ঢাকা, মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫
১৮ চৈত্র ১৪৩১, ০১ শাওয়াল ১৪৪৬

মোরেলগঞ্জে ট্রলার ট্র্যাজেডির ৮ বছর পূর্তি : ১৪ নারী শিশুসহ প্রাণ হারায় ১৯ জন

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
শেয়ার
মোরেলগঞ্জে ট্রলার ট্র্যাজেডির ৮ বছর পূর্তি : ১৪ নারী শিশুসহ প্রাণ হারায় ১৯ জন
সংগৃহীত ছবি

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবিতে তিন উপজেলার ১৯ জনের প্রাণহানির আট বছর পূর্তি হল আজ। ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মোরেলগঞ্জ ছোলমবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড খেয়াঘাট থেকে যাত্রী বহনকারী একটি ট্রলার পান গুছি নদীর অপর পাড় পুরান থানার খেয়াঘাটের প্রায় কাছাকাছি পৌঁছালে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ দ্রুতগতিতে মংলার দিকে গেলে তুফানের তোড়ে ট্রলারটি উল্টে ডুবে এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

যাত্রীবাহী খেয়া ট্রলারটি ডুবে ৫ শিশু, ৯ নারী ও ৫ জন পুরুষ লোকের সলিল সমাধি হয়। ট্রলারে ৮০ জন যাত্রী ছিল।

ওই দিন সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আর সেইসঙ্গে পানগুছি নদীর দুপাড়ে স্বজন হারানো মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছিল সেখানকার পরিবেশ। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন ও মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১৫ জন নারী ও ৮ জন শিশুসহ ৫১ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। নিখোঁজ থাকেন ১৯ জন।

নিখোঁজদের সন্ধানে নৌবাহিনীর ৩টি, ফায়ার সার্ভিসের ৪টি, কোস্টগার্ডের ২টি ও পুলিশের দুটি দল অংশ নেয়। টানা ৪ দিন উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ৪ শিশু, ৯ নারী ও ৫ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়। আজও নিখোঁজ রয়েছেন কাঁচিকাটা গ্রামের নাছির শেখের ছেলে নাজমুল হাসান (৬)।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লা বলেন, নিহতদের পরিবারকে ওই সময় সরকারিভাবে ৪৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়েছে।

এ ছাড়াও নিহতদের স্মরণে খেয়া ঘাটে নাম ফলকসহ একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে।
 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গোপালগঞ্জে জমি নিয়ে ফকির বংশের সংঘর্ষ, আহত ২০

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
গোপালগঞ্জে জমি নিয়ে ফকির বংশের সংঘর্ষ, আহত ২০
ছবি : কালের কণ্ঠ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ফকির বংশের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ৯টায় কোটালীপাড়া উপজেলার বর্ষাপাড়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও আহতদের সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে বাড়ির পাশের একটি জমিতে মাছের ঘের কাটতে যান সিরাজ ফকির। এতে বাধা দেন একই বংশের চাচাতো ভাই গাউস ফকির।

 

এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও ঢাল সড়কি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঢাকা পাঠানো হয়েছে।

আরো পড়ুন
ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা

ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা

 

এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিরোধীয় জমিতে ঘের কাটা নিয়ে এই সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি।

অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

ঈদের রাতে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
শেয়ার
ঈদের রাতে নৈশ প্রহরীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ
সংগৃহীত ছবি

ঢাকার সাভারে ঈদের রাতে রুবেল (৩০) নামে এক নৈশ প্রহরীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাভার পৌর এলাকার বাঁশপট্টি মহল্লায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত রুবেল বরিশাল জেলার সদর থানা এলাকার খলিফার ছেলে। তিনি সাভার পৌর এলাকার বাঁশপট্টি মহল্লার মনিরের মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়া থেকে নৈশ প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন।

