১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী জুবায়েরপন্থীদের বিক্ষোভের ডাক

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
শেয়ার
১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী জুবায়েরপন্থীদের বিক্ষোভের ডাক
ছবি : ফোকাস বাংলা

তাবলিগের সাদপন্থীদের বিচারের দাবিতে আগামী ১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং ২৫ জানুয়ারি দেশের প্রতিনিধিত্বশীল আলেমদের নিয়ে ওলামা সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে শুরায়ে নেজামরা (জুবায়েরপন্থী)।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইল মারকাজ মসজিদে ‘ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ এবং দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শুরায়ে নেজামের পক্ষে মাওলানা নাজমুল হাসান এই ঘোষণা দেন। 

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে এর আগেও সাদপন্থীরা হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেন জুবায়েরপন্থী হিসেবে পরিচিত মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী। তিনি বলেন, দেশের আলেম সমাজ ও দায়িত্বশীলরা সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গড়িমসি দেখে যারপরনাই হতাশ হয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বকারীদের মধ্যে প্রথম সারির অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একবার এমনই অতর্কিত হামলা চালিয়ে সাদপন্থীরা ইজতেমার মাঠে হত্যাকাণ্ডসহ প্রায় ৫ হাজার সাথীকে আহত করেছিল। কিন্তু সেই সরকারের প্রশ্রয়ে এত বড় অপরাধ করেও তারা নির্বিঘ্নে ছাড় পেয়ে যায়। আমরা মনে করি, যদি ২০১৮ সালে তাদের সেই হত্যা ও হামলার বিচার হতো, তাহলে ২০২৪ এর ডিসেম্বরে এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড ঘটতো না।
এবারও যদি তারা ছাড় পেয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে আরো বড় দুর্ঘটনার জন্ম দিতে পারে। সাদপন্থীদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ‘অপশক্তির যোগসাজশ’ আছে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নাজমুল হাসান কাসেমী।

তিনি আরো বলেন, ‘সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে শুধু তাবলিগের কাজই নয়, বাংলাদেশ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের কাছে ১৭ ডিসেম্বরে হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

আরো পড়ুন
তীব্র শীতের মধ্যেই বৃষ্টির আভাস

তীব্র শীতের মধ্যেই বৃষ্টির আভাস

 

তাবলিগ জামাতের একটি পক্ষ জোবায়েরপন্থীদের সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ও খেলাফত মজলিসের নেতাদের উপস্থিতির বিষয়ে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘এখানে তাঁরা হেফাজতের নেতা হিসেবে নয়, আলেম-ওলামা হিসেবে এসেছেন। তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম যদি ইসলাম ধর্মের কাজ হয়ে থাকে, তবে কোরআন ও সুন্নাহর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আলেমরাই দেবেন। তাবলিগের দুই পক্ষের সমস্যা সমাধানে আলেমরা মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন। সরকারও চেষ্টা করছে।

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। হামলা ও হত্যার শাস্তি হওয়া উচিত। তাবলিগের কাজ নিয়ে ভারতের একজন ব্যক্তির বিতর্কিত মন্তব্যে সে দেশে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের এ সমস্যা যেন বাংলাদেশে টেনে আনা না হয়। এখন বাংলাদেশে সবাই মিলেমিশে কাজ করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে যারা হত্যায় জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। হত্যাকান্ডের বিচার বিচারের জায়গায় আর আলোচনা আলোচনার জায়গায়।

আরো পড়ুন
‘সৈয়দ আশরাফের ৩ জানাজা হবে শুনে বিরক্ত হন শেখ হাসিনা’

‘সৈয়দ আশরাফের ৩ জানাজা হবে শুনে বিরক্ত হন শেখ হাসিনা’

 

টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে প্রথম পর্বের ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, প্রথম পর্বের ইজতেমা অনুষ্ঠানের কাজ চলমান। এটি যথাসময়ে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী। সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের আমির আলস্নামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমদ কোরাইশী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমানসহ শুরায়ে নেজামের অন্যান্য আলেমগন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাতে টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে জোবায়েরপন্থীদের সঙ্গে সাদপন্থীদের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাদ কান্ধলভীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো কয়েক শ জনকে আসামি করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় হত্যা মামলা করেন জোবায়েরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এস এম আলম নামের এক ব্যক্তি। এ মামলায় ১৯ ডিসেম্বর রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানার মুফতি মুয়াজ বিন নূরকে রাজধানীর খিলক্ষেতের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আ. লীগকে নিষিদ্ধ করেই বাড়ি ফিরব : শরীফ উসমান হাদী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আ. লীগকে নিষিদ্ধ করেই বাড়ি ফিরব : শরীফ উসমান হাদী

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, জুলাই ও শাপলা চত্বর এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। সংগঠনটির মুখপাত্র শরীফ উসমান বিন হাদী শনিবার (১৫ মার্চ) এক ঘোষণায় জানান, আগামী ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার বিকেল ৩টায় শাহবাগ মোড়ে ‘শহীদি সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে।

আরো পড়ুন
ইনকিলাব মঞ্চের পদযাত্রা প্রত্যাহার, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

ইনকিলাব মঞ্চের পদযাত্রা প্রত্যাহার, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

 

সংগঠনটির দাবি, এই সমাবেশে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের বাবা-মায়েরা, শাপলা চত্বরে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এবং পিলখানার শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের সন্তানরা উপস্থিত থাকবেন।

শরীফ উসমান বিন হাদী বলেন, ‘শহীদি সমাবেশের মাধ্যমে আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি।

এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

আরো পড়ুন
করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব দিল সিপিডি

করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব দিল সিপিডি

 

তিনি আরো বলেন, ‘আগামী ২৫ এপ্রিলের সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত আমরা বাড়ি ফিরব না। ইনশাআল্লাহ।’

ইনকিলাব মঞ্চের দাবিগুলো হলো-
১. জুলাই, পিলখানা, শাপলা চত্বর গণহত্যার বিচার করতে হবে।


২. গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

নির্বাচন বিলম্বিত করার সুযোগ নেই : আসাদুজ্জামান রিপন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
নির্বাচন বিলম্বিত করার সুযোগ নেই : আসাদুজ্জামান রিপন
বর্ধিতসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ছবি : কালের কণ্ঠ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনের নামে দেশে কোনোভাবেই নির্বাচনকে বিলম্বিত করা চলবে না। আর এটা আমরা হতেও দেবো না। কেউ কেউ বলছেন দেশে একটি গণপরিষদ হবে, গণপরিষদ করার দায়িত্ব কে দিয়েছে তাদের?

গতকাল শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুর শহরের অম্বিকা হলে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় বর্ধিতসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ৩টায় বর্ধিতসভাটি শেষ হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম।

আরো পড়ুন
ড. ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলে ঢাকা ছেড়েছেন গুতেরেস

ড. ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলে ঢাকা ছেড়েছেন গুতেরেস

 

আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘সংস্কারের নামে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার সুযোগ নেই। দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা বলব সংস্কার বা গণপরিষদের নামে কোনো কালক্ষেপন না করে যত দ্রুত সম্ভব এ দেশে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।

হাসিনা গত ১৬ বছর ভোট করেনি বলেই বিদায় নিতে হয়েছে, তাকে পালাতে হয়েছে। দেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা আর যাতে ফিরিয়ে না আসে সে জন্য দরকার একটি সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।’

দলীয় নেতাকর্মীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দখল বাণিজ্য তখনই আসে যখন গণতন্ত্র থাকে না দেশে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।

আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হবে মানুষের ভালোবাসা না পেলে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ করা থেকে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।’

আরো পড়ুন
আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল জামায়াত, জানালেন আমির

আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল জামায়াত, জানালেন আমির

 

