<p>কলেজ ছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয়কে (২০) অপহরণ ও হত্যার সাথে জড়িত অন্যতম আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে রাউজান থানা পুলিশ। ধৃত অংথাই চিং মারমা প্রকাশ অংথোই চিং মারমা বাবু মারমা (৪৬) নামের এই আসামি অপহরণ ঘটনার মূল হোতাদের একজন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সে নিজেকে অপরহন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার পাপাপাশি শিবলীর পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের দুইলাখ টাকা নিজে বান্দরবানে রিসিভ (গ্রহণ) করে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। </p> <p>রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন বৃহস্পতিবার রাতে তথ্য প্রকাশ করে বলেন, ‘বুধবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর চাঁদগাও এলাকা থেকে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী থানার মাঝের পাড়ার মৃত বৌদ্ধ অং মারমার ছেলে অংথাই চিং মারমা প্রকাশ অংথোই চিং মারমা বাবু মারমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে একজন দাগী সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কাউখালী থানায় একটি অস্ত্র ও নারী নির্যাতন আইনে একটিসহ দুই মামলা রয়েছে।’ </p> <p>ওসি আরো জানান, গ্রেপ্তারের পর তাকে বৃহস্পতিবার জবানবন্দীর জন্য কোর্টে প্রেরণ করা হয়। সে জেলা ম্যাজিস্ট্রে আদালত-এর বিজ্ঞ বিচারক জোনায়েদ আহমেদের কাছে অপহরণের কথা এবং বান্দরবান থেকে অপহৃত পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের দুইলাখ টাকা নিজেই গ্রহণ করে বলে স্বীকার করে। </p> <p>উল্লেখ্য যে, অপহরণ হওয়া কলেজ শিক্ষার্থী হৃদয় পড়াশোনার পাশাপাশি কদলপুরের ইলিয়াছসহ স্থানীয় কয়েকজনের মালিকানাধীন ওই মুরগির খামারে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৮ আগস্ট গভীর রাতে তাকে অপহরণ করে উপজাতীরা। অপহরণের দুইদিন পর অপহরণকারীরা মায়ের মুঠোফোনে ফোন করে কথা বলিয়ে দেয় কলেজছাত্র হৃদয়ের সাথে। তখন ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। পরে সাড়া না পেয়ে গত ৩১ আগস্ট আবার ফোন করে দুইলাখ টাকা চায়। পরদিন ১ সেপ্টেম্বর শিবলীর বাবা দুইলাখ টাকা নিয়ে বান্দরবান জেলা সদরের পূর্বনির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দুজন লোকের হাতে টাকা তুলে দেন। বলা হয় ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে চলে যাবে। কিন্তু বাড়ি ফিরেনি হৃদয়। এ ঘটনায় পরে ৬ সেপ্টেম্বর রাউজান থানায় অপহরণের মামলা করে ছেলেটির মা নাহিদা আখতার। এতে ২জন আসামিকে তখন গ্রেপ্তার করে পুলিশ।</p> <p>অপহরণের ১৪ দিন পর সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর সকালে রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের সর্বপূর্বে রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার একটি পাহাড় থেকে দেহাবশেষ হিসেবে মাথার খুলি, হাঁড়গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। সকালে রাউজানের কদলপুর ইউনিয়ন সংলগ্ন রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার নামক পাহাড়ি এলাকা থেকে পুলিশ হৃদয়ের খন্ডিত মাথার খুলি, হাঁড়গোড় (কঙ্কাল) উদ্ধার করেছে। অপহৃতের বাড়ি থেকে দেহাবশেষ উদ্ধারের দূরত্ব আট কিলোমিটার।</p> <p>হৃদয় কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের রওশান আলী বাড়ির মুহাম্মদ শফির ছেলে। এই ঘটনায় মামলার পর দুইসহ মোট ৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তৎমধ্যে গণপিটুনিতে নিহত মামলার প্রধান আসামি উমং চিং মারমা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের কাছ থেকে অপহরণ মামলার প্রধান আসামি হত্যাকাণ্ডস্থল শনাক্তকারী ধৃত আসামী উমং চিং মারমাকে ছিনিয়ে নিয়ে তাকে গণপিটুনি নিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সে রাঙামাটি উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের রঙ্গিপাড়া গ্রামের উথোয়াইমং মারমার ছেলে। এই ঘটনায় আহত হয় ওসি সহ ৬ পুলিশ।</p> <p>নিহত মামলার প্রধান আসামি উমং চিং মারমা। সে রাঙামাটি উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের রঙ্গিপাড়া গ্রামের উথোয়াইমং মারমার ছেলে। এদিকে মঙ্গলবার ধৃত বাকী ৪ জনের মধ্যে ২ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে আদালতে। গতকাল বৃহস্পতিবার আরো এক আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিল।</p>