সরকারি জমি দখল করে ভাড়া দিচ্ছেন বিএনপি নেতা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সরকারি জমি দখল করে ভাড়া দিচ্ছেন বিএনপি নেতা
সংগৃহীত ছবি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে ১০ নম্বর সাইট এলাকায় প্রায় ১৫০ একর সরকারি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুই বছর আগে অভিযান চালিয়ে তাঁর দখলে থাকা জমি উদ্ধার করা হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেলে তিনি আবার সেই জমি দখলে নেন। 

সাহাব উদ্দিন উপজেলা বিএনপির সভাপতির পাশাপাশি জেলা বিএনপির সহসভাপতি পদেও রয়েছেন। দখলকৃত এই সরকারি জমি তিনি পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, ভোলাগঞ্জে দেশের সবচেয়ে বড় পাথর কোয়ারির পাশে সরকারের অন্তত ২৭৫ একর উন্মুক্ত জায়গা আছে। ২০০১ সালের দিকে এসব জায়গার দখল নেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমি দখলে নেন সাহাব উদ্দিন।

পরে পাশে কোয়ারি থাকায় জায়গাগুলো পাথর ভাঙার মেশিনের মালিকদের কাছে ভাড়া দেন দখলকারীরা।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ভোলাগঞ্জে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি স্থলবন্দর নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় তৎকালীন সরকার। পাশাপাশি পর্যটনের উন্নয়নে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। পরে দুই বছর আগে অভিযান চালিয়ে দখলকৃত জমি উদ্ধার করে প্রশাসন।

তবে ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে আবার সেই জায়গা দখল করা হয়।

এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারি জায়গা থেকে দখলকারদের উচ্ছেদে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। জায়গাটি নিয়ে মামলা ছিল। রায় সরকারের পক্ষে গেছে। দ্রুত রায় পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিমে ১১২ একর ও পূর্বে প্রায় ১৫০ একর খাসজমির বেশির ভাগই অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছিলেন বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন। তবে সেখানে স্থলবন্দর নির্মাণ ও পর্যটনের উন্নয়নে পৃথক প্রকল্প নিলে ২০২৩ সালে জায়গাটি দখলমুক্ত করে প্রশাসন। পরে ৫২ দশমিক ৩০ একর জায়গা ইজারা নেয় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। গত বছরের জুন মাসে সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জমি ইজারা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলে সাহাব উদ্দিনের ব্যবস্থাপক হিসেবে পরিচিত নির্মল কুমার সিংহ ও তার ভাই উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করেন। পরে আদালত সরকারের পক্ষে রায় দিলে জায়গাটি প্রায় ৮ কোটি টাকায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্থলবন্দর নির্মাণে ইজারা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্ব অংশে ধলাই নদের পাড় পর্যন্ত প্রায় ১৫০ একর সরকারি খাসজমিতে স্থানীয় পর্যটনশিল্পের বিকাশে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে উন্নয়নকাজ শুরু করে। এ জন্য এসব জায়গা থেকে পাথর ভাঙার মেশিন অপসারণ করে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ ও মাটি ভরাটের কাজ করা হয়। 

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত বছর ৫ আগস্ট বিকেলে সাহাব উদ্দিনের লোকজন ফের ওই জমির দখল নেন। তারা স্থলবন্দর নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদারদের জিনিসপত্র ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। এছাড়া পর্যটনের উন্নয়নে নির্মিত সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলে। পরে নির্মাণাধীন স্থলবন্দরের ৫২ দশমিক ৩০ একর জমি ছাড়া উভয় পাশের প্রায় ২০০ একর জমির দখল নেন সাহাব উদ্দিনসহ স্থানীয় কয়েকজন।

অভিযোগ আছে, সরকারি জমির দখল টিকিয়ে নিজের সাম্রাজ্য ঠিক রাখতে সাহাব উদ্দিন শুরু থেকেই স্থলবন্দর নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছেন। স্থলবন্দর নির্মিত হলে এলসির মাধ্যমে ভারত থেকে আনা কয়লা, চুনাপাথর ও পাথরে কর ফাঁকি দেওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে— এটাও বিরোধিতার অন্যতম কারণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর একটি লিখিত আবেদন করে নির্মাণাধীন স্থলবন্দর স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন সাহাব উদ্দিন। এ ছাড়া গত ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁর নেতৃত্বে ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের ব্যানারে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সাহাব উদ্দিন ওই গ্রুপের সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর নির্মাণের বিরোধিতা করা হয়।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন দাবি করেন, তিনি জমি দখল করে পাথর ব্যবসায়ীদের ভাড়া দেননি। পর্যটনকেন্দ্রিক উন্নয়নকাজ শুরুর আগে সেখানে তিন বিঘা জায়গায় তিনি পাথর রাখতেন। তবে যখন (২০২৩ সাল) সেখানে পর্যটনের উন্নয়নে কাজ শুরু হয়, তখন তিনিসহ অন্যদের প্রশাসন উচ্ছেদ করে। এছাড়া রিট পিটিশন দায়ের করা নির্মল কুমার সিংহ তার ব্যবস্থাপক নন বলে দাবি করেন তিনি।

