। শুরুতে ছেলেরাই এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা লাভের সুযোগ পায়। চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পর ১৯৫৪ সালে সেখানে মেয়েরা ভর্তির সুযোগ পায়।

প্রথম ব্যাচে পাঁচজন নারী শিক্ষার্থীর সবাই শিল্পী হয়েছিলেন। তারপর পরাধীন দেশে নারীরা সেভাবে ভর্তি হননি চারুকলায়। হয়তো সুযোগও ছিল না। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সাল থেকে আবার দেখা যায় নারী শিল্পীদের চারুকলায় ভর্তি হতে।
বিগত শতাব্দীর শেষ তিন দশকে বেশ কয়েকজন নারী গুরুত্বপূর্ণ শিল্পী হিসেবে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন। সেসব শিল্পীর কাজ এবং এই শতাব্দীর প্রতিশ্রুতিশীল নারী শিল্পীদের কাজ নিয়ে এই প্রদর্শনী। সে শিল্পীদের মধ্যে আছে ফরিদা জামান, নূরুন নাহার পাপা, দীপা হক, নাসরীন বেগম, নাইমা হক, রোকেয়া সুলতানা, ফারেহা জেবা, সুফিয়া বেগম প্রমুখ শিল্পীর চিত্রকর্ম। ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, আইভি জামান, শামীম সিকদারের মতো ভাস্করে ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এর মধ্যে প্রথম ব্যাচের শিল্পী তাহেরা খানমের একটি কাজ করেছে এই প্রদর্শনীতে।
তাহেরা খানম ছিলেন বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর সহধর্মিণী। এই প্রদর্শনীতে রয়েছে শিল্পী নূরুন নাহার পাপার দুটি কাজ। এই শিল্পী তাঁর কোলাজ কাজ থেকে অনেক দূরে সরে এসেছেন। করছেন গহনা নিয়ে কাজ। এমনতি তাঁর নামটা পর্যন্ত পরিবর্তন করে লিখেন পাপা নূরুন নাহার। তিনটি কাজ রয়েছে শিল্পী দীপা হকের। মারণব্যাধি ক্যান্সারে মৃত্যুর পর তাঁর কাজ আর চোখে পড়েনি। এই দুই শিল্পীর কাজ অনেক দিন পর দর্শকের সামনে এলো। নারী শিল্পীরা অনেকেই শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন। এ বছর চারুকলায় অবদানের জন্য একুশে পদক পেয়েছেন শিল্পী রোকেয়া সুলতানা। তাঁর কাজ রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। এই শতাব্দীতে দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে পরিচিত এমন শিল্পীদের কাজ রয়েছে এই প্রদর্শনীতে। সবগুলো শিল্পকর্ম বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগ্রহ।

প্রদর্শনী কিউরেটিংয়ে আছে নতুনত্ব। কয়েকটি বিষয়ে ভাগ করে ছবিগুলো সাজানো হয়েছে। মা ও মুক্তি, আত্মসত্তার রাজনীতি, পুরাতত্ত্ব, দেশমাত্রিকতা, অমৃত বাগান বিভাগে রয়েছে ছবিগুলো। প্রতিটি বিভাগে প্রবেশের আগে লিখে দিয়েছে কয়েক লাইন। যার কারণে ছবির সঙ্গে সহজে যোগাযোগ সম্ভব হয়। প্রদর্শনীর শেষ দিন ২২ মার্চ শনিবার।              

মন্তব্য
স্মরণ

মহিউদ্দীন আহমদকে যেমন দেখেছি

    ফজলে রাব্বি
শেয়ার
মহিউদ্দীন আহমদকে যেমন দেখেছি
গত ১৫ মার্চ ছিল তাঁর ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

হাজি মহিউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রকাশনা সংস্থা আহমদ পাবলিশিং হাউসের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে ষাটের দশকে যখন আমি বাংলা একাডেমিতে প্রকাশনা ও বিক্রয় বিভাগে কর্মরত।

১৯৬৪-৬৫ সালের দিকে একাডেমির বেশ কিছু বইয়ের প্রথম সংস্করণ নিঃশেষ হয়ে গিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবে সে বইগুলোর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের তাগিদ আসছিল।

তাগিদ আসছিল লেখক ও পাঠক উভয়ের তরফ থেকে। কিন্তু একাডেমিতে দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দ ছিল না। সরকারের কাছে দ্বিতীয় সংস্করণের জন্য আর্থিক অনুদান চাইলেও পাওয়া যেত না। এই পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিল যে নিঃশেষিত প্রথম সংস্করণের বইগুলোর মধ্য থেকে কোনো বই যদি কোনো প্রকাশক দ্বিতীয় সংস্করণ বা পরবর্তী প্রকাশ করতে চান, তাহলে সে বইগুলো সেই প্রকাশককে দিয়ে দেওয়া হবে।

