৬ পদে আওয়ামী লীগ প্যানেলের জয়, বিএনপি-জামায়াত পেল ৫ পদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
৬ পদে আওয়ামী লীগ প্যানেলের জয়, বিএনপি-জামায়াত পেল ৫ পদ
সংগৃহীত ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যানর্বাহী কমিটির নির্বাচন-২০২৫-এ বিএনপি-জামায়াত প্যানেলের চেয়ে আওয়ামী লীগপন্থীরা বেশি পদ পেয়েছেন।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলে। পরে গণনা শেষে রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট তাহির জামিল চূড়ান্ত বেসরকারি ফল ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুন
চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫

চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫

 

নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২২৪ জন, ২০২ জন ভোট প্রদান করেন।

এক বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনে ৩টি প্যানেলে এবং একজন স্বতন্ত্রসহ ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

জানা যায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল (মনিরুল-ডলার পরিষদ) ৬টি পদ, বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী ঐক্য প্যানেল ৫টি পদ এবং শুধু বিএনপি সমর্থিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ আইনজীবী ঐক্য ফ্রন্ট প্রার্থীরা দুটি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের মহম্মদ ইসাহাক। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ আইনজীবী ঐক্য ফ্রন্টের মাহমুদুল ইসলাম কনক।

আরো পড়ুন
পদবঞ্চিতদের সড়ক অবরোধ, কাদেরের কড়া বার্তা

পদবঞ্চিতদের সড়ক অবরোধ, কাদেরের কড়া বার্তা

 

এর মধ্যে আওয়ামী প্যানেলের প্রার্থীরা সিনিয়র সহসভাপতি, সহসভাপতি, অর্থ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের দুটি পদে বিজয়ী হয়েছেন। 

বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী ঐক্য প্যানেল সভাপতি, সহসাধারণ সম্পাদকের একটি পদ, গ্রন্থাগার সম্পাদক এবং কার্যনির্বাহী সদস্যের দুটি পদে বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া এককভাবে শুধু বিএনপি সমর্থিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ আইনজীবী ঐক্য ফ্রন্ট প্রার্থীরা সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পদকের একটি পদে বিজয়ী হয়েছেন।

আরো পড়ুন
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন মেনে নেব না : মির্জা ফখরুল

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন মেনে নেব না : মির্জা ফখরুল

 

নির্বাচনে অন্য বিজয়ীরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি মিসেস আনজুমান আরা, সহসভাপতি সোহরাব আলী (২), সহসাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে এম. আব্দুস সালাম ও ফরিদ আহম্মেদ জনি, অর্থ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম আজিজী, গ্রন্থাগার সম্পাদক আবুল কালাম আযাদ এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক তানভীর রহমান নীতু।

কার্যনির্বাহী সদষ্য পদে বিজয়ী হয়েছেন যথাক্রমে মেহেদী হাসান শাওন, সাবিনা ইয়াসমিন, জাহাঙ্গীর আলম ও নাজমুস সাকিব।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জিয়া পরিবারের হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ : মাসুদ খন্দকার

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
জিয়া পরিবারের হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ : মাসুদ খন্দকার
সংগৃহীত ছবি

‘জিয়া পরিবারের হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ’- মন্তব্য করে পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খান্দকার বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিকালে বার বার জিয়াউর রহমান জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।’

আজ শনিবার (২৯ মার্চ) পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ মাঠে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দেশের সমৃদ্ধি, মঙ্গল কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মাসুদ খান্দকার বলেন, ‘১৯৭০ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হতে পাকিস্তানের সাথে সমঝোতার চেষ্টা চালান। ফলশ্রুতিতে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিয়েই তিনি স্বেচ্ছায় গ্রেপ্তার হন।

এমন অবস্থায় জাতি যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই চট্রগ্রামে মেজর জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করেন এবং কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে নেতৃত্ব দেন।’

আরো পড়ুন
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ

 

তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালে জিয়াকে বন্দি করা হলে সিপাহী জনতার বিপ্লবে তিনি মুক্ত হয়ে দেশের ক্রান্তিকালে আবার জনগণের পাশে এসে দাঁড়িছেলেন। বাকশালী একদলীয় শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করে বাংলাদেশে জিয়াই বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন।

এর ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার সুযোগ্য পুত্র তারেক রহমান বিদেশে থেকেও দেশের ক্রান্তিকালে নেতৃত্ব দিয়ে প্রমাণ করেছেন আগামীর বাংলাদেশ তাদের হাতেই নিরাপদ।’ 

অ্যাডভোকেট মাসুদ খন্দকার বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদি সরকার তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে শাস্তি দিয়ে সাত বছর জেলে রেখে মৃত্যূর মুখে ঠেলে দেয়। নির্দোষ তারেক রহমানকে নির্যাতন করে দেশান্তরী করে। ফ্যাসিবাদিরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারের নাম নিশানা মুছে ফেলার যে ষড়যন্ত্র করেছিল তা সফল হয়নি।

