বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন হামজা দেওয়ান চৌধুরী। ১১.৪০ মিনিটে হামজাকে বহনকারী বিমানটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরন করেন। বাংলাদেশ সময় রাত দু’টায় বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ম্যানচেস্টার থেকে সিলেটর উদ্দেশ্যে রওনা হন হামজা। স্মরণীয় এ সফরে তার সঙ্গী মা, স্ত্রী ও সন্তানেরা।
দেশে পা রাখলেন হামজা চৌধুরী
ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশের হামজাকে এক নজর দেখতে সকাল ৯টার পর থেকেই বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে ভিড় জমাতে থাকেন ফুটবল প্রেমীরা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমর্থকদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। কেউ ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছেন, কেউ আবার খালি হাতে শুধু এক নজর দেখার জন্য। হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন এজন্য গণমাধ্যম কর্মীরাও বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়েছেন।
সিলেট বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামে চলে যাবেন হামজা। সেখানে আজ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন। তার আগমনে হবিগঞ্জে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। আগামীকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের ফ্লাইটে ঢাকায় যাবেন হামজা।
সম্পর্কিত খবর

নিউজিল্যান্ডের কাছে ফের হারল পাকিস্তান
ক্রীড়া ডেস্ক

বৃষ্টি দিয়েছিল বাগড়া। নির্ধারিত সময়ে হয়নি টস। খেলার পরিধিও আসে কমে। কুড়ি কুড়ির লড়াই ১৫ ওভারে নামলেও ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি পাকিস্তানের।
ডানেডিনে টস জিতে সফরকারী পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় নিউজিল্যান্ড।
সতীর্থদের নিয়মিত বিরতিতে উইকেট বিলিয়ে আসার মিছিলে একপ্রান্তে আগলে রেখেছিলেন অধিনায়ক সালমান আঘা। ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছিলেন পাকিস্তানের নতুন এই অধিনায়ক। ২৮ বলে ৪৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন তিনি। চারটি চার ও তিন ছক্কা হাঁকানো সালমানকে আউট করেন বেন সিয়ার্স।
শাদাব খান করেছেন ১৪ বলে ২৬ রান।

ঢাকায় আসেননি ফাহমিদুল, ফিরে গেছেন ইতালি
ক্রীড়া প্রতিবেদক

হাভিয়ের কাবরেরাই খুঁজে বের করেছিলেন তাকে। দল ঘোষণার দিন ফাহমিদুল ইসলামকে নিয়ে আশার কথাও শুনিয়েছিলেন স্প্যানিশ এই কোচ। কিন্তু সৌদি আরবের ক্যাম্প শেষ করে দলের সঙ্গে ঢাকায় আসেননি ফাহমিদ। ফিরে গেছেন ইতালিতে।
আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ঢাকায় ফিরেছে বাংলাদেশ দল। সেই দলের সঙ্গে নেই ফাহমিদ। তার না থাকা নিয়ে ম্যানেজার আমের খান বলেছেন, ‘সে ইতালি ফিরে গেছে। আপাতত আর দলের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে না।
এতেই বোঝা যাচ্ছে, কোচের মন জয় করতে পারেননি ১৮ বছরের এই তরুণ। তার কোনো রকম চোট সমস্যা নেই, ইনজুরিতেও পড়েনি। সবশেষে অনুশীলনেও ছিলেন। তারপরও তিনি দলের সঙ্গে আসেননি।
গত ১০ মার্চ সৌদির ক্যাম্পে যোগ দেন ফাহমিদ। দলের অনুশীলনে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে তাকে। ফাহমিদের বেড়ে ওঠা ইতালিতে। এখন তিনি খেলছেন ইতালির চতুর্থ স্তরের দল ওলবিয়া কালসিওতে।