নিহতের স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, রুবেল দুই মাস যাবৎ সাভারের বাঁশপট্টি এলাকায় রাতে নৈশ প্রহরীর কাজ করতেন। সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রুবেলের মোবাইলে একটি কল আসে। এরপর সে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তার কিছু সময় পরেই বাসায় খবর আসে, রুবেলকে গুলি করেছে, সে বাঁশপট্টি এলাকায় পড়ে আছে।

পরে আমরা সেখান থেকে রুবেলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. হরনাথ সরকার অর্ণব বলেন, ‘রুবেলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার মুখে গভীর ক্ষত রয়েছে। সেটা বুলেটের ক্ষত।

সাভার মডেল থানার ওসি জুয়েল মিঞা বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়েছে। তবে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।’

মন্তব্য

রাকিব-সাজিদদের জীবনে নেই ঈদের আনন্দ

আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও
আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও
শেয়ার
রাকিব-সাজিদদের জীবনে নেই ঈদের আনন্দ
ছবি : কালের কণ্ঠ

ঈদ আসে, ঈদ যায়। কিন্তু পনেরো বছর বয়সী রাকিবের জীবনে ঈদের আনন্দ যেন এক অধরা স্বপ্ন। বাবা-মাকে হারানোর পর ঠাকুরগাঁও জেলার শিশু বালক পরিবারে ঠাঁই হয় তার। এখানেই কাটে তার শৈশব ও কৈশোর।

ঈদের নতুন পোশাক, আত্মীয়ের বাসায় মেহমান হয়ে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুল্লোড়—এসব তার জীবনে নেই। ঈদের দিনটিও আর দশটা সাধারণ দিনের মতোই কাটে।

রাকিবের মতো এই পরিবারে রয়েছে আরো ৭৫ জন এতিম শিশু। তাদের বেশির ভাগই বাবা-মাকে হারিয়েছে, কেউ হারিয়েছে শেষ আশ্রয়টুকুও।

পরিবারের সঙ্গে ঈদের খুশি কেমন হয়, তা তাদের অজানা। একাকিত্ব যেন তাদের নিত্যসঙ্গী।

আরো পড়ুন
ক্ষমতায় গেলে ঠাকুরগাঁওকে চাঁদাবাজমুক্ত করব : দেলাওয়ার হোসেন

ক্ষমতায় গেলে ঠাকুরগাঁওকে চাঁদাবাজমুক্ত করব : দেলাওয়ার হোসেন

 

১২ বছর বয়সী নাসিরও একই গল্প বলে। ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারানোর পর এতিমখানাই তার ঠিকানা।

ঈদের সকালে অন্যদের সঙ্গে নামাজে যায়, কিন্তু মন খারাপ হয়ে থাকে। নতুন জামা পায়, কিন্তু কার জন্য সাজবে? কেউ নেই আদর করে বলবে, ‘তুমি কত সুন্দর লাগছো!’ মেহমান আসবে না, মিষ্টি মুখ করাবে না। শুধু টিভির পর্দায় অন্যদের আনন্দ দেখে তার দিন কাটে।

১৩ বছর বয়সী মীমের ঈদ তো আরো নিঃসঙ্গ। বাবা-মায়ের ভালোবাসা কেমন, তা সে জানে না।

এতিমখানায় বেড়ে ওঠা। ঈদের দিন তার কাছে সাধারণ দিনের মতোই। খাওয়া, ঘুম, টিভি দেখা আর একাকিত্বে ডুবে থাকা। অন্য শিশুদের হাসিমুখ দেখে তার মনে প্রশ্ন জাগে, ‘আমার কি কেউ নেই?’

