ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

এটিএম বুথের টাকা যেন সোনার হরিণ

  • ► নগদ টাকার সংকটে এটিএম বুথে টাকা সরবরাহ বন্ধ
  • ► এটিএম বুথে লেখা ‘আউট অব সার্ভিস’
  • ► টাকা পৌঁছাতে পারছে না সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান
  • ► ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ওঠানো যাবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এটিএম বুথের টাকা যেন সোনার হরিণ
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। জরুরি প্রয়োজনে গতকাল শনিবার টাকা তুলতে গিয়ে ৫০টির বেশি এটিএম বুথে গিয়ে বিমুখ হয়েছেন। হেঁটে ও রিকশায় কচুক্ষেত, মিরপুর-১৪ ও মিরপুর-১০ এলাকার বিভিন্ন এটিএম বুথে গেছেন তিনি। এভাবে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ঘুরেও টাকা তুলতে পারেননি।

নিজ ব্যাংকের বুথে টাকা না পেয়ে আরো ৯টি ব্যাংকের এটিএম বুথে গেছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এই গ্রাহক। বেশির ভাগ এটিএম বুথেই লেখা ‘আউট অব সার্ভিস’। কোথাও কোথাও যান্ত্রিক ত্রুটি বা কারিগরি ত্রুটির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে ব্যাংক।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এটিএমে টাকা পৌঁছে থাকে।

দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষের এই সেবা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এটিএমে টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। তাই দেশজুড়ে বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএমসেবা বন্ধ। যতটা না টাকার সংকট, তার চেয়ে বেশি নিরাপত্তার আশঙ্কায় ব্যাংকগুলো তাদের এটিএম কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছে।

চলমান পরিস্থিতিতে টাকা পরিবহনের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না অনেক ব্যাংক ও এটিএমে অর্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও চাহিদা অনুযায়ী নগদ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকের এটিএম বুথে টাকা সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান সিকিউরেক্স লিমিডের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ (গতকাল) আমরা এক টাকাও সরবরাহ করতে পরিনি। আমাদের ভল্টে আর টাকা নেই। বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা ও বাংলাদেশ ব্যাংকও টাকা দিচ্ছে না।

স্বাভাবিক সময়ে আমাদের কম্পানি প্রতিদিন ২৫০ কোটি টাকা সরবরাহ করলেও আজ কোনো টাকাই দিতে পারিনি।’ নগদ টাকার সংকট ও নিরাপত্তার ঝুঁকি এর অন্যতম কারণ বলে জানান তিনি।

গতকাল রাজধানীর মতিঝিল ও দিলকুশা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইসলামী ব্যাংক, এনসিসি, এক্সিম, প্রাইম, উত্তরা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের এটিএম বুথগুলো বন্ধ। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়ও একই অবস্থা। এই এলাকার এসআইবিএল, ইবিএল, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, যমুনা ও ব্যাংক এশিয়ার কোনো বুথেই টাকা নেই।

জানতে চাইলে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে তৃতীয় পক্ষের এই সেবা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অনেক ব্যাংকের এটিএমে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব হয়নি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল মওলা কালের কণ্ঠকে বলেন, দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে এটিএম বুথগুলোতে টাকা পাঠানো যাচ্ছে না। নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুত ব্যাংকের সমস্যা দূর হবে।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যবিদবস বৃহস্পতিবার ব্যাংকের অনেক শাখা বন্ধ রাখতে দেখা যায়। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধান দরজা বন্ধ রাখতে দেখা গেছে রাজধানীর কোনো কোনো ব্যাংকের। বিকল্প দরজা দিয়ে যাওয়া-আসা করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা ও গ্রাহকরা। ব্যাংকাররা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছেন তাঁরা। যদি কোনো শাখায় নিরাপত্তা ঝুঁকি অনুভূত হয়, তাহলে ব্যাংক চাইলে সেসব এলাকার শাখা ও এটিএম বুথ বন্ধ রাখতে পারবে।

