আগামী বছর থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে কুরিয়ার সেবা চালু করতে চায় এমিরেটস। এমিরেটস স্কাইকার্গোর পণ্য ও উদ্ভাবন বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেনিস লিস্টার মঙ্গলবার খালিজ টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
লিস্টার বলেন, ‘ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক বিধিনিষেধ থাকে, তাই বিষয়টা কিছুটা জটিল। আমরা এখনই শুরু করছি না, তবে আশা করছি আগামী বছর চালু করতে পারব।
’
তিনি বলেন, নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু পরিচিত প্রেরণকারীদের দিয়ে সেবা চালু করা হচ্ছে, যাতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চালানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
‘আমরা ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া ও নীতিমালা তৈরি করছি। আমরা সম্ভবত প্রথমে সেবাটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু করব।’
এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস
এ মাসের শুরুতে দুবাই ক্যারিয়ার ‘এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস’ চালু করেছে, যা ব্যক্তি পর্যায়ে পণ্য সরবরাহের নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে।
এই পরিষেবাটি এমিরেটসের ২৫০টিরও বেশি ওয়াইড-বডি পেসেঞ্জার ও কার্গো বিমানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী চালান পাঠাতে পারবে।
‘এই সেবার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, এটি যেকোনো গন্তব্য বিমানবন্দরে সরাসরি সংযুক্ত হতে পারে। ফলে গ্রাহকের কাছাকাছি পৌঁছানো, গন্তব্যে ইনভেন্টরি খরচ কমানো এবং দ্রুত সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব,’ বলে জানিয়েছে লিস্টার।
লিস্টার বলেন, ‘শুরুর আগ্রহ ছিল অবিশ্বাস্য।
গ্রাহকদের কাছ থেকে আমরা প্রচুর অনুরোধ পাচ্ছি। আমরা বিশ্বের দ্রুততম ডোর-টু-ডোর ক্রস-বর্ডার পার্সেল সল্যুশন বাজারে এনেছি। বড় ব্যবসা হোক বা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ, সবাই নতুন সমাধানের জন্য প্রস্তুত।’
তিনি আরো জানান, এটি গ্রাহকদের প্রিমিয়াম সেবা দেবে। তাই যারা দ্রুত ডেলিভারি চান তাদের জন্যই এটি উপযুক্ত।
‘মানুষ দ্রুত পণ্য ডেলিভারি চায়। যখন তারা অনলাইনে কিছু অর্ডার করেন, তখন তারা জানতে চান যে আপনি কত দ্রুত তাদের পণ্য ডেলিভারি করতে পারবেন। তাই আমরা খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করব এবং তাদের মাধ্যমেই ডোর-টু-ডোর সমাধান সরবরাহ করব। যার ফলে গ্রাহকের কাছে কম সময়ে পণ্য পৌঁছে যাবে। এ ছাড়া আমাদের অনেক ফ্লাইট রয়েছে, ফলে দ্রুত ডেলিভারি সম্ভব হবে।’
ভারত, চীন ও অস্ট্রেলিয়াকে যুক্ত করার পরিকল্পনা
লিস্টার জানান, এমিরেটস বর্তমানে শুধু যুক্তরাজ্য থেকেই প্রতি সপ্তাহে ১৩৮টিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু পেসেঞ্জার ফ্লাইট ব্যবহার করছি, তাই দ্রুত ও দক্ষভাবে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট সংযোগ করতে পারছি। কারণ এটি ১৪৮টিরও বেশি গন্তব্যে উড়ে যায়।’
তিনি জানান, বিশ্বজুড়ে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা চালু করা হয়নি, কারণ এটি অংশীদারি মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
লিস্টার বলেন, ‘প্রতিটি দেশে আমরা স্থানীয় পার্টনারদের ব্যবহার করব যারা সংগ্রহ, পিকআপ, ডেলিভারি, ক্লিয়ারেন্সসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’
বর্তমানে এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস ৭টি দেশে সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের ব্যাবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব এবং ওমান।
লিস্টার বলেন, ‘আমরা প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো থেকে শুরু করছি। ধাপে ধাপে বিস্তৃত করব। পরবর্তী বড় বাজার হবে ভারত। এরপর চীন এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্র।’
ভবিষ্যতে কী কী সরবরাহ করবে
এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস ভবিষ্যতে শুধু ই-কমার্স পণ্যই নয়, বরং প্রযুক্তি পণ্য, ওষুধ, রক্ত, টিকা ও অন্যান্য নমুনাও সরবরাহ করবে।
লিস্টার বলেন, ‘নানা ধরনের খাত ও পণ্যে আমরা কাজ করব। এটা হবে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ, প্রিমিয়াম কুরিয়ার সল্যুশন ‘
কিছু কিছু বাজারে এমিরেটস কুরিয়ার এক্সপ্রেস একই দিনে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে। কারণ তাদের বিশাল নেটওয়ার্ক রয়েছে।