<p style="text-align:justify">ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এবারও একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিবকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত চারবারের মতো একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, একজন সাবেক বিচারক, একজন নারীসহ চারজনকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সিইসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে।</p> <p style="text-align:justify">সার্চ কমিটির কাছে বিএনপি যে কয়েকটি নামের প্রস্তাব দিয়েছিল, সেই তালিকায় এ এম এম নাসির উদ্দীনের নাম ছিল। অন্য চার নির্বাচন কমিশনার হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের নিয়োগ দিয়ে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="দাম কমেছে পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির, এখনো চড়া আলু" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732243190-95d8c4f3fea55dafabeaaa6d8eae5f7a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>দাম কমেছে পেঁয়াজ-সবজি-মুরগির, এখনো চড়া আলু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/11/22/1449351" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">সিইসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি সদয় হয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগদান করেছেন। অপর এক প্রজ্ঞাপনে সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে দেওয়া ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি চার কমিশনারকে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">গত ৩১ অক্টোবর ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি গঠন করে সরকার। ছয় সদস্যবিশিষ্ট সার্চ কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।</p> <p style="text-align:justify">নাম প্রস্তাব করার জন্য কমিটিকে ১৫ কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়। অনুসন্ধান কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিতে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করে। সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত নামের তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি এই পাঁচজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বেছে নেন।</p> <p style="text-align:justify">দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এ এম এম নাসির উদ্দীনকে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কী হবে অটোচালকদের জীবিকার?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732242733-4bddfe402e8f2e6456125d84600d3049.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কী হবে অটোচালকদের জীবিকার?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/22/1449348" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">দেড় মাস ধরে শূন্য থাকা নির্বাচন কমিশনে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের শপথ গ্রহণের তারিখ গতকাল জানানো হয়নি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে।</p> <p style="text-align:justify">নতুন সিইসির পরিচয় ও প্রতিক্রিয়া : নতুন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীনের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করে তিনি শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে বিসিএস ৭৯তম ব্যাচে তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। নাসির উদ্দীন ২০০৪ সালে তথ্যসচিব, এরপর জ্বালানি সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।</p> <p style="text-align:justify">নিয়োগ পাওয়ার পর তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ৭১ বছর বয়সী নাসির উদ্দীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা করার দরকার, তা করব ইনশাআল্লাহ। আমাদের নির্বাচনের ইতিহাস ভালো না। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এই নির্বাচনের জন্য মানুষ গুম, খুন, হত্যার শিকার হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এই ভোটারাধিকার আদায় করতে গিয়ে গত জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছেন, অনেকে হাত, পা, চোখ হারিয়েছেন। তাদের রক্তের সঙ্গে তো আমরা বেঈমানি করতে পারব না। তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারি, তাহলে তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ৮ ক্রিকেটার নিষিদ্ধ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732243293-ab1763b8defdbcd164681b44c096b05c.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ৮ ক্রিকেটার নিষিদ্ধ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/sport/2024/11/22/1449352" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">নতুন সিইসি আরো বলেন, ‘সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলাম। সেখানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবেও সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা থাকবে যাতে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি না হয়। আশা করি সফল হব। অতীতেও অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল, সামনেও হয়তো অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। সামনে চ্যালেঞ্জ আরো অনেক বেশি। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগোতে হবে। দায়িত্ব যখন আসছে, সবার সহযোগিতা নিয়ে আমাদের সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">আগের চার সিইসিও ছিলেন সাবেক সচিব : দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই দেশের প্রথম নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি মো. ইদ্রিস। এরপর বিচারপতি এ কে এম নুরুল ইসলাম, বিচারপতি চৌধুরী এ টি এম মাসুদ, বিচারপতি সুলতান হোসেন খান, বিচারপতি মো. আবদুর রউফ, বিচারপতি এ কে এম সাদেক, মোহাম্মদ আবু হেনা, এম এ সাঈদ, বিচারপতি এম এ আজিজ, ড. এ টি এম শামসুল হুদা, কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নুরুল হুদা ও সর্বশেষ কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পান।</p> <p style="text-align:justify">তাদের মধ্যে সাতজন ছিলেন বিচারপতি এবং ছয়জন ছিলেন সাবেক সচিব। ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সাবেক বিচারপতিরাই সিইসি পদে নিয়োগ পেয়ে আসছিলেন। এর পরিবর্তন হয় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের পর। ওই সময় বিচারপতি এ কে এম সাদেক পদত্যাগ করেন এবং সিইসি পদে প্রথমবারের মতো একজন সাবেক সচিব (মোহাম্মদ আবু হেনা) নিয়োগ পান।</p> <p style="text-align:justify">আবু হেনার পর নিয়োগ পান সাবেক সচিব এম এ সাঈদ। এরপর ২০০৫ সালের ২০ মে আপিল বিভাগে কর্মরত একজন বিচারপতি (বিচারপতি এম এ আজিজ) সিইসি হিসেবে নিয়োগ পেলেও ব্যাপক আন্দোলনের মুখে ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর পরের চার প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন সাবেক সচিব। এবারও একজন সাবেক সচিব এ দায়িত্ব পেলেন।</p> <p style="text-align:justify">পর পর পাঁচবার একই ছক : নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের বিশ্লেষণ, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া পর পর চারটি কমিশন প্রায় একই ছকে গঠন করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে সরকারের একজন সাবেক সচিব, নির্বাচন কমিশনার পদে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা এবং একজন সাবেক বিচারককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="জুলাইয়ের পর থেকে বন্ধ ভাতা, বিপাকে দরিদ্র জনগোষ্ঠী" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732240011-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>জুলাইয়ের পর থেকে বন্ধ ভাতা, বিপাকে দরিদ্র জনগোষ্ঠী</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/22/1449345" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">বিদায়ি কে এম নুরুল হুদা কমিশনে দেশে প্রথমবারের মতো একজন নারীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা ছাড়াই পরের নির্বাচন কমিশনগুলোতেও একই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়। এ ছাড়া গত তিনটি নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচজন করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ হয়ে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।</p> <p style="text-align:justify">নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা বিষয়ে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে আগে বলা ছিল, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে এবং রাষ্ট্রপতি সময় সময় যেরূপ নির্দেশ করবেন সেইরূপসংখ্যক অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন থাকবে। ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে এর পরিবর্তন এনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আজ ২২ নভেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732243161-030e21ba23991a39529ed80dfefb4ae7.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আজ ২২ নভেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2024/11/22/1449350" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">প্রসঙ্গত, সিইসির দায়িত্বে বিচারপতিদের মধ্যে মো. ইদ্রিস ও এ টি এম মাসউদ এবং সাবেক আমলাদের মধ্যে এম এ সাঈদ, শামসুল হুদা, কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ ও নুরুল হুদা পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পেরেছেন। অন্যদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি।</p>