পাহাড়ি গ্রামে পানির কষ্টে মানুষ

আল নোমান শান্ত, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আল নোমান শান্ত, দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
পাহাড়ি গ্রামে পানির কষ্টে মানুষ
ছবি: কালের কণ্ঠ

শুকনো মৌসুমে পানি সংগ্রহে যেতে হয় মাইল খানেক দূরে। সেখানে পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়ার ময়লাযুক্ত ঘোলা পানি, কিংবা টিলার নিচে তিন চাকের (চাক্কি) তৈরি অগভীর কূপের ময়লা পানিই তাদের একমাত্র ভরসা। এমন চিত্রের দেখা মিলবে  সীমান্তবর্তী নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার পাহাড়ি গ্রামগুলোতে।

পাহাড় ও টিলা অধ্যুষিত এই উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে দুর্গাপুর সদর ইউনিয়ন ও কুল্লাগড়া ইউনিয়ন ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি অঞ্চল।

এখানকার বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালি মিলিয়ে হাজারো মানুষের বসবাস। কিন্তু এর মাঝে অনেকেই সুপেয় পানির তীব্র সংকটে ভুগছে। বিশেষ করে নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে এসব এলাকায় অগভীর নলকূপে পানি মেলে না। তখন তাদের ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ছড়া ও গর্তের জমা পানি।

আরো পড়ুন
সংস্কারের পরেও উঁচু-নিচু গর্তে ভরা সড়ক

সংস্কারের পরেও উঁচু-নিচু গর্তে ভরা সড়ক

জানা গেছে, দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের গোপালপুর, ভবানীপুর, ফান্দা, বারমারী, ভরতপুর, গাজিকোনাসহ ২০-২৫টি পাহাড়ি গ্রামে শুকনো মৌসুমে সাধারণ নলকূপ দিয়ে পানি আসে না। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ২০-৫০ ফুট নিচে পাথর থাকায় নলকূপ বা বৈদ্যুতিক পাম্প স্থাপন বেশ ব্যয়বহুল। স্থানীয়ভাবে রিং টিউবওয়েল বসানো হলেও শুকনো মৌসুমে আয়রনের কারণে তাও পানের অযোগ্য হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে খেতেও হচ্ছে সেই পানি।

এতে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয়রা।

রবিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সীমান্তবর্তী ভারত ঘেঁষা গ্রাম বাদামবাড়ী। সেখানে দিন আনে দিন খায় এমন হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের পক্ষে গভীর নলকূপ বসানো কিংবা গভীর কুয়া তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই বাড়ি থেকে অনেক দূরের পাহাড়ি ছড়া থেকে পানি নিতে যান তাদের বাড়ির নারীরা।

সেই পানি দিয়েই করতে হচ্ছে রান্না-বান্না, গোসলসহ সব ধরনের কাজ।

আরো পড়ুন
ছেলের অপরাধের শাস্তি বাবার ওপর, হত্যা চেষ্টার পর মেডিক্যালে ভর্তি

ছেলের অপরাধের শাস্তি বাবার ওপর, হত্যা চেষ্টার পর মেডিক্যালে ভর্তি

গ্রামগুলোতে গিয়ে বিশুদ্ধ পানির অভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবারগুলো জানায়, তাদের পানির কষ্ট করতে হচ্ছে। পাহাড়ি ছড়ার পানি আর গর্তে জমা ঘোলা পানিই এখন খেতে হচ্ছে। তা-ও এক-দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয়। সরকারিভাবেও কোনো রকম সহযোগিতা পাচ্ছে না তারা।

দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের বাদাম বাড়ি গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী লেমিতা তাজেল বলেন, পানি সংগ্রহের কষ্ট তার প্রায় ৪৮ বছরের। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে পাহাড়ের নিচে গর্ত করে দিনে কয়েকবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। বয়সের ভারে শরীর সায় না দিলেও দিনে কয়েকবার পাহাড় বেয়ে উঠানামা নামতে হয়।

গোপালপুর গ্রামের তৃষ্ণা নকরেক বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ি ছড়ার পানি ব্যবহার করছি। ওই পানি ছাঁকন করে তা দিয়েই রান্না-বান্না, খাবারসহ সব চলে। পানির জন্য খুবই কষ্ট করতে হচ্ছে।'

আরো পড়ুন
‘ক্ষমা চান’, সুশান্তের মৃত্যু মামলায় রিয়ার পক্ষে বললেন দিয়া মির্জা

‘ক্ষমা চান’, সুশান্তের মৃত্যু মামলায় রিয়ার পক্ষে বললেন দিয়া মির্জা

বাংলাদেশ জাতীয় হাজংয়ের সংগঠন সভাপতি পল্টন হাজং বলেন, এই ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাজ হয়নি। ফলে অস্বাস্থ্যকর পানি ব্যবহার করার ফলে তারা বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. কাজী আমান উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ইতিমধ্যে ওই গ্রামগুলোর বিষয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। পাহাড়ি এলাকায় পানিসংকট নিরসনে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।'

আরো পড়ুন
রিং পরানোর পর তামিমের অবস্থা অনুকূলে, বলছেন হাসপাতালের ডিরেক্টর

রিং পরানোর পর তামিমের অবস্থা অনুকূলে, বলছেন হাসপাতালের ডিরেক্টর

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

জবির ৩৫০ কর্মচারীদের ঈদ উপহার দিল ছাত্রশিবির

জবি প্রতিনিধি
জবি প্রতিনিধি
শেয়ার
জবির ৩৫০ কর্মচারীদের ঈদ উপহার দিল ছাত্রশিবির
ছবি: কালের কণ্ঠ

মহান স্বাধীনতা দিবস ও আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫০ কর্মচারীকে ঈদ সামগ্রী উপহার দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। বুধবার (২৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে কর্মচারীদের এ ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী নুরুল ইসলাম সাদ্দাম। 