আরো পড়ুন
মায়ানমারে সপ্তাহব্যাপী জাতীয় শোক ঘোষণা

মায়ানমারে সপ্তাহব্যাপী জাতীয় শোক ঘোষণা

 

১০ বছর বয়সী সাজিদ বাবা-মাকে হারিয়েছে ছয় বছর বয়সে। এরপর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয় তার। ‘ছোটবেলায় মা নতুন জামা কিনে দিত। এখন তো কেউ নেই। ঈদের দিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাই। রাতে যখন সবাই ঘুমায়, মায়ের কথা মনে পড়ে,’ বলতে গিয়ে চোখের কোণে জল জমে তার।

ঠাকুরগাঁও শিশু বালক পরিবারের পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি শিশুর জীবনে এক গভীর শূন্যতা আছে। ঈদের দিনে আমরা সাধ্যমতো তাদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করি। নতুন পোশাক, ভালো খাবার দিই, কিন্তু পরিবারের ভালোবাসার অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে তাদের ঈদ কিছুটা আনন্দময় হতে পারে।

মন্তব্য

পরিবারহীন ঈদ, নাছিরদের আনন্দহীন উৎসব

আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও
আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও
শেয়ার
পরিবারহীন ঈদ, নাছিরদের আনন্দহীন উৎসব
ছবি : কালের কণ্ঠ

ঈদ আসে, ঈদ যায়। কিন্তু ১৫ বছর বয়সী রাকিবের জীবনে ঈদের আনন্দ যেন এক অধরা স্বপ্ন। বাবা-মাকে হারানোর পর ঠাকুরগাঁও জেলার শিশু বালক পরিবারে ঠাঁই হয় তার। এখানেই কাটে তার শৈশব ও কৈশোর।

ঈদের নতুন পোশাক, আত্মীয়ের বাসায় মেহমান হয়ে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে হৈ-হুল্লোড়—এসব তার জীবনে নেই। ঈদের দিনটিও আর দশটা সাধারণ দিনের মতোই কাটে।

রাকিবের মতো এই পরিবারে রয়েছে আরো ৭৫ জন এতিম শিশু। তাদের বেশির ভাগই বাবা-মাকে হারিয়েছে, কেউ হারিয়েছে শেষ আশ্রয়টুকুও।

পরিবারের সঙ্গে ঈদের খুশি কেমন হয়, তা তাদের অজানা। একাকিত্ব যেন তাদের নিত্যসঙ্গী।

১২ বছর বয়সী নাসিরও একই গল্প বলে। ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারানোর পর এতিমখানাই তার ঠিকানা।

ঈদের সকালে অন্যদের সঙ্গে নামাজে যায়, কিন্তু মন খারাপ হয়ে থাকে। নতুন জামা পায়, কিন্তু কার জন্য সাজবে? কেউ নেই আদর করে বলবে, ‘তোমাকে কত সুন্দর লাগছে!’ মেহমান আসবে না, মিষ্টি মুখ করাবে না। শুধু টিভির পর্দায় অন্যদের আনন্দ দেখে তার দিন কাটে।

১৩ বছর বয়সী মীমের ঈদ তো আরো নিঃসঙ্গ। বাবা-মায়ের ভালোবাসা কেমন, তা সে জানে না।

এতিমখানায় বেড়ে ওঠা। ঈদের দিন তার কাছে সাধারণ দিনের মতোই। খাওয়া, ঘুম, টিভি দেখা আর একাকিত্বে ডুবে থাকা। অন্য শিশুদের হাসিমুখ দেখে তার মনে প্রশ্ন জাগে, ‘আমার কি কেউ নেই?’

১০ বছর বয়সী সাজিদ বাবা-মাকে হারিয়েছে ৬ বছর বয়সে। এরপর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই হয় তার। ‘ছোটবেলায় মা নতুন জামা কিনে দিত। এখন তো কেউ নেই। ঈদের দিন বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাই। রাতে যখন সবাই ঘুমায়, মায়ের কথা মনে পড়ে’ বলতে গিয়ে চোখের কোণে জল জমে তার।

ঠাকুরগাঁও শিশু বালক পরিবারের পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি শিশুর জীবনে এক গভীর শূন্যতা আছে। ঈদের দিনে আমরা সাধ্যমতো তাদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করি। নতুন পোশাক, ভালো খাবার দিই, কিন্তু পরিবারের ভালোবাসার অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে তাদের ঈদ কিছুটা আনন্দময় হতে পারে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