বর্ধিতসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাদা মিয়া, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাসুক, সেলিমুজ্জামান সেলিম, বিএনপি নেত্রী হেলেন জেরিন খান, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব কিবরিয়া স্বপন প্রমুখ। 

সভায় ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি, বিএনপি নেতা সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল, মো. আজম খান ও রশিদুল ইসলাম লিটনসহ ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল জামায়াত, জানালেন আমির

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল জামায়াত, জানালেন আমির
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।

মাগুরায় নির্যাতনের শিকার হয়ে সিএমএইচে মারা যাওয়া শিশু আছিয়ার পরিবারের দায়িত্ব নিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ রবিবার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, মাগুরার শিশু আছিয়ার পরিবার নিতান্তই একটি অসহায় পরিবার। তার পিতা একজন মানসিক রোগী।

এ পরিবারে অন্য কোনো পুরুষ সদস্য নেই। মানবিক কারণে এই পরিবারের দায়িত্ব মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইনশাআল্লাহ নিচ্ছে।

জামায়াত আমির আরো লিখেছেন, ইতিমধ্যে মজলুম এই পরিবারের সদস্যবৃন্দকে তা অবহিত করা হয়েছে। সবার কাছে দোয়ার আবেদন, আল্লাহ তায়ালা যেন সঠিকভাবে এ দায়িত্ব পালনে আমাদের তাওফিক দান করেন।

আমিন।

গত বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) মৃত্যুর পর মাগুরার শ্রীপুরের সোনাইকুণ্ডীতে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
স্মরণ

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সংগৃহীত ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। ঢাকায় ও নোয়াখালীর নিজ গ্রামে কয়েক দফা জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে মওদুদ আহমদকে দাফন করা হয়।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। সাবেক এমপি ও অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ২৪ মে ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমদ চতুর্থ।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান পাস করে ব্রিটেনের লন্ডনস্থ লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার- অ্যাট-ল ডিগ্রি অর্জন করেন। লন্ডনে পড়াশশোনা করে তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন।

তিনি ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। দেশে ফিরে হাইকোর্টে ওকালতির একপর্যায়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন আইনি লড়াইয়ে।

এর আগে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে পুলিশি নির্যাতনের পর মওদুদ আহমদের ঠাঁই হয়েছিল কারাগারে। ঢাকা কলেজ ছাত্রসংসদের আপ্যায়ন সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অ্যাডভোকেট ফরমান উল্লাহ খান প্রতিষ্ঠিত খেলাফত রব্বানীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশক্তির নেতা ছিলেন তিনি।

শেখ মুজিবুরের পক্ষে আইনি লড়াই করতে খ্যাতনামা ব্রিটিশ আইনজীবী স্যার টমাস উইলিয়ামস কিউসিকে বাংলাদেশে আনতে রেখেছিলেন ভূমিকা।

১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান আহূত গোলটেবিল বৈঠকে শেখ মুজিবুরের সঙ্গে ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠকের ভূমিকা ছাড়াও ব্যারিস্টার মওদুদকে পোস্টমাস্টার জেনারেল নিয়োগ করে মুজিবনগর সরকার। স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুর দিকেও তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে।

পেশাজীবী হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে নানা ভূমিকায় নিজেকে রেখেছিলেন রাজনীতির কক্ষপথেই। বিএনপি আর জাতীয় পার্টি গঠনে পালন করেন মুখ্য ভূমিকা। কারাভোগ করেছেন পাকিস্তান আমল, মুজিব, এরশাদ, ওয়ান-ইলেভেন ও মহাজোট সরকারের আমলে।

১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম এমপি নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয় এবং এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৯৮৫-এর নির্বাচনে মওদুদ আহমদ আবারও এমপি নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬-এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।

১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ সালে মওদুদ আহমদ আবার এমপি নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পাঁচবার নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন মওদুদ আহমদ। মওদুদ আহমদ পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের জামাতা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