<p style="text-align: justify;">মাইগ্রেন একটি স্নায়বিক ব্যাধি, যা বারবার তীব্র মাথা ব্যথা এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন উপসর্গের মাধ্যমে শনাক্ত হয়। এটি বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করে এবং একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বদলে দিতে পারে। যেকোনো বয়সেই মাইগ্রেন হতে পারে। মাইগ্রেনকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়—অরাসহ মাইগ্রেন এবং অরা ছাড়া মাইগ্রেন।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>উপসর্গ</strong></p> <p style="text-align: justify;">মাথা ব্যথা : মাইগ্রেনে সাধারণত মাথার এক পাশে ব্যথা হলেও উভয় দিকেই হতে পারে। ব্যথা প্রায়ই মাঝারি থেকে তীব্র হয়। স্থায়ী হতে পারে কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন।</p> <p style="text-align: justify;">অরা : কিছু ব্যক্তি মাইগ্রেনের সময় বা এর আগে ‘অরা’ নামে চোখের সংবেদনশীলতা অনুভব করতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">ভিজ্যুয়াল অরাতে ফ্লাশিং লাইট, ব্লাইন্ড স্পট বা জিগজ্যাগ লাইনের মতো কিছু জিনিস দেখা যায়, যা অসাড়তার কারণ হতে পারে।<br /> বমি বমি ভাব ও বমি :  মাইগ্রেনে আক্রান্ত অনেক ব্যক্তি বমি বমি ভাব অনুভব করে। তীব্র ব্যথার সময় বমি হতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;">আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা : মাইগ্রেনের সময় আলো (ফোটোফোবিয়া) ও শব্দের (ফোনোফোবিয়া) প্রতি সংবেদনশীলতা খুব সাধারণ ব্যাপার।</p> <p style="text-align: justify;">ক্লান্তি ও মনোযোগহীনতা : মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তি ক্লান্ত অনুভব করতে পারে। কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতেও তার সমস্যা হতে পারে।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>প্রতিরোধ</strong></p> <p style="text-align: justify;">মাইগ্রেন প্রতিরোধে ট্রিগারগুলো শনাক্ত করে সেগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি। ব্যক্তিভেদে ট্রিগারগুলো ভিন্ন হতে পারে। সাধারণ ট্রিগারগুলোর মধ্যে রয়েছে মানসিক চাপ, কিছু খাবার ও পানীয় (যেমন—পনির, প্রক্রিয়াজাত মাংস, অ্যালকোহল), ঘুমের অভাব ও হরমোনের পরিবর্তন।</p> <p style="text-align: justify;">লাইফস্টাইল পরিবর্তন, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং রুটিনমাফিক ঘুমানোর অভ্যাস বারবার মাইগ্রেনের আবির্ভাব ও তীব্রতা কমাতে সহায়ক হতে পারে।<br />  <br /> <strong>চিকিৎসা</strong></p> <p style="text-align: justify;">ওষুধের ভূমিকা : গুরুতর ক্ষেত্রে প্রতিরোধের জন্য ওষুধও দিতে পারেন চিকিৎসক। মাইগ্রেনের চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো মাথা ব্যথা এবং এর সঙ্গে জড়িত উপসর্গগুলো থেকে মুক্তি দেওয়া। গুরুতর মাইগ্রেনের জন্য প্রায়ই ওষুধের প্রয়োজন হয়। রক্তনালিগুলোকে সংকুচিত করতে এবং প্রদাহ কমাতে কাজ করে ওষুধ।</p> <p style="text-align: justify;">লাইফস্টাইল পরিবর্তন : লাইফস্টাইল পরিবর্তন, যেমন—নিয়মিত সময়মতো ঘুমানো, মানসিক চাপ কমানো, হাইড্রেটেড থাকা এবং মাইগ্রেন ট্রিগার করে এমন খাবার এড়ানো মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে ভালো ফল দিতে পারে। কিছু মানুষ আকুপাংচারের মতো বিকল্প থেরাপির মাধ্যমে স্বস্তি খুঁজে পায়। এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ একজন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সহায়তা নিতে হবে।</p> <p style="text-align: justify;">জীবনে মাইগ্রেনের প্রভাব কমাতে ও প্রশমিত করতে চিকিৎসা পরামর্শ মেনে চলা অপরিহার্য।</p> <p style="text-align: justify;">পরামর্শ দিয়েছেন<br /> ডা. মুহিত মুকতাদির<br /> অ্যাসিস্ট্যান্ট কো-অর্ডিনেটর এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং ডিপার্টমেন্ট, দীপ আই কেয়ার ফাউন্ডেশন, রংপুর</p>