পৌষ মাসের প্রথম থেকে শীতের দাপট বেড়েছে। উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের দাপটে কাবু জনপদ। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না।
পৌষ মাসের প্রথম থেকে শীতের দাপট বেড়েছে। উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের দাপটে কাবু জনপদ। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না।
রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, উত্তরের জেলাগুলোতে আরো তিন-চার দিন শীত থাকতে পারে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রার উন্নতি হলেও ফের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে অধিদপ্তর।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ঘন কুয়াশা ও বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে উত্তরের জেলাগুলোতে ঠাণ্ডা বেড়েছে।
ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক রাজু মিয়া বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে রংপুরে তীব্র শীত যাত্রী নেই বলে চলে। রাতে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ে। পরিবারের নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে। তবে, রাস্তায় মানুষ কম থাকায় আয় তেমন হচ্ছে না।
এদিকে কনকনে ঠাণ্ডায় সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার তিনগুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। এ ছাড়া, গত এক সপ্তাহে দেড় হাজারের মতো শিশু ও বয়স্ক রোগী ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। আবার রোগীর চাপ বেশি, এ কারণে অনেকে বারান্দায় বা করিডরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এস এম নুরুন্নবী বলেন, ‘শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় ঠাণ্ডাজনিত রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্করা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। সাধ্যমত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
এদিকে, শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। বর্তমানে ৪১ জন দগ্ধ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর বেশির ভাগ আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছেন। গত এক মাসে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২ জন।
রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, রংপুর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ১৯ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শীতের প্রকোপ বাড়ায় এ কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে। আরো ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এই টাকা দিয়ে শীতবস্ত্র ক্রয় করা হয়েছে।’
সম্পর্কিত খবর
সারা দেশের মতো কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলোতে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে প্রতিটি ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ জামাত। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলির মাধ্যমে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন আশ্রিত রোহিঙ্গারা। বিশেষ করে রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে ঈদ উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে।
রোহিঙ্গাদের অনেকেই এবারের ঈদকে ভাবছেন বাংলাদেশের আশ্রয় জীবনের শেষ ঈদ। তাদের ঘরে ফেরার স্বপ্ন আরো প্রাণবন্ত হতে শুরু করে যখন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবকে সঙ্গে নিয়ে ইফতারে এসে সেই আশার কথা বলেন।
গতকাল রবিবার (৩০ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা ভিডিওতে রোহিঙ্গাদের ‘মেহমান’ সম্বোধন করে একই প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি মসজিদের খতিব মোহাম্মদ অলিউল্লাহ (৩৯)।
অলিউল্লাহ তার ভাষায় বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আইদ্দে বছর আঁরা আরকানত ঈদ গইজ্জুম। বাংলাদেশ আরাল্লাই যেগিন গইজ্জে আজীবন রোহিঙ্গা অক্কল মনত রাখিব। অর্থাৎ ইনশাআল্লাহ আগামি বছর আমরা আরাকানে ঈদ করিব।
২০১৭ সালে মাত্র ১১ বছর বয়স ছিল রোহিঙ্গা কিশোর রকিমের। দেখতে দেখতে কেটে গেছে অনেক দিন। রকিম বলেন, ‘শৈশবের আরকানকে মনে করলেই কান্না আসে। আমরা ফিরতে চাই সেখানে, সেটিই আমার দেশ।
ঈদকে কেন্দ্র করে ক্যাম্প জুড়ে সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। এপিবিএন কর্মকর্তারা জানান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নজরদারি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সব ক্যাম্পেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজীপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় ফুফু-ভাতিজি নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় অটোরিকশাচালক ও আরো তিন যাত্রী আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটি আটক করে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
ঈদের দিন সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর শিববাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন জানান, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা গাজীপুর শহরের দিকে যাচ্ছিল। শিববাড়ি মোড়ে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা এলিভেটেড সড়ক দিয়ে চলাচলকারী দ্রুতগামী একটি বাস সিএনজিটিকে চাপা দেয়। এ সময় সিএনজিতে থাকা যাত্রী শিশু তাবাসসুম (৫) ও তার ফুফু (৪০) ঘটনাস্থলে মারা যান।
স্থানীয়রা সিএনজিচালক ও অপর যাত্রীদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মেহেরপুরের গাংনীতে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত জাভেদ আলী (১৫) নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ধানখোলা ইউনিয়নের ভাটপাড়া - কচুইখালী সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আজ সোমবার (৩১ মার্চ) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত জাভেদ আলী গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের শাহিন আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ভাটপাড়া ও কচুইখালির মধ্যবর্তী জায়গায় মোটরসাইকেল ও সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে জাভেদ আলী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে প্রথমে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
এদিকে, জাভেদ আলীর মৃত্যুতে তার পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকায় ঈদের আনন্দ শোকে পরিণত হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রের বরাত দিয়ে গাংনী থানার ওসি বানি ইসরাইল বলেন, ‘দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়েছি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ শেখ সাকিব রায়হানের পিতা শেখ আজিজুর রহমান ঈদের নামাজ শেষে ছেলের কবর জিয়ারত করেছেন।
আজ সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল ৮টায় তিনি তার এলাকা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার নবপল্লীর বায়তুল আকাবা জামে মসজিদে ঈদের জামাতে অংশ নেন। পরে বসুপাড়া কবরস্থানে ছেলের কবর জিয়ারত শেষে বাড়িতে ফেরেন। এরপর
তিনি তার ছোট্ট মুদি দোকানে গিয়েই সময় কাটান।
এদিকে, শহীদ সাকিব রায়হানের বড় ভাই সাব্বির ঈদের আগের দিন ঢাকা থেকে খুলনার বাড়িতে এলেও এখনো আসতে পারেননি তার একমাত্র বোন আন্নী আক্তার।
সাকিবের বাবা আজিজুর রহমান জানান, ঈদের পরদিন (১ এপ্রিল) তারা ঢাকা থেকে খুলনায় আসবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে সাকিববিহীন প্রথম ঈদ ভালো কাটছে না ওই পরিবারের। যদিও ছাত্রসংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সাকিব পরিবারের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তাও।
ঈদের দুই দিন আগে নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ১০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা দেন বলেও জানান সাকিবের বাবা আজিজুর রহমান।
২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকার মিরপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাকিব রায়হান। পরে তাকে খুলনায় এনে বসুপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। সাকিব রায়হান তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন। তিনি পবিত্র কোরআনের ১৮ পারার হাফেজ ছিলেন। খুলনা থেকে ঢাকায় গিয়েছিলেন চাকরির খোঁজে।