ট্রেনে ঈদ যাত্রা : ২৭ মার্চের টিকিট মিলছে আজ

অনলাইন প্রতিবেদক
অনলাইন প্রতিবেদক
শেয়ার
ট্রেনে ঈদ যাত্রা : ২৭ মার্চের টিকিট মিলছে আজ
ফাইল ছবি

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শুক্রবার (১৪ মার্চ) থেকে অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ সোমবার চতুর্থ দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এদিন আগামী ২৭ মার্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। সকাল ৮টায় পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।

দুপুর ২টায় মিলবে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট। 

এবারের ঈদ যাত্রায় টিকিটের ১০০ শতাংশ বিক্রি অনলাইনে হবে। পূর্ব এবং পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার্থে আলাদা সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। 

রেল মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৬ মার্চ মিলবে ২৬ মার্চের টিকিট, ১৭ মার্চ পাওয়া যাবে ২৭ মার্চের টিকিট।

এ ছাড়া ২৮ মার্চের টিকিট ১৮ মার্চ, ২৯ মার্চের টিকিট ১৯ মার্চ, ৩০ মার্চের টিকিট ২০ মার্চ পাওয়া যাবে। এ ছাড়া চাঁদ দেখার ওপর ৩১ মার্চ এবং ১ ও ২ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি করা হবে। 

ঈদ যাত্রায় এবার প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩৫ হাজার ৩১৫টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া বিগত বছরগুলোতে ঈদ যাত্রায় ৮ থেকে ১০ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালাত বাংলাদেশ রেলওয়ে।

কিন্তু এবার সেটি কমিয়ে পাঁচ জোড়া করা হয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার
ফাইল ছবি

সংস্কার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ঐকমত্য কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এম ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কমিশনের কাজ শুরু হয়।

প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত সুপারিশের ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে চাওয়া হয়। সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হলেও মাত্র ১৫টি রাজনৈতিক দলের থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।

মন্তব্য

ঈদের ছুটিতে সরকারি হাসপাতালে ১৬ নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ঈদের ছুটিতে সরকারি হাসপাতালে ১৬ নির্দেশনা
সংগৃহীত ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে হাসপাতালগুলোতে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ১৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। দেশের সব সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, লেবার রুম, জরুরি অস্ত্রোপচার, পরীক্ষাগার চালু থাকবে ঈদের ছুটিতেও।

আজ মঙ্গলবার অধিদপ্তরের এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

নির্দেশনাগুলো হলো-

(১) জরুরি বিভাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চিকিৎসক পদায়নের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

(২) জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমার্জেন্সি ওটি, ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

(৩) কর্মস্থলে পর্যাপ্ত জনবল ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে জনবলকে পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়া যেতে পারে।

(৪) প্রতিষ্ঠান প্রধান নিরবচ্ছিন্ন জরুরি চিকিৎসা কার্যক্রম ও জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছুটি মঞ্জুর করতে পারবেন।

(৫) সিভিল সার্জন, বিভাগীয় পরিচালককে অবহিত করে ঈদের ছুটিকালে নিজ জেলার মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জনবল সমন্বয় করা যাবে।

(৬) হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ইউনিট প্রধানরা প্রতিদিন তাদের বিভাগীয় কার্যক্রম তদারক করবেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি ল্যাব, এক্স-রে সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অন কল সেবা চালু রাখতে হবে।

(৭) ছুটি শুরু হওয়ার আগেই পর্যাপ্ত ওষুধ, আইভি ফ্লুইড, কেমিক্যাল রি-অ্যাজেন্ট, সার্জিক্যাল সামগ্রী মজুদ ও তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে স্টোর কিপার অথবা ছুটি চলাকালে দায়িত্ব পাওয়া স্টাফ অবশ্যই নিজ জেলা ও উপজেলায় অবস্থান করবেন।

(৮) অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।

(৯) ছুটি চলাকালে হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আগামপত্র দিতে হবে।

(১০) ছুটি চলাকালে সব স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণ বিষয়ক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

(১১) প্রতিষ্ঠান প্রধান ও বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা ছুটি কালীন সেবা প্রদানকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন এবং ঈদের দিন কুশল বিনিময় করবেন।