তিনি বলেন, 'ইসলামী ছাত্রশিবিরের মানবিক ও কল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবেই আমরা বছরজুড়ে নানা উপলক্ষ্যে এমন উপহার সামগ্রী প্রদানের কর্মসূচি পালন করে থাকি।

অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ভাই ও বোনেরা শিক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে থাকেন। আমরা তাই আপনাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেছি।'

তিনি আরো বলেন, 'স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আয় বৈষম্যরোধে যাকাতভিত্তিক অর্থনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।'

শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং দৈনিক কাজ করেন তারা আসলে খুবই কম টাকা বেতন পান।

তাতে সংসার চালিয়ে ঢাকায় থেকে অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ঈদ আসলে সবার মনে একটি আনন্দের অনুভূতি নিয়ে আসে। আমরা চাই ঈদের সেই খুশি সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক। তাই বরাবরের মতোই এবারও আমরা কর্মচারীদের ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করেছি।
'

উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, 'ক্যাম্পাসে যারা নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন তারা নিম্ন বেতনের। আমরা তাদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছি। ক্যাম্পাসে কর্মচারীদের শীতবস্ত্র, রোজার ইদে উপহার সামগ্রী ও কুরবানীর গোশত বিতরণ এর আগেও আমরা করেছি। কিন্তু এবছর ছাত্রলীগ না থাকায় প্রকাশ্যে করার সুযোগ হয়েছে।'

অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু মুসা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ডক্টর আব্দুল মান্নান, জবি শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি সুলতান আহমেদ, অফিস সম্পাদক রবিউল ইসলামসহ বর্তমান শাখা সেক্রেটারিয়েটবৃন্দ।

মন্তব্য

ফেনীতে উদ্বোধন হলো জুলাই ২৪ শহীদ চত্বর

ফেনী প্রতিনিধি
ফেনী প্রতিনিধি
শেয়ার
ফেনীতে উদ্বোধন হলো জুলাই ২৪ শহীদ চত্বর
ছবি: কালের কণ্ঠ

জুলাই-আগস্ট এর গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যায় ফেনীতে নিহতদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ‘জুলাই ২৪ শহীদ চত্বর’। ফেনী সদর হাসপাতালের সামনে চৌরাস্তা মোড়ে নির্মিত এই শহীদ চত্বরে ফেনীতে আন্দোলনে নিহত ১০ জনের স্মৃতিফলক স্থাপন করে ফেনী পৌরসভা।  

শহীদ চত্বরে ‘জেনারেশন জি’ (ZG) ইংরেজি বর্ণের মাঝে বাংলাদেশের সবুজ মানচিত্র শোভা পাচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন এই চত্বরটি নির্মাণে প্রায় ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে করেছে ফেনী পৌরসভা।

 স্বাধীনতা দিবসের দিন বিকেলে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। 

এ সময় পৌর পরিষদের প্রশাসক স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো. বাতেন, শহীদদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আহত ও বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে এই চত্বরটি ‘শহীদ একরাম চত্বর’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৪ সালের নৃশংসভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে নিজ দলীয় লোকজন হত্যা করেছিল।

এ হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনো হয়নি।

মন্তব্য

টঙ্গীতে হঠাৎ আগুনে পুড়ল ২ বাস

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
শেয়ার
টঙ্গীতে হঠাৎ আগুনে পুড়ল ২ বাস
ছবি : কালের কণ্ঠ

টঙ্গীর একটি গ্যারেজে হঠাৎ আগুন লেগে পুড়ে গেছে দুটি বাস। পার্কিংয়ে থাকা বাস দুটিতে যাত্রী না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বুধবার(২৬ মার্চ) রাত ১১টার দিকে টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন খাপড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন খা পাড়া রোডে একটি গ্যারেজে পার্কিং করা অবস্থায় ভিক্টর পরিবহনের দুটি গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

প্রথমে একটি গাড়িতে আগুন লেগে গাড়ির ভেতরে সব কিছু পুড়ে গিয়ে পাশে পার্কিং করা অপর আরেকটি গাড়িতে আগুন লাগে। 

পরবর্তী সময়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই এলাকার লোকজনের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।

টঙ্গী পশ্চিম থানার  উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান কালের কণ্ঠকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

তালা ভেঙে বাসায় প্রবেশের চেষ্টা, দেখে ফেলায় গুলি ছুড়ে পলায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
তালা ভেঙে বাসায় প্রবেশের চেষ্টা, দেখে ফেলায় গুলি ছুড়ে পলায়ন
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থানা এলাকার উত্তর মুসলিমাবাদ সৈকত আবাসিক এলাকার জসিমের বিল্ডিংয়ের একটি বাসায় তালা ভেঙে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন দুই যুবক। এই সময় পাশের লোকজন ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করার পর গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তারা। বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, জসিম বিল্ডিংয়ের যে বাসার তালা ভাঙতে গিয়েছিল দুই যুবক ওই বাসায় কেউ ছিল না।

তারা তালা ভেঙে বাসায় প্রবেশের চেষ্টার সময় পার্শ্ববর্তী বাসার লোকজন  ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুরু করে। এসময় দুই যুবক গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হননি।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, যে বাসাটির তালা ভাঙতে গিয়েছিল সে বাসায় স্বামী-স্ত্রী থাকেন।

তারা গার্মেন্টেসে চাকরি করেন। কিন্তু তারা গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। এই সুযোগে দুই যুবক জসিম বিল্ডিংয়ের দোতলার একটি ভাড়া ঘরে প্রবেশের চেষ্টা করে। অস্ত্রধারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাসায় ডাকাতি নাকি অন্য কোনো কারণে প্রবেশের চেষ্টা করছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