অনেক শিশু দেরিতে হাঁটে। শিশুকে দ্রুত হাঁটা শেখাতে কিছু নিয়ম পালন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামীমা ইয়াসমিন। লিখেছেন আতিফ আতাউর।
শিশুর দ্রুত হাঁটতে শেখা
অনলাইন ডেস্ক

পরিবারে নতুন শিশু আসার পর তাকে নিয়ে উচ্ছ্বাসের বন্যা বয়ে যায়। শিশুর প্রথম শব্দ করা, বসতে শেখা, হামাগুড়ি, হাসি-কান্না—সব কিছু ঘিরেই মা-বাবার মনে আনন্দের শেষ থাকে না। শিশু হামাগুড়ি দিতে শেখার পর নিজ থেকেই উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। একবার দাঁড়ানো শিখে গেলে শুরু হয় দুই পায়ে ভর করে হেঁটে চলার প্রাণান্তকর চেষ্টা।
শিশুদের হাঁটতে শেখার প্রথম পর্যায় হচ্ছে উঠে দাঁড়ানো। এরপর এক পা, দুই পা করে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে।
► শিশু দাঁড়ানো শেখার পর থেকেই সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে তাকে কাছে আসার জন্য দুই হাত বাড়িয়ে ডাকতে শুরু করুন। এক পা, দুই পা করে হাঁটতে তাকে উৎসাহ দিন।
► শিশু যদি কিছু ধরে দাঁড়াতে চায়, তবে তাকে তেমন কিছু আসবাব দিয়ে সাহায্য করুন। যত তাড়াতাড়ি দাঁড়ানো শিখবে, তত দ্রুত হাঁটাও শিখবে।
► শিশুকে হামাগুড়ি দিতে এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে উৎসাহ দিন।
► শিশুকে হাঁটতে উৎসাহ দিন।
► শিশু নিজ থেকে হামাগুড়ি, দাঁড়ানো ও হাঁটতে চাইলে বাধা দেবেন না। কোল থেকে নামতে চাইলে নামিয়ে দিন।
► বাসার আসবাবগুলো শিশুর হাঁটার পথে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে দিতে পারেন, যাতে সে হাঁটার পথে সাপোর্ট পায় এবং উৎসাহ পায়।
► আপনার হাতের আঙুল ধরে শিশুকে হাঁটতে সহায়তা করুন।
► শিশুর প্রিয় খেলনা তার নাগালের বাইরে রাখুন। এতে সে নিজ থেকেই খেলনার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবে। হাত-পা নাড়ানো শিখবে। এতে শিশুর শরীরের পেশিগুলো মজবুত হবে। দ্রুত হাঁটা শিখবে।
► দাঁড়ানো শিখে গেলে শিশুর হাত ধরে সামনে-পেছনে পা ফেলতে শেখান।
► শিশুর হাঁটতে শেখার প্রচেষ্টায় যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে এবং ব্যথা না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
► হাঁটার সময় শব্দ হয় এবং আলো জ্বলে—এমন জুতা কিনে দিন। এতেও সে হাঁটতে আগ্রহ পাবে।
► এমন খেলনা কিনে দিন, যেটা ঠেলে খেলতে হয়। এতে সে হাঁটতে উৎসাহী হবে। তবে শিশুকে দ্রুত হাঁটা শেখানোর জন্য ওয়াকার দেবেন না। এতে বরং হাঁটা শিখতে বিলম্ব হতে পারে।
► হাঁটার সময় শিশুর পড়ে যাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। পড়ে যাওয়া শিশুদের হাঁটতে শেখারই একটি ধাপ।
► শিশু যদি ১৩ থেকে ১৫ মাস পরও হাঁটতে না শেখে, তাহলে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান।
সম্পর্কিত খবর