সাহাব উদ্দিন আরো বলেন, প্রশাসন উচ্ছেদ করার পর তিনি আর সেখানে পাথর রাখেননি। ৫ আগস্টের পর তিনি বা তার লোকজনের ওই জমি দখলের অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা। তাঁকে বিতর্কিত করতেই একটা মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যাচার করছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সিলেটে গভীর রাতে তরুণ খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
শেয়ার
সিলেটে গভীর রাতে তরুণ খুন
সংগৃহীত ছবি

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সাহেল শাহরিয়ার (২১) নামের এক তরুণ খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার রাধানগর বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। খুনিরা তার মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে গেলেও পুলিশের ধারণা নিছক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে খুন করা হয়নি।

নিহত সাহেল উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের পুর্নানগর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে।

তিনি মৌসুমকেন্দ্রিক ছোটখাটো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে সাহেল মোটরসাইকেলে করে গোয়াইনঘাট থেকে জাফলংয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। তার মোটরসাইকেল রাধানগর বাজারের কাছাকাছি এলে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তার ওপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত করে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয় এক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক তাকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা মোটরসাইকেল নিয়ে গেলেও নিছক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে খুন করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

এর পেছনে পূর্ব লেনদেন বা শত্রুতার বিষয়ও থাকতে পারে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে এবং হামলাকারীদের ধরতে তৎপর রয়েছে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

দীঘিনালায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
শেয়ার
দীঘিনালায় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
সংগৃহীত ছবি

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে মো. হোসেন মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১টা দিকে মেরুং ইউনিয়নের বেতছড়ি পশ্চিম শিবির এলাকা থেকে হোসেন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মেরুং ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম বেতছড়ি শিবির এলাকার আশ্রয়ণ প্রকল্পের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ওই নারীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত। তখন গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাকে আটক করে পুলিশে দেয়।

দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া জানান, ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন দমন আইনে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।

মন্তব্য

চট্টগ্রামে ডিএনএ পরীক্ষার জটে আটকে ৬১০ মামলা

কাজী মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
কাজী মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে ডিএনএ পরীক্ষার জটে আটকে ৬১০ মামলা
সংগৃহীত ছবি

ডিএনএ (ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) প্রতিবেদন না পাওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীর ৬১০টি  ধর্ষণ মামলা তদন্তেই আটকে আছে। ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব মামলার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেলেও ডিএনএ রিপোর্ট না পাওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে পারছেন না মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। মানবাধিকার সংগঠন ও আইনজীবীরা বলছেন, নারী ও শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলাগুলোর ডিএনএ প্রতিবেদন সবার আগে দেওয়া উচিত।
 
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামের জামালখান এলাকায় শিশু বর্ষাকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং লাশ গুমের ঘটনা ঘটে।

এই মামলা তদন্ত কাজ শেষ পর্যায়ে। কিন্তু ডিএনএ রিপোর্ট না পাওয়ায় চার্জশিট তৈরি করে আদালতে জমা দিতে পারছেন না মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুধু বর্ষার ধর্ষণ মামলা নয় ২০২২ সালের ২৩৩টি মামলার কার্যক্রম ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য থমকে আছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার ৯, সদরঘাট২, চকবাজার ৩, বাকলিয়া৭, খুলশী ২১, বায়েজিদ বোস্তামী ২৭, পাঁচলাইশ ৭, চান্দগাঁও ৭, পাহাড়তলী ১০, আকবরশাহ থানা ৯, হালিশহর ৬, ডবলমুরিং ৭, বন্দর ১৬,ইপিজেড ১৪, পতেঙ্গা ১০ ও কর্ণফুলী থানাতে ৬টি মামলা।

আরো পড়ুন
ঈদযাত্রায় নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর শাস্তি : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

ঈদযাত্রায় নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর শাস্তি : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

 


