<article> <p style="text-align: justify;">দেশের গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলন করা গ্যাসের ৬০ শতাংশই মার্কিন বহুজাতিক কম্পানি শেভরন সরবরাহ করছে। এবার দেশের সমুদ্রেও তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এই কম্পানি। বর্তমানে সিলেটে তিনটি গ্যাসক্ষেত্রের ৩৫টি কূপ থেকে দৈনিক এক হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে সরবরাহ করছে শেভরন। বিবিয়ানায় নতুন করে ২৭ ও ২৮ নম্বর কূপ খননের পাশাপাশি আরো বেশ কিছু এলাকায় মার্কিন এই কম্পানি গ্যাস অনুসন্ধানের পরিকল্পনা নিয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">গতকাল রবিবার বিকেলে সিলেটের হবিগঞ্জে বিবিয়ানায় শেভরন পরিচালিত গ্যাস ফিল্ড পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেভরন ২৮ বছর ধরে বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলনে কাজ করছে। এখন তারা সমুদ্রেও কাজে আগ্রহী। তারা ডাটা সংগ্রহ করেছে। দরপত্রে অংশ নিতে আগ্রহী।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">নসরুল হামিদ বলেন, দেশের গ্যাসের চাহিদার অর্ধেকের বেশি শেভরন সরবরাহ করছে। একসময় শেভরন দৈনিক এক হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করেছে। বর্তমানে উৎপাদন কমে এক হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমেছে। শেভরন নতুন এলাকায় অনুসন্ধান শুরু করেছে। তারা আশা করছে, এখানে বড় মজুদ পাওয়া যেতে পারে। এ জন্য একাধিক কূপ খনন করছে শেভরন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">শেভরন যে পরিমাণে গ্যাস তুলতে পারছে, বেশি মজুদ নিয়েও দেশি কম্পানিগুলো কেন সেই পরিমাণ গ্যাস তুলতে পারছে না—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট গ্যাস ফিল্ডসহ দেশি কম্পানিগুলোকে শেভরনের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বলেছি।’</p> <p style="text-align: justify;">শেভরনকে ৬০ বর্গকিলোমিটার নতুন যে এলাকা দেওয়া হয়েছে, সেখানে ১.৬ ট্রিলয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস থাকতে পারে। এখানে গ্যাসের দাম কি আগের চুক্তি অনুসারেই হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, এ বিষয়ে একটা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে, তারা এটি যাচাই-বাছাই করছে। শেভরনকে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। শেভরন ও পেট্রোবাংলার আইনজীবীরা বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে দেখছেন। আগে স্বাক্ষরিত (১৯৯৩) পিএসসি (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) অনুসারেই এই বাস্তবায়ন হবে নাকি নতুন পিএসসি করা হবে, তার বিশ্লেষণ চলছে।</p> <p style="text-align: justify;">গতকাল দুপুরে সিলেটের রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ২ ও ৯ নম্বর কূপ থেকে নতুন করে গ্যাস সরবরাহ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, সিলেট গ্যাস ফিল্ড কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ২ ও ৯ নম্বর কূপ থেকে দৈনিক ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এখন এই গ্যাস ফিল্ডটির দৈনিক উৎপাদন বেড়ে দাঁড়াল ৬৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এর আগে গতকাল সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে (ওসমানীনগরের দয়ামীর) মেসার্স হাজি মাসহুদ আলী মডেল পেট্রল পাম্প উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী। নসরুল হামিদ বলেন, ‘সারা দেশে জ্বালানি তেলের মডেল ফিলিং স্টেশন করা হবে। পুরনোগুলো এখনই বন্ধ করা হচ্ছে না, আমরা চাই তারাও এগিয়ে আসুক। মডেল পেট্রল পাম্পে অনেক সুবিধা থাকবে।’</p> <p style="text-align: justify;">প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালে বাংলাদেশের পেট্রল পাম্পের নীতিমালা করা হয়েছে। শহরে কেমন হবে, হাইওয়ের পাশে কেমন হবে, গ্রামীণ এলাকায় কেমন হবে। এ জন্য আলাদা নকশা করা হয়েছে। প্রথম ধাপে হাইওয়ে সড়কের পাশে আটটি মডেল পাম্প করা হচ্ছে, তার মধ্যে ছয়টি চালু হয়েছে। আমরা অনুমোদন দিয়েছি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে।’</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) মুজিববর্ষ উপলক্ষে কয়েকটি মডেল পেট্রল পাম্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। দেশের প্রচলিত পেট্রল পাম্পে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর মতো গ্রাহকসেবার ব্যবস্থা থাকে না। কিন্তু মডেল পেট্রল পাম্পগুলোতে সেবার সব আয়োজন থাকবে। যাত্রীরা লম্বা রাস্তা ভ্রমণ করতে গিয়ে যাতে ক্লান্তি লাগলে বিশ্রাম নিতে পারে সে ব্যবস্থাও থাকছে এতে। সাধারণত ইউরোপ ও আমেরিকার স্টেশনগুলোতে এ ধরনের ব্যবস্থা বিদ্যমান।</p> </article>