এ বিষয়ে পদত্যাগ করার আগের দিন (৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমান জানান, এখনো দেশে স্বাভাবিক অবস্থা আসেনি। বিভিন্ন দিকে বিভিন্ন দুর্ঘটনার কথা শোনা যাচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যাংক কোনো শাখা বা কোনো এটিএম বুথের নিরাপত্তার ঝুঁকি মনে করে, তাহলে সেটি বন্ধ রাখতে পারবে। এমন পরিস্থিতি বেশিদিন থাকবে না। আশা করি, খুব দ্রুত স্বাভাবিক লেনদেন শুরু হবে সব ব্যাংক ও এটিএম বুথগুলোতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাস শেষে দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের মোট এটিএমের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৪২৮। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৯ হাজার ৪০৯টি আর গ্রামাঞ্চলে চার হাজার ১৯টি। এটিএম ছাড়া সিআরএমের (ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন) মাধ্যমেও নগদ টাকা উত্তোলন করা যায়। দেশের বেসরকারি খাতের ব্র্যাক, সিটি, ঢাকা ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক এখন এটিএমের বদলে সিআরএমের প্রতি ঝুঁকছে। সিআরএমে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি নগদ জমারও সুযোগ রয়েছে। এ কারণে ধীরে ধীরে সিআরএমের সংখ্যা বাড়ছে। গত মে মাস শেষে দেশে সিআরএমের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫০। এসব সিআরএমের বেশির ভাগই শহরাঞ্চলে, তিন হাজার ৯৮৫টি।

গত ৫ আগস্ট রাজধানীর অনেক থানা খালি করে চলে যায় পুলিশ। পরদিন থেকে তারা কর্মবিরতির ডাক দিলে নিরাপত্তাহীনতার পরিবেশ তৈরি হয়।

ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ওঠানো যাবে

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তৎপরতা কমে যাওয়ায় দেশব্যাপী নিরাপত্তা সংকট দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকের তারল্য সংকট নিরসন ও নিরাপত্তার স্বার্থে এক দিনে গ্রাহককে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকার বেশি সরবরাহ না করতে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অর্থাৎ চলতি সপ্তাহে দৈনিক একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা তুলতে পারবেন।

গতকাল শনিবার ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাঠানো এক জরুরি বার্তায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। একাধিক ব্যাংক থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক নগদ টাকা উত্তোলন করতে না পারলেও যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংক শাখায় নগদ পরিবহনের নিরাপত্তা সমস্যার কারণে, অনুগ্রহ করে আগামী সপ্তাহে দুই লাখের বেশি নগদ তোলার অনুমতি দেবেন না। পাশাপাশি চেকে লেনদেনের ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। একই সঙ্গে যেকোনো সন্দেহজনক লেনদেন বন্ধ করতে ব্যাংকগুলোকে সচেষ্ট হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তথ্য বলছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ কিছুটা বেড়ে যায়। বিশেষ করে আওয়ামীপন্থী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী পরিবার থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ দেখা যায়। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহ করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার এক লাখ টাকার বেশি উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সাবেক সিআইডিপ্রধান

সহকর্মীদের যৌন হয়রানির প্রমাণের পরও ছিলেন বহাল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সহকর্মীদের যৌন হয়রানির প্রমাণের পরও ছিলেন বহাল
মোহাম্মাদ আলী মিয়া। ফাইল ছবি

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ দোসর ও গোপালগঞ্জের পুলিশ লীগের ক্ষমতাধর সদস্য পুলিশের অপরাধ বিভাগকে (সিআইডি) ব্যবহার করেন বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া সিআইডির সাবেক প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মাদ আলী মিয়া। 

চাকরি জীবনে ওয়ানম্যান আর্মি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। নানা অপকর্মে জড়িত দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার নারী পুলিশ সদস্যদের যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। যৌন হয়রানির প্রমাণ হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তৎকালীন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।

বারবার অপরাধ করেও পার পেয়ে গেছেন তিনি।

ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নাজেহাল করতে, শেখ হাসিনাকে খুশি করতে সিআইডির প্রভাব খাটিয়ে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি। 

মামলা বাণিজ্য করে হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া মোহাম্মাদ আলী ঘুষ আদায়ে বিশেষ সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সেই সিন্ডিকেটের তিনি প্রধান ছিলেন।

আলোচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় কারসাজিতে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

গত ১৩ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মোহাম্মাদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে, দুদকের একাধিকবার অভিযোগ জমা পড়লেও কোনো এক অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়নি।

সিআইডির ক্ষমতাধর সাবেক এই কর্মকর্তা দেশে লুকিয়ে আছেন না বিদেশে পালিয়ে গেছেন তার কোনো হদিস নেই সরকারের কোনো সংস্থার কাছে।