(১২) প্রতিষ্ঠান প্রধান ছুটি নিলে অবশ্যই বিধি অনুযায়ী কাউকে দায়িত্ব দিতে হবে এবং দায়িত্ব গ্রহণকারী কর্মকর্তা সব দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করবেন। দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

(১৩) প্রতিষ্ঠান প্রধান ঈদের দিন রোগীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন তদারকি করবেন এবং রোগীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

(১৪) বহির্বিভাগ একাধারে ৭২ ঘণ্টার বেশি বন্ধ রাখা যাবে না। এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবেন।

১৫) ক) বেসরকারি ক্লিনিক/হাসপাতালকে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে সার্বক্ষণিক জরুরি ও প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখতে হবে।

খ) কোনো রোগী রেফার করার আগে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা এবং যাত্রাপথের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

গ) রেফার্ড রোগীরা যাতে অ্যাম্বুলেন্স পায়, সেজন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে।

(১৬) যেকোনো দুর্যোগ, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোলরুমকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর শাস্তি : নৌ উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদযাত্রায় নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া নিলে কঠোর শাস্তি : নৌ উপদেষ্টা

আসন্ন ঈদযাত্রায় নৌযানগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

জরিমানার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষ অভিযুক্ত লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন নৌপথে জলযানসমূহ সুষ্ঠুভাবে চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ যথাযথ কর্মপন্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় জুম প্ল্যাটফরমে সংযুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা জেলা প্রশাসকগণকে দেশের বিভিন্ন ফেরি ও লঞ্চ ঘাটগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

তিনি আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নৌপথের যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন ঈদে দেশের বিভিন্ন নৌপথে জলযানসমূহ সুষ্ঠুভাবে চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। 

যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দূরপাল্লার লঞ্চগুলোতে সশস্ত্র আনসার মোতায়েন করা হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড এবং নৌবাহিনীকে নৌপথের বিশেষ অপরাধপ্রবণ জায়গাগুলোতে বিশেষ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী ও যানবাহনসমূহকে ফেরি ও যাত্রীবাহী জাহাজে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের জন্য বিআইডব্লিউটিসির কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। যাত্রী ও যানবাহনসমূহকে প্রয়োজনে ০২২২৩৩৬২৭৭৯ ও ০১৪০৪৪৪৩৭০৭ নম্বরে যোগাযোগ করে সেবা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

উপদেষ্টা নৌ দুর্ঘটনা রোধকল্পে ঈদের আগের ৫ দিন ও পরের ৫ দিন দিনে-রাতে সার্বক্ষণিক বাল্কহেড (বালুবাহী) চলাচল বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

তিনি বলেন, সদরঘাট বা অন্যান্য ঘাটে যাদের ইজারা দেওয়া হয়েছে তারা যাত্রীদের কোনোরূপ হয়রানি করতে পারবেন না।

কোনো অতিরিক্ত চার্জ আদায় করতে পারবেন না। বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে তদারকি করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এ সময় উপদেষ্টা যেসব জলযানের ফিটনেস নেই তাদেরকে অবিলম্বে ফিটনেস সনদ গ্রহণের আহ্বান জানান। এ বিষয়ে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপদেষ্টা নির্দেশনা দেন। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার একটি চার্ট ঘাটসমূহে টাঙিয়ে রাখার জন্য বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেন তিনি।

উপদেষ্টা ঢাকার জিরোপয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ককে যানজটমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা প্রদান করেন। 

সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থার প্রধানগণ, জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিপীড়ন-হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে : ফর্টিফাই রাইটস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিপীড়ন-হত্যাকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে : ফর্টিফাই রাইটস

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যরা মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন এবং হুমকি দিয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস-এর প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির এক প্রতিবেদন প্রকাশকালে এ দাবি করা হয়। 

‘বাংলাদেশ : রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনুন, আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সাথে সহযোগিতা করুন’ শির্ষক সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির পরিচালক জন কুইনলি, সিনিয়র অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট পেট্রিক ফংসাথর্ন ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাভিন মুর্শিদ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠির নির্দিষ্ট কিছু কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ার যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে। এসব অপরাধমূলক ঘটনা ও মিয়ানমারে চলমান সশস্ত্র সংঘাতের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট যোগসূত্র বিদ্যমান। 