কয়েল নাকি অ্যারোসল, মশা তাড়াতে কোনটি ব্যবহার করবেন
জীবনযাপন ডেস্ক

মশার মাধ্যমে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ ছড়ায়। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া। এসব রোগ থেকে বাঁচতে মশা নিধনে অনেকে নিশ্চয়ই ব্যবহার করে থাকেন কয়েল বা অ্যারোসল। তবে এই কয়েল বা অ্যরোসল, কোনোটিই মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, কয়েলের ধোঁয়া নিকোটিনের ধোঁয়ার মতোই ক্ষতিকর।
এ ছাড়া কয়েল ও অ্যারোসল আরো নানা সমস্যা সৃষ্টি করে। সেগুলো হচ্ছে—
শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা : কয়েলের ধোঁয়া ও অ্যারোসলে থাকা রাসায়নিক পদার্থ শ্বাসনালির প্রদাহ, হাঁপানি ও অন্যান্য শ্বাসজনিত সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি : কয়েলের ধোঁয়ায় থাকা রাসায়নিক পদার্থ দীর্ঘ মেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ত্বক ও চোখের জ্বালা : অ্যারোসল স্প্রে করলে প্রায়ই দেখবেন আপনার চোখ ও ত্বকে জ্বালা করছে, যা অ্যালার্জির মতো প্রতিক্রিয়া ঘটায়।
স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা : অ্যারোসলের বিষাক্ত কণা স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, যা স্নায়বিক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে।
বিকল্প পদ্ধতি
মশা তাড়ানোর জন্য সবচেয়ে ভালো হলো মশারির ব্যবহার করা। এ ছাড়া অ্যান্টি মশা লোশন, প্রাকৃতিক তেল বা ইলেকট্রিক মশার ব্যাট ব্যবহার করুন। এগুলো ব্যবহারে কোনো রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই।

শরীরের পাশাপাশি মনও ভালো রাখবে যেসব খাবার
জীবনযাপন ডেস্ক

প্রতিবছর ৭ এপ্রিল পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। কয়েক দিন আগেই দিনটি অতিবাহিত হয়েছে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে স্বাস্থ্য শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদদের মতে, আজকের সময়ে যেখানে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো মানসিক ব্যাধিগুলো বেশি হয়ে উঠেছে, সেখানে একটি ভালো খাদ্যাভ্যাস শুধু শরীরকেই সুস্থ রাখে না, মনকেও শান্ত ও সক্রিয় রাখে।
আজ এই প্রতিবেদনে এমন খাবার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, যা মানসিক ও শারীরিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আর এগুলো সহজেই আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, স্বাস্থ্য হলো সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতার একটি অবস্থা, যা কেবল রোগ ও দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয়। পুষ্টিবিদরা জানান, শরীরকে সুস্থ রাখার যে গুরুত্ব দেওয়া হয় তার থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর।
আখরোট : আখরোটে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোকে শক্তিশালী করে এবং স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৪-৫টি আখরোট খেলে মানসিক চাপ কমে এবং মেজাজ ভালো থাকে।
কিভাবে খাবেন
সকালে খালি পেটে ৪-৫টি আখরোট পানিতে ভিজিয়ে খান। এগুলো সালাদ বা স্মুদিতেও যোগ করতে পারেন।
ডার্ক চকোলেট : ডার্ক চকোলেট কেবল মেজাজই উন্নত করে না, বরং এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানসিক ক্লান্তি দূর করে এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করে।
কিভাবে খাবেন
দিনে একবার ২০-৩০ গ্রাম ডার্ক চকোলেট খান। তবে এটি কমপক্ষে ৭০% কোকো থাকা প্রয়োজন।
সবুজ শাক-সবজি : পালং শাক, মেথি ও সরিষার মতো সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট, আয়রন ও ভিটামিন-কে থাকে, যা মনকে তীক্ষ্ণ ও শরীরকে উদ্যমী রাখে।
কিভাবে খাবেন
এই সবজিগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় সবজি, পরোটা বা স্যুপ আকারে অন্তর্ভুক্ত করুন।
ডিম : ডিমে কোলিন নামক একটি উপাদান পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং ঘনত্ব উন্নত করে।
কিভাবে খাবেন
ব্রেকফাস্টে সেদ্ধ ডিম, অমলেট অথবা এগ-টোস্ট খেতে পারেন। দিনে ১-২টি ডিমই যথেষ্ট।
দই : দইয়ে থাকা প্রো-বায়োটিক পাকস্থলির পাশাপাশি মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। একটি সুস্থ অন্ত্র মনকেও শান্ত রাখে।
কিভাবে খাবেন
দুপুরের খাবারে এক বাটি দই খান অথবা স্মুদিতে মিশিয়ে নিন।
ফ্ল্যাক্স সিড : ফ্ল্যাক্স সিডে ওমেগা-থ্রি, ফাইবার ও লিগনান থাকে, যা হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্ক উভয়ের জন্যই উপকারী। এটি মেজাজের পরিবর্তন এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কিভাবে খাবেন
১ চা চামচ তিসির বীজ ভেজে গুঁড়া করে নিন এবং দই, পোরিজ বা শেকে মিশিয়ে খান।
বেরি : ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ও পেয়ারার মতো বেরিগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় এবং মানসিক ক্লান্তি দূর করে।
কিভাবে খাবেন
আপনি ব্রেকফাস্টে দই বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা চাইলে সকালের নাশতা হিসেবেও খেতে পারেন।
হলুদ : হলুদে পাওয়া কারকিউমিন মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় এবং মস্তিষ্কের কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে। এটি বিষণ্নতা ও উদ্বেগ দূরে রাখতেও সহায়ক।
কিভাবে খাবেন
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হলুদের দুধ পান করা একটি ভালো অভ্যাস। তাই ঘুমানোর আগে এভাবে দুধ খাওয়া উচিত।
সূত্র : ইটিভি