পুলিশ বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ৫ আগস্টের পর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার হলেও সাবেক সিআইডি প্রধান এখনো গ্রেপ্তার হননি। 

পাসপোর্ট বাতিল, বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও অবৈধ সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হয়নি। একটি বিশেষ মহল তাকে রক্ষার চেষ্টা করছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়ে ঘুষ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, অনিয়ম-দুর্নীতি, সিআইডি সদর দপ্তরে নিজ বলয় তৈরি, আইনবহির্ভূত কার্যক্রম, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নিজের পৈতৃক সম্পদে পরিণত করেছিলেন সংস্থাটির সাবেক প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া। 

পুলিশের এই অতিরিক্ত আইজিপি সম্প্রতি বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন সিআইডির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা।

 

এতদিন প্রভাব খাটিয়ে যাদের ক্ষমতা খর্ব করে রেখেছিলেন তিনি। ড. মোহাম্মাদ ইউনূসকে মামলার জালে জড়িয়ে নাজেহাল করার কারিগর তিনি। বাড়ি গোপালগঞ্জ হওয়ায় পুলিশের শীর্ষস্থানগুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রভাব খাটিয়ে। 

সিআইডিতে প্রচলিত রয়েছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটিকে ‘মগের মুল্লুক’ বানিয়ে রাখতেন। ধরাকে সরাজ্ঞান করা মোহাম্মদ আলী মিয়া দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।

দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, বিরোধী মতের লোকজনকে জিম্মি করে ক্ষমতার চরম অপব্যবহার ছিল তার অবৈধ অর্থের উৎস।

অভিযোগ রয়েছে, মামলা রুজু, অভিযান, তদন্তের সিদ্ধান্ত থেকে নিষ্পত্তি পর্যন্ত আইনবহির্ভূতভাবে নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতেন সাবেক সিআইডি প্রধান। তার অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ‘টুঁ’ শব্দ করারও সুযোগ ছিল না। 

তার এই সিন্ডিকেটের ‘মিডল ম্যান’ ছিলেন সিআইডি সদর দপ্তরে বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো-পূর্ব) এ, কে, এম এমরান ভুঞা। দুই বছর সিআইডিপ্রধান থাকাকালে তিনি কোনো নিয়মনীতিকেই পরোয়া করেননি। পিছপা হননি বিগত সরকারের ‘প্রেসক্রিপ্টেড’ আজ্ঞা পালনে। 

বিশেষ করে ওই সরকারের ‘অপছন্দ’ ব্যক্তিদের শায়েস্তা করতে নানা কূটকৌশলে সিআইডিকে ব্যবহার করতেন তিনি। তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন। 

আর অবৈধ উপার্জনের অর্থ দিয়ে নিজের ক্ষমতা বলয় সবসময় টিকিয়ে রাখতেন। অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদ আলী মিয়া নিজের সেই সিন্ডিকেটে কতিপয় অধস্তন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরও যুক্ত করেন। তাদের দিয়ে কয়েকশ ভুয়া অভিযোগ এনে তদন্ত করার নামে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকা কামিয়েছেন।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে মোহাম্মদ আলী মিয়ার অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর আফতাবনগর, বাড্ডা, মিরপুর, পূর্বাচলসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। এসব জায়গায় প্লট, ফ্ল্যাটসহ নানা সম্পদ রয়েছে তার।

লন্ডনে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা, মালয়েশিয়া ও দুবাইতেও ব্যবসা রয়েছে। লন্ডনে এক বাংলাদেশির রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশীদার তিনি। মোহাম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে আফনান লাবিব লন্ডন, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের ব্যবসা দেখভাল করেন।

তিনি মালয়েশিয়া, দুবাই ও লন্ডনে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন। অনুসন্ধানে ঢাকায় মোহাম্মদ আলীর বেশকিছু দামি জমির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রাজধানীর আফতাবনগর-সংলগ্ন আনন্দনগরে ১২.৩৭ শতক জমির একটি প্লট।

