নওগাঁর বদলগাছীতে আরবি শিখতে গিয়ে শিশুকন্যাকে ইমামের ধর্ষণের ঘটনায় ইমাম আবু হাসানকে পুলিশের সোপর্দ করায় ধর্ষিতার পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষকের পরিবারসহ তার আত্মীয়-স্বজনরা ধর্ষিতা এ হামলা চালায়। এ ঘটনায় এক গৃহবধূর হাত ভেঙে যায়। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ধর্ষক ইমামকে পুলিশে দেওয়ায় ভুক্তভোগীর পরিবারের ওপর হামলা
- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন
বদলগাছী, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

গ্রামবাসীর ভাষ্যে জানা যায়, মিঠাপুর ইউপির উত্তর পাকুরিয়া গ্রামের ইমাম আবু হাসানের কাছে আরবি শিখতে যেতো প্রতিবেশী এক পরিবারের শিশুকন্যা। সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। গতকাল শনিবার সকালে শিশুটি আরবি পড়তে গেলে ইমাম তাকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনার পর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ধর্ষক পরিবার তাদের আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ধর্ষিতা পরিবার ও প্রতিবেশীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় মিন্টুর লাঠির আঘাতে প্রতিবেশী মকলেছার রহমানের স্ত্রী নাজমা বেগমের হাত ভেঙে যায়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ধর্ষিতা পরিবারের লোকজন আরও জানান, আসামীপক্ষের লোকজন শক্তিশালী।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাগিনা বকুল জানান, মিথ্যা অভিযোগে তারা ইমামকে ধরে মারপিট করেছেন এবং পুলিশে দিয়েছেন। এ বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো না। রবিবার সকালে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে সংঘাত এড়াতে বদলগাছী থানার এসআই কামরুজ্জামানসহ পুলিশের একটি টিম অবস্থান করছে।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, রাত থেকেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। মারামারি বা হাত ভাঙার বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করা হয়নি। তারা অভিযোগ করলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

কেন্দুয়ায় এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম দিনে অনুপস্থিত ৬৯ জন
কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় এসএসসি, দাখিল (সমমান) পরীক্ষায় প্রথম দিনে ৩ হাজার ৯৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কেন্দুয়া উপজেলায় অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৮টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার ২ হাজার ৮২৭ জনের মধ্যে ২১ জন, দাখিল পরীক্ষার ৫৬৬ জনের মধ্যে ২২ জন ও ভোকেশনাল পরীক্ষার ৫৫২ জনের মধ্যে ২৬ জন অনুপস্থিত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ।
জানা যায়, প্রথম দিনের বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষা চলাকালীন কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাইফুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে ও নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। নানা কারণে প্রথম দিনের পরীক্ষায় মোট ৬৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।

৫২ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন দুলু
বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ৫২ বছর বয়সে এবারের চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন দুলু। তিনি প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি লাভের পর ১৯৯০ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের শিকার হয়ে সেবার বহিষ্কারর হন। এরপর বন্ধ হয়ে যায় তার পড়ালেখা।
অনাকাঙ্ক্ষিত সেই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ইউপি সদস্য দুলু। এরপর স্থানীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় আবারও পড়ালেখা করার মনোবল ফিরে পান। অবশেষে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।
দুলু জানান, তার পরিবারের সবাই শিক্ষিত।
তিনি আরো জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি ভালো ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৫ সালে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক বৃত্তি এবং ১৯৮৮ সালে জামনগর দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে বাগাতিপাড়া কেন্দ্রে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহরাব হোসেন তাকে বহিষ্কার করেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তার স্বপ্ন ভেঙে গেলেও নতুন করে স্বপ্ন দেখে তার বাস্তবে রূপ দিতেই অংশ নিয়েছেন এবারের পরীক্ষায়।
জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী দুলুর পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই বয়সে চক্ষু লজ্জা উপেক্ষা করে দুলু যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সেজন্য তাকে সাধুবাদ জানাই। আসলে পড়ালেখার কোনো বয়স নাই তারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ দুলু।

লক্ষ্মীপুর
বিএনপিকর্মী নিহতের ঘটনায় মামলা : ১৫ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার
- ১৭৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপিকর্মী সাইজ উদ্দিন দেওয়ান নিহতসহ হামলার ঘটনায় ১৭৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকায় বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরা হলেন- উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিকর্মী মেহেদী কবিরাজ, ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদ উল্যা গাজী, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফারুক সর্দার ওরফে ফারুক কবিরাজ, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিক রাঢ়ী, ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরিফ, ৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী ফারুক গাজী ও রায়হান, ৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী আল আমিন কবিরাজ, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মানিক আহমেদ তারেক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর আলী হাওলাদার, ৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলকর্মী শরিফ বাগ, শাহজাহান মাঝি ও ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্যসচিব শাহ আলী। এর আগে ২০ ডিসেম্বর প্রথম সংঘর্ষের জের ধরে ইউনিয়ন বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের সব কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
পুলিশ জানায়, বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে নিহত স্পেনপ্রবাসী সাইজ উদ্দিনের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ ও তার ভাই মেহেদী কবিরাজসহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
বিএনপি নেতা নাজমুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, তাঁতীদলসহ সব সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভায় সংঘর্ষে জড়িতদের আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে জড়িত সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রায়পুর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘হত্যাসহ হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। এ ছাড়া অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উত্তর চরবংশী ইউনিয়নে উপজেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব জি এম শামীম ও উপজেলা বিএনপির সদস্য ফারুক কবিরাজের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
গত ৭ এপ্রিল আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বেড়ি ও বাবুরহাট এলাকায় কৃষক দল নেতা শামীম গাজী ও ফারুক কবিরাজের অনুসারী হিসেবে পরিচত ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক গাজীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হন। ঘটনার সময় বিল্লাল মাঝি, আবু তাহের মাঝি, জিহাদ হোসাইনের বসতবাড়িতে শামীমের অনুসারীরা ভাঙচুর ও লুটপাট করেন।
এর জের ধরে গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ফের হামলা চালিয়ে শামীম গাজীর অনুসারীরা ফারুক কবিরাজের লোকজনের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেন। পরে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, হামলা-ভাঙচুর, হত্যা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা এখনো বিরাজ করছে।

গোয়ালন্দ পৌরসভার সাবেক মেয়রের জামিন নামঞ্জুর
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পৃথক দুটি হামলা মামলায় গোয়ালন্দ পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. নজরুল ইসলাম মণ্ডলের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে ওই মামলায় মেয়র মো. নজরুল ইসলাম মন্ডল আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে রাজবাড়ী ১ নম্বর আমলি আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা মামলায় শিক্ষার্থী শাহীন ফকির রাজবাড়ী সদর থানায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ মামলায় নজরুল ইসলাম মন্ডল ৪ নম্বর আসামি ছিলেন।
এদিকে, গোয়ালন্দ থানায় বৈষম্যবিরোধী আদোলনে হামলা মামলায় শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে নজরুল ইসলামকে ২ নম্বর আসামি করে ৫৮ জনের নামে আরেকটি মামলা করেন। আসামি নজরুল ইসলামকে এই পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।