হ্রদ-পাহাড়ের জেলা পার্বত্য রাঙামাটি। রূপবতী এই শহরের রূপ দেখতে সারা বছর হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে রাঙামাটিতে। এবারের ঈদের লম্বা ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমজমাট রাঙামাটি। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল ভুলে প্রকৃতির কোলে নিজেদের সঁপে দিতে হ্রদ পাহাড়ের শহর এই শহরে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক।
ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকেই ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’খ্যাত ঝুলন্ত সেতু পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। সকাল থেকে দলে দলে পর্যটকরা ভ্রমণ করছেন বিনোদনের জনপ্রিয় এই স্থানে। কেউ আসছেন পরিবার নিয়ে, কেউ আসছেন দম্পতি আবার কেউ আসছেন বন্ধুদের সাথে দল বেঁধে। ঝুলন্ত সেতু ঘুরে-ফিরে আনন্দ উপভোগ করছেন।
আবার কেউ কেউ স্মৃতিমানসে ধরে রাখার লক্ষ্যে সেলফিবন্দি হচ্ছেন।
শুধু ঝুলন্ত সেতুতেই তাদের ভ্রমণ সীমাবদ্ধ নয়। পর্যটন নৌ ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে কাপ্তাই হ্রদে নৌ বিহারও ঘুরছেন পর্যটকরা। হ্রদ, পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করে যান্ত্রিক জীবনের এক ঘেঁয়েমি দূর করছেন অনেকে।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা বেলাল হোসেন বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে রাঙামাটিতে বেড়াতে এসেছি। এর আগেও এসেছিলাম। রাঙামাটির রূপ দেখে আমরা মুগ্ধ, তাই বারবার আসা।
ঢাকা থেকে আসা আব্দুর রহমান বলেন, আমরা রাঙামাটিতে এসেই ইতিমধ্যেই আরণ্যক, পলওয়েল পার্ক এই জায়গাগুলো ঘোরা শেষ। এবার কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণে যাচ্ছি।
হ্রদের সৌন্দর্য আমাদের সত্যিই বিমোহিত করেছে।
কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহারে চলাচলকারী নৌযানগুলোর চালকদের অন্যতম নেতা রমজান আলী বলেন, ঈদের দিন পর্যটকদের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও আজ থেকে পর্যটক সমাগম বেড়েছে। সকাল থেকে আমাদের অনেকগুলো বোট পর্যটকদের নিয়ে সুবলংসহ অন্যান্য স্পটগুলোর উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। আশা করছি, আগামীকাল থেকে পর্যটকদের উপস্থিতি আরো বাড়বে।
ঝুলন্ত সেতুর পাশপাশি পলওয়েল পার্কসহ অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতেও রয়েছে পর্যটকের সরব পদচারণা। পর্যটকরা পার্কের ভেতরে থাকা বিভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ছোট ছেলেমেয়েরা টয় ট্রেন ও দোলনাতে চড়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। পলওয়েল পার্কের মিনি ঝুলন্ত সেতুতেও কেউ কেউ হেঁটে বেড়াচ্ছেন। হ্রদের শান্ত জল ও সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত পর্যটকরা।
মায়াবী রিসোর্টের ব্যবস্থাপক মিঠুন ত্রিপুরা বলছেন, ঈদের ছুটিতে বেশ পর্যটক হবে। আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। বেশ ভালোই বুকিং হচ্ছে রিসোর্টগুলোতে।
রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, আজ প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার পর্যটক ঝুলন্ত সেতুতে ভ্রমণ করেছেন। এছাড়াও অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। বর্তমানে আমাদের হোটেল মোটেলগুলোতে ৬০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। আাগামী ৩ তারিখ থেকে শতভাগ বুকিং রয়েছে। আশা করছি এই মৌসুমে আমাদের বেশ ভালো একটা ব্যবসা হবে।