এটি বাড্ডা মৌজার ৪৪৩২৫ খতিয়ানের জমি। দাগ নম্বর ১৮১৩০। মিরপুর বাউনিয়া মৌজায় ৪০৭২৩ নম্বর খতিয়ানের ৩০ নম্বর দাগে ৮.২২ শতক জমি রয়েছে তার। পূর্বাচলে ৫ কাঠা ও কেরানীগঞ্জে ৫ কাঠার প্লট রয়েছে। এ ছাড়া বেনামে একাধিক ফ্ল্যাটও রয়েছে।

এদিকে, সাবেক সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। গত ১৩ মার্চ মোহাম্মদ আলী মিয়া ও তার দুর্নীতিতে সহায়তাকারী পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। 

এই তালিকায় সিআইডির প্রশাসন শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম, বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মহানগর পশ্চিম) এ কে এম ইমরান ভূঁইয়া, সাইবার ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, পরিদর্শক মানব শাহাজাদা ও পরিদর্শক মনিরুজ্জামান রয়েছেন। 

দায়িত্ব থাকার সময় গত দু’বছরে তার নির্দেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় মূল আসামিদের নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলাটি অন্যতম। 

তা ছাড়া অনেক মামলায় তদন্তে নাম আসা আসামিদের বাদ দিয়ে চার্জশিট দেওয়া, সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও মামলায় আসামি করা, এমন অনেক অভিযোগ আছে মোহাম্মদ আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। তার অনৈতিক নির্দেশনা মেনে যেসব কর্মকর্তা কাজ করতে রাজি হননি তাদের হয় বদলি অথবা ডেকে নিয়ে হেনস্তা করতেন। 

অনুসন্ধান, তদন্ত, আসামি গ্রেপ্তার সবই মোহাম্মদ আলীর পছন্দ অনুযায়ী করতে হতো। ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পর্যন্ত কারও কথা বলার ক্ষমতা ছিল না। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে ২০২৩ সালের শুরুর দিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী।

ড. ইউনূসকে হয়রানি না করার জন্য কিছু কর্মকর্তা বাধা দিলে মোহাম্মদ আলী তাদের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানান এবং সিআইডির মানিলন্ডারিং শাখায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানোর চিঠি ইস্যু করেন।

গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট মোহাম্মদ আলী সিআইডি কার্যালয়ে এসে ড. ইউনূসের বিষয়ে অনুসন্ধানসংক্রান্ত সব কাগজপত্র নিয়ে যান। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় প্রথম দিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন বিসিএস ২৪ ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত পুলিশ কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম। তিনি ওই মামলায় মোহাম্মদ আলীর কথামতো বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নাম বাদ দিয়ে চার্জশিট দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

অথচ গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলায় সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হানুল ইসলাম অনেক দূর তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যান। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কার কী ভূমিকা ছিল সবকিছু তিনি বের করেন দীর্ঘ তদন্তে। 

২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত হিসেবে মামলার তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রভাবশালী ১৪ কর্মকর্তার নাম উঠে আসে সিআইডির তদন্তে। 

মোহাম্মদ আলী মিয়ার অন্যতম সহযোগী ও ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন বিসিএস ২৭ ব্যাচের পুলিশ কর্মকর্তা ইমরান ভূইয়া। 

এই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় এএসপি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তার বিরুদ্ধে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করার অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

নিজেকে ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এবং বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দমনে পারদর্শিতার খতিয়ান তুলে ধরে বিভাগীয় মামলা থেকে রেহাই পান তিনি। এরপর পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিও বাগিয়ে নেন ইমরান। 

সাবেক সিআইডিপ্রধান মোহাম্মদ আলীর সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য ছিলেন এই ইমরান। তাকে সিআইডিতে নিয়ে আসেন মোহাম্মদ আলী নিজে। 

সিআইডির ফরেনসিক ইউনিটে পদায়ন করা হলেও তিনি আরও দুটি ইউনিটের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ আলীর কৃপায়। মূলত ইমরান ভূইয়া ছিলেন মোহাম্মদ আলীর ঘুষের টাকার ক্যাশিয়ার।

মন্তব্য

আলোচিত-১০ (১১ এপ্রিল)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

লোডশেডিং হলেও গ্রামে নয়, প্রথমে ঢাকায় : ফাওজুল কবির

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
লোডশেডিং হলেও গ্রামে নয়, প্রথমে ঢাকায় : ফাওজুল কবির
ছবি: কালের কণ্ঠ

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, ‌‌‘রমজানে লোডশেডিং ছিল না। তবে কোথাও কোথাও বিভিন্ন সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ ছিল না। নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা চলছে।’

তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এবার গরমে অসহনীয় লোডশেডিং হবে না।

এবার লোডশেডিং শুধু গ্রামে হবে না, যদি লোডশেডিং করা হয়, তাহলে প্রথমে ঢাকায় করা হবে।’

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে আয়োজিত মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি ট্রেন, বিদুৎসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাব দেন ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, ‘কোচ ও ইঞ্জিন সংকটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে।

কোচ ও ইঞ্জিন বাড়লে চট্টগ্রাম-চুয়েটসহ বিভিন্ন স্বল্প দূরত্বের জায়গায় কমিউটার ট্রেন সার্ভিস ব্যবস্থা করা হবে। ট্রেনের সার্ভিস বাড়াতে ইঞ্জিন ও কোচের সংখ্যা বাড়াতে হয়। এজন্য আমরা চেষ্টা করছি। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমিও চীনে গিয়েছিলাম।
সেখানে চীনের ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টারের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে এবং আমরা আলোচনা করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ২০০ কোচের জন্য একটি অর্ডার দেওয়া আছে। একটি দল এ মাসে যাবে। যাতে এ কোচগুলো আসা শুরু হয়। লোকোমোটিভ কেনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।

এত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা কমিউটার ট্রেন চালু করেছি। একটি জয়দেবপুর-ঢাকা, আরেকটি ভৈরব-ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা।’

জলাবদ্ধতার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজের কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তবে যেসব খাল পরিষ্কার করা হয়েছে সেগুলোতে আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এটা থেকে বুঝা যাচ্ছে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারিনি। বিভাগীয় কমিশনার মতবিনিময়সভা করবে এলাকায় এলাকায়। আমরা চেষ্টা করছি, ৩০ হাজার ডাস্টবিন দেওয়ার জন্য। চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন বিনগুলো বসাবে।’

উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘মতবিনিময়সভায় উদ্বুদ্ধ এবং বিন দেওয়ার পরও যদি ময়লা যত্রতত্র ফেলে তাহলে মোবাইল কোর্ট করা হবে। জলাবদ্ধতা যে এবার হবে না, তা নয়; বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করবে।’

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন প্রমুখ।

মন্তব্য

এশিয়ায় আস্থা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা সিআইসিএ’র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এশিয়ায় আস্থা অর্জনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা সিআইসিএ’র
সংগৃহীত ছবি

এশিয়ায় আস্থা তৈরির পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেছেন কনফারেন্স অন ইন্টারেকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার্স ইন এশিয়ার (সিআইসিএ) মহাসচিব কাইরাত সারিব।

শনিবার (১১ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তুরস্কের আনাতোলিয়ায় ‘আনাতোলিয়া ডিপ্লোমেসি ফোরাম (এডিএফ) ২০২৫’ সম্মেলনের ফাঁকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে এক বৈঠকে সিআইসিএ মহাসচিব এ কথা বলেন।

বৈঠকে বাংলাদেশ ও সিআইসিএ-র মধ্যে সম্পর্কের সকল দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সিআইসিএ’কে একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক সংস্থায় রূপান্তরে মহাসচিবের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তিনি বাংলাদেশের খাতভিত্তিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিআইসিএ’র যোগাযোগ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন, কারণ এটি বিদ্যমান সম্পর্ক জোরদারের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

উভয় পক্ষই বিদ্যমান কর্মপ্রচেষ্টার মাত্রা আরো উন্নত করতে এবং আগামী দিনে সহযোগিতার নতুন নতুন পথ অন্বেষণে সম্মত হয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগানের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘রিক্লেইমিং ডিপ্লোমেসি ইন এ ফ্র্যাগমেন্টেড ওয়ার্ল্ড’ প্রতিপাদ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী এডিএফ ২০২৫ আজ আনাতোলিয়ায় শুরু হয়েছে।

এবারের প্রতিপাদ্য ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক বিভক্তির মধ্যে কূটনীতিকে একটি স্থিতিশীল শক্তি হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার প্রতিফলন ঘটায়।

২০টির বেশি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, অর্ধশতাধিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ৭০ জনেরও বেশি মন্ত্রী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রায় ৬০ জন জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীসহ চার হাজারেরও বেশি অতিথি এই ফোরামে অংশ নেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