হাজি সাহেব তখন এসেছিলেন দ্বিতীয় সংস্করণের বই প্রকাশনা নিয়ে আলোচনা করতে। সে সূত্রে হাজি সাহেবের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়। বাংলা একাডেমির দ্বিতীয় সংস্করণের বইগুলো কিভাবে প্রকাশ করা যায়, সে প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে আলোচনা হয়। এ সময় মরহুম কবি গোলাম মোস্তফার বিশ্বনবী বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু একাডেমির বাজেটে তার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ ছিল না। অপরদিকে হাজি সাহেব বিশ্বনবী প্রকাশ করতে দারুণ আগ্রহী। আমরা শর্ত দিলাম হাজি সাহেব যদি বাংলা একাডেমির আরো কিছু বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করতে আগ্রহী থাকেন, তাহলেই বিশ্বনবী একাডেমির পক্ষ থেকে তাঁকে প্রকাশ করতে দেওয়া হবে। হাজি সাহেব সম্মত হলেন। তিনি শুধু বিশ্বনবীর প্রকাশক হলেন তা-ই নয়, একই সঙ্গে তিনি একাডেমির বেশ কয়েকটি বইয়ের দ্বিতীয় ও পরবর্তী সংস্করণের প্রকাশক হলেন।
যত দূর মনে পড়ে, এসব বইয়ের মধ্যে একটি ছিল মুনীর চৌধুরীর নাটক রক্তাক্ত প্রান্তর, সিরাজউদ্দীন কাসিমপুরীর লোকসাহিত্যে ছড়া ও আরো বেশ কিছু বই।

তিনি যখন একাডেমিতে আসতেন সাধারণত প্রথমেই আসতেন প্রকাশনা বিভাগে। তারপর পরিচালকের ঘরে যেতেন। তিনি প্রায়ই একাডেমিতে আসতেন কখনো কাজে অথবা নিছক গল্প করতে বা আড্ডা দিতে। তখন একাডেমিতে সব সাহিত্যিক ও সাহিত্যামোদীর আগমন ঘটত, আড্ডা হতো। এসব আড্ডায় আসতেন আবদুল গনি হাজারী, সানাউল হক, সিকান্দার আবু জাফর, ফর্রুখ আহমদ, কবি আবদুল কাদির, সুফি জুলফিকার হায়দার, প্রিন্সিপাল ইবরাহিম খাঁ, গোলাম রহমান, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মুনীর চৌধুরী, এককথায় এ দেশের সব কবি-সাহিত্যিক। তাঁদের অনেকেই আজ আর ইহজগতে নেই। এদের মধ্যে একজন ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক আবু যোহা নূর মোহাম্মদ। আবু যোহা ছিলেন হাজি সাহেবের বাঁধা লেখক।

বাঁধা লেখক বলছি এ কারণে যে তিনি আহমদ পাবলিশিং হাউসের বহু বইয়ের লেখক ছিলেন। একটি বিষয়ে হাজি সাহেবের সুনাম ছিল। তিনি কোনো লেখককে তাঁর প্রাপ্য রয়্যালটি বা পারিশ্রমিক দেননি এ কথা কেউ বলতে পারবে না।

ঢাকায় যখন তিনি প্রথম প্রকাশনা আরম্ভ করেন তখনই তিনি শিশুসাহিত্য প্রকাশের দিকে মনোযোগ দেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন শৈশবেই যদি শিশুরা মহৎ ব্যক্তিত্বের সংস্পর্শে আসতে পারে অথবা মহৎ ব্যক্তিদের জীবনী পাঠ করে, তবে তারাও মহৎ ব্যক্তিদের জীবন অনুসরণ করে বড় হয়ে উঠবে। তাহলেই তারা সঠিকভাবে মানুষ হয়ে উঠতে পারবে। সে কারণে তিনি প্রকাশ করতে আরম্ভ করলেন মহৎ জীবনী গ্রন্থমালা। মাত্র আট আনা অর্থাৎ আজ যাকে আমরা পঞ্চাশ পয়সা বলি সে মূল্যের এক একটি বই। এই সিরিজের বেশির ভাগ বই লিখতেন আবু যোহা নূর মোহাম্মদ। বইগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল।

প্রকাশনা নিয়ে হাজি সাহেব যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, যে সংগ্রাম করেছেন এবং যে ভিত্তির ওপর তাঁর সংস্থাকে দাঁড় করিয়েছেন সেগুলোকে যদি আমরা বিশ্লেষণ করি, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করি, তাহলে বাংলাদেশের প্রকাশনাশিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনার প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করতে পারব। এবং সেটাই হবে বাংলাদেশের প্রকাশনার ইতিহাস।

মন্তব্য

শব্দকথা

    বিশ্বজিৎ ঘোষ
শেয়ার
শব্দকথা

মুহূর্ত

সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত মুহূর্ত শব্দের বর্তমান অর্থ দাঁড়িয়েছে অতি অল্প সময়। কিন্তু আদিতে এ অর্থ ছিল না। মুহূর্ত মূলত সময়ের একক। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার ৩০ ভাগের এক ভাগকে বলা হয় মুহূর্ত।

সে হিসাবে মুহূর্ত ৪৮ মিনিট সময়। এখন মুহূর্ত বলতে আর ৪৮ মিনিট সময়ের কথা কেউ ভাবে না। এখন মুহূর্ত বলতে অতি অল্প সময়ের কথাই সবাই বুঝে থাকে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