 
২০২১ সালের ২৯টি মামলার ডিএনএ প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। আর ২০২৩ সালের ২৩৩টি মামলার ডিএনএ প্রতিবেদনের কারণে মামলার তন্ত কাজ থমকে আছে। এর মধ্যে কাতোয়ালী থানার ২৮, সদরঘাট ৯, চকবাজার ২, বাকলিয়া ৮, খুলশী ১১, বায়েজিদ বোস্তামী ২৫, পাঁচলাইশ ৪, চান্দগাঁও ৪০, পাহাড়তলী ২২, আকবরশাহ ১৫, হালিশহর ১৫, ডবলমুরিং ৭, বন্দর ১১, ইপিজেড ৮, পতেঙ্গা ১০ ও কর্ণফুলী থানাতে ১৮টি মামলা ডিএনএ প্রতিবেদনের অপক্ষোয় তদন্ত কাজ থমকে আছে।
 
২০২৪ সালে ১৭০টি মামলা ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া যাচ্ছে না আদালতে।

এর মধ্যে কাতোয়ালী থানার ৫,সদরঘাট ১, চকবাজার ৭,  খুলশী ১১, বায়েজিদ বোস্তামী ১৪, পাঁচলাইশ ৬, চান্দগাঁও ৩১, পাহাড়তলী ৬,আকবরশাহ ১৮, হালিশহর ১৫, ডবলমুরিং ১৪, বন্দর ৭,ইপিজেড ১২, পতেঙ্গা ১২ ও কর্ণফুলী থানাতে ১১টি মামলা ডিএনএ প্রতিবেদনের অপক্ষোয় তদন্ত কাজ থমকে আছে।

আর ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ১৭ টি মামলা ডিএনএ প্রতিবেদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। এগুলো এখনো আসেনি।
 
শিশু বর্ষা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নওশের কোরেশী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলার তদন্ত কাজক্রম শেষ। ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পেলে মামলার চার্জশিট তৈরি করে আদালতে জমা দিতো পারবো।

আমি এখন ডিএনএ রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।’

আরো পড়ুন
গরমে ফিট থাকতে যে ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলবেন

গরমে ফিট থাকতে যে ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলবেন

 


 
আড়াই বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বর্ষার বড় বোন সাহেলা রুবী। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আড়াই বছর হয়ে গেছে এখনো মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারা কষ্টের। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়ে মামলার বিচারকাজ শুরু করে দরকার। আমার বোনকে যে ধর্ষণের পর হত্যা করছে তার বিচার দ্রুত দেখতে চাই।’  

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন,‘ গত ৫ বছরে ডিএনএন প্রতিবেদনের জন্য ৬১০টি ধর্ষণ মামলা তদন্তেই আটকে আছে। ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়া গেলে এসব মামলার মধ্যে বেশিরভাগ মামলারই চার্জশিট জমা দেওয়া যেতো। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ডিএনএ রিপোর্টগুলো পাওয়ার জন্য।

মানবিধার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশেনের মহাসচিব ও চট্টগ্রামের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া  হাবীব আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডিএনএ প্রতিবেদনের ক্ষত্রে শিশুদের ঘটনায় যে মামলাগুলো হয়, সেগুলো অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। দ্রুত ডিএনএ প্রতিবেদন দিতে হবে মামলা ৯০ দিনে শেষ করতে হলে। আগে পুলিশের গাফেলতির কারনে মামলা বিলম্ব হতোএখন ডিএনএ টেস্ট করা ল্যাবের কারণে মামলার কার্যক্রম দেরি হচ্ছে।’

আরো পড়ুন
২৭৩ কোটি টাকার ভোজ্য তেল ও মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত

২৭৩ কোটি টাকার ভোজ্য তেল ও মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যে পরিমাণ মামলা হচ্ছে সে পরিমাণ জনবল ও ল্যাব নেই আমাদের। ল্যাব স্বল্পতার কারণে ডিএনএ প্রতিবেদন রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে। দ্রুত ডিএনএ ল্যাব স্থাপন করা দরকার। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দক্ষ জনবল তৈরি করা দরকার।’

এইদিকে গত সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, ধর্ষণের বিচারের দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ হলো পর্যাপ্ত ডিএনএ ল্যাবের অভাব। বর্তমানে দেশে একটি মাত্র ডিএন ল্যাব রয়েছে। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরো দুইটি ডিএনএ ল্যাব স্থাপন করা হবে। 