যুদ্ধাপরাধ প্রতিষ্ঠার জন্য তিনটি অপরিহার্য উপাদান উপস্থিত থাকতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এরমধ্যে রয়েছে- এক. একটি সশস্ত্র সংঘর্ষ বিদ্যমান থাকতে হবে। দুই. একটি নিষিদ্ধ কার্যকলাপ অবশ্যই এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংঘটিত হতে হবে, যিনি সশস্ত্র সংঘর্ষে সক্রিয়ভাবে জড়িত নন এবং তিন. সশস্ত্র সংঘর্ষ ও সংঘটিত কার্যকলাপের মধ্যে অবশ্যই একটি যোগসূত্র থাকতে হবে। বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে সংগঠিত অপরাধগুলোতে এসব উপাদান বিদ্যমান থাকার যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি আছে। ফলে অন্ততপক্ষে চলমান যুদ্ধাপরাধের সম্ভাবনা নিয়ে আরও তদন্ত করা উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি আরসা এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িত। তারা উভয়ই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে মিয়ানমার জান্তার পক্ষে লড়াই করছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে তাদের সশস্ত্র অভিযান জোরদার করার জন্য তারাই বাংলাদেশে শরণার্থীদের অপহরণ করেছে এবং তাদের মিয়ানমারে যুদ্ধ করতে বাধ্য করেছে। যা যুদ্ধের আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করা উচিত। সংস্থাটি আরসা ও আরএসও-এর সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং তাদের অপরাধের স্বীকারোক্তি নথিভুক্ত করেছে।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে বছরের পর বছর ধরে সহিংসতা ও হত্যার শিকার হয়েছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে মোহিবুল্লাহ হত্যার পর থেকে বিদ্রোহী সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। শরণার্থী শিবিরভিত্তিক বিদ্রোহীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে সংখ্যা ২০২১ সালে ২২টি, ২০২২ সালে ৪২টি, ২০২৩ সালে ৯০টি এবং ২০২৪ সালে কমপক্ষে ৬৫টি রিপোর্ট করা হয়েছে।

জন কুইনলি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারে প্রায় সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধ সাধারণত সশস্ত্র সংঘাতের প্রত্যক্ষ ক্ষেত্রেই সংঘটিত হয়। তবে এই ক্ষেত্রে, বাংলাদেশে সংঘটিত নির্দিষ্ট অপরাধগুলো মিয়ানমারের যুদ্ধে সরাসরি সংযুক্ত এবং যুদ্ধাপরাধের শামিল।’ 

তিনি বলেন, ‘সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত।’

তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা জরুরি। এর জন্য যারা দায়ী, বিশেষ করে আরসা ও আরএসও সদস্যদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। দাতা সরকারগুলোর উচিত ঝুঁকিতে থাকা শরণার্থীদের সহায়তায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করা। যার মধ্যে রয়েছে সুরক্ষিত স্থান, চলাচলের স্বাধীনতা এবং তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের জন্য আরো বিকল্প প্রদান।’

শরণার্থী শিবিরে চলমান সহিংসতা নিয়ে ১১৬ জনের সাক্ষাতকার নিয়ে ৭৭ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে ভুক্তভোগী রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক নির্যাতন, হুমিকি ও ভয় ভীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। 

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রোহিঙ্গা নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে রক্ষা করতে ব্যাপকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বহু বছর ধরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের অস্তিত্ব ও কার্যক্রমের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এর ফলে ভুক্তভোগী শরাণার্থী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ন্যায়বিচারের সুযোগ ও যথাযথ প্রতিক্রিয়ার অভাব দেখা দেয়।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সাম্প্রতিক মার্কিন সরকারি তহবিল কাটছাঁটের ফলে শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে আরও খারাপ করবে। এছাড়াও রোহিঙ্গা শিবিরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ রোধে বেশ কিছু প্রতিকার উল্লেখ করা হয়।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