এখন তো আমি বাংলাদেশেরই হয়ে গেছি
রানা শেখ, হবিগঞ্জ থেকে

ওসমানী বিমানবন্দর থেকে তাঁকে নিয়ে কালো রঙের প্রাডো গাড়িটা ছুটতেই একটু দম ফেলার ফুরসত মিলল হামজা চৌধুরীর। এর আগে সিলেটে নামার পর থেকে পুরো সময়টাই তো মানুষের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন বাংলাদেশের হয়ে মাঠ দাপানোর অপেক্ষায় থাকা এই ফুটবলার।
হামজা এবং তাঁর পরিবারের গন্তব্য হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল থানার স্নানঘাট গ্রামের নিজ বাসভবনের পথে ছুটতে থাকা গাড়ি অবশ্য বিমানবন্দর ছেড়ে আসার ৪০ মিনিট পর আচমকা এক যাত্রাবিরতিও নিল। সঙ্গে সঙ্গে সেখানে থেমে গেল হামজাকে অনুসরণ করা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) একটি গাড়িও।
একই সমান্তরালে অন্য একটি গাড়িতে থাকা কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকেরও না থেমে উপায় কী! নেমে জানা গেল, হামজা এবং তাঁর পরিবারের জন্য খাবারদাবার তোলা হয়েছিল বাফুফের গাড়িতে। সন্তানের ক্ষুধা লেগে যাওয়ায়ই ক্ষণিকের যাত্রাবিরতি নেওয়ায় হামজাকে এই সুযোগে পাওয়া গেল একান্তে। ক্রীড়া সাংবাদিক পরিচয় দিতেই সিলেটি টানের বাংলায় হামজার জিজ্ঞাসা, ‘ভালো আছেন?’ কুশল বিনিময় থেকেই এগোতে শুরু করে আলাপ। আলাপে আলাপে বাংলাদেশের হয়ে ক্যারিয়ার শুরুর লগ্নে তাঁর ভাবনাই শুধু নয়, জানা হয় হবিগঞ্জের দূর গ্রামে হামজার ‘চ্যারিটি’র গল্পও।
প্রশ্ন : এর আগেও আপনি বাংলাদেশে এসেছেন। কিন্তু এবার এলেন বাংলাদেশের হয়ে খেলতে। কেমন লাগছে?
হামজা চৌধুরী : এখানে আসতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। এখানে আমি বারবার আসতে চাই।
প্রশ্ন : বিমানবন্দরে এত এত ভালোবাসা পেলেন। কথাই বলতে পারলেন না...।
হামজা চৌধুরী : সত্যি, অনেক ভালো লাগা কাজ করছে।
প্রশ্ন: প্রতিদান কিভাবে দিতে চান?
হামজা চৌধুরী : আমার লক্ষ্য থাকবে বাংলাদেশকে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে নিয়ে যাওয়া। এরপর এই দেশের ফুটবলের শক্ত ভিত গড়ে দিতে চাই। সবার মধ্যে ভালো করার মানসিকতা ঢুকিয়ে দিতে পারলে ভালো কিছু করা সম্ভব। আশা করি, আমি সাহায্য করতে পারব।
প্রশ্ন : ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ। জেতার ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদী?
হামজা চৌধুরী : ইনশাআল্লাহ আমরা জিতব। কোচের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা যদি ঠিকঠাক খেলতে পারি তাহলে জিতে ফিরব। সেই বিশ্বাস আমার আছে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের ফুটবলাররা আপনার সঙ্গে খেলার জন্য খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন। এটা কি আপনি জানেন?
হামজা চৌধুরী : হ্যাঁ, শুনেছি। তাঁদের সঙ্গে খেলতে আমি নিজেও উত্সুক হয়ে আছি। আশা করি, আমরা সবাই মিলে ভালো একটা ফলই এনে দিতে পারব।
প্রশ্ন : পুরো পরিবার নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশের জার্সিতে খেলবেন বলে তারা কতটা রোমাঞ্চিত?
হামজা চৌধুরী : অনেক রোমাঞ্চিত। আগে তো শুধু আমি একা এসে গ্রামে ঘুরে যেতাম। এবার আমার স্ত্রী ও বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি। ওরা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে চেয়েছে। যদিও আমরা খুব কম সময় নিয়ে এসেছি।
প্রশ্ন : শুনেছি, আপনার অর্থায়নে গ্রামে একটি মাদরাসা চলে। কোন ভাবনা থেকে এই উদ্যোগ?
হামজা চৌধুরী : আল্লাহ খুশি হবেন বলে। আমার খুব ভালো লাগে। বাচ্চাদের আমি খুব ভালোবাসি।
প্রশ্ন : এখন তো রোজার মাস চলছে। কিভাবে ফিটনেস ধরে রাখার কাজ করেন?
হামজা চৌধুরী : বিশেষ কিছু করা হয় না। সাধারণত যা যা করি, এখনো তা-ই করি। ঘুম, নামাজ, অনুশীলন ও ম্যাচ; খেলেই নিজেকে ফিট রাখি।
প্রশ্ন : আপনার দল শেফিল্ড ইউনাইটেড প্রিমিয়ার লিগে ওঠার পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে। কতটা আশাবাদী আপনি?
হামজা চৌধুরী : এই দলে খেলতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। খুব ভালো কাটছে আমার সময়। ইনশাআল্লাহ, আমরা ধারাবাহিকতা ধরে রেখে প্রিমিয়ার লিগে খেলতে পারব।

সাকিবের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে চান না হামজা
ক্রীড়া ডেস্ক

হামজা চৌধুরী বাংলাদেশে আসার আগে গত কয়েক দিন একটা আলোচনা সামাজিক মাধ্যমে তুঙ্গে উঠেছিল। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় তারকা কে? সাকিব আল হাসান, নাকি হামজা? এই আলোচনায় দুই ভাগ হন ভক্ত-সমর্থকরা।
আজ বাংলাদেশে আসায় হামজার কাছে সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয়েছিল। নিজেকে এই তুলনার বাইরেই রেখেছেন বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিবের অবদান কত সেটা মাথায় রেখেই হামজা এমনটা যে বলেছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর তিনি এখনো বাংলাদেশের হয়ে ম্যাচই খেলেননি। আগামী ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামবেন তিনি।
বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে স্বপ্ন দেখেছিলেন ইংল্যান্ডের জার্সিতে আন্তজার্তিক ক্যারিয়ার রাঙানোর।