মহান আল্লাহ পাকের কৃপায় জাতীয়তাবাদী শক্তি তারেক রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে আবার জেগে উঠেছে।’

তিনি বলেন, ‘শিগগিরই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ সেই অপেক্ষায় রয়েছেন।’

উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে এই মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুর মুজাহিদ স্বপন। সদস্য সচিব প্রভাষক জাফর ইকবাল হিরোকের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম বরাত, আবু হেনা মোস্তফা কামাল রেজা, আলতাব হোসেন খান, পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম বুরুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোতালেব হোসেন, কৃষক দলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম, যুবদলের আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হুমায়ুন আহমেদ মুন ও সদস্য সচিব লিখন সরকার।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

এখন আরেক দল শেখ হাসিনার মতো ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে : আমীর খসরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
এখন আরেক দল শেখ হাসিনার মতো ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে : আমীর খসরু

এখন আরেক দল শেখ হাসিনার মতো ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে নগরীর পাঁচলাইশ থানা সংলগ্ন কিং অব চিটাগাং এ পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ৮ নং শোলকবহর ওয়ার্ড বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, এখন আবার আরেকদল নামছে। এরা বলতেছে, আমাদের এতগুলো কাজ করতে হবে, সংস্কার করতে হবে।

ভোটের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারা তো বুঝতে পারছে না, তারা যে শেখ হাসিনার ভাষায় জনগণের কাছ থেকে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটকে বিলম্বিত করে, দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। সেটা কারো কাম্য নয়। 

কিছু কিছু শক্তি জনগণকে ভয় পাচ্ছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, আজকে কিছু কিছু শক্তি যারা জনগণকে ভয় পায়, যাদের জনগণের ওপর আস্থা নেই, যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভয় পায়, নির্বাচনে যেতেও ভয় পায়।

কারণ তারা জানে নির্বাচনে গেলে তাদের হয়তো যেই ফলাফল আসা দরকার সেটা আসবে না। সেজন্য শেখ হাসিনা যেভাবে ১৫ বছর জনগণকে নির্বাচনে যেতে দেয়নি। বলে, আমি উন্নয়ন করতেছি, এটা-ওটা করতেছি, ভোটের দরকার কি?

এখানে কাউকে দেশের পরিবর্তনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তন আসবে ভোটের মাধ্যমে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকার সংসদে গিয়ে দেশের সব পরিবর্তন আনবে।

আর কাউকে পরিবর্তনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এখানে। তাই অতিসত্বর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। তারাই ঠিক করবে দেশ কোন পথে যাবে। আর কেউ নয়। 

তিনি আরো বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম করেছি।

গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা গণতন্ত্র চাই, মানবাধিকার চাই, আইনাধিকার চাই, আইনের শাসন চাই। দেশের মানুষের নির্বাচিত জনগণের মাধ্যমে একটি সংসদ চাই, সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। সকলে মিলে আমরা ইনশাআল্লাহ এটা বাস্তবায়ন করবো।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, উশৃঙ্খল হলে চলবে না, নতুন রাজনীতি হচ্ছে শৃংঙ্খলার রাজনীতি। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তনের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। মানুষের নতুন চিন্তা ধারণ করতে হবে, তাহলে বিএনপির রাজনীতি এগিয়ে যেতে হবে।

মন্তব্য

আলু নিয়ে হতাশায় কৃষক

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
শেয়ার
আলু নিয়ে হতাশায় কৃষক
সংগৃহীত ছবি

‘আলুর দাম তো ওঠোইছে না, ঈদ করমু ক্যাংকা করে?’ কথাগুলো বলতে বলতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায় জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ধারা-গাংগট গ্রামের কৃষক তরিকুল ইসলামের। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে পুনটহাটে দাঁড়িয়ে তিনি জানালেন, এবারের আলু চাষ তার জন্য যেন অভিশাপ হয়ে এসেছে। প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে ২১-২২ টাকা, অথচ বাজারে সেই আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৯-১০ টাকায়। এতে করে লাভের কথা দূরে থাক, উৎপাদন খরচই উঠছে না।

তরিকুলের মতো একই অবস্থা উপজেলার বানিহারা গ্রামের কৃষক হায়দার আলীরও। চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন তিনি। ফসল তোলার পর যখন বাজারে নিয়ে গেলেন, দেখলেন দাম নেই। হিমাগারেও সংরক্ষণের সুযোগ পাননি কারণ জায়গা সংকট।

বাধ্য হয়ে আলু বাড়ির আঙিনায় রেখে দিয়েছেন, কিন্তু সেখানে আলু ভাল থাকে না। রাতে মশার অত্যাচারে মশারি টাঙিয়ে আলুর পাহারা দিতে হয় তাকে। ঈদ সামনে, অথচ হাতে টাকা নেই। হতাশ কণ্ঠে বলেন, ‘হামার মতো অনেকেই আলু নিয়ে বড় বিপদে আছে।
তা'ইলে তোমরাই কও, এবার ঈদ করমু ক্যাংকা করে?’

