<p>ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ পাছপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ‘ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় সন্তানর তাদের বাবা-মায়ের পা ধুয়ে দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে। মঙ্গলবার সকালে মাইজবাগ পাছপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসেম্বলির সময় এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা ছাত্তার। </p> <p>শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা ছাত্তার বলেন, আমাদের জন্মদাতা মা-বাবা। এ পৃথিবীতে তাদের মতো আপনজন আর কেউ নেই। তারা আমাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। প্রিয় নবী করিম (সা.) বলেছেন, মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত। আর সেই বেহেশত অর্জন করার পূর্বশর্ত হচ্ছে তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, নরম ভাষায় কথা বলা, সম্মানের চোখে দেখা। পিতা-মাতা সব সময় সন্তানের কল্যাণের কথা ভাবেন। তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কোনো সন্তান কখনো সফলতার পথে এগিয়ে যেতে পারে না।</p> <p>তিনি আরো বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে আজ যে অনুষ্ঠানটি এখানে অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা সবার জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। এখন থেকে শুভসংঘকে সঙ্গে নিয়েই উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আলাদা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এতে শিক্ষার্থীরা ভালো কিছু শিখে কাজে লাগাতে পারবে। </p> <p>এসেম্বলি শুরুর আগে কোরআন তেলাওয়াতের পর স্কুলের শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত গাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা ছাত্তার। পরে ভিন্ন আঙ্গিকে শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সচেষ্ট থাকার অঙ্গীকার করে শপথ পাঠ করানো হয়। পরে আমন্ত্রণে আগত অভিভাবকদের সারিবদ্ধভাবে সন্তানের পাশেই চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় সন্তানেরা মা-বাবার পা ধুয়ে দিয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্যের নিদর্শন প্রদর্শন করে। পা ধোয়ার সময় বেশ কয়েকজন মাকে ডুকরে কাঁদতে দেখা গেছে। </p> <p>জানতে চাইলে বিলকিস আক্তার নামে এক মা বলেন, ‘এডাই তো আমরা চাই। যেন আমার সন্তান বিপথে না যায়। অনেক কষ্ট করে তাদের লালন-পালন করছি, তারা যেন আমাদের কষ্ট না দেয়। আমরা এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না। আজ খুশিতে কানছি।’</p> <p>সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম মাসুম বলে, সবার সামনে আম্মার পা ধুয়ে দিয়েছি, এ জন্য অনেক আনন্দ লাগছে। এখন থেকে বাড়িতে আব্বা-আম্মার অনেক যত্ন করব। শুভসংঘ আমার চোখ খুলে দিয়েছে।</p> <p><br /> পরে ইউএনও সব শিক্ষার্থীর উদ্দেশে বক্তব্য দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল বুসরা অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বক্তব্য দেয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুস সুলতান শাহিন, সহ-প্রধান শিক্ষক মো. হাফিজ উদ্দিন, শিক্ষক মো. মাহবুবুল আলম, মো. মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া, মোছা. রোকসানা খাতুন, সীমা রাণী রুদ্র, শরীর চর্চা শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মীর, মোছা. আছমা খাতুন, মোছা. মাহবুবা বেগম, অলকা বেগম, আমিনুল ইসলাম, মাহবুব আলম, আজহারুল ইসলাম, আব্দুল কাইয়ুম, অফিস সহকারী মাজহারুল হক, মোসলেম উদ্দিন, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর রিপন মিয়া ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরগঞ্জ শুভসংঘের সভাপতি আহসানুল হক দিদার, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদ শাকিল, মোস্তফা আমীর ফয়সাল, লিক্সন আহম্মেদ হিমেল, সায়মন আহমেদ ও রাকিব হাসান।</p>