মন্তব্য

ছাত্রদল নেতা তরিকের বিরুদ্ধে প্রবাসীর বাড়ি দখলের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ছাত্রদল নেতা তরিকের বিরুদ্ধে প্রবাসীর বাড়ি দখলের অভিযোগ
তারিকুল ইসলাম তরিক। ছবি : সংগৃহীত

ইতালি প্রবাসীর বাড়ি দখল ও এক বৃদ্ধাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম তরিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে আইনি সহায়তা না করে ‘সালিশ করে মীমাংসা’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। 

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ড চাঁদমারি মাদরাসা সড়কের ওপর মাজেদা বেগমকে মারধরের ঘটনা ঘটে। তবে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইতালি রাষ্ট্রদূতের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

 

হামলায় আহত অভিযোগকারী মাজিদা বেগম জানান, আমার মেয়ে ও মেয়ের জামাতা নিজাম উদ্দিন ইতালি প্রবাসী। বরিশালের চাঁদমারী মাদরাসা সড়কের পাশে তাদের একতলা বাড়ি আছে। বাড়ির প্ল্যান থেকে শুরু করে জমির মিউটেশন সব আমার জামাতা নিজাম উদ্দিনের নামে। এমনকি আমার জামাতা অভিযুক্ত বিবাদী জসিম উদ্দিনকে নিজের টাকায় ইতালি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তারা বিদেশে থাকায় আমাকে বাড়ি দেখভালের জন্য এখানে রেখে যায়। 

তিনি জানান, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম তরিক প্রায় দেড়শ লোকসহ মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসে আমাকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলে। তারা গালাগালি করে আমাকে মারধরে উদ্যত হন। একপর্যায়ে মারধর করা হয়।

তাদের ভয়ে আমি বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। পরবর্তীতে বাড়ির মালামাল লুটপাট করে বাড়িটি দখল করে নেয়। 

মাজিদা বেগম বলেন, এই ঘটনার আইনি পদক্ষেপ নিতে থানায় গেলে কোনো সহায়তা পাইনি। উল্টো সেখানে গিয়ে দেখি তারিকুল ইসলাম তরিকসহ তার সহযোগীরা থানায় বসে আছে। তারা আমাকে বলেছে থানা তাদের কিছু করবে না।

তিনি আরও জানিয়েছেন, বাড়ি দখলের বিষয়ে তার মেয়ের জামাতা ইতালি রাষ্ট্রদূতের দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছেন। 

নিজাম উদ্দিন জানান, পৈত্রিক সম্পত্তির আমার একক অংশে ২০১১ সালে সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে ৪ তলা বিল্ডিংয়ের প্ল্যান পাস করিয়ে একতলার এক ইউনিট কমপ্লিট করে বাবা, মা এবং স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। জমির খাজনা ও মিউটেশন আমার নামে। কাগজপত্রে কোথাও জসীম উদ্দিনের কোনো নাম নেই। আমার মা-বাবা মারা যাওয়ার পরে স্ত্রী-সন্তানও ইতালিতে নিয়ে আসি। খালি বাড়িতে আমার শাশুড়ি ও এক পরিবার ভাড়াটিয়া ছিল। ছাত্রদল নেতা তরিক আমার পৈত্রিক বাড়িতে আমার নির্মিত বাড়ি তার বোনের জামাতা জসীম উদ্দিনকে দখল করে দিয়েছেন। সে লোকজন নিয়ে এসে আমার শাশুড়িকে গালিগালাজ, মারধর ও ঘরে লুটপাট করে নামিয়ে দেন। আমি এ ঘটনায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইতালী রাষ্ট্রদূতের দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। 

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা তারিকুল ইসলাম তরিক বলেন, বাড়িটি নিয়ে দুই ভাই জসিম উদ্দিন ও নিজাম উদ্দিনের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তারা উভয়েই আমার আত্মীয়। এতদিন পুরো বাড়ি নিজাম উদ্দিন ব্যবহার করতেন। এখন সেখানে জসীম উদ্দিন উঠেছেন। আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। 

কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, আমি যতদূর জেনেছি বাড়ি দখলের কোনো ঘটনা ঘটেনি। দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। পুরো বাড়ি দখল করে একজন ছিল, এখন সেখানে আরেকজন উঠেছে। 

উল্লেখ্য, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও মিডিয়া সেলের সদস্য মোনায়েম মুন্নাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য করায় ২০২৪ সালের ২১ মার্চ বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম তরিককে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গির আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিল। অব্যাহতির আগে ১৮ মার্চ তারিককে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। মাস কয়েক আগে তরিককে পুনরায় পূর্বের পদে বহাল করা হয়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