প্রতিদিন একটি নাশপাতি খেলে কী উপকার
জীবনযাপন ডেস্ক

স্বাস্থ্যের ভালোর জন্য প্রতিদিন একটি করে ফল খাওয়া জরুরি। এই তালিকায় আপনি রাখতে পারেন আপের বা নাশপাতি। তবে নাশপাতি যদি প্রতিদিন একটি করে খেতে পারেন তাহলে একাধিক উপকার পাবেন।
যেকোনো কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়।
নাশপাতি খাওয়ার উপকারিতা
ফাইবার সমৃদ্ধ নাশপাতি অন্ত্রের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে, ভালো ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে।
ওজন কমাতে যারা দিনে বেশি করে ফল খান তারা অবশ্যই এ তালিকায় রাখুন নাশপাতি।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও বেশ কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে নাশপাতির মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপকরণ।
নাশপাতির মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নাশপাতি খেতে পারেন। ত্বকে বলিরেখার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে নাশপাতি। অন্যদিকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো মজবুত করার জন্য রোজ পাতে একটি নাশপাতি রাখতে পারেন।
নাশপাতির মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম, যা খেয়াল রাখে আমাদের হৃদযন্ত্রের। কমায় ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা। কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকলে আমাদের শরীরে ভালোভাবে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তার ফলে কমে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি।
দৃষ্টিশক্তি ভালো করতে কাজে লাগে নাশপাতি। রোজ একটা করে ফল খেলে উপকার পাবেন। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও বেশ ভালো পরিমাণেই রয়েছে নাশপাতির মধ্যে।
তবে খুব বেশি পরিমাণে নাশপাতি খেলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- এমনিতে নাশপাতি খেলে ওজন কমে। তবে যেহেতু এই ফলে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম নয়, তাই বেশি পরিমাণে খেলে ওজন বাড়তে বাধ্য। তাই স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত নাশপাতি খেলেও পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
সূত্র : এবিপি লাইভ

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স কেন প্রতিদিন প্রয়োজন? জানুন কারণ
জীবনযাপন ডেস্ক

শরীর সুস্থ রাখতে পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম, যা ভিটামিন ও মিনারেলের মাধ্যমে পূর্ণ হয়। এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স একটি এমন গ্রুপ, যা বিভিন্ন ভিটামিনের সমন্বয়ে গঠিত। সব বয়সের মানুষের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের প্রতিটি ভিটামিন শরীরের নানা গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলীতে সাহায্য করে। যেমন লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করা, পেশী সুস্থ রাখা, এবং মস্তিষ্কের সঠিক কার্যকারিতা নিশ্চিত করা। এই ভিটামিনগুলোর মধ্যে ছয়টি প্রধান ভিটামিন রয়েছে—থায়ামিন, রাইবোফ্লাভিন, নিকোটিনামাইড, ক্যালসিয়াম প্যানটোথেনেট, পাইরিডক্সিন ও সায়ানোকোবালামিন।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের প্রতিটি ভিটামিনই পানিতে দ্রবণীয়।
ভিটামিন বি ১২ প্রধানত দুগ্ধজাত পণ্য ও আমিষে পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য ভিটামিন বি পাওয়া যায় ডিম, সবুজ শাকসবজি, বাদাম, সয়াবিন, মাশরুম, তিল বীজ ও অঙ্কুরিত শস্যে।
সূত্র : কলকাতা ২৪×৭