আরো পড়ুন
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ

 

একের পর এক কৃষকের একই দুর্দশার গল্প শোনা যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পুরো উপজেলায় প্রান্তিক কৃষকদের মুখে হাসি নেই, ঈদের আনন্দ নেই। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করছেন কিন্তু লাভ তো দূরের কথা, লোকসান সামলে সংসার চালানোই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে।

পুনটহাটে এদিন বেচাকেনা খুবই কম। ঈদের আগে যেখানে বাজারে কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়, সেখানে এবার দোকানিরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।

কালাই আহলে হাদীস মসজিদ কমপ্লেক্স মার্কেটের চায়না ফ্যাশনে কাপড় কিনতে এসেছিলেন বানিহারা গ্রামের কৃষক ছামসুল হক। দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তিনি কাপড় দেখছিলেন, কিন্তু দাম দেখে যেন হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। বললেন, ‘ছল-পল (ছেলে-মেয়ে) ছাড়ে না, তাদের জন্য ১০ টাকা কেজিতে লোকসান করে ১৫ বস্তা আলু বেছিছু। কিন্তু যে দাম, জামাত তো হাতই দেয়া যাওছে না।’

বাজারে ব্যবসায়ীরাও হতাশ। চায়না ফ্যাশনের মালিক হিটলার রহমান জানান, গত বছর যেখানে প্রতিদিন দেড়-দুই লাখ টাকা বিক্রি হত, হাটের দিনে আড়াই লাখ টাকার বেশি বেচাকেনা হতো, এবার সেখানে মাত্র ৫০-৬০ হাজার টাকার ব্যবসা হচ্ছে। মানুষের হাতে টাকা নেই, তাই দোকানেও ভিড় নেই।

কৃষক হেলাল উদ্দিন বললেন, ‘মুই দুই মণ আলু বেচে ছলের জন্য এক জোড়া জুতা কিনিছু। হাটোত সব জিনিসের দাম বেশি কিন্তু হামাগেরে আলুর দাম নাই। যত সব ঝামেলা হামাগেরে মত কিষান-পাটের।’

আরো পড়ুন
তিন দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা

তিন দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা

 

উপজেলার মুন্দাইল গ্রামের কৃষক আশরাফ আলীও হতাশা প্রকাশ করে জানান, ৩০ শতক জমি বর্গা নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন। পুনট হাটে তিন বস্তা (৬০ কেজি) আলু নিয়ে গিয়েছিলেন বিক্রি করতে, কিন্তু দাম এতটাই কম যে ফেরত আনতে বাধ্য হলেন।

এই হতাশা শুধু তরিকুল, হায়দার, ছামসুল, হেলাল বা আশরাফ আলীর একার নয়। কালাইয়ের হাজারো কৃষক একই সমস্যা জর্জরিত। প্রতিবার উৎপাদিত ফসলের টাকায় সারা বছরের খরচ চালাতেন তারা কিন্তু এবার সব হিসাব এলোমেলো হয়ে গেছে। ঈদের আগে এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের মন ভেঙে পড়েছে। কৃষকদের প্রশ্ন, যদি ফসলের ন্যায্য দাম না পাই যদি কষ্টের ফসল লোকসানে বিক্রি করতে হয় তবে আমাদের ঈদ আনন্দ থাকবে কেমন করে?

আরো পড়ুন
চীন সফরে ড. ইউনূসের ৫ অর্জন

চীন সফরে ড. ইউনূসের ৫ অর্জন

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘কৃষকদের হতাশা আমরা বুঝতে পারছি। আলুর দাম কমার প্রধান কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত উৎপাদন এবং সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা। হিমাগারে জায়গা সংকটের কারণে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করছেন,যা বাজারে আরও দরপতন সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় কৃষকদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়া স্বাভাবিক। তিনি আশ্বাস দিয়ে আরো বলেন, যদিও বর্তমান পরিস্থিতি কঠিন তবে এটি স্থায়ী নয়। বাজার খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমরা আশা করছি। আমরা চাই কৃষকেরা হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরুন এবং আমরা তাদের পাশে আছি।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

গাইবান্ধায় সাঁওতালদের তির-ধনুক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
শেয়ার
গাইবান্ধায় সাঁওতালদের তির-ধনুক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জে আদিবাসী সাঁওতালদের তির-ধনুক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার বাগদা ফার্মে রমেশ প্রাইমারি স্কুল মাঠে শনিবার (২৯ মার্চ) এ তির-ধনুক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। 

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগ এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে আদিবাসী সমাজের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রদর্শন, সাঁওতালদের তির-ধনুক চালানোর কৌশল এবং সংগ্রামী ইতিহাস প্রদর্শিত হয়।

এ সময় ডা. ফিলিমন বাস্কে সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গৌড় পাহাড়ি, প্রিসিলা মুরমু, ব্রিটিশ সরেন, সুফল হেমরম, বার্ণাবাস টুডু, সুচিত্রা মুরমু তৃষ্ণা, মইনুল ইসলাম , স্বপন মিয়া প্রমুখ। 

বক্তারা সাঁওতালদের ঐতিহ্য, স্বাধীনতাযুদ্ধে তাদের ভূমিকা এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