<p>ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যের ১৮ বছর বয়সী এক দলিত নারী অভিযোগ করেছেন, ১৩ বছর বয়স থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ জন ব্যক্তি তাকে যৌন নির্যাতন করেছে। বিবিসি সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।  </p> <p>পুলিশের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা প্রকাশ্যে কোনো বিবৃতি দেয়নি। অভিযুক্তদের বয়স ১৭ থেকে ৪৭ বছরের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে ওই নারীর প্রতিবেশী, ক্রীড়া প্রশিক্ষক ও তার বাবার বন্ধুরাও রয়েছে।  </p> <p>দলিতরা হিন্দু বর্ণব্যবস্থার নিম্নস্তরে অবস্থান করে এবং ভারতে বিভিন্ন আইনি সুরক্ষার পরও তারা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হন। সরকারি প্রকল্পের অধীনে কাজ করা এক দল কাউন্সেলর ওই নারীর বাড়িতে গেলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি প্রকাশ করেন। পুলিশ ভারতের বিভিন্ন অপরাধ আইন এবং তফসিলি জাতি ও আদিবাসী (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন অনুযায়ী প্রায় ১৮টি মামলা দায়ের করেছে।</p> <p>এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা নন্দকুমার এস বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছেন, যেহেতু নির্যাতন চলাকালীন ভুক্তভোগী নাবালিকা ছিলেন, তাই পকসো (শিশুদের যৌন অপরাধ থেকে সুরক্ষা) আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখনো তদন্ত চলছে এবং আগামী দিনে আরো মামলা দায়ের হতে পারে। ২৫ সদস্যের একটি দল এই তদন্তের কাজ করছে।</p> <p>পুলিশ জানায়, মেয়েটির ১৩ বছর বয়সে তার প্রতিবেশী প্রথমবার তাকে যৌন হয়রানি করে এবং তার আপত্তিকর ছবি তোলে। নিউজ মিনিট ওয়েবসাইট জানিয়েছে, ১৬ বছর বয়সে সেই প্রতিবেশী আবারও তাকে যৌন নির্যাতন করে এবং সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে, যা আরো কয়েকজনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়। এরপর তারা বহু বছর ধরে ওই নারীকে নির্যাতন করতে থাকে।</p> <p>জেলার শিশু কল্যাণ কমিটির (সিডব্লিউসি) প্রধান এক আইনজীবী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ওই নারী একজন ক্রীড়াবিদ ছিলেন এবং বিভিন্ন ক্রীড়া শিবিরে অংশ নিতেন, যে কারণে তার ওপর আরো নির্যাতনের সুযোগ তৈরি হতে পারে। গত পাঁচ বছরে তাকে তিনবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।</p> <p>অভিযোগ অনুসারে, নির্যাতনকারীরা ওই নারীর বাবার ফোন নম্বর ব্যবহার করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করত। তিনি সেই নম্বরগুলো ফোনে সংরক্ষণ করেছেন। পুলিশ এখন সেই ফোনের ডেটা ব্যবহার করে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। ওই নারীর পরিবার তার ওপর হওয়া নির্যাতনের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিল বলে জানা গেছে।</p> <p>গত মাসে কাউন্সেলরদের একটি দল ওই নারীর বাড়িতে গেলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। তারা সিডব্লিউসিকে বিষয়টি জানায় এবং ওই নারীকে তার মাকে নিয়ে কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়। সিডব্লিউসিপ্রধান ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘তাকে কাউন্সেলিং দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি একজন মনোবিজ্ঞানীর কাছে তার সমস্যার কথা খুলে বলেন। সেখানে তিনি ১৩ বছর বয়স থেকে তার ওপর হওয়া যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দেন।’ </p> <p>তিনি আরো জানান, ওই নারীকে সিডব্লিউসির সঙ্গে যুক্ত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে তার সুরক্ষার জন্য।</p> <p>এদিকে ওই নারীর অভিযোগে পুরো ভারতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি তার অভিযোগের বিষয়ে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার কাছে বিস্তারিত বিবৃতি দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।</p>