কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন টুপি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত নারীরা। সুই-সুতোর নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি নকশাদার টুপি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন জায়গা করে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় যাচ্ছে নারীদের তৈরি এসব টুপি।
এ শিল্পের মাধ্যমে ফুলবাড়ীর অনেক নারী স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
ঘরে বসেই টুপি তৈরি করে তারা অর্থ উপার্জন করছেন। যা তাদের পরিবারে এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। ফলে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতিই নয়, নারীদের আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী গ্রামের মায়া বেগমের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, কয়েকজন নারী সুই-সুতা হাতে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে টুপি তৈরিতে ব্যস্ত।
এখানকার নারীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কাজে দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং নিয়মিত কাজ করছেন। প্রায় ৪০ জন নারী বিভিন্ন নকশার টুপি তৈরি করছেন, যা দেশীয় বাজার ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
টুপি তৈরির মূল্য নির্ভর করে এর সূচিকর্ম ও নকশার ওপর। দীর্ঘদিন ধরে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মায়া বেগম জানান, প্রতিটি টুপি তৈরি করলে ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পাওয়া যায়।
দুই বছর ধরে এই কাজে যুক্ত খাদিজা বেগম বলেন, ‘আগে সংসারের খরচ চালানো খুব কষ্টকর ছিল। কিন্তু টুপি তৈরির কাজ শেখার পর এখন নিজেই আয় করতে পারছি। মাসে দুই থেকে তিনটি টুপি তৈরি করে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা আয় হয়। যা সংসার চালাতে অনেক সহায়তা করছে।’
আরেক নারী উদ্যোক্তা আদরী বেগম জানান, ‘অভাবের কারণে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো।
কিন্তু এখন ঘরে বসেই কাজ করতে পারছি, সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।’
নারীদের এই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে তালুক শিমুলবাড়ী ফকিরপাড়া গ্রামের বাবলু খন্দকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তার সহায়তায় অনেক নারী এখন নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন।
বাবলু খন্দকার বলেন, ‘আমি রোমানিয়া টুপি তৈরির উপকরণ সরবরাহ করি এবং তৈরি শেষে নির্ধারিত মজুরি দিয়ে টুপি সংগ্রহ করি। বর্তমানে আমার উদ্যোগের আওতায় ৮০০ নারী কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন।’