<p>স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের মতবিনিময়সভায় আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল করে রাজস্ব খাতে কর্মচারী নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন অংশীজনরা। বুধবার (৮ জানুয়ারি) খুলনা মেডিক্যাল কলেজের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এই দাবি জানান তারা। </p> <p>অংশীজনরা বলেন, আউটসোর্সিংয়ের কর্মরতরা স্বাস্থ্যসেবায় অনভিজ্ঞ। তা ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ঠিকাদাররা দুর্নীতিগ্রস্ত। ওইসব কর্মচারীদের ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্ত্বভোগী কিছু ঠিকাদার। পক্ষান্তরে তারা ঠিকাদারের নিয়োগ করা কর্মচারী হওয়ায় তাদের দিয়ে ঠিকমতো সেবাও নেওয়া যাচ্ছে না।</p> <p>খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, ড. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, খুলনার জেলার প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশীদ, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. দীন উল ইসলাম, খুলনা প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, নির্বাহী সদস্য শেখ দিদারুল আলম, ডা. বেলাল হোসাইন, ডা. মুকিতুল হুদা, ডা. প্রকাশ চন্দ্র, ডা. গাজী রফিকুল ইসলাম, ডা. মো. আব্দুর রশিদ, ব্র্যাকের প্রতিনিধি মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান, ডা. মোস্তফা কামাল, ডা. সেলিনা খাতুন, অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র গোস্বামী, অধ্যাপক ডা. আব্দুল মান্নান গাজী, ডা. আসাদুল্লাহিল গালিব, নার্সিং সুপারভাইজার রোকেয়া খাতুন, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি আহমদ হামিম রাহাত প্রমুখ।</p> <p>এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, পেশাজীবী চিকিৎসক সংগঠনের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি, এনজিও, মেডিক্যাল ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে তাদের মতামত তুলে ধরেন।</p> <p>প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য এম এম রেজা বলেন, স্বাস্থ্য খাতকে জনমুখী ও সর্বজনগ্রাহ্য করতে দুটি বিষয়ে ভাবতে হবে। প্রথমত সেবার পরিমাণ বাড়ানো যাতে করে সবাই সেবাটি পায়, আরেকটি হলো ব্যক্তির আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাকে হেলথ কভারেজের আওতায় নিয়ে আসা। এটা না করতে পারলে কিছু লোক হয়ত উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবে কিন্তু একটি বড় সংখ্যক মানুষ এ সেবা পাবে না। সরকারি স্বাস্থ্য খাতের দক্ষতা বাড়ানো ও দুর্নীতি দূর করতে করণীয় বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।</p> <p>তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে সরকারি অংশের পরিসর যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি এই খাতে বেসরকারি পর্যায়েরও অনেক বিকাশ হয়েছে। বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্যশিক্ষা, যেমন মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে মোট শয্যা সংখ্যার চেয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর মোট শয্যা সংখ্যা বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের ল্যাবরেটরিজ ফ্যাসিলিটিজও বেশি। </p> <p>তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সরকারি পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রেও সেবাদান পরিস্থিতির উন্নয়নে বিশেষ করে সেবার মান ও খরচ বিষয়ে ভাবতে হবে। </p> <p>সভায় অংশগ্রহণকারীদের বক্তৃতায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা প্রদানে সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রগুলো ও চিকিৎসা উপকরণের স্বল্পতা দূর করার বিষয়টি উঠে আসে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য খাতের মাঠপর্যায় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বন্ধে করণীয়, মেডিক্যাল ও নাসিং কলেজসহ স্বাস্থ্যশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত মানসম্মত স্তরে আনা, চিকিৎসকদের সঠিক সময়ে পদোন্নতি ও স্বাস্থ্য খাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুযোগ বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানানো হয়।</p>